Friday, October 26, 2018

মিষ্টি ভাবীর দুষ্ট বোন পর্ব ২

No comments

♥গল্পঃমিষ্টি ভাবীর দুষ্ট বোন♥
পাট:২য়
লিখাঃ মেন্টাল মিলন
অবশেষে বিয়ে পড়ানো শেষ হওয়ার পর,
ভাবীকে নিয়ে চলে যাবার সময় ভাবী আর ভাবীর বোনের কান্না দেখে আমার চোখেও প্রায় পানি এসে পরেছিলো তাই এক প্রকার বাধ্য হয়ে বড় ভাইকে বললাম বড় ভাই, ভাবীকে সজিব ভাই নিয়ে যাচ্ছে আমি না হয়... ভাবীর বোন সাথীকে নিয়ে যায়?(মজা করে)
বড় ভাই: আরে এতো ব্যস্ত হইছো কেনো?? বললাম না তোমার ব্যবস্থা করবো। আমি আছি না...বিশ্বাস রাখো আমার ওপর।
আমি:হুম তা তো রাখছিই, কথাটি বলেই গাড়িতে ওঠলাম আস্তে আস্তে সবাই গাড়িতে ওঠলো। আমি গাড়ি থেকে সাথীকে দেখতে থাকলাম, তার অশ্রুশিক্ত চোখগুলো....। গাড়ি ছেড়ে দিছে.......আস্তে আস্তে চলে যাচ্ছে এক পর্যায়ে সাথীকে আর দেখা যাচ্ছে না। তাই সামনের দিকে ঘুরে বসলাম আর ভাবতে লাগলাম, কিভাবে সাথী সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারি। হঠাৎ ভাবীর কথা মনে হলো।হুুম একমাত্র ভাবীর কাছে সব জানতে পারবো, কিন্তু ভাবীকে কথাটি বলবো কিভাবে...একটা উপায় বের করতে হবে আর সকালেই ভাবীর সাথে ফ্রী হতে হবে। এসব ভাবতে ভাবতে দেখি খালাদের বাড়িতে এসে পরেছি।সবাই নতুন বউকে বরন করার জন্য অস্থির হয়ে রয়েছ, তাদের এই গমগমাগম অস্থিরতা দেখে আমার দুচোখ ক্লান্ত হয়ে গেছে, তাই কোনো দেরী না করে সজিব ভাইদের একটা এক্জট্রা রুমে সুয়ে পরলাম। সকাল বেলায় ঘুম থেকে ওঠে দেখি আমার পাশে আরো তিন জন সুয়ে রইছে...মনে মনে ভাবতে থাকলাম এগুলা আবার আসলো কখন। বিয়ে বাড়িতে এই একটায় সমস্যা যেখানেই সুয়ে থাকার মতো একটু ফাকা জায়গা পাবে সেখানেই সুয়ে পরবে।ভাগ্যিস এখন শীতকাল....গ্রীষ্মকাল হলে তো আমার গরমে দফারফা অবস্থা হতো কেননা আমি আবার গরম সহ্য করতে পারি না। অতঃপর আমি বিছানা থেকে ওঠে ভাই,ভাবীকে খুজতে লাগলাম।একি ওরাতো এখনও ওঠেই নি।
সজিব ভাইয়ের ওপর কিছুটা রাগ হতে লাগলো, সে বিয়েই করতে চাইলো না অথচ এখন বউকে ছাড়তেই চাচ্ছে না এবং নিজেও উঠতেছে না। সবই কপাল আর এরই নাম গোপাল। অবশেষে ভাবীর দেখা মিললো কিন্তু একি সব মহিলারাইতো দেখি ভাবীর সাথে বিভিন্ন কথা বলছে...সেখানে আমি গিয়ে কিভাবে ভাবীর সাথে ফ্রী হবো।
সজিব ভাইও দেখি বের হয়ে আসলো, আমি কাছে গিয়ে বললাম ভাই সুস্থ আসেন তো (মজা করে)??ভাই আমার মোনালিসার মতো মুচকি হাসি দিয়ে বাথরুমে গেলো।আমি নিশ্চিত এই হাসিটি যদি ভিন্চি দেখতো তাহলে ছেলেদের জন্য যেমন মোনালিসার পিক তৈরী করে গেছেন ঠিক তেমনি মেয়েদের জন্য সজিব্বা পিক তৈরী করতো.....আর মোনালিসার হাসির মতো সজিব্বা হাসিও বিখ্যাত হয়ে যেত। যাইহোক ভাবীকে এখন মোটামোটি ফ্রী দেখাচ্ছে এখনি সুজোগ,....হাই ভাবী কেমন আছেন????
----ভাবী: হুম ভালো, আপনি কেমন আছেন??
---আমি: হুুম ভালো। তা রাত কেমন কাটলো??(মুচকি হাসি দিয়ে)
---ভাবী: হুুম ভালো (অনেকটা লজ্জা পেয়ে)
