রোমান্টিক শয়তান পর্ব 9

Romantic_Devil
#অন্ত_নীলা
#পর্ব_9
.
.
.
ছেলেটাকে আমার একটুও সুবিধার মনে হচ্ছে না।
এর চেয়ে শুভ্র ভাইয়া ঢের গুনে ভাল ছিল।
..
তখনি বাসায় আলোড়ন সৃষ্টি হল।
নুফতি বলল আমি গিয়ে দেখে আসি।
তখন মিমের কাজিন অয়ন এসে বলল মিম আপু তোমার জামাই মানে হবু জামাই মানে সজীব ভাইয়া ত বিয়ে করতে চাচ্ছেনা।
মিমের মাথায় যেনো আকাশ ভেঙে পরল।
,
বিয়ে করতে চাচ্ছেনা মানে?
.
মানে বিয়ে করতে চাচ্ছেনা।
আংকেল এর ত ছোট খাটো স্ট্রোক এর মত হচ্ছে।
.
মিম আমি দেখে আসছি(নুফতি)
.
আমিও যাব।
.
অই তুই নতুন বউ তুই কেমনে যাবি।
.
বিয়েই হইল না আর নতুন বউ।
.
মিম আস্তে আস্তে সিড়ি বেয়ে নিচে নামতে থাকলো। বাইরে অনেক মানুষ জড়ো হয়ে গেছে। বিয়েতে আসছে সবাই এতগুলা মানুষ সবাই তো জড়ো হবেই এ কেমন কথা ছেলে বিয়ে করতে এসে হঠাৎ বিয়ে করবে না।
কি এমন এমন হল মিম তো কোনো খারাপ মেয়ে নয় যে ছেলে হঠাৎ বলে বসল বিয়ে করবে না। সবাই অনেক রেগে গেছে।
.
মিমের চাচা- কি বলছো তুমি বিয়ে করবে না মানে হঠাৎ বিয়ে করতে এসে এখন বলতেছ বিয়ে করবে না এটা কোনো কথা হলো?
সজীব- আমারে বিয়েতে মত ছিল না আমি অন্য একটা মেয়েকে ভালবাসি।
- আশ্চর্য তাহলে তুমি বিয়ে করতে এসেছ কেন?
- আমি আসিনি বাবা জোর করে এনেছে কিন্তু আমার পক্ষে কোনভাবেই বিয়া করা সম্ভব না আমি ওই মেয়েটাকে ঠকাতে পারিনা আমি ওকে খুব খুব খুব ভালোবাসি।
- তোমার এতক্ষণে মনে হলো তুমি ঐ মেয়েকে ভালোবাসো?
এখন তুমি বিয়ে না করলে আমার মেয়েটার জীবনটা নষ্ট হয়ে যাবে তুমি সে কথা ভাবছ না!
- আমি বিয়ে করলে বরং জীবনটা নষ্ট হবে কারন আমি ওকে ভালোবাসি না।
.
মিম কেঁদেই চলেছে তার ভাগ্য টা কি এতই খারাপ বিয়ে বাড়িতে বর এসে বলেছে তাকে বিয়ে করবে না এটা কোন কথা হল মিমের মন ভেঙে গেছে।
.
এমন সময় হঠাৎ দেখা গেল বাসার গেটে আবার সানাই বাজনা শুরু হয়েছে। সবাই অবাক হয়ে গেছে দিকে তাকালো এটা কি হচ্ছে আবার।
.
কয়েকটা ছোট বাচ্চা দৌড়ে এসে বলল বর এসেছে বর এসেছে বর এসেছে।
সবাই অবাক কেও কখনোই দেখেনি এক বিয়েবাড়িতে দুই বার। বর আসে। একটা ত বিয়ে করতে চাচ্ছে না আরেকটা আবার আসছে এখন সেটা বিয়ে করতে চাবে কেন কেউ জানে না!
.
মিমের আব্বু-আম্মু চাচা কেউই কিছু বুঝতে পারছে না সবাই কি হচ্ছে তা দেখার জন্য একসাথে পায়ে পায়ে গেটের দিকে গেল।
মিমের আব্বু-আম্মু দেখছে একটা ফুল দিয়ে সাজানো সাদা গাড়ি থেকে একটা খুব সুন্দর ছেলে নামছে।
ছেলের সাথে অনেকেই আছে।
তার মধ্যে একজন এসে মিমের আম্মুকে বলল কি জামাই বরণ করবেন না?
.
