Friday, October 26, 2018

I love you পর্ব ২

1 comment

গল্পোঃ- আই লাভ ইউ ৩

(পর্ব---০২)

কথাগুলো বলে আর না দাড়িয়ে সোজা ভিতরে
চলে আসলাম। সবাই যে যার মত যেখানে ইচ্ছে
বসে গেল। আমি প্যান্ডেল এর এক কর্ণারে
বসতেই সেই মেয়েটি এসে সামনে দাঁড়ালো।
- আরে টাকাওয়ালি যে।
- এই আপনি কে বলেন তো?
- কেনো ঘটক হবেন নাকি? নাম ঠিকানা জানতে
চাচ্ছেন?
- আপনি না একটা বান্দর। সব প্ল্যান মাঠে নষ্ট করে
দিলেন। আসলে টাকা নেয়ার কোনো ইচ্ছেই
ছিল না। ইচ্ছে ছিল বরযাত্রী মানে আপনাদের
বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখবো তিন ঘন্টা কিন্তু সেটা
আর হলো? আপনি না একটা খরগোস।
কথাটি বলেই মেয়েটি মাথাটা জোরে ঘুরতেই ওনার
লম্বা কালো চুল আমার চোখে এসে লাগলো।
আমি আহহ বলে চোখ হাত দিতেই উনি আবার ঘুরে
আমার দিকে তাকালেন।
- কি হল মি.
- আপনার চুল লেগেছে চোখে। এতবড় চুল
কেনো?
- ইসস,,সরি সরি কই দেখি ফু দিয়ে দিই।।
- না না...
কথাটি বলার আগেই উনি হাত সরিয়ে ওনার চিকন হাত
দিয়ে আমার চোখ ধরে ফু দিতে লাগলো। একটু
পরেই দেখলাম ঠিক হয়ে গেছি।
- হয়ে গেছে মিস..
- তানিশা নাম আমার, কন্যার খালাতো বোন।
- ওহ আমি হৃদয়, বরের চাচাতো ভাই।
- ওহ খুব ভালো, এখন থাকেন বাই।
কথাটি বলেই তানিশা মেয়েটি চলে গেল। আমি মুচকি
হাসলাম। তখনি কাজিনগুলো এসে বললো..
- ভাইয়া হাসির কি হল? (অপু)
- কই হাসছি?
- অপু তোদের ভাইয়া না খুব মস্তিতে আছে।
ডিস্ট্রাব করিস না। (ইভা)
- এহ বললেই হলো? দেখো ভাইয়া ভাবি বানিয়ে
ফেল না আবার। আমরা কিন্তু ভাবি ঠিক করে রাখছি
(অদ্রিতা)
- বলা তো যায় না অদ্রিতা, দেখলি না উনি কত হাসি হাসি
মুখে কথা বললো। চোখ ধরে ফু দিয়ে দিল।।দুর
থেকে মনে হচ্ছিল যেন কিস করছে। তোর
ভাইয়া তো সেটা আবার খুব পারে। (ইভা)
আমি হাবার মত ওদের কথা শুনছি। ইভা এখানে আসার
আগে হাসি খুশি ছিল কিন্তু হঠাৎ রেগে গেল
কেনো সেটাই তো বুঝতে পারছি না। আর
বুঝেই বা আমার কি আসে যায়? আর আমি যায় করি তার
কি?
- কিরে ইভা রেগে আছিস নাকি? (আমি)
- কেনো রাগবো? আমি কি রাগ করতে পারি? যা
তো তানিশার কাছে যা।
- ওকে যাচ্ছি।
ইভা কিছু বলতে যাবে তার আগেই তানিশাকে খুজে
বের করলাম। ইভাকে দেখিয়ে দেখিয়ে তানিশার
সাথে কথা বললাম। ইভা রাগে ফুসছে। তার মানে ইভা
কি আমাকে ভালোবাসে?
..
বিয়ের অনুৃষ্ঠান শেষ। আমরা রওনা দিলাম বাড়ির
উদ্দেশ্যে। কাজিনসহ আমিও আবার সেই একই
গাড়িতে উঠলাম। তবে এইবার শয়তানগুলো প্লান
করে আমার ইভার পাশে বসিয়ে দিল। আমি না পারছি
নড়তে না পারছি কিছু বলতে। যখন রাস্তার ঝাকিতে
নড়ে উঠছি তখনি দুজনেই গায়ে স্পর্শ লাগছে আর
দুজনেই কেমন কেপে উঠছি।
