সিনিয়র রাগি গার্লফ্রেন্ড
৫ম পর্ব
হাতে মাত্র ১৫ দিন সময় আছে আর এই ১৫ দিনে যেভাবেই হোক রাত্রীকে রাজি করাতেই হবে...
আমি সেদিন আর ক্লাস করলাম না।বাসায় চলে।গেলাম।বাসায় যাবার পর আম্মু আমাকে বলে আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে গেলাম।
আড্ডা বললে ভুল হবে ওদের সাথে প্লানিং করতে গেলাম রাত্রীকে কিভাবে রাজি করানো যায়।
আমি ওদের কাছে গিয়ে সব কিছু খুলে বললাম।
রাফিঃদোস্ত আমি আগেই বলেছিলাম অই মেয়ে কিছুতেই পটবে না।তোর বাপের ভাগ্য ভালো এখনো সাইফ ভাইয়া চুপ করে আছে,,,কে জানে এখনো তোকে কিছু বললো না অন্যসব ছেলে হলে তো এতোক্ষন হসপিতালে ভর্তি থাকতো...
আমিঃআরে ধুর কেও কি চাই নাকি তার বোনের জামাই হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকুক।
নাজমুলঃতা কি করবি ভাবছিস কিছু?
আমিঃআরে শালা যদি ভেবে থাকতাম তাহলে কি তোদের কাছে আসতাম নাকি??
রাফিঃএক কাজ কর তুই রাত্রীর জন্য ফুল না নিয়ে টেডিবিয়ার নিয়ে যা।
আমিঃকেনো টেডিবিয়ার দিয়ে কি হবে??
রাফিঃদোস্ত অনেক মেয়ে টেডিবিয়ার খুব ভালোবাসে..
আমিঃতুই শিউর তো??
রাফিঃআমি কিন্তু সব মেয়ের কথা বলি নাই..
আমিঃআচ্ছা দোস্ত তাহলে কাল ওটাই নিয়ে যাবো...
আরো অনেকক্ষণ আড্ডা দিলাম।রাত করে বাসায় আসলাম।সেদিনের মত ডিনারর করে ঘুমিয়ে পড়লাম।
পরদিন কলেজে যাবার আগে রাত্রীর জন্য একটা টেডিবিয়ার কিনে নিয়ে গেলাম।জানিনা নিবে কিনা....
আমি টেডিবিয়ার হাতে দাঁড়িয়ে আছি তখন রাত্রী আসলো।
আমিঃহাই কেমন আছো?
রাত্রীঃহ্যা ভালো আছি পিচ্চি।
আমিঃএই নাও এটা তোমার জন্য এনেছি...
রাত্রীঃআমি বাচ্চা নাকি যে টেডিবিয়ার দিয়ে খেলা করবো..
আমি;নাও না প্লিজ,,
রাত্রীঃআমার ক্লাস আছে আমি গেলাম।আর শুনলাম তুমি নাকি আমাকে পটানোর জন্য ১৫ দিন সময় নিয়েছে ১৫দিন কেনো ১৫ বছরেও তুই আমাকে পটাতে পারবি না।
আমিঃআর যদি পটিয়ে নিতে পারি...
রাত্রীঃকোনো দিনো নাহ।রাত্রী আমাকে পাশ কাটিয়ে চলে গেলো।
বজ্জাত মাইয়া একবার রাজি হয়ে গেলে কি এমন হতো?ভালো লাগে না ধুর আমি ক্লাস না করে ক্যাম্পাসে গাছের নিচে বসে ছিলাম।
তখন দেখি রাত্রী কার সাথে যেনো কথা বলছে উফফ ও অন্য কোনো ছেলের সাথে কথা বললে আমার গা এতো জ্বলে কেনো?আমার এতো রাগ হয় কেনো?
আমি আর বসে না থেকে রাত্রীর কাছে চলে গেলাম।
আমিঃঅই তুমি এখান থেকে চলো..
রাত্রীঃকেনো যাবো কেনো?আর তুই আমাকে এখান থেকে চলে যাবার কথা বলার কে?
আমি;চলো বলছি..রাত্রীকে তখন হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলাম।
রাত্রী;অই তুই আমাকে এখানে নিয়ে এলি কেনো?
আমিঃতুমি অন্য কোনো ছেলের সাথে একদম কথা বলবা না...
রাত্রীঃকেনো বললে কি হবে?
আমিঃআমার কষ্ট হয় তুমি অন্য ছেলেদের সাথে কথা বললে...আর সেদিন যে ছেলেটার সাথে কথা বলছিলে অই ছেলেটা কে??
