Friday, October 26, 2018

দ্বিধা পর্ব ৩২

No comments

দ্বিধা
তাবাস্সুম রিয়ানা
৩২
-কেবিনে এসে টেবিলের জোরে ব্যাগ রাখলো মাহিরা।মাথা জ্বলছে ওর।কারন টা জানা নেই।
-মাম্মা কি হয়েছে?(ইনায়া)
-ইনায়ার কথায় ঘোর ভাঙ্গলো মাহিরার।না মামনি কিছুনা।খাবে কিছু?(মাহিরা)
-না।
-খিদে লাগেনি?(মাহিরা)
-না মাম্মা।
-ওকে।বসে থাকো।মাম্মা কাজ করি।
-ওকে।
-আরহানের কেবিনের দিকে চোখ যাচ্ছে মাহিরার।(কে জানে কি করছে আরহান?আর ওই কি নাম যেন অনামিকা না টনামিকা কি করছে ঐখানে?যা ইচ্ছে করুক আমার কি?)লাঞ্চ টাইম হয়ে এলো তবু আরহানের আসার নাম নেই।একবার কি যেয়ে দেখে আসবো?
-আরে জানোনা নুহাশ অনেক বদলে গেছে।কিন্তু ওর লুচ্চামি টা আগের মতোই আছে(আরহান)।
-সত্যি???(অনামিকা) হাহাহাহা
-হা হা হা।দরজা খোলার শব্দ পেয়ে সামনে তাকাতেই দেখি মাহিরা দাড়িয়ে আছে।আরে মাহিরা তুমি?
-(আমি এসেছি এতো অবাক হওয়ার কি আছে?মনে হয় অসময়ে দেখে ফেলেছে এমন ভান করছে)স্যার লাঞ্চ টাইম হয়ে গেল।
-ওহ।মাথা থেকে সরে গেছে।সরবেইনা কেন?এতো প্রিয় বান্ধুবীকে পেয়েছি কতো বছর পর(আরহান)।
-হ্যা মাহিরা জানো তোমার বর রোমিও ছিলো কলেজে(অনামিকা)
-মিথ্যা হাসি দিলো মাহিরা।স্যার এবার চলুন।ইনায়ার খিদে পেয়েছে(মাহিরা)।
-ওহ চলো।অনামিকা তুমি আসছোনা কেন?
-আজ না আরহান(অনামিকা)।
-আরে চলো তো।অনামিকার হাত ধরে টেনে ক্যান্টিনে নিয়ে যেতে লাগলো আরহান।
-ইনায়া চলো মা ক্যান্টিনে যাই(আরহানের দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে)।
-Something is burning Mahira(ঐশি)
-কিছু হচ্ছেনা।চলো(রাগী গলায়)(মাহিরা)
-ওকে ওকে চলো।ক্যান্টিনে যেয়ে দেখি আরহান অনামিকা পাশে পাশে বসে গল্প করছে।খাবার কিনে ওদের সামনে যেয়ে বসলাম ইনায়াকে নিয়ে। ইনায়া কে খাওয়াচ্ছি আর ওদের দেখছি।(খাওয়ার সময় এতো কিসের কথা?)(মাহিরা)
-আরহানের কানের সামনে মুখ নিলো অনামিকা(আরহান তোর বৌ জেলাস ফিল করছে)।
-কানে কানে কি বললো এই মেয়ে?আর কিছু ভাবতে পারলো না মাহিরা ঞ্জানে হারিয়ে ফেলল।
-মাহিরা বলে চিৎকার করলো আরহান।
-মাম্মা(ইনায়া)
-আরহান পানি দে(অনামিকা)।
-হুম। মাহিরার মাথাটা কোলে রেখে মুখে পানি ছিটালো আরহান।
-আস্তে আস্তে চোখ খুলে নিজেকে আরহানের কোলে অাবিষ্কার করলো মাহিরা।আরহান ভ্রু কুঁচকে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।দ্রুত উঠে বসে পড়লো।কি হয়েছিলো?
-তুমি সেন্সলেস হয়ে গিয়েছিলে।শরীর খারাপ লাগলে আগে বলবেনা?(আরহান)
-না আমি ঠিক আছি(মাহিরা)।
-আরহান আমি আসি দোস্ত(অনামিকা)
-ওকে বায়।(আরহান)
-খেয়ে নাও মাহিরা।