ইভা একবারো আমার দিকে তাকায়নি আমিও তাকায়নি।
কোনো কথাও বলেনি ও। আমিও কিছু বলিনি। এমনি
কথা বলতে ভয় লাগে ওর সাথে আম্মুকে যদি কিছু
উলটা পাল্টা বলে দেয়। তো খবর আছে আমার
আবার।
..
বাড়িতে যখন আসলাম তখন রাত দশটা বাজে। সবাই
এসে খেয়ে দেয়ে বাড়ির উঠানটাতে বসলো
বর্ণদিয়ে গান গান খেলার জন্য। মাঝখানে কাট
জ্বালিয়ে আগুন করা। সবাই গোল হয়ে বসে
আছে। আমি রুমে শুয়ে আছি তখনি শুনলাম..
- ভাইয়া বাইরে চল, গান গান খেলবে অক্ষর দিয়ে।
(অদ্রিতা)
- নাহ যাবো না ভালো লাগছে না।
- যদি না যাস তো আম্মুকে বলবো তুই তানিশার
সাথে টাংকি মারছিলি।
- ঐ তুই বোন না শাকচুন্নি বলতো?
- চুপ খরগোশ, সরি ইভা ভাবির থেকে শিখেছি।
- কিহ বললি..? আরি থাপড়িয়ে তোর দাঁত ফেলবো
বুঝলি?
- আম্মুকে ডাকবো? আর আসার সময় গীটার নিয়ে
আসবে।
কথাটি বলেই চলে গেল শয়তান। অগত্যা যাওয়ার
ইচ্ছে না থাকতেও যেতে হচ্ছে। কাধে গীটার
ঝুলিয়ে যেতেই দেখি সবাই মাঝখানে আগুন
জ্বালিয়ে বসে আমার জন্য অপেক্ষা করছে।
চোখ গেল ইভার দিকে। পাশে তাকিয়ে চোখ
আটকে গেল। দেখি সাইফ বসে আছে।
- কেমন আছিস আবির? (সাইফ)
- হুমম আছি, তুই?.
- ভালো, তা দেখা করস নাই কেনো? আজ
বিয়েতে তো দেখাও করিস নাই একবারো।
- ওনার কি আর দেখার সময় আছে কত বিজি মানুষ উনি।
(ইভা)
- সবাই চুপ থাকেন, মেয়েরা প্রথম গান শুরু করবে
আর লাষ্টের অক্ষর দিয়ে আপনাদের গান গাইতে
হবে। যারা পারবে না তারা হারবে। (অদ্রিতা)
- হুমমম হয়ে যাক আজ লড়াই। তবে আবির ভাইয়া কিন্ত
গীটার বাজাবে। (মাহিম)
..
সবাই যে যার মত গান গাইতে লাগলো একটু একটু
করে। ইভা দুইটা গাইলো। ওর কন্ঠটা যে এত সুন্দর
আমি জানতাম নাতো। আজই প্রথম ওর কন্ঠে গান
শুনলাম। বেশ মিষ্টি গলা ওর। সবাই গান গাইলেও আমি
বাকি এখনো। কারন গীটার বাজাতে পারলেও গান
পারিনা।
- খেলা এখানেই শেষ। কারন অনেক রাত
হয়েছে। (অদ্রিতা)
- হুমম,,তবে ভাইয়া কিন্তু গান বলেনি। (শিমি)
- আমি গান পারি না আপু।
- না আমরা গান শুনবো। (অপু)
- গান না কবিতা আবৃতি করে বলতে হবে হৃদয়
ভাইয়াকে। (মাহিম)
- ইয়েস, কবিতা, কবিতা, কবিতা,।
সবাই একসাতে বলতে লাগলো। আমি ইভার দিকে
তাকালাম। দেখি আমার দিকে তাকিয়ে আছে ও। আমিও
এতক্ষনে ওকে দেখছিলাম।
- কি হল বলো। (মাহিম)
- পারি না রে।
- চুপপ,,কবিতা ছাড়া কিছুই শুনতে চাই না। (অদ্রিতা)
- ওকে ওকে বলছি..
একটু নিরব হয়ে ইভার দিকে তাকালাম। অদ্রিতা পাশে
থাকায় কানে কানে বললো..
"এত তাকাস না ভাইয়া, ভাবি তো উড়ে যাচ্ছে না"
"চুপ কর বান্দরনি"
সবাই চুপ হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি
নিরাবতা ভেঙে বললাম...
"কবিতা না এটা, তবে আমার আমার কাছের মানুষটার
