Friday, October 26, 2018

মাস্তানি পর্ব ৫

গল্প: মাস্তানি (৫ম পর্ব)

গত রাতে সেই লোকটাকে মার্ডার করা হয়েছে।
ভাবতেই কেমন যেন অনুশোচনা হচ্ছে মনের
মধ্যে। আমি আবারো সেই কাজে জড়িয়ে যাচ্ছি
কি? কিন্তু আমি তো ভালো হতে চাচ্ছি। অবশ্য
মার্ডার আমি করিনি। আমার লোকজন করেছে।..
- এই যে নিলয় সাহেব..আপনার ফোন নাম্বারটা দেন
তো। (নেহা)
ক্যামপাসে বসে উপরের কথাগুলো ভাবছি। তখনি
কোথা থেকে যে এই নেহা চলে আসলো
বুঝিনি। আর
এসেই কথাটি বললো..
- মানে নাম্বার কেনো?
- বারে, নাম্বার না দিলে কথা বলবো কিভাবে
তোমার সাথে? তোমাকে তো ভালোবাসি আমি।
(নেহা)
- ভালো।
কথাটি বলে যেয় না উঠতে যাবো। তখনি নেহা
আমার
হাতটি ধরলো। আর বললো..
- আচ্ছা তুমি এমন গোমড়া মুখো কেনো? কখনও
ভালো করে কথা বলোনি কেনো? কি হয়েছে
তোমার হুমমম? (নেহা)
- হাত ছাড়ো..
- আগে বলো, তোমার সমস্যাটা কোথায়? তুমি
সবাইকে এমন এড়িয়ে চলো কেনো? কি
প্রবলেম কি?
- প্রবলেম হল আমি মেয়েদের সহ্য করতে পারি
না।
- হিহিহিহিহি,,তার মানে ছ্যাখা খাইছো? ওকে ব্যাপার না,
আমি তো আছি তোমাকে ভালোবাসার জন্য।
- চুপপ..আমি জীবনে মেয়েদেরই সহ্য করতে
পারলাম না। আর ছ্যাখা.খাইছি তাই না?
- তাহলে বলো তুমি এমন.কেনো? আর কেন
সহ্য করতে পারো না?
কিছু না বলেই হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে চলে আসলাম।
আরেকটু সময় থাকলে রাগটা কন্ট্রোল করতে
পারতাম না। তখন খারাপ কিছু করে বসতাম। ক্লাসে
এসে সেই বেন্চটাতে চুপচাপ বসলাম। একটু
পরেই স্যার আসলো। স্যার এসে স্যারের মত
পড়ানো শুরু করলো। কিন্তু সে দিকে আজ আমার
মন
নেই। মনটা নেহারও নেই, মেয়েটা সেই তখন
থেকেই তাকিয়ে আছে। যা আমার কাছে যথেষ্ট
বিরক্তিকর লাগছে।
- কি ব্যাপার নিলয়, এমন করে বসে আছো
কেনো? (স্যার)
- নাহ মানে, কিছু না স্যার।
- কি হয়েছে বলো..
- কিছু না স্যার, আব্বুর কথা
মনে পড়ে গেলো তো তাই।
- ওহহ...
স্যার আমার কাছে এসে কথাগুলো বলে আবার
সামনের দিকে চলে গেলেন। যেয়ে আজো
উদ্ভট প্রশ্ন শুরু করলো..।
- আচ্ছা বলোতো, মানুষ সুখটাকে নিজের
জীবনে
পেলে সেটা ছাড়তে চাই না,আবার দুঃখ আসলে
আমরা
সেখান থেকে বের হওয়ার যুদ্ধে লিপ্ত হয়। এটা
কেনো
করি? সুখ কেন চাই আমরা বারবার? দুঃখটাকে কেনো
চাই না? সুখ দুঃখ তো একে অপরের সাথে জড়িত।
তাহলে কেন এমন করি আমরা??
স্যারের প্রশ্ন শুনে আমিই আজ প্রথম উঠে
দাঁড়ালাম।
বললাম..
- স্যার, মানুষ হল এমন একটা জীব, যেটা নিজের