-হুম।অফিস শেষে বাড়ি ফিরে এলাম।(সারাদিন মাথায় ঘুরছিলো অনামিকা আরহানের কানে কি বলল?আরহান তো কখনো মাহিরার সাথে এতো হেসে হেসে কথা বলেনি?তাহলে আজ অনামিকার সাথে এতো হাসাহাসি করছিলো কেন?)আমি কেন এসব ভাবছি?
-মাহিরা জেগে আছো?(আরহান)
-জি বলুন?
-চলো ছাদে যাই।সাথে এক কাপ গরম কফি হলে ভালো হয়(আরহান)
-অন্যসময় অন্যরকম লাগলে ও আজ স্বেচ্ছায় আরহানের সাথে কফি নিয়ে ছাদে এলো মাহিরা।দুজনে পাশাপাশি দোলনায় বসলো।আজ প্রথম মাহিরা নিজ থেকেই কথা শুরু করলো আরহান?
-হুম(মাহিরার দিকে তাকিয়ে)
-রাঙ্গামাটি তে মজা হয়েছিলো তাইনা?(মাহিরা)
-হুম।আবার যেতে চাইলে নিয়ে যাবো।মুচকি হাসলো আরহান।
-আপনি লন্ডন কত বছর ছিলেন?
-৩বছর(আরহান)
-ওহ।(মাহিরা কি কথা বলবে বুঝতে পারছেনা।)মা বাবা কে দাওয়াত দেই বাসায়।
-তুমি চাইলে দিবো।
-আবার চুপ হয়ে গেল দুজন।আরহান........হাত দিয়ে থামিয়ে দিলো।
-ওয়েট অনামিকা কল করেছে।ফোন কানে নিয়ে আরহান রেলিং এর কাছে চলে গেল।
-(অনামিকার সাথে কথা বলতে হইলে আমাকে ডাকার কি ছিলো যত্তসব)রুমে এসে ইনায়াকে জড়িয়ে শুয়ে পড়লো মাহিরা।
-২মিনিট কথা বলে পিছনে তাকিয়ে দেখি মাহিরা নেই।চলে গেল কেন এই মেয়ে?হয়ত ঘুম পেয়েছে তাই চলে গেল।নিচে চলে এলো আরহান।আজ আর রুমে না গিয়ে মাহিরার রুমে একটি চেয়ারে ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করতে বসলো আরহান।মাহিরা কে আড় চোখে দেখছে আরহান।নেশা লাগানো চেহারা মাহিরার।বাহিরের বাতাসে ওর মুখের ওপর থেকে চুল গুলো সরে যাচ্ছে।খাটে গিয়ে বসলাম মাহিরার পাশে।আলতো হাতে ঠোঁটের ওপরের চুল গুলো সরিয়ে দিয়ে গালে আলতো করে ঠোঁট ছোয়ালো আরহান।জামার হাতাটা কাঁধ থেকে সরে গেছে।সেখানে চুমো দিয়ে হাত ঠিক করে কম্বল টা গায়ে জড়িয়ে নিজের জায়গায় এসে বসলো আরহান।সারারাত শুধু লুকিয়ে লুকিয়ে মাহিরা কে দেখেছে আর মনে মনে হেসেছে আরহান।
-ঘুম ভেঙ্গে সামনে তাকিয়ে দেখি আরহান চেয়ারে বসে ঘুমোচ্ছে ল্যাপটপ কোলে রেখে।(সারারাত কি এখানে ছিলেন নাকি?)ফ্রেশ হয়ে নিচে গিয়ে নাস্তা বানানোয় মন দিলাম।(এতো রাতে কল করেছিলো কেন অনামিকা?)কিসের এতো কথা?
-মাম্মা গুড মর্নিং (জড়িয়ে ধরলো মাহিরা)
-গুড মর্নিং মামনি।পাপা ব্রাশ করেছো?
-হ্যা......।
-দাঁত দেখা ও দেখি?(ওর সামনে বসলাম)
-ইইইই।
-বাহ অনেক সুন্দর হয়েছে।পাপা উঠেছে?
-হ্যা।ওখানে দেখো(সিড়ির দিকে দেখিয়ে)
-আরহান ঘাড়ে হাত দিয়ে নামছে।
-তুমি বসো।মাম্মা নাস্তা আনছি।
-ওকে.......।
-পাকঘরের কাছে এসে দাড়ালো আরহান।মাথা সোজা করে রেখেছে একে বারে।নাড়ছে ও না।একটু গরম পানি দিও তো মাহিরা।মাথা সোজা করে টেবিলে বসলো আরহান।
চলবে

No comments :

Post a Comment