সিনিয়র রাগি গার্লফ্রেন্ড
৩য় পর্ব
সাইফ ভাই আর তিশা আপু একে অপরকে জড়িয়ে ধরেছে।
উফফ সেটা আমারো রাত্রীকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছা করতেছে।
আমিঃভাইয়া এই সব কি শুরু করেছে আমারো কিন্ত ইচ্ছা করছে
সাইফঃইচ্ছা করছে ধর না।আমাদের ডিস্টার্ব করছিস কেনো??
আমিঃভাইয়া কাকে ধরবো??
সাইফঃসামনে যাকে পাস তাকেই ধর গিয়ে...
আমিঃএখনে তো তোমার বোন ছাড়া অন্য কাওকে দেখতে পাচ্ছি না
সাইফঃতাহলে ওকেই ধর
বলতে দেড়ি আছে কিন্তু রাত্রীকে জড়িয়ে ধরতে আমারে দেড়ি হলো না।
রাত্রীকে জড়িতে ধরবার পর বলতে লাগলাম ধরেছি ধরেছি
রাত্রী আমার কাছ থেকে নিজেকে ছাড়াবার অনেক চেষ্টা করছে কিন্তু কিছুতেই ছাড়াতে পাড়লো না।
ততক্ষনে মনে হয় সাইফ ভাওয়ার হুশ এসেছে।
সাইফঃআরে অই তুই আমার বোনকে অমন করে জড়িয়ে ধরে আছিস কেনো ছাড় বলছি আমার বোনকে ছাড়।
আমিঃকেনো ভাইয়া তুমি না বললে তোমার বোনকে জড়িয়ে ধরতে...
সাইফঃআমি এমন কথা কখন বললাম?আমি এই কথা বলিনাই...
রাত্রীঃভাইয়া ও ঠিক কথা বলছে তুমি বলেছো জড়িয়ে ধরারর জন্য।।
এই না হলে আমার বউ মানে হবু বউ
সাইফঃবললে বলেছি তাই বলে কি ওকে জড়িয়ে ধরতে হবে??
আমিঃএহহ ভাই আমি ধরতাম নাকি তুমি বললে বলেই তো ধরলাম।
সাইফঃআমি তো বেশি আবেগে বলে ফেলেছি
আমি;আমিও বেশি আবেগে জড়িয়ে ধরে ফেলেছি।
সাইফঃযা বেশি কিছু বললাম না,,শুধু রাত্রী কিছু বলতে বললো না বলে তোকে ছেড়ে দিলাম।
আমি;কেনো বলবে ও তো আমার........আর বললাম না
সাইফঃও তোর কে শুনি?
আমিঃবেস্ট ফ্রেন্ড
সাইফঃবেশি পেকে গেছিস তাই না,,তোর কাদে একটা দায়িত্ব দিবো সেটা যদি ভালোই ভালোই পালন করতে না পারিস তাহলে তোর খবর আছে।
আমিঃকি দায়িত্ব দিবে ভাইয়া।।
সাইফঃআমাদের বিয়ের জন্য সব কিছু তোকে করতে হবে।
আমিঃকি বললে ভাই আমি একা...
সাইফঃনা সাথে লোকজন থাকবে কিন্তু তোকে বেশি দায়িত্ব পালন করতে হবে।
আমিঃকেনো ভাইয়া তোমার চেলা গুলো কি করবে?সাইফঃওদের কথা আর বলিস না।একদম ভরসা করা যায় না।আমি তোকেই বেশি ভরসা করি../.
আমি;আচ্ছা তুমি কি একাই ডিসিশন নিলে তিশা আপু তো কিছু বলছে না।।
তিশাঃআমি আর কি বলবো এই বোকারাম যেটা ভালো মনে করেছে সেটাই করুক.
আমিঃএ আমি কোন তিশা আপুকে দেখছি যে কিনা দুইদিন আগেও ভাইয়ার উপর রেগে আগুন ছিলো সে কিনা???
তিশাঃএখন থেকে আমাকে আপু না বলে ভাবি ডাকবা।
আমিঃওকে ভাবি।
আরো কিছু কথা হলো সবাই কথা বললেওও রাত্রী কোনো কথা বলছে না,,একদম চুপ হয়ে আছে...কিন্ত কেনো??
তিশা আপু আমাদের রেখে ভাইয়াকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে চলে গেলো..আর আমাদের বলে গেলো যে তোমরা একটু বসো আমি আসতেছি।
ভাইয়া আর ভাবি চলে যাবার পর রাত্রী আমার গালে ঠাসস করে একটা থাপ্পড় মারলো
আমি তো অবাক রাত্রী হঠাৎ করে আমাকে চড় মারলো কেনো??
