Friday, October 26, 2018

দ্বিধা ১৫ ,১৬ পর্ব

No comments

#দ্বিধা
তাবাস্সুম রিয়ানা
১৫
.
.
.
-চলুন নাস্তা খাবেন আরহান কে উদ্দেশ্যে করে বললাম।
-হুম চলো(আরহান)
-তিনজনে মিলে নাস্তা করে নিলাম।স্যার বলছিলাম কি ইনায়াকে স্কুলে ভর্তি করানোর দরকার।বড় হচ্ছে তো ও।
-ইয়ে ইনায়া স্কুলে ভর্তি হবে ইয়ে খুশিতে নেচে উঠলো ইনায়া।
-ঠিক বলছো।কাল অফিস থেকে ওকে নিয়ে বাসায় চলে এসো।আমি ফরম আনতে যাবো(আরহান)
-ইনায়া চলো মাম্মা তোমাকে আজ কিছু শিখাবো(মাহিরা)
-কি শিখাবে(ইনায়া)?
-গেলেই দেখতে পাবে।ওকে নিয়ে কিছু ১-৫ পর্যন্ত লেখা প্র্যাক্টিস করাচ্ছে মাহিরা তবে সেটা ছড়ার মাধ্যমে যেন ইনায়া পড়ালেখাকে মজার বিষয় হিসেবে নেয়।
-দরজার পাশে দাড়িয়ে ওদের দেখছে আরহান।বেশ ভালোই জমেছে দুজনের।মাহিরার পড়ানোর স্টাইলটাও খুব মজার।নিজের রুমে চলে এলাম।একটু চা হলে মন্দ হতো না।শরীরটা কেমন যেন লাগছে। চা এর কথা ভাবতেই পিছন থেকে মাহিরার ডাক পড়লো
-স্যার!!!!!!আপনার চা।ওনার দিকে চায়ের কাপ টি এগিয়ে দিলাম।
-চায়ের কথা তোমাকে বলিনি আমি(অবাক হয়ে)
-আমার জন্য বানাচ্ছিলাম।তাই ভাবলাম আপনাকে ও একটু দেই(মাহিরা)
-ওহ থ্যাংকস।চা টা দরকার ছিলো(কাপটা হাতে নিয়ে)
-তাহলে তো ভালোই হলো।আপনি চা খান আমি ইনায়ার কাছে যাই।দরজার সামনে যেতেই স্যার ডাকলো।
-মাহিরা!!!থ্যাংকস(আরহান)
-কেন?(মাহিরা)
-ইনায়াকে খুশি রাখার জন্(আরহান)
-আপনি জানেন ওকে কতোটা ভালোবাসি আমি।সুতরাং থ্যাংকস বলার কিছুই নেই।আমি আসি।
-ওকে।(আরহান)
-পড়া শেষ করে ইনায়াকে কোলে নিয়ে দোলনায় বসলাম।একটু রিল্যাক্সের দরকার ওর।
-মাম্মা!!!!!!
-হুম(অন্যমনস্ক ভাবে)
-একটা গান শোনাবে?
-গান!!!!!!
-প্লিজ মাম্মা(ইনায়া)
-ওকে।শুনো।গান ধরলাম।
বারান্দার পাশেই ছিলো আরহানের রুম।হঠাৎ কারোর মিষ্টি কন্ঠের গান শুনে উঠে বসলো।জানালা দিয়ে দেখলো মাহিরা ইনায়াকে কোলে নিয়ে দোলনায় বসে গান করছে।মুগ্ধ হয়ে গেছে মাহিরার মিষ্টি কন্ঠে।সত্যি প্রতিটি সকালে এমন একটি মনোমুগ্ধকর কন্ঠে কেউ যদি তার ঘুম ভাঙ্গাতো বিষয়টাই অন্যরকম হতো।আনমনে হাসলো আরহান।
-গান শেষ হতেই মনে হলো কেউ যেন সরে গেল জানালার পাশ থেকে।দ্রুত ইনায়া কে নিয়ে রুমে চলে এলাম।ওকে ঘুম পাড়িয়ে শুয়ে পড়লাম।নীলের কিছু একটা করতে হবে।যা করবো একাই করতে হবে।কিন্তু কি করবো?পুলিশকে ও জানাতে পারছিনা।আল্লাহ একটা উপায় দেখাও।
চলবে