----আমি: ভাবী আমি কিন্তু আপনার দেবর হই।তাই কিন্তু আমাকে তুমি করে বলতে হবে।এটা যেনো সব সময় মনে থাকে। আর এখন থেকেই তুমি করে বলবেন।
----ভাবী: আচ্ছা ঠিক আছে( একটু হেসে)
----আমি:আচ্ছা ভাবী, আপনি মন খারাপ করে বসে ছিলেন কেনো বলেন তো??
----ভাবী: সত্যি বলতে কি, সবাইকে ছেড়ে এসেছিতো ওদের কথা মনে পরছে বিশেষ করে ছোট বোনটার কথা।
---আমি:ওহ..আপনার ছোট বোন কি করে?? ( জেনেও না জানার ভান করে)
---ভাবী: টাংগাইল কুমুদিনী কলেজে ইন্টারে পরে।ওখানে থেকে পড়াশোনা করে।
----আমি: কি বলছেন ভাবী, (আশ্চর্য ভাব নিয়ে)ঐ কলেজের ৯০ ভাগ মেয়েরাইতো কঠিনভাবে ছেলেদের সাথে প্রেম করে।(ডাহা মিথ্যা কথা)
----ভাবী: হুুম করতে পারে কিন্তু বাকী ১০ ভাগ আছে না?? যারা প্রেম করে না, তাদের কাতারেই আমার বোন।
---- আপনি অতটা নিশ্চিত হলেন কিভাবে??
---- আমরা দুইবোন খুব ফ্রী, ও যেখানে যাই করুক না কেনো আমাকে সব বলবে।আর ও কখনও বিয়ের আগে প্রেম করবে না। ওর একটিই কথা বিয়ের পর স্বামীর সাথে প্রেম করবে।
---- তাই নাকী তাহলে ভালো।কিন্তু এরকম কঠিন শপথ করছে কেনো যে বিয়ের আগে প্রেম করবে না।
----ভাবী: আমাদের এক বড় চাচাতো বোন ছিল, সে একটা ছেলেন সাথে প্রেম করতো কিন্তু ছেলেটি আমার বড় চাচাতো বোনের সাথে প্রতারনা করেছিলো।অবশেষে আমার সেই চাচাতো বোন আত্মহত্যা করে।তারপর থেকেই আমি এবং আমার ছোট বোন শপথ করি যে বিয়ের আগে কোনো প্রেম করবো না, স্বামীর সাথে বিয়ের পর প্রেম করবো।
----আমি:ওহ তাই.....(মনে মনে অনেক খুশি)।
বড় ভাই:ওখানে......ভাবীর সাথে গল্প না করে এখানে একটু কাজ করো, তোমার ভাবীর বাড়ীর লোকগুলো এই কিছুক্ষনের মধ্যেই এসে পরবে।
আমি: হ্যা..... ভাই আসতেছি।আচ্ছা ভাবী যায়, পরে কথা হবে।
ভাবী : আচ্ছা যাও।
মুরুব্বীরা রান্না করছে, আমি আর বড় ভাই তাদেরকে টুকটাক হেল্প করছি।তো এক পর্যায়ে বড় ভাইকে বললাম বড় ভাই একটা প্রবলেমে পরছি।
---বড় ভাই: কি প্রবলেম??
---আমি: সাথী বলে প্রেম করবে না।
----বড় ভাই: ওহ, হয়তো কোনো বয়ফ্রেন্ড আছে, তায় তোমার সাথে প্রেম করবে না।
----আমি: আরে তা নই, সাথী কারো সাথে প্রেম করে না এবং বিয়ের আগে কারো সাথে প্রেম করবেও না। বিয়ের পর স্বামীর সাথেই নাকি প্রেম করবে।
----বড় ভাই: ওহ....এইটা, তো ভালো খবর তোমার জন্য। তুমি তো ওকে বিয়েই করতে চাও।
---- আমি: হুুম তা ঠিক, কিন্তু প্রেম করতে পারলে ভালো হতো কেননা...ফ্যামিলি থেকে যদি বিয়েতে রাজি না হয় তাহলে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করা যেতো। কিন্তু প্রেম না করতে পারলে তো ও আমার সাথে পালাবে না।
---- বড় ভাই: বাপ রে বাপ এত্ত চিন্তাবিদ..... শুনো এত চিন্তা করতে হবে না তোমার।তুমি শুধু সাথীর সাথে বন্ধুত্ব তৈরী করবে। আর বাকীটুকু আমি দেখবো নি।
---আমি: আচ্ছা ঠিক আছে, আপনার আশায় থাকবো কেননা বর্তমানে তো কোনো কিছুই মামা,খালু,দোলা ভাই ছাড়া সম্ভব নয় তাহলে আমার প্রেমই বা কেনো বড় ভাই ছাড়া সম্ভব হবে।হা হা হা...
---বড় ভাই: হা হা হা.....হুম ঠিক বলেছ। এখন একটু মনোযোগ দিয়ে কাজ করো।