জন্য কিছূ অব্যক্ত কথা। বলি..."
- অবশ্যই (সবাই একসা্থে)
- আচ্ছা বলছি...
"আজকাল তুমি খুব অপ্রতিরোধ্য হয়ে যাচ্ছো।
কিছুতেই তোমাকে আমি প্রতিহত করতে পারছি না।
আমার মগজের প্রতিটা কোনায় তোমার অগাধ
যাতায়াত।
চব্বিশ ঘন্টায় ছত্রিশরকম কাজে বারবার তুমি এসে
গোল বাধিয়ে ফেলছ তুমি আমার মনমহনে।
আমার ভাবনার অবিচ্ছিন্ন ছন্দ হয়ে ছন্দহীন করে
তুলছো আমায়।
আমি সেখান হতে পালাবো বলে মনস্থির করেছি।
তুমি আমাকে তোমার কথার চাতুর্যে বেঁধে
কিছুতেই আমায় পালাতে দিতে চাইবে না জানি। কিন্তু
পন্ডিত অজয়ের একটি গান আছে, শুনেছো কী?
"যত পাহারাই দাও না, মন পালাবেই।
আমি জানি, আমি তোমাকে ছাড়া এক মুহুর্ত থাকতে
পারবো না। এটাও জানি আমি তোমাকে আমার করে
পাবো না। তাই মনস্থির করেছি তোমাকে নিয়ে
পালাবো বলে। যাবে তুমি আমার সাথে সৌন্দর্যের
দেবি আফ্রোদিতির রাজ্যে?"
.
প্রথম কথাগুলো আকাশের দিকে তাকিয়ে বললেও
শেষে কথাগুলো ইভার দিকে তাকিয়ে বললাম। এটা
নিশ্চিত যে কথাগুলো ইশারাতে ইভাকেই বলেছি।
মানে ইশারায় প্রোপোজ করলাম। কথার সাথে
পরিবেশটাকে মানিয়ে কথার ছন্দ অনুযায়ী টুংটাং করে
স্লোমুশনে গিটার বাজিয়ে গেছি। শেষ হতেই
সবাই হাত তালি দিল। ইভা বাদে।
- বাব্বাহ..আমার ভাইটা তো দেখি ঢাকায় থেকে বেশ
রোমান্টিক হয়ে গেছে। (অদ্রিতা)
- দেখতে হবে না কার দুলাভাই? (অপু)
- ঐ থামবি তোরা? থাপড়িয়ে দাঁতগুলো সব ফেলে
দিবো। (আমি)
- তোরা থাক আমি ভিতরে গেলাম। (ইভা)
আমাদের কথোপকথন এ ইভা চলে গেল। আমি ওর
চলে যাওয়ার দিকে তাকালাম। বাড়ির মধ্যে ঢোকার
আগে ইভা একবার পিছন ফিরে তাকাল। আমিও তাকালাম।
তখনি ইভা মুচকি একটি হাসি দিল।
- ভাইয়া, এত তাকাস না বুঝলি? ভাবি তো আর উড়ে
যাচ্ছে না। আর তুমি যে কথাগুলো ওকেই
বলেছো তা বেশ বুজতে পারছি। (অদ্রিতা)
- ছেমড়ি, তখন থেকে একই কথা বলেই যাচ্ছিস। ঐ
কিসের ভাবি রে? (আমি)
- না বলবো না। আম্মু মানা করে দিয়েছে
তোমাকে কিছু না বলতে।
- মানে কি? আমাকে বল কিছু তো একটা আছে
তোদের মাঝে।
- বেশি বকবক না করে রুমে যাও। আমরাও যাচ্ছি।।
আমাকে কিছু না বলার সুযোগ দিয়ে সবাই চলে
গেল। আমি হাবার মত খালি চেয়ে চেয়ে দেখছি।
কি যে হচ্ছে কিছুই মাথায় আসছে না। সবকিছু কেমন
গোলমেলে লাগছে। এখানে আসতেই ইভা নিজ
হতে কথা বলা, কপট রাগ দেখানো। অন্য
মেয়েদের সাথে কথা বা তাকালে রাগ করে গাল
ফোলানো। আবার কাজিনরা ভাবি বলা এসবের মানে
কি? কিছুই মাথায় আসছে না।
তুমি রহস্যের আবরণে আবৃত এক অস্পষ্ট
মন্ত্রমোহনী।আমার অস্তিত্বের প্রতি স্ফীত
এক যন্ত্রের প্রতিধ্বনি

1 comment :

  1. আরো নতুন নতুন Golpo পড়তে ভিজিট করুন
    www.valobasargolpo2.xyz

    ReplyDelete