আমিঃএই তুমি আমাকে মাড়লে কেনো??
রাত্রী;মেরেছি বেশ করেছি তুই কি পেয়েছিস আমাকে অমন ভাবে জড়িয়ে ধরার অধিকার তোকে কে দিয়েছে?
আমি;তোমার ভাইয়া দিয়েছে..
রাত্রীঃআরে ভাইয়া তো তখন হুশে ছিলো না..?
আর যখন হুশে এলো তখন কেমন করলো দেখতে পেয়েছিস তো?
তোর তো খবর হয়ে যেতো যদি আমি তখন তোর সাথে খারাপ ব্যাবহার করতাম।
কিন্তু আমি চাইনি ভাইয়া তোর গায়ে হাত তুলুক বা তোর কোনো ক্ষতি করুন...তাই তখন মুখ বুজে সব সহ্য করে নিয়েছে..
ইচ্ছা করছিলো তোর গাল থাপ্পড়ে লাল করে দেই...কিন্তু ভাইয়ার এতো খুশি দেখে রাগ কমে গেছে।
যদি এই ভুল দ্বিতীয় বার আবার হয় তবে আমার থেকে খারাপ আর কেও হবে না,,এই বলে দিলাম...
আমি;এই তুমি কি রাত্রী নাকি অন্য কেও,,এতো রেগে কথা বলছো কেনো??একটা পিচ্চি তো তোমাকে জড়িয়ে ধরেছে কোনো বুইড়া তো আর জড়িয়ে ধরে নাই...
রাত্রীঃকিহ তুই পিচ্চি হাহাহহা,,(সব রাগ কোথায় যেনো হারিয়ে গেলো)
এখন তোমাকে দেখতে অনেক কিউট লাগছে...
তোমার নাম দিলাম কিউট পেত্নী।
রাত্রীঃএকদম বেশি কথা বলবি না..তোর উপর আমি এখনো রেগে আছি লুচ্চা ছেলে..
আমিঃএহহ আমি লুচ্চা না..তোমার ভাইয়া বলেছে তাই তো ধরেছি..
এমন সময় ভাইয়া আর ভাবি চলে এলো।
সাইফঃকি ব্যাপার এতো কি নিয়ে কথা হচ্ছে?
রাত্রীঃতেমন কিছু না তোমারর বিয়েতে বাসা কিভাবে সাজাবো সেই সব নিয়ে কথা বলছিলাম।
কত বড় মিথ্যা কথা বললো...
একটু আগে চড় দিয়ে আমার গাল লাল করে দিয়ে এখন বলছে বাসা কিভাবে সাজাবে সেই নিয়ে নাকি কথা বলছিলো...
সাইফঃসেটা না হয় বাসায় গিয়ে আলোচনা করা যাবে এখন চল বাসায় চল।
তারপর আমি ভাইয়া ভাবি আর রাত্রী সবাই গাড়িতে উঠলাম সাইফ ভাই আর তিশা ভাবি সামনে বসলো আমি আর রাত্রী পেছনে।
এমন ভাগ্যে আর কার আছে বিয়ের আগে বউয়ের সাথে এমন বিন্দাস ঘুড়ে বেড়ানোর।ভাইয়াই গাড়ি চালাচ্ছে
রাত্রী জানালা দিয়ে বাহিরের পরিবেশ দেখছে।
আমি কি করবো আমি তো পিচ্চি তাই পকেট থেকে ফোন বেড় করে গেম খেলতে লাগলাম।
সাইফ ভাইয়াদের বাসায় গেলাম।
যদিও বাসা থেকে ফোন দিয়েছিলো আমি বলে দিছি এক বন্ধুর বাসায় আছি...
অহহ হ্যা রাত্রীদের বাসায় যাবার আগে ভাবিকে ছেড়ে এসেছি
বাসায় এসে রাত্রী কোনো কথা না বলে সোজা উপরে চলে গেলো।
তারমানে মেয়েটা এখনো আমার উপর রেগে আছে...কিন্তু এতো রাগ করার কি আছে
ওর হবু জামাই মানে আমি তো ওকে জড়িয়ে ধরেছি এর পরেও কেনো যে মেয়েটা আমার সাথে এমন করলো....
আমিঃভাইয়া তা বিয়ে কবে করবে?
সাইফঃহ্যা এই তো সামনের শুক্রবারের পরের শুক্রবার।
আমিঃতাহলে তো হাতে একদম সময় নেই তাই বলো...
হ্যা বেশি সময় নেই..
