Friday, October 26, 2018

না বলা ভালোবাসা পর্ব ৯

1 comment

❤️না বলা ভালোবাসা❤️
পর্বঃ-০৯
লেখিকাঃ-সামা
তানজিল চলে যাওয়ার পরই সামা তানজিলের বলে যাওয়া কথাটা নিয়ে ভাবতে থাকে।কিন্তু আগা মাথা কোনকিছুই না খুজে পেয়ে সে তার কাজে চলে যায়।দেখতে দেখতে দুপুর হয়ে আসে।টেবিলে খাবারগুলো রাখতে রাখতেই হঠাত করে কলিং বেল বেজে উঠে।সচারাচর এই সময় বাসায় কেউ আসে না আর বুয়া তো অনেক আগেই কাজ করে চলে গেছে তাহলে এই অসময়ে আবার কে।এইসব নিয়ে ভাবতে ভাবতে কলিং বেলটা আবার বেজে উঠলো।এখন একটু ভয়ই করছিলো সামার।এমনিতেও তানজিলের অফিসে যাওয়ার পর সারাদিন তাকে একা একাই বাসায় থাকতে হয়।বিয়ের পর শুধু সাতদিন পর্যন্তই তানজিলের বাবা মা আর বোন এইখানে ছিলো তারপর সবাই চলে গেছে।এরপর থেকেই সামা আর তানজিল একা থাকে।হঠাত করে সামার মনে পরে গেলে সকালের কথা।তানজিল তো বলে গেছিলো যে দুপুরে সে আসবে তাহলে ঐ মনে হয় আসছে।আর দেরি না করে সামা তারাতারি যেয়ে দরজাটা খুলে।দরজা খুলার সাথে সাথেই তানজিল বলে উঠে....................................
তানজিলঃ-এত দেরি লাগলো যে দরজা খুলতে
সামাঃ-সরি একটু কাজে ব্যস্ত ছিলাম
তানজিলঃ-ওহহ............তোমাকে বলছিলাম না যে একটা সারপ্রাইজ আছে তোমার জন্য
সামাঃ-হমম বলছিলা তো
তানজিলঃ-তাহলে কিছু জিজ্ঞেস করলা না যে
সামাঃ-তুমি তো কত কথাই বলো
তানজিলঃ-জি জি
সামাঃ-আচ্ছা কি সারপ্রাইজ সেইটা তো বলো এখন
তানজিলঃ-আচ্ছা আগে চোখ বন্ধ করো
সামাঃ-আবার চোখ কেন বন্ধ করতে হবে????
তানজিলঃ-করতে বলছি করো এত প্রশ্ন কেন
সামাঃ-আচ্ছা নাও চোখ বন্ধ করলাম এখন বলো
সামা চোখ বন্ধ করার সাথে সাথে তানজিল তিথিকে সামার সামনে এনে দাড় করায়।তারপর দরজাটা বন্ধ করে সামাকে চোখ খুলতে বলে আর চোখ খুলার পর সামার খুশি দেখে কে।চোখ খুলেই সে এক চিৎকার দিয়ে বলে........................
সামাঃ-তিতিথিথিইই...............
তিথিঃ-হমম ভাবি আমি
সামাঃ-আল্লাহ তুমি সত্যি আসছো?????
তিথিঃ-নাতো কি মিথ্যা আসবো????
সামাঃ-আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না
তিথিঃ-চিমটি দিয়ে দেখাবো নাকি..................(কথাটা বলেই তিথি সামার হাতে জোরে করে একটা চিমটি দেয়)
সামাঃ-আআউউচচ...........................
তিথিঃ-কি এবার তো বিশ্বাস করছো নাকি আরাকটা দিতে হবে????
সামাঃ-না ননোদিনী বিশ্বাস করছি
তিথিঃ-অনেক মিস করছি তোমাকে আমি ভাবি...............আব্বু আম্মুও অনেক মিস করে তোমাকে
সামাঃ-আমিও তোমাদের অনেক মিস করি...............সারাদিন বাসায় একা একা থাকতে আমার আর ভালো লাগে না
তানজিলঃ-আমাকে কেউ মিস করে নাই??????
তিথিঃ-না তুমি তো পুরাতন তোমাকে কেন কেউ মিস করবে????
তানজিলঃ-ওহহ এই কথা
তিথিঃ-জি একদম
সামাঃ-আচ্ছা আব্বু আম্মু কই????
তিথিঃ-আব্বু আম্মু তো আসে নাই
সামাঃ-কেন?????
তিথিঃ-আব্বু আম্মুর ঢাকায় বলে ভালো লাগে না
সামাঃ-তাই বলে কি আসবে না.........কয়দিন থেকে যেত এসে