ভালোটাই বুঝতে পারে। মানে, আমরা মনে করি
নিজে ভালো তো সব ভালো। আর এই
নিজেকে ভালো থাকার মধ্যে রাখতে যেয়ে
আমরা চরম পর্যায়ে পৌছায়। মানে একটু সুখের জন্য
অনেক কিছুই করতে হয়। যার কারনে দুঃখ টাও
আমামের কাছে আসে। সুখ দুঃখের মাঝেই
জীবন আমাদের। কিন্তু আমরা সুখটাকে বেশি
ভালোবেসে ফেলি। তাকে আগলে রাখতে চাই।
বরন করে থাকি সাদরে। তখনই ভুলে যায় দুঃখটাকে।
তুচ্ছ মনে করি, তাই দেখবেন অনেকেই বলে
এখন সুখে আছি,দুঃখ আর আসবে না জীবনে।
মূলত ভুলটা সেখানেই। সুখের পরেই দুঃখ
আসবেই। সুখের
সময় সেটা আগলে রাখার জন্য যেমন কাজ করি।
তেমন দুঃখটাকে তাড়ানোর জন্যও
সে রকম কাজ করি।
আমরা যদি মনে রাখি সুখের পরে দুঃখ আসবেই।
আবার দুঃখের পরেই সুখ আসবে। তাহলে
জীবনে খারাপ সময়ে পড়তে হবে না। আমরা
দুঃটাকে বরন করি না। তাড়ানোর কাজে লিপ্ত হয়।
ফলে সেটা আমাদের জীবনে জড়িয়ে যেতে
থাকে।
- হুমমম..ঠিকই বলেছো তুমি।
(স্যার)
..
ক্লাস শেষ করে বাইরে আসলাম। তখনি নেহা আমার
পাশে এসে হাটতে লাগলো..
- তুমি কোন কলেজে পড়তা এর
আগে?
- কেনো? (আমি)
- তুমি এত সুন্দর করে কথা বলো, অবশ্যই সেই
কলেজটা উন্নত ছিলো। কিন্তু চলে আসলে
কেনো? কি
হয়েছিলো?
- কিছু না।
- বুঝেছি, ঐ কলেজের কোনো একটা
মেয়েকে
ভালোবাসতা, সে ছ্যাখা দিয়েছে। ফলে কলেজ
ছেড়ে
এখানে চলে এসেছো। তাই না?? (নেহা)
- থাপ্পড় চিনো?
- হুমম আগে কত খেয়েছি।গালে।
- আমি দিবো খাবা?
- হুমম দাও না,প্লীজ খাবো..
কিছু না বলেই তাড়াতাড়ি চলে আসলাম সেখান
থেকে।
অন্য সময় হলে থাপ্পড় না এতদিনে খুন করতাম।
কিন্তু
আমি তা করবো না আর। আসতে আসতে বের
হতে হবে সেখান থেকে।
.
(পরেরদিন)
.
ক্লাসে ব্যাগটা রেখে বাইরে এসে বসেছি। একটু
পরেই নেহা আসলো পাশে। কিন্তু সে আজ কিছুই
বলছে না। চুপচাপ বসে আছে।
- কি হল, আজ কিছু বলছো না যে??
কিছু না বলে সে আমার দিকে রাগি চোখে
তাকালো। কিন্তু কেন..? কি করলাম আবার আমি?
- কি হল, এভাবে তাকাচ্ছো কেনো? (আমি)
কিছু না বলেই সে আমার সামনে থেকে চলে
গেলো।
আর আমি হাবার মত চেয়ে আছি। কিন্তু আজ তো
আমি কিছুই করিনি। না ধাক্কা দিয়েছি। না কাগজ ছুড়েছি।
তাহলে এমন করছে কেনো? ধুরর করলে তো
আমার কি? ক্লাসে চলে আসলাম। তবে নেহার
দিকে তাকাতেই দেখি সে মাথাটা নিচু করে আছে।
অন্যদিন হলে তো সে আমার দিকে তাকাতো।
কিন্তু আজ কি হয়েছে ওর। সারাটা ক্লাসে সে
ওভাবেই ছিলো। একবারো তাকায়নি আসেপাশে।
তবে কি সে জেনে গেলো আমি কে?? কিন্তু
কিভাবে জানবে? তখনি ব্যাগে হাত।দিয়ে দেখলাম
