💜আজোব প্রেমের গল্প💜
লেখক: ডায়েরিওয়ালা
মেয়েটার নাম ছিলো কলি।
তার নামটা যেমন সুন্দর, সে দেখতেও ভারি মিষ্টি মেয়ে।
সে রোজ বোরকা পরে বাসা থেকে
বের
হতো।
স্কুল কলেজ এমনকি শপিং করতেও সে
বোরকা পড়ে যেতো।
অদ্ভূত একটা বিষয় হলো,
তার বাবা মা নিজের পরিবার ছাড়া
তাকে আর কেউ দেখেনি।
এমনকি তার বান্ধবিরা পর্যন্ত।
কারন,,তার বয়স যখন চার বছর
সে ঠিক তখন থেকেই বোরকা পড়ে
বাইরে বের হতো।
,,,
কলি তো বোরকা পড়তো।
সে কেমন দেখতে সাদা না ফর্সা বা
কালো
যেমনি হোক না কেনো।তাকে না
দেখেই
তার
প্রেমে পড়বে,,,এমন কোন ছেলে
আছে বলে
মনে হয় না।
কিন্তু,,আছে একজন।
তার নাম,, নুর,,,।
কলেজের কোন ছেলে কলির দিকে
খেয়াল
না করলেও,,,নুর কলির পেছনে
ছায়ার
মতো
লেগেই থাকতো।
আর রোজ একটা করে গোলাপ তাকে
উপহার
দিতো।
কিন্তু,,,কলি তার দেয়া গোলাপটাকে
পায়ের
তলায় ফেলে,,পা দিয়ে পিসিয়ে
চলে যায়।
এঘটনা আজ থেকে নয়,,যখন তারা দুজনে একসাথে একই কলেজে এসেছে
ঠিক সেই
সময় থেকে।
অনেক আগে একবার, কলি তাকে
বলেছিলো,
তার এই পাগলামি কেনো,,,
কিন্তু,, নুর ভালবাসি কথাটা
বলার সাহস
পায় নি।তার কিছু ভয় ছিলো,,,আজ
গোলাপটাকে
পিসিয়ে যে চলে যাচ্ছে।তাকে
ভালবাসি কথাটা
বলবে কি করে।
বরং সে কথাটা বললে, কলির সাথে
বন্ধুত্য টা নষ্ট হয়ে যাবে, সে যতটুকু
কাছে
আছে সেটুকুও তাকে আর পাওয়া যাবে না।
,,
নুর আজ গোলাপ হাতে নিয়ে
আসেনি।
কলেজের শত মানুষের সামনে কলিকে প্রোপজ
করে।কিন্তু,,,কলি সে সময় অনেক রেগে যায় তার বাম হাত দিয়ে কষিয়ে
একটা চড় মারে।
এরপর নুর কে বলছে,,,,,,
কলি/ এই ছেলে তোমার এত সাহস
হলো কিভাবে?
নুর/ ভালবাসার জন্য সাহস লাগে না।
শুধু সেই মানুষটির প্রতি আস্থা থাকতে
হয।
আর তার জন্য নিজের বুকে অনেক খানি ভালবাসা থাকতে হয়।
কলি/ এই ছেলে তুমি আমাকে কখনো
দেখেছো।
নুর/ না।
কলি/ তাহলে ভালবাসলে কিভাবে?
নুর/ মন দিয়ে।
কলি/ কি? আমি দেখতে অনেক কালো সে জন্য বোরকা পড়ে কলেজে
আসি।এই সামান্য বিষয়টা তোমার মাথায় ঢুকলো না,,?
নুর/ আপনি কালো হলে আমার
কিছু
যায় আসে না।আমি কলি কে ভালবাসি আর কলি দেখতে কেমন হয় সেটা আমার ভালো
জানা আছে।
কলি/ এবার কিছুটা শান্ত মনে বলছে,
সত্যি আমি দেখতে খারাপ।কলেজে
আমার
থেকে অনেক ভালো মেয়ে আছে।
তুমি তাদের ভালবাসো।আর আমার
পিছনে
পরে থেকোনা।সামনে তোমার উজ্জল
ভবিষ্যৎ
সেটা নিয়ে ভাবো।
নুর/ আমার ভবিষ্যৎ আমি তখনি ভাববো
যখন আমার ভালবাসা তুমি গ্রহন করবে।
কলি/ সেটা কোনদিনও সম্ভব না।
আর কিছু না বলে কলেজ থেকে চলে
যায়।এবং নুর সেই বিষয়টা ভাবতে
থাকে।
,,,
আজ এক মাস হয়ে গেলো,কলি আর
কলেজে আসেনা।কেউ তার বিষয়টা
না
ভাবলেও
প্রেমিক পাগলার ঘুম ঠিকই রাতে আসে না।
অনেক চেষ্টা করেও কলির খোঁজ মেলেনি।
তাই কলেজের সবাই নুর কে
দোসি
করলো।
হঠাৎ একদিন কলেজে আগমন হলো
এক অপরূপ সুন্দর এক মেয়ে, তার নাম
সামিয়া।
এই সামিয়াকে দেখে দশটা
ছেলে তাকে পাওয়ার জন্য পাগল হয়ে
উঠে।
কিন্তু,,এই সামিয়ার চোখ সবসবয়
নুরের
দিকে।
নুর যেমন কলির পেছনে লেগে
থাকতো,,ঠিক তেমনি এই সামিয়া নুরের পেছনে লেগে থাকে।
প্রথমে নুরের সাথে বন্ধুভাব হয়।
আস্তে আস্তে নুরের অনেক
কাছে
যেতে
চাইলেও নুর তাকে মেনে নিতে পারে না।
এক সময় সামিয়া নুর কে ভালবাসার
প্রস্তাব দেয়।
কিন্তু,,নুরের জীবনে অন্য কেউ
আছে,,,
এমনটা বলে সামিয়াকে আর পাত্তা
দিতো না নুর।
আজ ঠিক তেমনি কলেজে তার মতো
সবার
সামনে সামিয়া নুর কে প্রপোজ
করে।
তাতে নুর না বলে দিলো,,,,,,
সামিয়া/ কি ভাবো নিজেকে?