দ্বিধা
তাবাস্সুম রিয়ানা
১৬
-বিকেল হতেই ইনায়ার আইসক্রিম খাওয়ার বাহানা শুরু হয়ে গেল।পাপা আইসক্রিম খাবো (আহ্লাদী গলায়)
-পাপা এনে দিচ্ছি।তুমি থাকো।
-না আমরা বাহিরে যেয়ে খাবো।
-বাহিরে যেয়ে খাওয়ার কি হলো?(আরহান)
-মুখ ফুলিয়ে কাঁদোকাঁদো ভাবে এনে আমি বাহিরে যেয়ে আইসক্রিম খাবো।
-উফ ইনায়া......ওকে চলো(আরহান)।
-ইয়ে থ্যাংক ইউ পাপা।মাম্মা যাবেনা?
-রেডি হতে বলো।
-ওকে।দৌড়ে মাহিরার কাছে এলো ইনায়া মাম্মা!!!!!!
-কি হলো মামনি?(মাহিরা)
-পাপা বলেছে রেডি হতে?????
-কেন?????
-আইসক্রিম খেতে যাবো তাই।চলো না মাম্মা প্লিজ।
-তোমরা খেয়ে আসো।মাম্মার মাথায় ব্যাথা করছে।
-প্লিজ মাম্মা প্লিজ।
-চলো মাহিরা এতো করে বলছে ইনায়া(আরহান)।দরজার কাছে দাড়িয়ে কথা গুলো বলছিলো আরহান।
-আরহানের দিকে তাকিয়ে মাহিরা বিষম খেল।কালো পান্জাবীতে নায়কদের ও হার মানিয়েছে আরহান।ইয়ে মানে.....
-চলো মাহিরা।ইনায়া খুশি হবে।
-ওকে রেডি হয়ে নেই।আলমারি খুলে একটি কালো নেটের শাড়ি বের করে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়লাম।
-চলো ইনায়া পাপা তোমাকে রেডি করিয়ে দেই।
-ওকে(ইনায়া)
-বাথরুম থেকে বের হয়ে মাহিরা খেয়াল করেনি আরহান কে।পিছনে হাত দিয়ে ব্লাউজের ফিতা লাগানোর চেষ্টা করছে।ইনায়া টুলটা নিয়ে আমার পিছনে এসে দাড়িয়ে ফিতাটা লাগিয়ে দাও।
-মাহিরার ডাক শুনে আরহান ড্রেসিংটেবিলের সামনে মাহিরাকে দেখতে পেল।যেকোন শাড়ীতেই মাহিরাকে অসাধারন লাগে।কালো আর লালে একটু বেশিই ভালো লাগে।ধীর পায়ে মাহিরার পিছনে এসে দাড়ালাম।
-আপনি????ইনায়া কই???(মাহিরা)
-নিচে চলে গেল।লাগিয়ে দিচ্ছি(আরহান)
-ওকে।হাত সরিয়ে নিলাম।ওনি লাগাতে শুরু করলো।মাঝে ওনার হাতের স্পর্শ পিঠে লাগছে।শরীর কেঁপে উঠছে।
-হয়ে গেছে।নিচে এসো(আরহান)
-ওকে।ঠোঁটে হালকা একটি লিপস্টিক লাগিয়ে নিচে চলে এলাম।যাওয়া যাক(আরহানকে উদ্দেশ্য করে)?
-ফোন থেকে চোখ সরিয়ে মাহিরা কে দেখল আরহান।সত্যি এ সৌন্দর্যের বর্ননা হয়না।হুম চলো। ইনায়া আসো।
-ইনায়া মাম্মার সাথে আসো।গড়িতে যেয়ে বসলাম।ইনায়া আর আমি প্যাসেঞ্জার সিটে,আরহান ড্রাইভিং করছে।
-লুকিং গ্লাসে চোখ পড়তেই একটি গাড়িকে দেখতে পেলাম।বেশ কিছুক্ষণ ধরে গাড়িটি ফলো করছে আমাদের।আমার গাড়িটি ছিলো ডাবল গ্লাসের সামনের টি বাদ দিয়ে সব গুলো গ্লাস অফ করে দিলাম।বিভিন্ন গলি ঘুরে ঘুরে যেতে লাগলাম।পিছনের গ্লাস দিয়ে গাড়িটিকে দেখতে পাচ্ছি।
-স্যার সব ঠিক আছে তো????
-হুম সব ঠিক আছে।কিছু বললাম না ইনায়া ভয় পেতে পারে।বেশ কিছুক্ষণ গাড়িটিকে ঘুরানোর পর গাড়িটিকে আর দেখতে পেলাম না।গ্লাস গুলো খুলে দিলাম।একটি আইসক্রিম পার্লারের সামনে এসে থামলাম।চলে এসেছি।
-একটি টেবিলে তিনজন বসলাম।ইনায়া কোন ফ্লেভার খাবে???(মাহিরা)
-চকোলেট।
-আর মাহিরা তুমি????
-ভ্যানিলা চকোলেট মিক্স।
-ওকে।ওয়েটার এক কাপ কফি আর দুটো আইসক্রিম। একটা চকলেট ফ্লেভার আর ভ্যানিলা চকোলেট মিক্স।
-ওকে স্যার(ওয়েটার)
-স্যার তখন গাড়িতে কি হয়েছিলো?(মাহিরা)
-না তেমন কিছুনা।পরে বলবো।
-ঠিক আছে।ঘরে ফিরে ডিনার করতে করতে ১২টা বেজে গেল।ইনায়া কে ঘুম পাড়াচ্ছি স্যারের রুমে।
-মাহিরা!!!!!
-এখন কি শুয়ে পড়বে???(আরহান)
-কেন বলুন তো???
-বারান্দায় এসো।কথা আছে।
-ওকে ঘুমপাড়িয়ে আসছি।কফি খাবেন??
-দিলে ভালোই হয়(আরহান)।মুচকি হেসে চলে এলাম।
-ওনি দোলনায় বসে আছেন।স্যার আপনার কফি।
-ওহ থ্যাংকস।ঘুমিয়েছে ইনায়া???
-জি।দোলনার একপাশে বসলাম।কি বলবেন????
-কয়েকদিন ধরে মনে হচ্ছে কেউ ফলো করছে।আজ একটি গাড়ি দেখতে পেলাম।অনেকসময় পর্যন্ত ফলো করছিলো।আমাদের সাবধান হতে হবে।
-(বুঝতে বাকি রইলো না নীল যে ফলো করছিলো।আর হাতে হাত রেখে বসে থাকা যাবেনা।কালই দেখা করবো।কি চায় ও?বাবা কে মেরে কি ও শান্তি পায়নি ও???)
-কিছু বলছো না যে(আরহান)?
-কি বলবো?সাবধানে থাকবেন।
-হুম।ও চলে যেতে নিলেই নিজের অজান্তেই হাত টেনে ধরলাম।একটু বসবে????
-মাথা নেড়ে সম্মতি জানিয়ে পাশে বসলাম।ওনি এখন ও হাত ছাড়েন নি।হাত দুটো থর থর করে কাঁপছে।
চলবে

No comments :

Post a Comment