রাত্রীঃআমার বান্ধবীর বয়ফ্রেন্ড ছিলো।।
আমিঃও তোমাকে কি দিয়েছিলো..
আর বলো না ওদের ঝগড়া হয়েছে তাই রাগ কমানোর জন্য একটা রিং দিয়েছে..
আমিঃসত্যি অই ছেলেটা তোমার বান্ধবীর বয়ফ্রেন্ড তো?
রাত্রীঃহ্যারে বাবা,,আর ধুর তোকে আমি এতো কথা বলছি কেনো তুই আমার কে তুই তো আমাকে কেও হস না তাহলে তোকে এতো কথা বলে লাভ কি??
রাত্রী আবার চলে গেলো..
নাহ এই মেয়ে এইভাবে পটবে না।অন্যকোনো রাস্তা ধরতে হবে
২য় ৩য় ৪র্থ দিন এমনি চলে গেলো...রাত্রীকে তার যায়গা থেকে একটুও সরাতে পারলাম না।আমার খুব ভয় হচ্ছে রাত্রীকে যদি ১৫ দিনের মধ্যে রাজি করাতে না পারি তাহলে তো রাত্রীকে চিরোদিনের জন্য হারাতে হবে...কিন্তু আমি রাত্রীকে হাড়াতে পারবো না।আমি যে রাত্রীকে অনেক বেশি ভালোবেসে ফেলেছি অনেক বেশি.
৫ম দিন আজকে আমার প্লান রাত্রীকে নিয়ে কোথায় ঘুরতে যাবো শুনেছি রাত্রী নাকি ঘুরতে খুব পছন্দ করে।
কিন্তু রাত্রী আমার সাথে যাবে তো?
অই তো রাত্রী আসছে আজ ফুল তুল কিচ্ছু আনি নাই।
রাত্রীঃকিরে এখানে এইভাবে হা করে
আছিস কেনো?
আমিঃরাত্রী চলো একটু ঘুরে আসি...
রাত্রীঃকিন্তু আমার তো আজকে একটা গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস আছে...
আমিঃতাহলে তুমি ক্লাস করে আসো আমি অপেক্ষা করছি..
রাত্রীঃনা চল ঘুরেই আসি অনেক দিন হলো কোথায় ঘুরতে যাওয়া হয়না।
রাত্রী এতো সহজে রাজি হয়ে যাবে আমি ভাবতেও পারি নাই।
আমি একটা রিক্সা ডাক দিলাম।রাত্রী বললো সে নাকি আলাদা রিক্সাতে যাবে।😭😭😭
মন খারাপ হয়ে গেলো...ভাবছিলাম একসাথে যাবো ভালোবাসার কথা বলবো আরো অনেক কথা বলবো কিন্তু সেটা আর হবে না।
আরো একটা রিক্সা ডাকা হলো আমি সামনের রিক্সাতে আর রাত্রী আমার পেছনে।
কেমন লাগে এইভাবে কেও ঘুরতে যায়।
রাত্রী আগে থেকেই একটা যায়গার নাম বলে দিয়েছিলো আমরা যথা স্থানে এসে নামলাম।
অনেক ঘুরাঘুরির পর খেতে বসলাম।
খাওয়া শেষ..
আমি;নাও বিল দাও..
রাত্রীঃআমি কেনো বিল দিবো?তুই আমাকে ঘুরাতে নিয়ে এসেছিস বিল তুই দিবি..
আমিঃএহহ তুমি আমাকে পিচ্চি বলো আর তুমিই বলো পিচ্চি হয়ে আমি কিভাবে এতোগুলো টাকা দিবো??
রাত্রীঃহয়ছে আর বলতে হবে না,,,ধান্দাবাজ
আমি;তোমার হবু স্বামীকে তুমি যা খুশি তাই বলতে পারো এতে আমার কি?
রাত্রীঃকিহ তুই আমার হবু স্বামী খুবব মজা পাইলাম তোর কথা শুনে ধন্যবাদ ফ্রিতে এমন বিনোদন দেবার জন্য...
আমিঃকিহহহহ এটা তোমার কাছে বিনোদন মনে হয়??
রাত্রীঃতা নয়তো কি?তোর মাথা পুরো গেছে...
আমিঃগেলে গেছে আমি তোমাকে ভালোবাসি...
রাত্রীঃকিন্তু আমি বাসি না তুই থাক আমি গেলাম।
আরে যাহ রাত্রী তো রাগ দেখিয়ে চলে গেলো...
আমিও আর সেখানে বসে না থেকে বাসায় চলে আসলাম।
দিন যত যাচ্ছে আমার মনের ভয় আরো বেশি করে বাসা বাধছে।
৮ম দিন
আমিঃরাত্রী তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে...