নুর/ একজন সাধারন মানুষ, আর
তাছাড়া
আমার জীবনে অন্য কেউ আছে।
তোমাকে
ভালবাসা আমার পক্ষে সম্ভব না।
সামিয়া/ কে আছে, আজ এক সপ্তাহ হলো শুধু শুনেই যাচ্ছি, কিন্তু কে সে
এখনো তার মুখটা
পর্যন্ত
দেখলাম না।
সে যদি আর ফিরে না আসে?
নুর/ সে আমার জীবনে
এসেছিলো,
আমি হয়ত তার জীবনে কেউ ছিলাম না।
সে আমাকে ভাল না ও বাসতে
পারে।
কিন্তু,,আমি তাকে কখনো ভূলে
থাকতে
পারবো না।
সামিয়া/ ও আচ্ছা, আমি যদি বলি
আমিও তোমাকে
ভূলে থাকতে পারবো না।সেটাকে
তুমি কিভাবে
দেখবে?
নুর/ তুমি শুধু শুধুই মরিচিকার
পেছনে
ছুটছো।
আমার এ জীবন তাকে ছাড়া অসম্পূর্ন।
সামিয়া/ তাহলে তোমার ভালবাসার
কোন
যোগ্যতাই
নেই।তুমি জানো তোমার মত দশটা ছেলে আমার পেছনে পরে থাকে।
তাদের বাড়ি গাড়ি টাকা পয়সা
তোমার থাকে
অনেক বেশি।তবুও আমি তোমাকে
ভালবাসি,,,
আমাকে ফিরিয়ে দিও না প্লিজ,,,,,।
নুর/ হ্যা আমি অনেক ছোট,,,তাই
তো
কারও অবহেলা ছাড়া আমার জীবনে
আর
কিছুই নেই।দয়া করে আমার সামনে
আর আসবে না।
এই বলে চলে যায় নুর।
,,,
আজ সাতদিন পর,
কলি বোরকা পরে কলেজে এসেছে।
তাকে দেখেই নুর আত্বহারা।
কিন্তু আজ তার জীবনে চরম একটা
পরীক্ষা
সেই দিনগুলোর মতো আজ সবাই
একত্র হয়েছে।
মাঝখানে তিনটি মানুষ।
একদিকে কলি এবং অন্যদিকে সামিয়া।
সামিয়া/ তোমার কলি কে নিয়ে এসেছি।
কলি মুখের কাপড় টা খুলে দেয়।
দিতেই সবাই চমকে যায়।ঠিক যেনো
কোন
কাজের
মেয়ে।
কলি/ হ্যা, আমিই তোমার কলি।
তোমাকে
বলেছিলাম না আমি দেখতে খারাপ।
সামিয়া/ এখন বলো, কার হাত ধরতে
চাও,?
সে সময় নুরের দুনিয়াটা যেনো
ঘুড়তে
থাকলো।কলি যেমনি হোক না
কেনো, তাকে
তো ভালবাসি।কিন্তু আমার পরিবার
তারা কি
কলি কে মেনে নিবে?
আর ভাবতে পারছেনা।ভালবাসার
মানুষ যেমনি
দেখতে হোক,,,তাকে ছাড়া জীবন টা
অচল,,,,
কলির দিকে হাত বাড়িয়ে দিলো,,,,
কলি সেও হাত ধরে চলে যেতে
থাকলো।
পেছনে সামিয়া মনে মনে অনেক খুশি।
কিছু দূর যেতেই,,,কলি বলে দিলো,,,,
কলি/ ভাইয়া হাত ছাড়ুন।
নুর/ তো অবাক, কি?
কলি/ জ্বি, আমি কলি নই।
ঐ সামিয়াই হলো আপনার কলি।
আপনার ভালবাসা কে বাজিয়ে
দেখতেই
এই অভিনয়।আমি ওদের কাজের
মেয়ে, সে আপনার
সাথে
এমন করেছে,,,আপনি যতটা কষ্ট পেয়েছেন, তার অধিক সে কষ্ট পেয়েছে।সে যখন রোজ কলেজে আপনার সাথে অভিনয় করেছিল,,,
বাসাতে
ফিরে
লুকিয়ে কাঁদে।শুধু আপনাকে কষ্ট দেয় বলেই।যান ওনার কাছে যান।ওনি আপনাকে অনেক ভালবাসে।
সেখান থেকেই শুরু হলো নুর ও কলির জীবনের নতুন এক স্বপ্ন দেখার পৃথিবী,,,,,,,,,,,,
No comments :
Post a Comment