আমিঃআচ্ছা ভাইয়া সময় মত কাজে লেগে যাবো...এখন আমি বাসায় যায়।
সাইফঃসে কিরে রাত্রীরর সাথে কথা বলে যা..
আমিঃপরে অন্য সময় বলবো।
আমি জানি রাত্রী আজ আর আমার সাথে কথা বলবে না..এই কদিনে যা জেনেছি বা বুঝেছি মেয়েটা বেশ রাগি আর অভিমানী বাহ আমার একটা অভিমানী সিনিয়র বউ হবে।
কিন্তু যেটা না বললে নয় সেটা হলো আমার আর রাত্রীর বয়স মনে হয় সমান সমান হবে
আমি শুধু এক ক্লাস নিচে।
আমি রাত্রীদের বাসা থেকে চলে এলাম।বাসায় এসে কলিং বেল চেপে দাঁড়িয়ে আছি।জানি যখন দরজা খুলবে তখন আমাকে অনেক গুলো কথা শুনতে হবে...
দরজা খুলেই আম্মু ভাষণ শুরু করে দিলো।
এতোক্ষন কই ছিলি এতোবার ফোন দেবার পর ফোন রিছিভ করছিলি না কেনো?
যাও একটু করলি।মাত্র দুটা কথা বলে আবার রেখে দিলি।
আমিঃআম্মু ছিলাম তো ফ্রেন্ডের বাসায়।
কথা পরে বলো আমার খুব ক্ষুধা লেগেছে আমাকে খেতে যাও জলদি।
আম্মুঃযা হাত মুখ ধুয়ে আয় আমি খাবার বেড়ে দিচ্ছি।
আমি আমার রুমে এসে প্রথমে চেঞ্জ করে নিলাম পরে ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে এলাম।
খেয়ে দেয়ে আবার একটু বাইরে ঘুরতে গেলাম।
যদিও একা ঘুরছি কিন্তু অনুভূতি অনেক ভালো লাগছে।পাশে কেও একজন থাকলে হয়তো আরো বেশি ভালো লাগতো।
সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘুরাঘুরি করে আমি বাসায় চলে আসি...
রাতে খেয়ে ঘুমিয়ে পরি
পরদিন
খেয়ে দেয়ে বাসা থেকে বেড় হয়েছি,ভাগ্য ভালো ছিলো তাই একটা রিকশা পেয়ে গেলাম।
আমি রিকশাতে করে যাচ্ছিলাম সামনে দেখি রাত্রী হেটে হেটে যাচ্ছে।
আমি রিকশা থামিয়ে বললাম।
আমি;এই তুমি হেটে যাচ্ছো কেনো উঠো রিকশাতে উঠো...
রাত্রী কিছুক্ষণ কিছু একটা ভাবলো তারপর রিক্সাতে উঠে পড়লো..
রিক্সা আবার চলে শুরু করলো।
কিন্তু রাত্রী একদম চুপচাপ তার মানে কালকের ঘটনার জন্য এখনো রেগে আছে..?কিন্তু এতো রেগে থাকার কি আছে?
আমিঃএই তুমি এখনো আমার উপর রেগে আছো?
রাত্রী:না রেগে কেনো থাকবো?(একদম আস্তে করে)
আমিঃআচ্ছা যা হয়েছে তার জন্য আমি সরি,,কিন্ত দয়া করে আমার উপর আর রেগে থেকো না আমার ভালো লাগে না...
রাত্রীঃকেনো ভালো লাগে না কেনো?
আমিঃজানোনা আমি পিচ্চি আর পিচ্চিদের উপর যদি কেও রেগে থাকে পিচ্চিরা কান্না করে তুমি জানোনা?
রাত্রীঃআচ্ছা রেগ থাকবো না এইবার খুশি তো?
আমিঃহ্যা অনেক খুশি তারপর আমরা কলেজে চলে এলাম।রাত্রী ক্লাসে চলে গেলো আর আমিও আমার।ক্লাসে চলে গেলাম।একটা ক্লাস করে ক্যাম্পাসে চলে এলাম।এসে একটা গাছের নিচে বসলাম।
কিছুক্ষণ পর দেখি রাত্রী আমারর দিকেই আসছে।
আমার কাছে চলে এসে এই পিচ্চু ক্লাস বাদ দিয়ে এখানে বসে কি করা হচ্ছে?
আমিঃএমনি ভালো লাগছিলো না তাই
রাত্রীঃআমারো ভালো লাগছে না চলো না একটু ঘুরে আসি..
আমি;কোথায় যাবে ঘুরতে?
