Friday, October 26, 2018

সিনিয়র রাগি বউ পর্ব ৬ (শেষ পর্ব)

1 comment

সিনিয়র রাগি গার্লফ্রেন্ড
৬ষ্ঠ পর্ব. last part
আমি রাত্রীর কথা শুনে সেখান থেকে চলে এলাম।এতোদিনকে কি রাত্রী আমাকে একটুও ভালোবাসেনি।
আমি কি রাত্রীর যোগ্য না...হ্যা সেটাই হবে আমি রাত্রীর যোগ্য না।নাহ আর করবো না রাত্রীকে ডিস্টার্ব আমি চলে যাবো এই শহর থেকে অনেক দূরে চলে যাবো..আমি বাসায় গিয়ে আম্মুকে বললাম
আমিঃআম্মু এখানে আমার পড়ালেখা একদম ভালো হচ্ছে না,,আমি নানু বাসায় গিয়ে পড়ালেখা করতে চাই...
আম্মুঃকিন্তু বাবা কেনো?
আমিঃআমি এতো কেনোর উত্তর দিতে পারবো না,,আমি আজকে রাতেই নানা বাসায় চলে যাবো তুমি না হলে আব্বু আমাকে দিয়ে আসো।আর যদি সেটা না পারো তাহলে আমাকে বলে দাও আমি একাই চলে যাবো..
আম্মুঃআরে আরে তুই এতো রাগ করছিস কেনো..যেতে চেয়েছিস যাবি..কিন্তু কাল গেলে হয়না...
আমিঃনাহ আমি আজকেই চলে যাবো থাকবো না আর এই শহরে...
তারপর আম্মু আর কিছু বলতে পারলো না।আমি আমার জামা কাপড় গুলো গুছিয়ে নিতে লাগলাম।
আব্বু অফিস থেকে চলে আসছে,,আব্বু আম্মু দুজনই যাবে আমার সাথে।
সেদিন রাতেই আমরা কুমিল্লা চলে গেলাম।
রাত্রীকে ছাড়া জানি অনেক কষ্ট হবে কিন্তু থাকতে হবে যে আমাকে একদম ভালোবাসে না তাকে কেনো মনে রাখতে যাবো??
পরদিন সকালে রাত্রী কলেজে গিয়ে দেখলো মামুন আজকে আর তার জন্য ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে নেই।
রাত্রিঃহ্যা এতোদিন পাগলের বুদ্ধি হয়েছে আমাকে ডিস্টার্ব করা তাহলে ছেড়ে দিয়েছে... আজ থেকে আমি অনেক ভালো থাকতে পারবো অনেক।
অন্যদিকে মামুনের রাত্রীকে দেখতে খুব ইচ্ছা করছে রাত্রীর সাথে কথা বলতে ইচ্ছা করছে..কিন্তু মামুন নিজেকে বার বার বোঝাচ্ছে যে তোকে চায় না তাকে কেনো মনে করে কষ্ট পাবি ভুলে যা তাকে...
মামুনকে তার নানুর বাসার ওখানকারি একটা কলেজে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হলো।আর পরদিন মামুনের আব্বু আম্মু ঢাকাতে চলে আসলো।
অন্যদিকে
সাইফঃকিরে রাত্রী দুদিন হলো মামুনকে দেখছি না কিছু হয়েছে নাকি?
রাত্রীঃভাইয়া সেটা আমিও জানিনা,,গত দুইদিন ধরে কলেজে আসে না।আর এলাকাতেও দেখতে পাচ্ছি না।
সাইফঃতুই ওকে ভালোবাসিস না...
ভালোবাসার কথা শুনে রাত্রীর বুকের মধ্যে কেমন জানি করে উঠলো আজ দুদিন হলো তাকে আর কেও ভালোবাসি ভালোবাসি বলে বিরক্ত করে না।একদম বিরক্ত করে না।
রাত্রী কিছু বলতে পারছে না।
সাইফঃআচ্ছা আমার কাজ আছে আমি গেলাম।আর মামুনের সাথে দেখা হলে আমার সাথে দেখা করতে বলবি ভালো বুদ্ধি ছেলেটার
রাত্রী;আচ্ছা ভাইয়া বলবো...
রাত্রী ওর রুমে চলে গেলো..
যাবার পর সেদিনের কথা মনে পড়ে গেলো...
যেদিন রাত্রী জামা চেঞ্জ করেছিলো আর মামুন সেটা দেখে নিয়েছিলো রাত্রীর মুখ লজ্জায় লাল হয়ে গেলো...
রাত্রী এক কল্পনার জগতে হারিয়ে গেলো।যেখান সে সবাইকে খুজে পাওয়া গেলেও মামুনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না।রাত্রীর মন খারাপ হয়ে গেলো...