অতঃপর ভাবীর বাড়ীর লোকগুলো সবাই এসে পরেছে, একি সাথী কই সেকি তাহলে আসে নি? ধ্যাত কতো প্ল্যানিং করলাম সব বিথা গেলো।
অবশেষে আমি, বড় ভাই, আর সুমন ভাই.... সজীব ভাইয়ের সাথে কুলদারা হিসেবে ভাবীদের সাথে চললাম। ভাবীদের বাসায় পৌছাতে পৌছাতে রাত ৮ টা বেঁজে গেলো।সাথীকে দেখলাম বোনকে দেখে খুশিতে জড়িয়ে ধরলো, ভাবীও বোনকে জড়িয়ে কান্না করতেছে। এ কান্না হয়তো কষ্টের না এই কান্না আনন্দের হবে।সবাই মোটামুটি ব্যস্ত হয়ে পরলো জামাই বাবুকে নিয়ে।....বড় ভাইও জামাই বাবুর সাথেই আছে জোঁকের মতো কেননা অনেকে জামাই বাবুকে বিপদে ফেলতে পারে। আর সেই বিপদটাতো বড় ভাইকেই সামলাতে হবে।
সাথীকে অনেকটা একা দেখতে পেলাম তাই, কাছে গিয়ে বললাম কেমন আছেন??
----সাথী: হুম ভালো, আপনি কেমন আছেন??
---- আমি: ভালো...আপনি আমাদের আনতে গেলেন না কেন??
----সাথী: আপনারা কি আমাকে যেতে বলছেন??
----আমি:আমাদেরও তো আপনি আসতে বলেন নি। তাও আমরা দু বার আসলাম।
---সাথী: সত্যি বলতে কি, আমি যেতাম কিন্তু আমার ছোট চাচাতো বোন আছে না ওরাও আমার সাথে যেতে চাচ্ছিল এই শীতের মাঝে ওদের নিয়ে যাওয়া অনেকটা ব্যাজাল মনে হলো তাই আর কি যাওয়া হয় নি।তো অসুবিধে নেই অন্য একদিন যাবো।
তারপর কে যেনো সাথী বলে ডাক দিলো আর চলে গেল আর আমাকে বলে গেল পরে কথা হবে।
সকাল বেলা ঘুম থেকে ওঠে দেখি সাথী একা একা মোবাইলে কি যেনো দেকছে আর হাসছে।আমার মনে কৌতুহল জাগলো তাই কাছে গিয়ে বললাম আজকে আপনাকে অনেক খুশি মনে হচ্ছে, কারনটা জানতে পাড়ি??
---সাথী: হুুম কারনটা হচ্ছে এই ভিডিও.......ধরেন দেখেন।
----আমি মোবাইলটা হাতে নিয়ে তো অবাক আরে এটা তো যেদিন পাত্রী দেখতে আসছিলাম সেদিনকার ভিডিও।আমি কয়েকবার প্যান্ট নিয়ে টানাটানি করছি সেইটাও দেখি ভিডিও হইছে।সকাল সকাল এরকমভাবে প্রিয়তমার সামনে আমার ইজ্জতের ফালুদা হবে, এটাতো কল্পনাও করতে পারি নি।আচ্ছা এই ভিডিওটা হলো কিভাবে??
সাথী: আমার পিচ্চি চাচাতো বোনকে ভিডিও করতে বলছিলাম কেননা আমি আসতে পারি নি বলে তাই।
---আমি কি বলবো কিছু বুজতে পারছি না ঠিক তখনি বড় ভাই ডাক দিল আমাকে, তাই আমি বললাম আচ্ছা এখন আমি আসি পরে কথা হবে।
তারপর আর কথা হয়নি, চোখে চোখ পরলে মুচকি হাসি দিচ্ছে শুধু। এই হাসি যে আমাকে ঐ ভিডিওর কথা মনে করিয়ে দেয়।আর আমি নিজেকে নিজেই গালি দিচ্ছি কেনো যে সেদিন তাড়াতাড়ি করতে গিয়ে বেল ছাড়া প্যান্ট পরেছিলাম আর তার খেসারত এখন আমার এরকম ভাবে দিতে হচ্ছে।
দুপুরের খাবারের পর বসে আছি হঠাৎ সাথী এসে বলতেছে বেয়াই পান খাবেন নাকি??
আমিতো অবাক..সাথী এই প্রথম আমাকে বিয়াই বললো এবং পান খাওয়ার অফার দিলো।কোনোদিন পান না খাওয়া সত্বেও অফারটিতে রাজি হয়ে বললাম, আপনি যদি বানায়ে আইনা দেন তাহলে খাবো।বিয়ানের পান বলে কথা।
***চলবে.........
(প্রিয় পাঠক গল্পটি কেমন লাগলো কমেন্টস করে জানাবেন সবাই
গল্পটি ভালো লাগলে শেয়ার অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিন ধন্যবাদ)

No comments :

Post a Comment