রাত্রীঃভালোবাসি ছাড়া বাকি সব কথা বলতে পারিস।
আমিঃনাহ আমি ভালোবাসার কথাই বলবো রাত্রী বিশ্বাস করো তোমাকে আমি অনেক ভালোবাসি অনেক..
রাত্রীঃউফফ তোর এই কথা শুনতে শুনতে আমার কান পচে যাচ্ছে।তুই কেনো বুঝতে পারছিসস না আমি তোকে কোনো দিন ভালোবাসবো না।
আর এরপরর থেকে আর ভালোবাসি ভালোবাসি বলবি না,,,আমার একদম ভালো লাগে না।
রাত্রী আবার চলে গেলো।মন চায় পা দুটো ভেঙে ফেলি।কিন্তু রাত্রীর পা ভেঙে ফেললে আমার কি হবে।অই রকম একটা হাতিকে নিয়ে ঘুরে বেড়াতে হবে তাহলে তো আমি শেষ।😁😁😁 যদিও রাত্রী মুটকি নয়।😜😜😜
আমি সেখান থেকে চলে এলাম।
কি করে যে রাজি করাবো মেয়েটাকে কিছুতেই কিছু ভেবে পাচ্ছি না।
আমি সাইফ ভাইয়ার কাছে চলে গেলাম।
আমিঃভাইয়া তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
সাইফঃহ্যা বল কি বলবি?
আমিঃতোমার বোনের মন কি দিয়ে বানানো বলো তো এতোদিন ধরে ঘুরে যাচ্ছি কিন্তু রাজি হবার কোনো নাম গন্ধ নেই।
সাইফঃআরে লেগে থাক...দেখবি ঠিক রাজি হয়েছে।আর যদি রাজি না হয় তাহলে তুই রাত্রীর আশা ছেড়ে দে।অন্য কোনো মেয়েকে পছন্দ কর।
আমিঃনাহ ভাইয়া আমার অন্য কোনো মেয়েকে চাই না😭😭
সাইফঃকিন্তু রাত্রী রাজি নাহলে তো কিছুর করার নেইই।
আমিঃভাইয়া কিছু একটা প্লান দাওও না।
সাইফঃআরে ধুর আমি এই বিষয়ে অনেক কাচা,,কিন্তু আমার এক বন্ধু ছিলো ও এই বিষয়ে অনেক অভিজ্ঞ ছিলো ও থাকলে তোকে কিছুনা কিছু একটা প্লান ঠিক দিতে পারতো...
আমিঃছিলো মানে এখন সে কোথায় গেছে??
সাইফঃবিয়ে করে বউ বাচ্চা নিয়ে প্রবাস জীবন পালন করছে।
আরো কিছু কথা হলো কিন্তু কামের কাম কিছু হলো না।
১০ ম দিন আমি কলেজে গেইটে ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি তখন কোথা থেকে যেনো একটা মেয়ে এসে বললো ভাইয়া ফুলটা আমাকে দিবেন??
আমিঃকেনো আপনি ফুল দিয়ে কি করবেন??
মেয়েঃআমার একটা ছেলেকে খুব পছন্দ ভাবছি আজকে বলে দিবো।আপনি তো রাত্রী আপুকে রোজ ফুল দেন কিন্তু আপু তো নেয় না।আজকেও নিবে না,,কিন্তু আপনার এই ফুল একটা নতুন রিলেশন শুরু করতে সাহায্য করবে..
আমি ভাবলাম ফুল নিয়ে যদি মেয়েটার উপকার হয় তবে তাই হোক।
আমিঃএই নিন ফুল নিন।
মেয়েটাকে ফুল দিয়ে দিলাম।
মেয়েঃভাইয়া আমি তো প্রপোজ করতে পারি না,,একটু শিখিয়ে দিবেন?
আমিঃপ্রপোজ তো আপনি করবেন তাই না?
মেয়েঃহ্যা আমিই তো করবো..
তাহলে তো আমি কিছু করতে পারছি না,তবে বলে দিতে পারি কিভাবে প্রপোজ করতে হয়...
মেয়েঃআচ্ছা বলেই দেন..
আমিঃপ্রথমে হাটু গেড়ে বসবেন,,তারপ…………………………………………………………………>>>
বুঝেছেন কি করতে হবে?
মেয়েঃআগে একবার ট্রাই করে দেখি?
আমিঃহ্যা দেখুন
তারপর মেয়েটা আমার সামনে হাটু গেড়ে বসে ফুল এগিয়ে দিয়ে বললো I love you!!!!
