Friday, October 26, 2018

I love you পর্ব ৭ (শেষ পর্ব)

1 comment

গল্পোঃ- আই লাভ ইউ

সিজন--৩

(শেষ পর্ব)

আজ সকালে আমরিই আগে ঘুম ভেঙে গেছে।
মানে কেউ ডাকার আগে। বেড এ বসে ইভার কথা
ভাবছি। তখনি অদ্রিতা রুমে ঢুকলো...
- কিরে ভাইয়া আজ তুই উঠে বসে আছিস একাই?
- হুমম
- আমাকে ডাকার আগেই উঠে পড়লি। বাহ বেশ
ভালো,এখন তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নে খেয়ে
তারপর বিয়ের শপিং এ যেতে হবে।
- যা ফ্রেশ হয়ে আসছি।
অদ্রিতা খুশি খুশি মুখে চলে গেল। আমি একটু পর
খাবার টেবিলে গেলাম। সবাই বসে আছে। আমাকে
আম্মু দেখা মাত্রই বললো...
- কিরে তোকে এমন লাগছে কেনো? রাতে
ঘুমাস নাই?
আমি আম্মুর দিকে তাকালাম। আমি সত্যিই রাতে ঘুমাইনি।
কিন্তু আম্মু সেটা বুঝে গেল। এটাই কি আম্মুদের
ভালোবাসা? সন্তান যা করবে তার ভূল কিংবা ভালো
অনায়াসেই বুঝতে পারা।
- কথা বলছিস না কেনো? (আম্মু)
আম্মু কথা শুনে চেয়ারটাতে স্পর্শ করলাম। সবার
দিকে তাকালাম একবার। সবাই খেতে ব্যস্ত। কিন্তু
আম্মু, অদ্রিতা, ইভা আমার দিকে চেয়ে আছে। আমি
জোরে একটা নিঃশ্বাস নিলাম। হুট করেই আম্মুর
দিকে তাকিয়ে বললাম...
- আম্মু অদ্রিতার কাছ থেকে শুনলাম ইভার সাথে
আমার বিয়ে। কিন্তু আমি এ বিয়ে করতে পারবো না।
কথাটি বলার সাথে সাথে সবারই খাওয়া অফ হয়ে
গেল। সবাই বড় বড় চোখে আমার দিকে তাকিয়ে
আছে। আম্মু তো আরো অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে
আছে।
- অবাক হওয়ার কিছু নেই। আমি ইভাকে বিয়ে
করবো না তার কারন, ইভা আমাকে ভালোবাসে না
আর আমিও ইভাকে ভালোবাসি না। এখন বুঝতেই
পারছো দুজনের বিয়ে দিলে কেউ হ্যাপি হবো
না। হয়ত সে অন্য কাউকে ভালোবাসে আর বড়
কথা আমি ঢাকাতে একটি মেয়েকে ভালোবাসি। তাই
ইভাকে বিয়ে করা আমার পক্ষে সম্ভব না। আর
শুনে দেইখো ইভাও হয়ত কোনো একটি
ছেলেকে ভালোবাসে। তোমাদের ভয়ে সে
হয়তবা বলতে পারছে না। তাই না ইভা?
কথাগুলো তাড়াতাড়ি বললাম। আম্মু আমার দিকে রাগি
দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। সবাই বেশ অবাক
হয়েছে। ইভার আব্বু বললো...
- এসবের মানে ভাবি? সব আত্বীয়দের ইনভাইট
করা শেষ। আর গ্রামের সবাই জানে ইভা আর
হৃদয়ের বিয়ে। এখন যদি বিয়ে না হয় তো মান সম্মান
সব শেষ। কেনো এমন করলেন?
- এই যে আংকেল, আম্মু এমন করলো মানে
কী? বিয়ের ব্যাপারে আমাকে আগে কেনো
জানাননি? যদি বলতেন তো এটা আগেই বলতাম।
- বাবুু তুমি না ইভাকে ছোট থাকতেই ভালোবাসতে?
(ইভার আম্মু)
- হিহিহি,,মনে আছে তাহলে সেসব? হুমম বাসতাম।
কিন্তু তারপর কি হয়েছিল? ভালোবাসার দায়ে আমার
দুই গালে চারটা কষে চড়। আম্মুকে আপনাদের
দেয়া অপমান। ইভার দেয়া আমার অপমান। আর
শেষমেশ আমি চলে যায় ঢাকাতে সব মায়া ছেড়ে
তাই না?
মাথায় প্রচুর রাগ উঠে গেছে। তাই রাগে কি যা তা
বললাম কে জানে? তখনি শুনলাম...