তিথিঃ-আসবে গো ভাবি.........এখন তারাতারি আমকে কিছু খেতে দাও তো অনেক জোরছে খুদা লাগছে
সামাঃ-হমম তোমরা দুইজন ফ্রেশ হয়ে নাও আমি খাবার বেরে দিচ্ছি
তিথিঃ-আচ্ছা ভাবি আমি ফ্রেশ হয়ে আসি............অনেক গল্প জমে আছে দাড়াও এসে সব বলতেছি
সামাঃ-ওকে
এরপর তানজিল আর তিথি ফ্রেশ হয়ে এসে খাবার টেবিলে বসে অনেক গল্প করতে থাকে।সামার বাসায় একা থাকতে ভালো লাগে না এই কথাটা তানজিল খুব ভালো করেই জানতো যার জন্যই সে তিথিকে এইখানে নিয়ে আসছে।বাবা মাকে মানাতে একটু কষ্ট করতে হইছে তানজিলের কিন্তু অবশেষে তারা মানছে।এখন তিথি এইখানে থেকেই লেখাপড়া করবে।খাবার টেবিলে বসে সবাই এই নিয়েই কথা বলতেছিলো এমন সময় হঠাত করেই তিথির চোখ সামার ঠোঁটের উপর যেয়ে পরলো আর তিথি বলে উঠলো.....................
তিথিঃ-ভাবি তোমার ঠোঁটে কি হইছে...............এইভাবে লাল হয়ে আছে কেন আর অনেকটা ফুলেও তো গেছে দেখতেছি
তিথির কথাটা শুনার সাথে সাথেই তানজিলের বেশম ঠেকে যায়।আর সামাও সবকিছু গোলায়ে ফেলে যে কি উত্তর দিবে এখন সে তিথিকে।এমনিতেই মেয়েটা যে পরিমানে চালাক।তাই সামা তিথির ধ্যান অন্যদিক নেওয়ার জন্য বলে.....................
সামাঃ-তিথি তোমার না চিংড়ি মাছ অনেক পছন্দ কই নিচ্ছো না তো
তিথিঃ-উফফ ভাবি আগে বলো তো তোমার ঠোঁটে কি হইছে আর ভাইয়াকে পানি দাও.........ওর আবার হঠাত করে বেশম ঠেকলো কেন কে জানে............আগে তো কখনো এমন হইতে দেখি নাই
তানজিলঃ-আচ্ছা তুই খাওয়ার টাইম এতো কথা বলিস কেন?????
তিথিঃ-তোমারা কথা বললে দোষ নাই আর আমি বললেই দোষ
সামাঃ-বাদ দাও তো তোমার ভাইয়ার কথা তুমি............পাগলে কি না বলে ছাগলে কি না খায়
তিথিঃ-দারুণ কথা বললা তো ভাবি
সামাঃ-তাই নাহ
তিথিঃ-কিন্তু তোমার ঠোঁটে কি হইছে ঐটা তো বললা না
সামাঃ-তেমন কিছু না এলারজির জন্য এমন হইছে মনে হয়
তিথিঃ-ওহহ
সামাঃ-আচ্ছা এখন তারাতারি খাও গল্পও তো করতে হবে নাকি
তিথিঃ-হমম ভাবি খাচ্ছি
খাওয়া দাওয়া শেষ করে সারাটা বেলা সামা আর তিথি গল্প করে কাটায়।সামা যেইখানে যেইখানে যায় তিথিও তার পিছনে পিছনে সেই জায়গায়ই যায়।এইদিকে তানজিল যে ঘরে একা বসে বোর হচ্ছে সেই কথা সামার মাথাতেও নেই।তিথিটার জন্য তানজিল সামাকেও ডাকতে পারতেছে না।তারপর এইভেবে মনকে শান্তনা দেয় যে রাতে তো তার সামাকে সে কাছে পাবেই থাক একটু সময় তিথির সাথে।রাতে খাওয়া দাওয়া শেষ করে সামা তিথির ঘরের দিক যেতে নিলেই তানজিল বলে..................
তানজিলঃ-প্লিজ যা গল্প বাকি আছে কালকে করো এখন তিথিকে একটু ঘুমাতে বলে তুমি তারাতারি রুমে আসো............আমি ওয়েট করতেছি
সামাঃ-হমম দেখি
তানজিলঃ-কোন দেখা দেখি না.........তুমি বুঝো না কেন আমি............
তিথিঃ-বউয়ের সাথে এত কিসের কথা শুনি............(হঠাত করে রুম থেকে বের হয়ে তানজিলকে কথাটা বলে তিথি)
তানজিলঃ-তোর সেইটা শুনতে হবে কেন.........যা তারাতারি শুয়ে পর
