---------মাস্তানি----------
----------
পর্ব--১
,,,,,
- এই ক্ষ্যাত, বেয়াদপ ছেলে একটা। দেখে
চলতে পারিস
না??
অনার্স এর থার্ড ইয়ারে ক্লাস করবো বলে রুম
খুজছি।
কিন্তু আমাকে কেউই হেল্প করছে না। কারন, সবাই
আমার ঢিলে ঢালা পোশাকের দিকে তাকিয়ে আমার
কাপড়ের দিকে তাকিয়ে কোনো কথায় বলছে না।
সবার কাছে আমি ক্ষ্যাত। তাই খুব কষ্টে যখন
নিজের ক্লাস খুজে পেলাম। তাড়াতাড়ি রুমে ঢুকতেই
একটা মেয়ের পায়ে সামান্য পাড়া দিয়ে ফেলি।
ফলে তিনি উপরের কথাগুলো বললো..
- ছাগলের মত চেয়ে আছিস কেনো? কোথা
থেকে যে সব আসে। যত্তসব,,সকাল সকাল এসব
ক্ষ্যাত মার্কা ছেলেদের দেখে গা টা জ্বলে
গেলো।
মুচকি হেসে আমি আমার ক্লাসে গেলাম। কারন,
এখানে কথা না বলাটাই শ্রেয়। কথা বললে না জানি
আবার কি না কি শুনতে হবে। ক্লাসের একদম
শেষের দুইটা
বেন্চের আগে বসলাম। একটু পরে দেখলাম
সেই মেয়েটা আমার দুই বেন্চ আগে বসেছে।
তার মানে সেম ক্লাস। যথারীতি ক্লাস শুরু হল,,ঠিক
তখনি দেখলাম আমার পিছনের বেন্চের একটি
ছেলে ঐ মেয়েটির গায়ে কাগজ ছুড়ে মারল..।
তবে দোষটা আমার উপরেই পড়লো। তখনি..
- স্যার এই ছেলেটা আমার গায়ে কাগজ ছুড়ে
মেরেছে।
(মেয়েটি)
- কোন ছেলে? (স্যার)
- ঐ যে ঐ ছেলেটা। চোখে
গোল চশমা পরা।
কিছু বোঝার আগেই স্যার এসে খানিক কথা শুনিয়ে
গেল। কিছু বলারও সুযোগ দিলো না। ধপ করে
বেন্চে বসে পড়লাম..
(পরেরদিন).
.
ক্লাসে বসে আছি সেই বেন্চটাতে। স্যারের
লেকচার খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছি। আর সেই
মেয়েটি বসেছে আজ ফার্স্ট বেন্চে। ঠিক সে
সময় স্যার বললো...
- আচ্ছা বলোতো তোমরা.. যারা শিক্ষিত তারা
বেশি মূর্খ। কথাটি কি সত্য? যদি সত্য হয় তাহলে কারন
টা কি? (স্যার)
ঠিক তখনি দেখলাম সবাই কেমন চুপ হয়ে গেল।
স্যার
সবার দিকে একবার তাকালো। আর আমিও সবার
দিকে একবার তাকালাম। তখনি স্যার সেই মেয়েটিকে
বললো...
- আচ্ছা নেহা, তুমি তো ফার্স্ট গার্ল, তো এই
কথাটার লজিক কি? বলো...তখনি দেখলাম.. নেহা
মেয়েটি চুপ হয়ে গেল। আমতা আমতা করা শুরু
করলো.
তবে স্যার অনেকেরর কাছে কথাটির ব্যাখ্যা
জানতে চাইল। কিন্তু সবাই কেমন যেন চুপসে
গেল।
ঠিক তখনি আমি কিন্চিত হেসে উঠলাম। তবে এটা
স্যারের চোখ এড়ালো না। তাই ন্যার সবাইকে চুপ
থাকতে বলে..
- এই ছেলে. নাম কি তোমার?
(স্যার)
- নিলয়..
- হাসছো কেনো...?
-.......
- বেয়াদপ ছেলে..পড়াশোনা তো করবে
না,,ক্লাসেবেয়াদবি করবে। বলোতো. আমি মনে
করি শিক্ষিত মানুষই মূর্খ হয় বেশি। কথাটি
কি সত্য? যদি সত্য হয় তাহলে কারন কি?
স্যারের প্রশ্নশুনে মাথাটা নিচু করলাম। তখনি স্যার
আবার বললেন..
- জানি তো পারবা না। কেনো আসো সব ক্লাসে?
যত্তসব বেয়াদপ ছেলে..
- জ্বি স্যার আমিও আপনার মত মনে করি শিক্ষিত
ব্যক্তিরাই সবচাইতে বেশি মূর্খ। কারন, শিক্ষিত
ব্যক্তিরা
সাধারন থাকতে চাই না। তারা চাই, অসাধারন হতে।
আর এই অসাধারনের রাস্তায় বিরতহীন ভাবে দৌড়াতে
একসময় তারা তাদের অবস্থান, তাদের ব্যক্তিত্ব
হারিয়ে ফেলে।
তখন তারা শুধুই তাদের অর্থটাকে প্রাধান্য দেয়।
আর সেক্ষেত্রে যে কম জানে, বা জানেই না,
সেই
ঙ্গানী। কারন, তারা হল সাধারন, আর সাধারন সবাই
হতে পারে, এটা একটা আর্ট। তাই তারা তাদের
ধর্মীয়
আচার, বিধি মেনে চলে। সৃষ্টিকর্তার ভয়ে কাজ
করে অপরদিকে যারা বেশি ঙ্গানি তারা সময়ের সাথে
তাল মিলিয়ে চলার চেষ্টা করে। ফলে তারা তাদের
ধর্মকে ভুলেই যেতে বসে। এর কারনে তারা
অবশ্যই মূর্খ।
কথাটি তাড়াতাড়ি বলে শেষ করলাম। কথাগুলো বলার
পর সবার দিকে তাকলাম। দেখলাম সবাই আমার দিকে
চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে
আছে। তখনি স্যার বললো..
