#Devil_Teacher
#part - 6
--- আজ তানিশার বিয়ে, বাড়িতে জমজমাট বিয়ের আয়োজন চলছে। তানিশা আনমনে ভাবছে, নাহিল ( তানিশার হবু বর ) ছেলেটা কেমন হবে? হয়তো নীলার মতো সহজ সরল, যেমনি হোক devil এর মতো যেন না হয়। মনের কোথাও একটা শূন্যতা অনুভব করছে, কোন ভুল করছেনা তো সে। তানিশাকে বৌ সাজানো হয়েছে, আজ যেনো কোন অপ্সরী হার মানবে তার সৌন্দর্যের কাছে। বিয়েটা হয়েগেছে, তানিশাকে বরের পাশে বসানো হয়েছে, এক মুহূর্তের জন্যও সে পাশে বসা মানুষটার দিকে তাকায়নি। পাশ থেকে তান্নিমা কানে ফিসফিস করে বলতে লাগলো,,,
তান্নিমা : আপ্পি তোর husband তো অনেক handsome...
--- কথাটা বলার সাথে সাথেই তানিশা তাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়। নিজের কাছের মানুষ গুলো ছেড়ে যাবার কষ্টটা হয়তো কান্নার মধ্যে প্রকাশ পায়, তানিশা আজ সবাইকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে। তানিশাকে গাড়িতে বসানো হয় তার বরের সাথে, নিজের মানুষ গুলো ছেড়ে যাবার কষ্টে তানিশা এতটা বিভোর হয়ে আছে পাশের মানুষটার দিকে একবারের জন্য তাকায়নি কেঁদেই চলেছে। তানিশার বর পাশ থেকে একটা টিস্যু এগিয়ে দিয়ে বলল,,,
কাব্য : কান্না করেতো নাকে মুখের পানি এক করে ফেলেছো, মুছে নাও,,,
তানিশা : আপনি! ( তানিশা পাশে ফিরে তাকাতেই চমকে উঠলো)
কাব্য : তো,, অন্য কাউকে আশা করছিলে নাকি?
তানিশা : নাহিল কোথায়? ( কান্না থামিয়ে)
কাব্য : আমিতো নাহিল
তানিশা : মানে!
কাব্য : মানে আমি নীলার ভাই "নাহিল মাহমুদ কাব্য"।
--- তানিশার মাথায় যেন বাঁশ পরলো। এই devil টা নীলার ভাই? নীলা তো কখনো বলেনি। না সে আর এগিয়ে যেতে পারবেনা, কখনো এই devil এর সাথে নিজের জীবন সাজাতে পারবে না,,,
তানিশা : ড্রাইভার ভাইয়া গাড়ি থামান।
কাব্য : কেন?
তানিশা : আমি আপনার সাথে যাবো না।
কাব্য : যাবেনা মানে? ( ভ্রু কুচকে)
তানিশা : আমি এই বিয়ে মানিনা, আপনি চিট করছেন আমার সাথে। আমি বাসায় যাবো, আপনার সাথে যাবোনা, ( বলই কাঁদতে লাগলো)
কাব্য : চুপ, আর একটা কথা বললে মাথায় তুলে আছার মারবো ফাজিল মেয়ে। ( ধমক দিয়ে) আমি কি তোমাকে জোর করে বিয়ে করছি? আমি কি বলছি বিয়ের আগে দেখা করবো না? তুমি নিজে দেখা করতে চাওনি ( রেগে গিয়ে)
--- তানিশা ধমক শুনে চুপ হয়ে গেলো, তার জানা ছিলোনা বিয়ের দিন স্বামীর তার নববধূককে এভাবে ধমক দিতে পারে। আজকের দিন যদি এমন হয় সারাজীবন কি করবে? মনে মনে নিজেকে বকতে লাগলো, কেন যে দেখা করতে চাইলো না, এখন নিজের মাথায় নিজেই ফাটাতে ইচ্ছে করছে। বাসায় পৌছে তানিশা কাব্য দুজনকে বরণ করে নেয়া হলো ঘরে, নীলা আরো কয়েকজন মিলে তানিশাকে বাসর ঘরে বসিয়ে আসে। রাগের চোটে কিছু খাওয়া হয়নি তার, কত স্বপ্ন ছিলো এই দিনটা নিয়ে, আজ স্বপ্নগুলো সব এলোমেলো হয়ে গেলো শুধুমাত্র তার একটা ভুলের জন্য। কাব্য রুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে তানিশা বিছানার এক কোনে বসে আছে,,,
কাব্য : তুমি এভাবে বসে আছো কেন? বাসর ঘরে কি করতে হয় তুমি জানোনা?