তিথিঃ-তুমি শুয়ে পরো আজকে আমি ভাবির সাথে ঘুমাবো
তানজিলঃ-কিহহ
তিথিঃ-জি...............ভাবি চলো তো দেখি..................
কথাটা বলেই তিথি সামার হাত ধরে তাকে রুমে নিয়ে যায় আর তানজিল বেচারা মন খারাপ করে নিজের রুমে চলে যায়।রুমে এসেই তিথি পেট ধরে হাসতে শুরু করে।তিথির এমন হাসি দেখে সামা কিছুটা অবাক হয়ে যায় আর তিথি সামার ফেস দেখেই বুঝতে পারে যে তার ভাবি খুব অবাক হচ্ছে তার এমন কান্ড দেখে তাই সে বলে............
তিথিঃ-দেখছো ভাবি তোমার সাথে ঘুমাবো এই কথাটা শুনে আমার ভাইয়ের মুখটা কেমন ফ্যাকাশে হয়ে গেলো এক সেকেন্ডে
সামাঃ-(লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে ফেলে)
তিথিঃ-আমি তো মজা করেই বলছি কথাটা...............বেচারা আমার ভাইটা সত্যি ভেবে নিছে এখন যাও তারাতারি
সামাঃ-তোমার কোন কিছু লাগলে আমাকে ডাক দিও কেমন
তিথিঃ-ওকে ভাবি.........গুড নাইট
সামাঃ-হমম গুড নাইট
এরপর সামা নিজের রুমে চলে আসে কিন্তু তানজিল ওয়াশরুমে থাকায় তাকে দেখতে পায় না।তাই সামা দরজাটা বন্ধ করে এসে বেড ঠিক করতে থাকে।এমন সময় তানজিল ওয়াশরুম থেকে বের হয়।সামাকে দেখে তার চোখে মুখে যেন একরাশ খুশি ফুটে উঠে।তারাতারি করে তানজিল হাতের তাওয়ালটা সোফার এক পাশে রেখে সামার কাছে এসে বলে........................
তানজিলঃ-তোমার না তিথির সাথে ঘুমানোর কথা
সামাঃ-তোমার বোন কেমন চালাক তুমি জানো না...............ও তোমার মুখের এক্সপ্রেশন দেখার জন্যই এই কথা বলছে
তানজিলঃ-যাক আসছো তো তুমি আমি তো ভাবছি আজকে আমার বউকে ছারাই আমার ঘুমানো লাগবে
সামাঃ-জি জি
তানজিলঃ-একটা বালিশ কেন............তোমার টা কই.........তিথির রুমে রেখে আসছো নাকি????
সামাঃ-আমার বলা এত কথা তোমার মনে আছে আর এইটা মনে নাই যে আমার বালিশ হবে আমার বরের বুক
তানজিলঃ-মনে আছে তো
সামাঃ-তাহলে?????
তানজিলঃ-আচ্ছা দাড়াও লাইটটা অফ করে আসি
এরপর তানজিল লাইট অফ করে এসে একটা বালিশের উপর মাথা রাখে আর সামা তানজিলের বুকের উপর মাথা রাখে।তানজিল সামাকে পরম ভালোবাসায় নিজের বুকের সাথে আগলে ধরে।একটুখন পর সামা মুখ তুলে তানজিলকে বলে...............
সামাঃ-তোমার মুখের এই চাপ দাড়িগুলো না আমার অনেক ভালো লাগে...............কমও না আবার বেশিও না একদম পারফেক্ট
তানজিলঃ-তাই নাকি...........
কথাটা বলেই তানজিল আবার সেইদিনের মত সামার উপরে উঠে সামার গলায় মুখ লুকায়।দুইজনের নিঃশ্বাসই আবার আস্তে আস্তে ভারি হতে থাকে।দুইজনি আবার দুইজনের মধ্যে নিজেদেরকে বিলিন করতে থাকে।তানজিলের ঠোঁটের প্রতিটা ছোঁয়াই সামার মনের মধ্যে এক ধরনের মাতাল লাগানোর অনুভুতি সৃষ্টি করে আর সামার শরিরের মিষ্টি গন্ধে তানজিল আরোও গভীরভাবে নিজেকে ডুবাতে থাকে.................................

1 comment :

  1. আরো নতুন নতুন Golpo পড়তে ভিজিট করুন
    www.valobasargolpo2.xyz

    ReplyDelete