রাত্রী মামুনের কথা মনে করতে লাগলো,,আর কখনো হাসছে কখনো কান্না করছে কিন্তু কেনো এমন করছে সেটা সে নিজেও জানে না।
অন্যদিকে মামুনের অবস্থা আরো খারাপ তার ইচ্ছা করছে ছুটে এসে রাত্রীকে সে দেখবে কিন্তু সে সেটা পারছে না।রাত্রীর কথা গুলো যখন মনে করে মামুন অমনি সব ভুলে যায়।আর তার কান্না চলে আসে অনেক সময় নিজের অজান্তে কান্না করে..
একদম একা থাকে কারো সাথে মিশতে ভালো লাগে না মামুনের।
৩য় দিন
রাত্রী আজ কলেজে গিয়ে দেখলো সেই দিনের সেই মেয়েটা একটা ছেলেকে কি সুন্দর ভালো প্রপোজ করছে।
দেখেই রাত্রীর মামুনের কথা মনে পড়ে গেলো..
রাত্রী ভাবছে পাগল টা আমাকেও এইভাবে প্রপোজ করতো।কিন্তু পাগল গেলো কোথায় আবার এসে যদি প্রপোজ করে তাহলে হ্যা বলে দিবো..
রাত্রীর এখন কিছু ভালো লাগে না।সবসময় মনে মনে মামুনকে খুজে বেড়ায়...
রাত্রী এখন রাতে ঘুমাতে পারে না।সব সময় মামুনের কথা মনে পড়ে
রাত্রীঃপাগল তুই হাড়িয়ে গেলি নাকি?
কিছুদিন ধরে তোর কোনো দেখা পাচ্ছি না।পাগল আমার একবার আয় না তোকে আমিও ভালোবাসি
এই সব ভেবেই রাত্রীর রাত কেটে যায়।
রাত্রী এখন খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিছে।
কিছু একটা খুব মিস করে।
প্রতদিন কলেজে যায়য় এই আশা নিয়ে পাগলাটা তার জন্য ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে...
কিন্তু এখন আর কেও তার জন্য ফুল হাতে দাঁড়িয়ে থাকে না।প্রতিদিন সকালে কলেজে যাবার পর রাত্রী নিজের অজান্তেই কেঁদে দেয়।
১০ দিন পর মামুন নিজেকে অনেকটা গুছিয়ে নিয়েছে।
এখন আর সে আগের মত কষ্ট পায় না।হ্যা রাত্রীর কথা তার মনে পড়ে কিন্তু আগের মত না।
নিজেকে অনেকটাই গুছিয়ে নিয়েছে মামুন।
আর অন্যদিনে রাত্রী প্রায় পাগল হয়ে গেছে...
মামুনের কথা ভেবেই তার দিন চলে যায়।অনেক যায়গারে খুঁজেছে কিন্তু মামুনকে কোথায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।সাহস করে মামুনদের বাসায় ও যেতে পারছে না।
একদিন রাতে রাতে রাত্রী যখন মামুনকে মিস করছিলো তখন ডাইরি বের করে কিছু লেখতে লাগলো।কান্না করছিলো আর লেখছিলো কখন যে রাত্রী ঘুমিয়ে গেছে রাত্রী নিজেও জানে না
সাইফ রাত্রীর গেলো দেখলো রাত্রী ঘুমিয়ে আছে,,চোখ বেয়ে পানি পরেছে সেটা অনেক ভালোভাবে বোঝা যাচ্ছে।
সাইফ লক্ষ্য করলো ডাইরীতার দিকে
সেটা নিয়ে পড়তে শুরু করলো
লেখা ছিলো অভিমানী পাগল আমার
জানিনা তুমি আমাকে ছেড়ে কোথায় হারিয়ে গেছো আমি এটাও জানিনা তোমাকে কবে আবার আমার কাছে ফিরে পাবো।
তবে বিশ্বাস কর এইবার যদি তোমাকে আমি ফিরে পাই একদম হারাতে দিবো না।
জানো আমি এখন কোনো ছেলের সাথে কথা বলি না।তুমি বলতে না তোমার অনেক কষ্ট হয় তার জন্য আমি এখন সবাইকে ছেড়ে দিছি।আমার এখন ভালো লাগে না।প্রতিদিন কলেজে যায় এই আশা নিয়ে তুমি হয়তো আমার জন্য ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছো...কিন্তু আমাকে প্রতিদিন নিরাশ হতে হয়...
আমার তোমাকে ছাড়া অনেক কষ্ট হচ্ছে।আমি বুঝতে পারি নাই যখন তুমি
আমারর কাছে ছিলে আমি তোমাকে কত ভাবে এড়িয়ে গেছি।জানো আমি সেই দিন গুলো মি করি তোমার পাগলামি গুলো মিস করি...