রাত্রীঃযেখানে ইচ্ছা হয় যাবো আগে চলো কলেজ থেকে বের হই।
আমার বউ আমার সাথে ঘুরতে যাবে বলেছে আহা কি শান্তি আমি দৌড়ে গিয়ে ক্লাস থেকে ব্যাগ নিয়ে আসলাম। রাত্রী আমার আগেই দেখি এসে দাঁড়িয়ে আছে।
তারপর দুজম কলেজ থেকে একসাথে বেড় হলাম।
রাত্রী একটা রিক্সা নিলো।
আমি আর রাত্রী রিক্সাতে উঠলাম।
কিছুক্ষণ পর আমরা এখন দাঁড়িয়ে আছি একটা লেকের ধারে।
আমিঃএই তুমি এতো যায়গা থাকতে এখানে আসলে কেনো??
রাত্রীঃএই যায়গা আমার অনেক ভালো লাগে..বিশেষ করে যদি নদী থাকতো তাহলে আরো বেশি ভালো লাগতো...যদিও এখানে আসার আর একটা কারণ আছে...
আমিঃকি কারণ?
রাত্রীঃসেটা কিছুক্ষণ পর বুঝতে পাড়বে...
কিছুক্ষণ দুজন একটু হাটাহাটি করলাম।
কিছুক্ষণ পর দেখি একটা ছেলে আমাদের দিকে আসছে।ছেলেটাকে দেখেই বুকের ভেতর কেমন জানি করে উঠলো।
ছেলেটা যখন আমাদের কাছে চলে আসলো..রাত্রী আমাকে বললো এই তুমি একটু দূরে গিয়ে দাড়াও ওর সাথে আমার কিছু কথা আছে...
আমার তো একদম সহ্য হচ্ছিলো না তাহলে কি আমি মনে মনে যা ভাবছি সেটাই সত্যি এটা কি তাহলে
নাহ নাহ এটা হতে পারে না রাত্রী শুধু আমার ও আর কারো হতে পারে না।
আমি হতে দিবো না।
আমি একটু দূরে এসে দাঁড়ালাম।
দেখি রাত্রী ছেলেটার সাথে হেসে হেসে কথা বলছে আমার একদম সহ্য হচ্ছে না।
কিছুক্ষণ পর ছেলেটার হাতে যে ব্যাগ ছিলো সেটা রাত্রীকে দিতে যাবে আমি আর দাঁড়িয়ে থাকতে পাড়লাম না।
আমি দৌড়ে রাত্রীর কাছে চলে গেলাম।
আমি রাত্রীকে ধরে দূরে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে বলতে লাগলাম এই তুমি একদম অই ছেলের দেওয়া কিছু নিবে না।
রাত্রীঃকেনো নিবো না কেনো?
আমিঃতুমি বুঝো না আমি তোমাকে ভালোবাসি
তুমি শুধু আমার শুধুই আমার আমি তোমাকে অন্যকারো সাথে দেখতে পাড়বো না।
রাত্রীঃএই তুমি কি বলছো মাথা ঠিক আছে তো নাকি মাথা একদম গেছে?
আমি;নাহ আমি ঠিক আছি..তবে তোমাকে ছাড়া আমি ঠিক থাকতে পাড়বো না।আমি রাত্রীকে জড়িয়ে ধরলাম আর বললাম খুব ভালোবাসি তোমায় খুব।
রাত্রী আমার কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে দুই গালে ৪টা থাপ্পড় দিলো।
আমিঃদাও আরো দাও তবুও আমি তোমাকে ভালোবাসি।।
রাত্রীঃকিন্তু আমি তোকে ভালোবাসি না..তুই তো আমার থেকে এক ইয়ারের জুনিয়র। তোকে কি করে ভালোবাসবো?
আমিঃতার মানে তুমি আমাকে ভালোবাসো না তাই তো??
রাত্রীঃহ্যা তোকে ভালোবাসি না
রাত্রীর এই কথা শুনে নিজেকে কেনো জানি খুব একা লাগছে...
আমি আর সেখানে থাকতে পারছিলাম না,,চোখ দিয়ে পানি পরছিলো...
আমি চোখ মুছতে মুছতে সেখান থেকে চলে আসতে লাগলাম।
রাত্রী দৌড়ে এসে বললো কিরে তুই একা যাচ্ছিস কেনো আমিও যাবো তোর সাথে..
আমি রাত্রীর কোনো কথাই কোনো কান দিলাম না আমি চলে আসতে ছিলাম আর স্বপ্ন ভাঙার ব্যাথা অনুভব করতেছিলাম
To Be Continue
Friday, October 26, 2018
সিনিয়র রাগি বউ পর্ব ৩
Subscribe to:
Post Comments
(
Atom
)
No comments :
Post a Comment