আম্মু ভীষণ অবাক হয়ে গেল।
তারপর বলল তোমরা মনে হয় ভুল বাড়িতে এসেছো আমাদের এখানে বর ত আগেই এসে গেছে।
.
ছেলেটা বললেন না শ্বাশুড়ি আম্মা আমরা ঠিক জায়গাতে এসেছে।
আমি আপনার মেয়ে মিম কে ভালবাসি। আমি ওকে বিয়ে করতে চাই ইন অ্যাট এনি কস্ট।
.
কিন্তু বাবা আমরা তো তোমাকে চিনি না এমনি যার তার হাতে কেমনে মেয়ে তুলে দেবো।
.
যে ছেলের হহাতে মেয়ে দিতে গিয়েছিলেন তার থেকে আমি অনেক গুনে ভালো আছি এটা তো আপনাকে স্বীকার করতেই হবে তাই না আর আমার বাবা একজন মাননীয় এমপি। আমি বাবাকেও সাথে করে নিয়ে এসেছি ওই তো আমার বাবা।
.
শুভ্রর বাবা আরিফ আলম সাহেব সামনে এসে দাড়ালেন।
.
সবাই এখন ওই বরকে ফেলে শুভ্রর পেছনে ছুটছে।
.
মিমের বাবা জিজ্ঞেস করল এই ছেলেটা কি আপনার ছেলে।
.
-হ্যাঁ আমার ছেলে।
- শুনেছি আপনার ছেলে অত্যন্ত বেপরোয়া একি আপনার সেই বেপরোয়া ছেলে?
- এই আমার সেই ছেলে কিন্তু আমার ছেলে মানুষ হিসেবে অনেক ভালো।
- শ্বশুর বাবা বাকি কথা পরে বলা হবে আমি এখন মীমকে তাড়াতাড়ি বিয়ে করতে চাই মিমের আর অপমান আমি হতে দিতে যাচ্ছি না।
-কিন্তু।
-কোনো কিন্তু নয়। একবাড়ি মানুষ বোঝার চেষ্টা করো এখন যদি তোমার মেয়ের বিয়ে টা না হয় তাহলে মেয়েটার নামে অনেক বড় কলঙ্ক লাগবে। এমনিতেই এক বিয়ে ভেঙ্গে গেছে তার উপর আরেক ছেলে এসেছে বিয়ে করতে(মিমের মা ফিসফিসিয়ে)।
.
সবাই কানাকানি করতেছে।মিমের আব্বু বুঝতে পারল এখন আর কিছু করার নেই। মিম কে এই মুহূর্তে বিদায় করতে হবে। সেই ছেলের সাথে হোক বা এই ছেলের বিয়ে দিতেই হবে। কিন্তু ওই ছেলে তো বিয়ে করতে চাচ্ছে না তাহলে এই ছেলের সাথে বিয়ে দিতে হবে ছেলেটা যতই খারাপ হোক তবুও বলছে যখন মীমকে হয়তো ভালবাসে।
.
শুভ্র এগিয়ে এসে বলল আংকেল আমি মিমকে খুভ ভালবাসি আমি ওকে অসুখী করবনা।
.
এইদিকে মিমের একেক আত্মীয় এসে একেক কথা বলতেছে।
মিম ত অবাক হচ্ছে তাক্র নাকি ২ টা ছেলে বিয়ে করতে আসছে।
নুফতি এসে বলল দ্বিতীয়টা শুভ্র।
মিমেম মাথায়য় আকাশ ভেঙে পড়ল। যার থেকে পালানোর জন্য বিয়ে করতে যাচ্ছিলো শেষে তাকেইই বিয়ে করতে হবে?
কিছুতেই না।
বাবা মা অবশ্যই এসে একবার জিজ্ঞেস করবে। তখন মিম না করে দিবে।
.
এইদিকে মিমের আব্বু আম্মু শুভ্রর সাথে মিমের বিয়ে দিতে রাজি হয়ে গেল। এখন মিম যেহেতু আগের বার ছেলে দেখতে চায়নি তাই এইবার তারা আর মিমকে জিজ্ঞেস করল না।
.
সজীব এর বাবা এসে মিমের আব্বুর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিল।
উনি কিছু বলল না।
সজীবের আত্মীয়রা চলে গেল।
.
অনেকটা নিরানন্দ ভাবেই মিম আর শুভ্র র বিয়েটা হয়ে গেল। মিম ক্রমাগত কেঁদেই চলেছে বিদায় এর সময়।
কিছুতেই চুপ হচ্ছেনা।