- মেজো আম্মু?হৃদয় তো ইভাকে বিয়ে করবে
না বলছে তো আমাদের তানিশা হৃদয়কে
ভালোবাসে যদি....(মৌলি ভাবি)
কথাটি শুনে মাথায় আরো রাগ চড়ে গেল। আম্মু কিছু
বলতে যাবে তার আগেই আমি বেশ জোর
গলাতে বললাম...
- আপনার কি কানের কোনো সমস্যা আছে? একটু
আগে বললাম না যে আমি ঢাকাতে একটা
মেয়েকে ভালোবাসি? আর বিয়ে করলে তাকেই
করবো বুঝেছেন?
কথাগুলো জোরে বললাম। সবাই আরো যেন চুপ
হয়ে গেল। আম্মু তো বেশ অবাক চাহনি দিয়ে
চেয়ে আছে। কারন আজই প্রথমবার আমি আম্মুর
সামনে এতো জোরে আর রেগে কথা বলছি।
আর সেটা আম্মুর বিপক্ষে এসে।
- আম্মু, ভালো থেকো। আমি আজই এখন চলে
যাচ্ছি ঢাকাতে। আর ইভাকে তার সাথেই বিয়ে দিও
যাকে সে ভালোবাসো। সরি আম্মু তোমার
সামনে রাগি ভাবে কথা বলার জন্য। সরি ইভা এন্ড সরি
সবাইকে ভালো থাকবেন।
..
আমি ঢাকার জন্য রওনা হলাম। আম্মু কোনো কথা
বলেনি। আম্মুর পায়ে ধরে সালাম করার সময়
কেঁদে ফেলেছিলাম। তবুও আম্মু কোনো কথা
বলেনি। এর আগেও এমনটা করেছে আম্মু।
সেদিন ইভাকে প্রোপোজ করার দায়ে বাড়ি ছাড়ার
সময় এমন চুপ করে ছিল আম্মু। আর আজো তিনি
চুপ। ইভাদের দিকে তাকিয়ে ছিলাম আসার আগে।
সে আমার দিকে এক দৃষ্টিতে চেয়ে ছিল।
ছোট চাচুর বাসায় আসলাম। দুইতলা বাড়ি। আমার রুম
হতে বাইরের অনেককিছু বেশ সুন্দর ভাবে দেখা
যায়। ছোট আম্মু আমাকে অনেক আদর করে।
এসেই অনাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে
দিয়েছিলাম।
ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে রাতের পরিবেশ দেখছি।
চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। কারন ইভার কথা ভাবছি
এখন। ইভা একবারের জন্য হলেও আমাকে
আটকায়নি। তবে কি সে বিয়েটা আসলেও করতে
চাইনি? আমি তো এসব রাগের মাথায় বলে এসেছি।
কিন্তু সেতো আমাকে একবার আটকাতে পারতো।
কেনো আটকাবে? সে হয়ত আমাকে
ভালোবাসে না। সে এসবই চেয়েছিল। তাই
আটকাইনি। খুব খারাপ লাগছে রাগে যা যা বলেছিলাম তা
সবই সত্য। বিড় বিড় করে বললাম..
"আমার যৌবনে তুমি স্পর্ধা এনে দিলে
তোমার দু’চোখে তবু ভীরুতার হিম।
রাত্রিময় আকাশে মিলনান্ত নীলে
ছোট এই পৃথিবীকে করেছো অসীম।
বেদনা-মাধুর্যে গড়া তোমার শরীর
অনুভবে মনে হয় এখনও চিনি না
তুমিই প্রতীক বুঝি এই পৃথিবীর
আবার কখনো ভাবি অপার্থিবা কিনা।"
কথাগুলো বলতে বলতে রুমে আসলাম। এসে
শুয়ে পড়লাম। ঘুমিয়ে পড়েছি কখন জানিনা। কিন্তু
শরীরে উপর পানি অনুভব করলাম।
চোখ বুজে শুয়ে থেকে বোঝার চেষ্টা করছি
এটা কি হতে পারে? পানি নাকি অন্য কিছু? ছোট চাচুর
বাড়িতে তো কেউ আমাকে পানি দিয়ে ঘুম ভাঙাবে
না। তাহলে কে হতে পারে? চোখে মেলে
তাকিয়ে উঠে বসলাম। আর সামনে যাকে দেখলাম
তাকে দেখে আমার সারা শরীরের লোপ
দাঁড়িয়ে গেল। কারন আমার সামনে ইভা দাঁড়িয়ে। আর
ওর হাতে পানি সহ একটি গ্লাস। চোখ বড় বড় করে
বললাম....