- বাহ...আমি তোমাকে কি ভাবছিলাম আর তুমি তার
বিপরীত। সত্যিই তুমি বেয়াদপ না, ভালো ছেলে।
মুচকি হেসে বসে পড়লাম। তখনি সেই নেহার
দিকে তাকালাম। নেহা আমার দিকে অবাক হয়ে
তাকিয়ে আছে। হয়ত ভাবছে আমি ছেলেটা
কেমন?
.
কলেজ শেষ করে যখন বের হলাম। তখনি রফি
নামের
একটি ছেলে এসে বন্ধুত্ব করলো। এতদিনে
কেউ আমার
পাশে বসে না। আর আজ একটা বন্ধুকে পেলাম...
(পরেরদিন)
ক্লাসে বসে আছি। তখনি রফি আসলো..
- আচ্ছা তোর বাসা কোথায়
রে?
- কেনো?
- আরে বন্ধুনা আমরা..বল..
- থাক সেসব শোনা লাগবে
না।
কি দরকার সেসব মনে করে, আমি তো এক
অন্ধকার জগতের মানুষ। সভ্যতার মাঝে এসে বাঁচার
চেষ্টা করছি। তাই ঐসব কথা ভেবে আর কোনো
লাভ নেই।
- ঙ্গানই হল শিক্ষা নাকি
শিক্ষায় হল ঙ্গান?
স্যারের কথা শুনে সবাই চুপ হয়ে গেল। তখনি নেহা
উঠে বললো..
- স্যার, আমি মনে করি দুইটাই একে অপরের সাথে
জড়িত। শিক্ষার মাঝেই তো ঙ্গান লুকিয়ে থাকে।
একজন ব্যক্তি শিক্ষার মাঝে থেকে ঙ্গান অর্জন
করে। তাই শিক্ষা ও ঙ্গান দুইটাই একে অপরের
সাথে জড়িত
- হুমমম..আর কেউ কি বলবে??
(স্যার)
- স্যার, উনি যে ধারনা টা দিলেন সেটা ভূল। কারন,
শিক্ষার মাঝে ঙ্গান যদি লুকিয়ে থাকতো তাহলে যারা
শিক্ষা গ্রহন করেনি তারা কি ঙ্গানি না? বা তাদের মাঝে
কি ঙ্গান নেই? আসলে, স্যার আমরা বলি লেখাপড়া
করে মানুষের মত মানুষ হয়। কথাটা কিন্তু এক দিক
দিয়ে ভূল। কথাটি কি এমন হলে হত না যে. মানুষ
হয়ে লেখা পড়া করো। আসলে কথাটি বললাম কারন,
আমরা জন্মগ্রহনকরার পরেই কি বিদ্যালয়ে আসি?
আসি না, তাই প্রথমে পরিবার, সমাজ হয়ে ওঠে
আমাদের জন্য শিক্ষাঙ্ন। এর থেকে যদি আমরা
সঠিক
শিক্ষা গ্রহন করে মানুষ হতে পারি। তবে সেটাই
প্রকৃত
শিক্ষা। বই বাদে মানুষ কিন্তু শিক্ষিত হয়। তার প্রমানও
বহু আছে আমাদের সমাজে।
কথাগুলো বলে নেহার দিকে তাকালাম। সে আমার
দিকে চোখ বড় বড় করে দেখছে। শুধু সে নয়,
সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তখনি স্যার
বললো...
- বাহ, কি সুন্দর উত্তর। গুড বয়..
স্যারের কথা শুনে মুচকি হাসলাম। মনে মনে বললাম,
আমি স্যার মোটেও গুড বয় না। আমার মত খারাপ
ছেলে আর পাবেন না। যার কোমরে থাকে
সবসময় পিস্তল গোজা। মানুষ মারতে হাত কাপে না।
সে মোটেও গুড বয় না স্যার..
.
ক্লাস শেষ করে বাইরে আসতেই নেহা আমাকে
ডাকলো..
- এই যে, নিলয়..
নেহার ডাক শুনে দাড়ালাম। তখনি সে আমার
কাছে আসলো..
- সরি (নেহা)
- ওকে..বাই.
আর কোনো কথা না বলে, বা না শুনে নেহার কাছ
থেকে চলে আসলাম। একটু দুরে আসতে ঘুরে
তাকিয়ে দেখি সে আবারো চোখ বড় বড় করে
আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি হেসে চলে
আসলাম।
(waiting for next part)
Friday, October 26, 2018
মাস্তানি পর্ব ১
Subscribe to:
Post Comments
(
Atom
)
আরো নতুন নতুন Golpo পড়তে ভিজিট করুন
ReplyDeletewww.valobasargolpo2.xyz