পিস্তলটা ঠিক আছে নাকি? হুমম সবই তো ঠিক
আছে। কিন্তু সে কি জেনে গেলো??
..
আজ তিন দিন হল নেহা কথা বলে না। তাকায় ও না সে
আর। যাক ভালোই হল, আমাকে জ্বালানোর বা
প্রশ্ন করার মত কেউ নেই। এসব কথা ক্যামপাসে
বসে
ভাবছি। ঠিক তখনি নেহা আসলো আমার কাছে।
- আরে তুমি? তো কি মনে করে আবার? (আমি)
-...... (তাকিয়ে থাকলো)
- কি ব্যাপার চুপ কেনো?
একটু এদিক সেদিক তাকিয়ে।।গম্ভীর মুখে সে
আমার দিকে।তাকালো। মুখে যতটা সম্ভব।রাগ এনে
বললো..
- কে তুমি??
প্রশ্নটা শুনে চমকে উঠলাম। সেই সাথে চুপ হয়ে
গেলাম।
আবার জিগাস করছে সেই।একই প্রশ্ন। চুপ করেই
বসে
রইলাম।
- আমি কিছু জিগাস করেছি। কে তুমি??
- আরে কে মানে? আর এসব।প্রশ্নের
কোনো উত্তর থাকে।নাকি?
আমার কথায় সে কোনো ভ্রক্ষেপ না করে
আবার প্রশ্ন
করলো..
- তোমার পরিচয় কি? বাসা কোথায় তোমার..?
- নেহা, এসব কি বলছো?আর আমাকে কেনো
এসব বলছো তুমি? আমি বাধ্য নয়..
- তাই নাকি..তাহলে এটা।কেনো তোমার ব্যাগে
থাকে?।পিছন থেকে নেহার হাত সামনে এনে
দেখালো। আর হাতে যেটা দেখলাম, সেটা
দেখার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না। মানে ওর
কাছে।এটা দেখবো বলে। কিন্তু সে।এটা
পেলো কোথায়?
- দাও এটা,,এটা তোমার কাছে কেনো?
নেহার হাত থেবে পিস্তলটা।নিয়ে তাড়াতাড়ি
কোমরে
গুজলাম। কিন্তু সে পেলো কোথায়??
- তোমরা ব্যাগে এটা
কেনো? (নেহা)
-......
- কি হল বলো,,আমাকে বলতেই
হবে।
- ক্লাসে যাও।
- বললাম না আমাকে বলো, এটা কেনো তোমার
ব্যাগে?
কে তুমি সেটা বলো? কেন তুমি এখানে সব সব
বলো আমায়।
- নেহা ক্লাসে যাও।
- যা যা বলছি তার এনস দাও।
না হলে..
- না হলে কি...
- বুঝতে পারছো না??
নেহার দিকে তাকালাম, মন চাচ্ছে এখানেই তাকে।
মেরে ফেলি। কিন্তু না..
- কি হল কি...
- আসলে পিস্তল থাকে।নিজেকে বাচানোর জন্য।
(আমি)
- মানে? কেনো??
- মানে আমি মাস্তান, যে।এলাকাতে থাকথাম সেখানকার
টপ মাস্তান।আমি। তাই..
- কেনো..
- আরে কেনো মানে?।মাস্তানি করি তাই মাস্তান।
- কেন মাস্তানি করো? তোমার ফ্যামিলিতে সবাই
মাস্তান নাকি?
- হাহাহাহা,,ফ্যামিলি??
- মানে?
- কেউ নাই আমার।
- মানে. তাহলে মাস্তানি করো কেন?
- পরিস্থিতির স্বীকার।
- কি হয়েছিলো?
একটু চুপ থেকে দীর্ঘএকটা নিশ্বাস ছাড়লাম।
নেহার
দিকে তাকিয়ে পুরোনো স্মৃতির মাঝে হারিয়ে
যেতে লাগলাম।
(waiting for next part)

1 comment:

  1. আরো নতুন নতুন Golpo পড়তে ভিজিট করুন
    www.valobasargolpo2.xyz

    ReplyDelete