তানিশা : কি! আপনি মানুষ নাকি অন্যকিছু? আপনি এটা ভাবলেন কি করে আমি এমন কিছু করবো ( রেগে গিয়ে )
কাব্য : এমন কিছু করবেনা মানে? এটা নিয়ম তুমি জানোনা
তানিশা : এমন নিয়ম আছে বলে আমার মনে হয়না।
কাব্য : তোমার মনে হওয়া, না হওয়া আমার ব্যাপার না। আমি চাই নিয়ম অনুসারী আমাদের নতুন জীবন শুরু করবো।
তানিশা : আমি এই নিয়ম মানিনা
কাব্য : মানতে তোমাকে হবে ( তানিশার দিকে এগিয়ে গিয়ে)
তানিশা : দেখেন আমি কিন্তু এখন চিৎকার করবো ( কাঁদোকাঁদো গলায়)
কাব্য : আমি কিন্তু রেগে যাচ্ছি তানিশা।
তানিশা : স্যার আমার সময় লাগবে,
কাব্য : 5 minute only....
তানিশা : স্যার আমাকে অন্তত ১ মাস সময় দেন please....
কাব্য : সালাম করতে ১ মাস সময় লাগে? ( রেগে গিয়ে)
তানিশা : মানে! ( কিছুটা বোকা হয়ে)
কাব্য : মানে বুঝনা? বাসর ঘরে স্ত্রী তার স্বামীকে সালাম করে নতুন জীবন শুরু করে, আর তুমি একমাস সময় চাইছো?
তানিশা : আপনি কি এতক্ষণ সালামের কথা বলছেন?
কাব্য : তাহলে তুমি কি ভাবছো। ( ভ্রু কুচকে)
তানিশা : কিছুনা ( কিছুটা লজ্জা পেয়ে)
--- তানিশা কাব্যকে সালাম করে বিছানার মাঝখানে বসে পরলো,,,
কাব্য : তুমি এভাবে বিছানার মাঝখানে বসে আছো কেন? সরে বসো
তানিশা : কেন?
কাব্য : তুমি এভাবে মাঝখানে বসে থাকলে আমি ঘুমাবো কোথায়? ( রাগি চখে)
তানিশা : আপনি কি বিছানায় ঘুমাবেন।
কাব্য : তো,, আমার বিছানা, আমার রুম অবশ্য আমি আমার জায়গায় ঘুমাবো
তানিশা : তাহলে আমি কোথায় ঘুমাবো? ( করুণ দৃষ্টিতে)
কাব্য : দেখো তানিশা অনেকক্ষণ ধরে তোমার বকবক শুনছি, আমার খুব ঘুম পাচ্ছে আমি এখন ঘুমাবো, তুমিও চুপ করে বিছানায় শুয়ে পরো। আর একটা কথা শুনলে তোমার খবর আছে। ( আগুনের দৃষ্টিতে)
--- কাব্য বিছানায় শুয়ে পরলো, তানিশা মনে মনে বলছে,, আস্ত একটা devil, আমাকে নিয়ে এতো সমস্যা হলে বিয়ে করলো কেন? আমার জীবনটা তেজপাতা বানিয়ে দিচ্ছে। ইচ্ছে করছে মাথাটা ফাটিয়ে দেই, কুপিয়ে কুপিয়ে কিমা বানিয়ে খাই। কথায় কথায় ধমক দেয় বজ্জাতে হাড্ডি, আফ্রিকার জিরাফ, নাইজেরিয়ান এনাকন্ডা, গন্ডার কোথাকার। কাব্যর চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করে বিছানার এক পাশে শুয়ে পরে তানিশা। পেটের ক্ষুদা ঘুম আসছেনা এপাশ ওপাশ ছটফট করতে লাগলো, তানিশার নড়াচড়া দেখে কাব্য উঠে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। কাব্য হঠাৎ এভাবে বেরিয়ে যাওয়ায় তানিশা অনেকটা ভয় পেয়ে গেলো, মনে মনে বলতে লাগলো,, devil বলেছে কথা বললে আমার খবর আছে, এখন না জানি আমার বারোটা বাজিয়ে দেয়। আল্লাহ আমাকে বাচাও, আমি এতো তাড়াতাড়ি মরতে চাইনা devil এর হাতে,,,
চলবে,,,
Friday, October 26, 2018
শয়তান শিক্ষক পার্ট ৬
Subscribe to:
Post Comments
(
Atom
)
আরো নতুন নতুন Golpo পড়তে ভিজিট করুন
ReplyDeletewww.valobasargolpo2.xyz