দ্বিধা
তাবাস্সুম রিয়ানা
৬
পুরো পার্টিতে ইনায়া মাহিরার সাথেই ছিলো।আরহান বিদেশী কিছু বন্ধুদের সাথে গল্প করছে।
-তুমি আবার বিয়ে করছো না কেন আরহান?(জ্যাক)
-বিয়ে করবোনা আর।ইনায়া কে আমিই দেখে রাখতে পারবো।নতুন বৌ আসলে সে যেকোন ধরনের বায়না করতে পারে।সে যদি ইনায়াকে না চায় তখন?প্লিজ বিয়ে করতে বলোনা আমাকে।
-ঐ মেয়েটা ইনায়ার সাথে ঘুরছে।ইনায়া তো মনে হয় তাকে বেশ পছন্দ ও করে।ভালোই জমবে ওদের(মাহিরা কে উদ্দেশ্যে করে বলল)(রবিন)
-ও মাহিরা আমার পিএ।মেয়েটা ভালো।ইনায়া ওকে পছন্দ করে।(আরহান)
-সেজন্যই তো বললাম মাহিরাকেই বিয়ে করে নাও।ইনায়ার দেখাশুনাও হয়ে যাবে।(জ্যাক)
- No she is young.সে কি একজন ডিভোর্সি লোককে বিয়ে করবে?
-করলে ও করতে পারে।জিঞ্জেস তো একবার করেই দেখো।(রবিন)
-হুম।(আরহান)
-স্যার(আরহান)একজন মহিলা আপনার দেখা করতে চায়(রনি)।
-জ্যাক,রবিন তোমরা বসো আমি আসছি(আরহান)।
পাশের রুমে একজন বয়স্ক মহিলাকে দেখতে পেলাম।কি চান আপনি?
-আমার ইনায়াকে চাই।(বৃদ্ধা)
-আমার ইনায়া!!! শুনেন ইনায়া আমার মেয়ে ওর ওপর আপনার, আপনার মেয়ের কোন অধিকার নেই।প্লিজ চলে যান দরজা ঐদিকে।(আরহান)
-শেষবারের মতো বলছি ইনায়াকে দিয়ে দাও।নাহলে ভালো হবেনা বলছি।(বৃদ্ধা)
-আমাকে মনে হয় ভয় দেখাচ্ছেন।গেট আউট আই সেইড গেট আউট(চিৎকার করে)।
-যাচ্ছি যাচ্ছি এতো চিৎকার করতে হবেনা।দেখে নিবো তোমাদের(বৃদ্ধা)।
-আনিকা চলে এসেছে বাংলাদেশে? দুই চোখ বেয়ে দুফোটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো আরহানের।আমি জানি তুমি কারোর সাথে পালিয়ে যাওনি।তুমি তো শুধু আমাকেই ভালোবেসেছ।(আরহান)
-স্যার আপনি এখানে।আপনার বন্ধুরা বসে আছে।(মাহিরা)
-মাহিরা ইনায়া কই?(আরহান)
-ও খাচ্ছে।(মাহিরা)
-একটু এদিকে আসবে মাহিরা(আরহান)?
-কেন স্যার?
-প্লিজ(কান্না জড়িত কন্ঠে বললাম)
-ওকে কি বলবেন বলুন।ওনার সামনে আসলাম।আচমকা আমাকে জড়িয়ে আমার কাঁধে মাথা রেখে কাঁদতে লাগলেন।স্যার!!!!
-আনিকা কেন ছেড়ে চলে গেলে আমাকে? কি দোষ ছিলো আমার?(আরহান)
-হাত সোজা করে দাড়িয়ে আছি।হার্টবিট এতো ফাস্ট হয়ে গেছে যেন কিছুক্ষণের মধ্যে ফেঁটে বের হয়ে যাবে।বুঝতে পারলাম আনিকা ওনার সাবেক স্ত্রী।স্যার প্লিজ কাঁদবেন না।গেস্টরা কি মনে করবে?চলুন।
-মাহিরার ডাকে মাথা তুললাম।মনে পড়লো ওকে জড়িয়ে ধরে আছি।ছেড়ে দিলাম I am sorry.