আমি মেয়েটার হাত থেকে ফুল নিতেই যাবো তখন কই থেকে যেনো রাত্রী ছুটে এলো।আর ফুল গুলো ফেলে দিলো।
রাত্রীঃএই খানে এই সব কি হচ্ছে?(চিৎকার করে)
আমিঃদেখতেই তো পাচ্ছো কি হচ্ছে এতে চিৎকার করার কি আছে??
রাত্রীঃআমার ইচ্ছা হয়েছে তাই করেছি,,আর অই মেয়ে তুই কে রে মামুনকে ফুল দিচ্ছিলি কেনো?
মেয়েঃআসলে আপু আমি একজনকে ভালোবাসি..তাকে প্রপোজ করবো।
রাত্রীঃতাকে প্রপোজ করবি তো কর না মামুনেক ফুল দেওয়ার কি আছে?
মেয়েঃআসলে আমি তো জানিনা কিভাবে প্রপোজ করতে হয় তাই ওনার কাছ থেকে একটু শিখছিলাম।
রাত্রী;ও কি শিক্ষক নাকি যে শিখবি যা এখন এখান থেকে ভাগ
রাত্রীর কথা শুনে মেয়েটা চলে গেলো...
রাত্রী এতো রেগে আছে কেনো?
আমিঃএই তোমার কি হয়েছে?আমার দিকে অমন ভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?
রাত্রীঃকিছু না আমি গেলাম...আর শুন কোনো মেয়ের সাথে একদম মিশবি না..
এই কথা বলের ফুরুৎ
আমি তো ভাবতেও পারছি না কি হয়ে গেলো।আর রাত্রীর এতো রাগ করার কি আছে।
এইভাবে গেলো আরো ২ দিন
১৪ তম দিনে আমি খুব ভয় নিয়ে কলেজে যাচ্ছি।
রাত্রীকে যদি আজকে রাজী না করাতে পারি তাহলে হাতে থাকবে আর মাত্র একদিন
আর ১৪দিন যা না হয়েছে তা একদিনে কিভাবে হবে
এতোবার ভালোবাসি ভালোবাসি বলেছি কিন্তু কোনোবার রাত্রী
বলে নাই সে আমাকে ভালোবাসে...
আমি কলেজে গিয়ে দেখি রাত্রী একটা ছেলের সাথে আবার হেসে হেসে কথা বলছে...
আমার আবার অনেক রাগ হলো
আমি গিয়ে রাত্রীকে ঠাস করে একটা থাপ্পড় দিলাম।কেনো দিলাম সেট আমি নিজেও জানিনা।
বলতে লাগলাম এই তোমাকে না বলেছি কোনো ছেলের সাথে কথা বলবা না,,এর পরেও কেনো ছেলেদের সাথে কথা বলো।আমার ভালো লাগে না এইসব।
রাত্রীও আমাকে থাপ্পড় দিয়ে বলতে শুরু করলো
এই তোর প্রব্লেম কি শুনি সব সময় কেনো আমাকে এই ভাবে বিরক্ত করিস।আর তোর ভালো লাগা না লাগা তো আমার দেখার বিষয় না।
দয়া করে দয়া করে তুই আর আমাকে এইভাবে বিরক্ত করবি না।
তোর সময় ছিলো ১৫ দিন কাল শেষ হচ্ছে সেটা।আর কালকেও যদি তুই আমাকে ভালোবাসি বলিস আমার উত্তর হবে না।
সো আমাকে আর এইভাবে বিরক্ত করবি না।
আমিঃআমি কি সত্যি তোমাকে অনেক বিরক্ত করি??
রাত্রীঃহ্যা অনেক.
আমিঃআমাকে তুমি একটুওও ভালোবাসো না?
রাত্রীঃনাহ ভালোবাসি না তোকে আমি ভালোবাসি না।
রাত্রীর এই কথা শুনে নিজের চোখের পানি আর আটকে রাখতে পাড়লাম না
বললাম আচ্ছা আর তোমাকে বিরক্ত করবো না ভালো থেকে তুমি অনেক ভালো থেকে
চাইলেও আর আমাকে খুঁজে পাবে না
রাত্রীঃএতোদিনে তাহলে মাথায় বুদ্ধি হয়েছে,,
To Be Continue
Friday, October 26, 2018
সিনিয়র রাগি বউ পর্ব ৫
Subscribe to:
Post Comments
(
Atom
)
আরো নতুন নতুন গল্প, কবিতা,জোকস পড়তে চাইলে আমার সাইটে ভিজিট করুন
ReplyDeletewww.valobasargolpo2.xyz