প্লিজ আমার কাছে একবাএ ফিরে এসো একবার ভালোবাসি বলো আমিও তখন চিৎকার দিয়ে বলবো ভালোবাসি তোমায় আমি অনেক ভালোবাসি...
আর লেখবো না অনেক কষ্ট হচ্ছে আমার
ইতি তোমারর সিনিয়র পাগলি
ডাইরি পড়ে সাইফ কিছুক্ষণ হাসলো
আর বললো পাগলি বোন আমার যখন কাছে ছিলো তখন মুল্য বুঝলি না।এখন দূরে চলে গেছে এখন কষ্ট পাচ্ছে।
কিন্তু আমি তোকে আর কষ্ট পেতে দিবো না
সাইফ তখনি গাড়ি নিয়ে চলে গেলো...
প্রথমে মামুনদের বাসায় গিয়ে জানলো মামুন কোথায় আছে তারপর চলে গেলো।রাত ছিলো তাই সেদিন আর কিছু করলো না।
মামুন পরদিন যখন কলেজে যাচ্ছিলো সাইফের চ্যালা গুলো মামুনকে ধরে ফেললো।
আমি;আরে আমাকে এমন ভাবে ধরেছেন কেনো?আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?
বাচাও বাচাও আমাকে মেরে ফেললো।বাচাও
কিন্তু কেও আমাকে বাচাতে এলো না।এদিকে তো আমি ভয়ে ৫--৬ বার হার্ট এর্টাক করেছি...
আমার চোখ বেধে রাখছিলো গুন্ডা গুলো...
আমাকে আবার গাড়ি থেকে নামালো হলো।তারপর তারাই আমার হাত ধরে কোথায় জেনো নিয়ে যাচ্ছিলো।
আমার চোখের বাধন খুলে দেওয়া হলো...
আরে এটা তো সাইফ ভাইয়াদের বাসা কিন্তু আমাকে এইখানে ধরে আনা হলো কেনো??
হঠাৎ সাইফ চাই ডাকতে শুরু করলো
রাত্রী রাত্রী কই তুই দেখ তোর জন্য কাকে নিয়ে এসেছি?
কোথা যেনো রাত্রী চলে এলো
আমাকে দেখে তো একপ্রকার দৌড়ে আমার কাছে চলে এলো।তারপর আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
আরে এই মেয়ে করে কি পাগল হয়ে গেছে নাকি??
রাত্রীঃএই তুমি আমাকে একা করে কোথায় চলে গেছিলে?জানো আমার কত কষ্ট হচ্ছিলো।
আমি তো তোমার জন্য পাগলল হয়ে যাচ্ছিলাম।
আমিঃকেনো আমার জন্য কেনো কষ্ট হবে?
রাত্রীঃভালোবাসি তোমাকে অনেক ভালোবাসি...
আমিঃআমিও ভালোবাসি এই বলে আমিও জড়িয়ে ধরলাম
সাইফঃএই সব যদি
আলাদা কোনো স্থানে করা হতো তাহলে মনে হয় ভালো হতো..
রাত্রী আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললো
ভাইয়া আমি বিয়ে করবো...
আমিঃকিহহ তুমি আমাকে রেখে অন্য কাওকে বিয়ে করবে😭😭😭
রাত্রীঃসেটা কখন বলেছি?আমি তোমাকেই বিয়ে করবো!!
আমিঃকিন্তু আমি তো ছোট পিচ্চি
রাত্রীঃসমস্যা নাই আমি বড় করে তুলবো
আর কি বলবো আমার তো ইচ্ছা একটা সিনিয়র বউ করার সুযোগ যখন পেয়েছি কাজেই লাগাই....
তারপর দুই পরিবারের সম্মতিতে আমাদের বিয়ে হয়ে গেলো।
বাসর ঘরে
রাত্রী খাটে বসে আছে আর আমি খাটের পাশে দাঁড়িয়ে আছি...
রাত্রীঃঅই তুমি দাঁড়িয়ে আছো কেনো?
আমিঃআমার ভয় করছে...
রাত্রীঃদাড়াও এখনি সব ভয়কে দূর করে দিচ্ছি
তারপর রাত্রী বিছানা থেকে নেমে
আমাকে ধাক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলে দিলো।
তারপর রাত্রীর মুখ ধিরে ধিরে আমার দিকে আসতে লাগলো আস্তে আস্তে আস্তে একদমম ইতিহাসের কাছে চলে আসছি
আজ গেলাম
ধন্যবাদ সবাইকে
সমাপ্ত

1 comment :

  1. আরো নতুন নতুন গল্প, কবিতা,জোকস পড়তে চাইলে আমার সাইটে ভিজিট করুন
    www.valobasargolpo2.xyz

    ReplyDelete