-Its ok sir.চলুন।
-তুমি যাও।ফ্রেশ হয়ে আসছি।(আরহান)
-ওকে স্যার।ড্রয়িং রুমে আসতেই নীল আমার হাত টেনে দেয়ালে চেপে ধরলো এতক্ষন কই ছিলে?(নীল)
-কি করছেন কি?ছাড়ুন।
- Iam sorry (নীল)।আসলে তোমাকে অনেক্ষন ধরে না দেখতে পেয়ে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।ব্যাথআ পেয়েছো?
-না।পাইনি(মাহিরা)।
- Iam sorry for disturbing you. মাহিরা চলো কিছু নতুন ক্লায়েন্টের সাথে তোমাকে মিট করাই।(আরহান)
-ওকে স্যার চলুন(মাহিরা)।
-স্যার নতুন প্রোযেক্টটা পাওয়ার খুশিতে ছোট্ট একটা গিফট আমাদের পক্ষ থেকে।(সালমান)
-আরে কেকের কি দরকার ছিলো?(আরহান)
-স্যার প্লিজ আমাদের জন্য(সালমান)।
-আরহান এই প্রোযেক্টে মাহিরা ও অনেক কষ্ট করেছে।সো মাহিরাও তোমার সাথে কেক কাটবে।(আরহানের বাবা)
-ড্যাড আসলে.........।
- No more excuse my son.Mahira come here.
-ওকে স্যার।আরহান স্যারের পাশে এসে দাড়ালাম।
-আরহানের সাথে ছুড়ি ধরো মাহিরা(আরহানের মা)
-(কি হচ্ছে এসব?কেন আমাকে দিয়ে এসব করাচ্ছে?)আস্তে করে ওনার হাতের ওপর হাত রাখলাম।কেক কাঁটা হয়ে গেল।
-এক এক করে সবাইকে কেক খাওয়ালাম।মাহিরার সামনে আসলাম।কেক???(আরহান)
-কেক টুকু খেয়ে নিলাম। থ্যাংকস।
-ওয়েলকাম।অফিসের সবাই মিলে একসাথে দাড়িয়ে ছবি তুললাম।সাথে ছোট্ট ইনায়া ও ছিলো।(আরহান)
-স্যার আমাদের যেতে হবে(মাহিরা)।
-ওকে।ড্রপ করে দিতে হবে?(আরহান)
-না আমি আছি ওকে ড্রপ করার জন্য(নীল)।চলো মাহিরা।
-আন্টি!!!!ইনায়া মাহিরা কে জড়িয়ে ধরলো।প্লিজ যেওনা।
-কাঁদছো কেন মামনি? কাল তো অফিসে দেখা হচ্ছে তাইনা?(মাহিরা)
-হুম।তাহলে আমি যাই?
-ওকে।বায়।(ইনায়া)
-বায় বেবি(মাহিরা)।
-গাড়িতে বসলাম।তুমি মনে হয় আরহানকে পছন্দ করো রাইট?(নীল)
- what rubbish!!!!! কি বলো এসব?
-যা দেখেছি তাই বলছি।(নীল)
-এসব কিছুনা।আর যাকে ইচ্ছা তাকে পছন্দ করবো আমি আপনার কি?(মাহিরা)
-আসলেই তো।আমি না সবসময় একটু বেশি overreact করে ফেলি।প্লিজ স্যরি।
-ইটস ওকে চলুন।
-হুম(তুমি তো আমার হবা মিস মাহিরা।)(নীল)
চলবে
#দ্বিধা
তাবাস্সুম রিয়ানা
৭
-বাবা নীল কে?(মাহিরা)
-নীল কে মানে?আমার বন্ধুর ছেলে।
-কেন এসেছে এখানে?(মাহিরা)
-কেন এসেছে মানে কি এভাবে কথা বলছিস কেন?(বাবা)
-হঠাৎ করে এখানে আসার পিছনে কারন তো একটা অবশ্যই আছে।(মাহিরা)
-সামনের সপ্তাহে তোর আর নীলের এ্যান্গেজমেন্ট(বাবা)
-কি!!!!!!!(মাহিরা)
-এতো অবাক হওয়ার কি আছে?একটা এস্টাব্লিশড ছেলে যথেষ্ঠ ভালো।(বাবা)
-আমার মতামত নেয়ার একবারো প্রয়োজন মনে করোনি?(মাহিরা)
-মতামত নেয়ার কি আছে?তোর জন্য কি আর আমি খারাপ ছেলে চয়েজ করবো বল?(বাবা)
-না তা করবানা।কিন্তু বাবা...........মন খারাপ করে মাথা নত করলাম।
-মন খারাপ করছিস কেন যা হবে ভালোই হবে।(বাবা)
-নিজের রুমে চলে এলাম।নীল কে ভালোই লাগে।যথেষ্ঠ কেয়ারিং।ওয়াশ রুমে ঢুকে ঝরনা ছেড়ে দিলাম।চোখ বন্ধ করে পানির প্রত্যেকটি ফোঁটা কে অনূভব করছি।চোখের সামনে ভেসে উঠলো আরহান স্যারের জড়িয়ে ধরে কান্না করা আর কেক কাটার দৃশ্যটি।সাথে সাথে হার্ট ফুল স্পিডে বিট করতে লাগলো।চোখ খুলে ফেললাম আমি কেন ওনার কথা চিন্তা করছি?কেন ওনি কাছে আসলে হৃদকম্পন বেড়ে যায়?