- কি রে তুই এখানে?
- কেনো? তোর সেই প্রেমিকা আসবে নাকি
এখানে?
- মানে তোর তো আজ বিয়ে হবার কথা। তুই
এখানে কেন?
- দেখতে আসলাম তোর জি এফটাকে।
- ওহ,গুড।
- তা দেখাচ্ছিস কখন?
- দেখাবো পরে। আগে বল বিয়ের কি খবর?
- বরই তো নেই বিয়ে হবে কি করে শুনি?
- মানে?
- কিছু না। চল এখন বাড়ির সবাই তোর জন্য বসে
আছে। আম্মু, আব্বু, মেজো আম্মু আব্বু,
অদ্রিতা..
- মানে বাড়ির সবাই এসেছিস?
- হুমম
হায়রে কপাল। সবাই আমার প্রেমিকা দেখতে
আসলো? কিন্ত এখন কোথায় পায় জিএফ? কাল
তো এমনি বলেছিলাম।
..
বহু কষ্টে সবাইকে ম্যানেজ করেছি। তাই সারাদিনই
ব্যস্ত ছিলাম। এখন ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে রাতের
পরিবেশ, ল্যামপোস্টের আলো, গাড়ির শব্দ এসব
চোখে পড়ছে আর শুনছি। ব্যালকনির রেলিং ধরে
দাঁড়িয়ে আছি। তখনি আমার ডান হাতে কারো স্পর্শ
পেলাম। আমি শিতলভাবে চমকে উঠলাম। পাশে
তাকিয়ে দেখি ইভা দাঁড়িয়ে।
- কিরে তুই?
- হৃদয় একটা কথা বলতো।
- হুমম বল।
- আমাকে ভালোবাসিস না তাই তো?
- হুমম। (কথাটি বলতে খুব কষ্ট হলো)
- আর কত মিথ্যে বলবি?
- তোকে মিথ্যে কেনো বলবো?
- এটা চিনিস?
ইভা হাত বাড়িয়ে একটা ডায়েরি সামনে ধরলো। আমি
আরো চমকে উঠলাম। কারন এই ডায়েরি তো
আমারিই। আর সেটা এখন ইভার হাতে? কি করে?
ইভাকে নিয়ে সব লেখা এটাতেই। তার কাছে কি
করে গেল?
- এটা তো আমারিই ডায়েরি?
- যাক তাহলে চিনতে পেরেছিস।
- তোর কাছে কি করে এটা?
- এখানে আসার সময় ভূলে রেখে এসেছিস।
অদ্রিতা সেটা পায় আর এনে আমাকে দেয়।
- ওহ
কথাটি আসতে করে বললাম। তাহলে এখন সব ইভা
জানে যে আমি তাকে আজো ভালোবাসি।
- এখন বল, আমাকে ভালোবাসিস? (ইভা)
-.......
- চুপ কেনো?
- ভালো না বাসার কি আছে? সেই ছোট থাকতে
তোকে ভালোবাসছি। আর এত তাড়াতাড়ি তোকে
ছাড়া অন্য কাউকে কি করে ভালোবাসবো? তুই ছিলি
আমার সবকিছু। কিন্তু তোর কাছে ভালোবাসাটা
আসলে অন্যরকম। আর আমার কাছে ভালোবাসা
হলো মনের অনুভুতি। যার মাঝে কেবল ভালোবাসা
ছাড়া কিছুই নেই। তোকে অনেক ছেলে
বলতে পারে ভালোবাসি। তোর পিছনে অনেক
ছেলে ঘুরতে পারে। তুই সবার থেকে
ভালোবাসা নিয়ে খেলা করতে পারিস। কিন্তু সবার মত
আমি না। আমি সবার মত তোকে ভালোবাসি না। আমি
আমার মত করে তোকে ভালোবাসি। হয়ত তোর
কাছে আজোও এটা অবাক লাগছে। যে সবার মত
আমিও তোকে ভালোবাসি বললাম। দেখ, সব
ছেলেদের মিলিয়ে ভালোবাসা খুজে পাওয়া যায় না।
তোর ইনজয় করার সময় এখনো চলে যায়নি। তুই
সবার ভালোবাসা নিয়ে খেলতে পারিস। কিন্তু
আমাকে নিয়ে খেলিস না প্লীজ। তুই কালই চলে
যাবি। কারন তোকে দেখলে আমি নিজেকে
সামলাতে পারি না। আবারো ভালোবেসে ফেলি। যা
তুই চাস না।।
কথাগুলো বলে থামলাম। ইভা আমার দিকে তাকিয়ে
আছে সেই থেকে। আমি ওর দিক থেকে
চোখ সরিয়ে বাইরের দিকে তাকালাম। তখনি আমার
গাল ধরে টেনে একটা চড় দিল। আমি গালে হাত
দিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। তারমানে ইভা আজো আমাকে
ভালোবাসে না? সেদিনের মত চড় দিয়ে আম্মুকে
যেয়ে বলে দিবে?
- গাধা, গর্দভ, গরু, ছাগল, মহিষ, ভেড়া সব তুই। ঐ শয়তান
তুই সব বুঝিস তা এটা বুঝিস না যে আমিও তোকে
অনেক বেশি ভালোবাসি? তোকে আমি রোজ
ভাবি? তুই যখন তানিশার সাথে কথা বলতি আমার যে কতটা
কষ্ট হতো সেটা কি করে বোঝাব তোকে?
আমি জানিনা ভালোবাসার মানে কি। তবে তুই অন্য
মেয়েদের সাথে কথা বললে আমার সব কেমন
যেন হয়ে যায়। ইচ্ছে করে তোকে আর
মেয়েটাকে যেয়ে খুন করি।
আর সেদিন তোকে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম তার মানে
এই নই যে আমি তোকে ভালোবাসবো না।
আরে সেসময় কি বুঝতাম ভালোবাসা কি? আর হুট
করে কি ভালোবাসা হয়? ছোট থাকাতে সিদ্ধান্ত
নিতেই তো ভয় করতো। তাই সেদিন তোকে
রাগে পড়ে অনেক কিছু বলেছিলাম। কিন্তু তুই যে
সব ছেড়ে চলে আসবি কে জানত? তুই আসার মাস
খানিক পরই বুঝতে পারলাম তোকে কতটা মিস করি।
তারপর আসতে আসতে তোকে ভালোবেসে
ফেললাম। তুই এখানে ছিলি তবুও তোর খোজ খবর
আমি রাখতাম।
একদিন তোর ছবি নিয়ে নাড়তে নাড়তে ঘুমিয়ে
গেছিলাম। সকালে সেটা তোর আম্মু দেখে
ফেলে আর বুঝে যায় কি হচ্ছে। তারপর থেকেই
তোর সাথে আমার বিয়েটা ঠিক করে নেয়। যা তুই
জানিস না সবাই জানলেও। ভালো তো তুই একাই
বাসতে পারিস তাই না? আমি তো পারি না তাই তো?
রাগ, অভিমান তোর একারই আছে আমার নেই? আমি
তোকে ভালোবাসি এখন নে রাগ দেখা? যা অভিমান
কর। আমার একটা ভুলের জন্য এত কষ্ট দিবি ভাবিই নি
কোনোদিন। ওকে সরি, সেদিনের জন্য। বল কি
শাস্তি দিবি তাই মেনে নিবো।
.
কথাগুলো শুনে আমি তো আকাশ থেকে
পড়লামম। ইভা আমাকেই ভালোবাসতো তা আমি
একটুও বুঝতে পারলাম না? নিজেই নিজেক গাধা বলে
গালি দিলাম। তখনি ইভা বললো..
- কি হল দে কি শাস্তি দিবি?
কিছু বললাম না। কথাটা শেষ করতেই ইভার ঠোটে
সেদিনের মত _______ করলাম। ১০ সেকেন্ড পর
ছেড়ে দিলাম। ইভা লজ্জাতে মাথাটা নিচু করে নিল।
আসতে করে বললাম.."এটাই তোর শাস্তি"
ইভা মুচকি হাসলো। সে কিছু বললো না। আমি এক
হাত দিয়ে ওকে আলতো করে জড়িয়ে নিলাম।
সে আমার কাধে মাথা রাখলো। দুজনেই বাইরের
পরিবেশ দেখছি। মনে মনে বললাম..
"আমারো পরানও যাহা চায়,,তুমি তাই, তাই গো...."
শুরু হোক নতুন কোনো দিগন্ত তৈরির কল্পগাঁথুনি।
(আমি অসুস্থ, কানে কম শুনছি,অবশ্য আগে
মোটেও শুনতে পারছিলাম না।আর ব্যথা,পানি পড়া
এগুলো তো আছেই।দোয়া প্রার্থী সকলের
কাছে,আর একটা কথা I_LOVE_YOU series এ
আপনাদের পাওয়া গেলেও অন্য গল্পে
আপনাদের পাওয়া যায় না কেনো???এইটা কিন্তু খারাপ
লাগার মতো বিষয়)
নিজে ভালো থাকুন,অপরকে ভালো রাখুন,,ধন্যবাদ
সবাইকে।
.
(সমাপ্ত

1 comment :

  1. আরো নতুন নতুন Golpo পড়তে ভিজিট করুন
    www.valobasargolpo2.xyz

    ReplyDelete