-ইনায়া ঘুমাও মামনি।পাপা তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি(আরহান)
-মামনি কবে আসবে পাপা?(ইনায়া)
-আসবে মা।ঘুমাও তুমি।(আরহান)
-না ঘুমাবনা মাকে এনে দাও।(ইনায়া)
-ইনায়া পাপার অফিস আছে ঘুমাও।(আরহান)
-মাকে এনে দিতে হবে।(ইনায়া)
-ইনায়া বুঝার চেষ্টা করছো না কেন তুমি(চিৎকার করে বললাম)।আরো কিছু বলতে যেয়ে ও পারলাম না।ইনায়া কাঁদতে শুরু করেছে।বাথরুমে ঢুকে গেলাম।এভাবে বলা ঠিক হয়নি।কিন্তু ও বুঝতে চায়না কেন ওর মা আসবেনা আর।আইডিয়া!!!!
-ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাড়িয়ে চুল মুচছি।হঠাৎ ফোন বেজে উঠলো।আরে স্যার এতো রাতে!!সব ঠিক আছে তো?হ্যালো
-স্যরি এতো রাতে কল দেয়ার জন্য(আরহান)
-নো প্রবলেম স্যার বলুন।
-ইনায়ার সাথে কথা বলো ওর মা হয়ে প্লিজ।বকেছি ওকে।কিন্তু ঘুমোতেই চাচ্ছেনা।
-ওকে স্যার দিন।
- Thanks Mahira.Thanks a lot.
-welcome sir.
- ইনায়া মা কল করেছে(আরহান)
-মিথ্যে কথা।(ইনায়া)
-মিথ্যে না।কথা বলেই তো দেখ।।
-ওকে দাও।হ্যালো
-হ্যালো ইনায়া কেমন আছো মামনি?
-তুমি কে?(ইনায়া)
-তোমার আম্মু বাবা(মাহিরা)
-তোমার সাথে কথা নেই।
-কেন(মাহিরা)
-তুমি আসো না কেন?
-চলে আসবো মামনি আরো কিছুদিন অপেক্ষা করো।
-সত্যি আসবে তো?
-অবশ্যই আসবো মামনি।
-ইনায়া আর মাহিরার কথা শুনতে শুনতে কখন যে ঘুমিয়ে গেলাম বুঝতেই পারিনি।সকালে ঘুম ভেঙ্গে দেখি ইনায়া আমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছে।ওর কানে এখন ও ফোন।ফোনটি সরিয়ে দেখি কথা এখন ও শেষ হয়নি।কলটি কেঁটে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম।
-নাস্তা সেরে অফিসের জন্য বের হয়ে গেলাম।অফিসের গেট দিয়ে ঢুকতে যাব তখনই কেউ হাত টেনে একটি গাছের পিছনে নিয়ে এলো। নীল আপনি?
-হুম ভয় পেয়ে গেছো?(নীল)
-না ভয় পাবো কেন?
-ওর হাতে একটি ব্রেসলেট পরিয়ে দিলাম।এটা আমার লাইফের সবচেয়ে সুন্দর মেয়েটির জন্য।ভালোবাসি তোমাকে মাহিরা।কপালে আলতো করে চুমো এঁকে দিয়ে চলে গেলাম।(নীল)
-এটা কি হলো???(মাহিরা)।
-এতক্ষন দূর থেকে মাহিরা ও নীল কে দেখছিলো আরহান।বেশ ভালোই লাগে দুজন কে একসাথে। হয়ত একে অপরকে ভালোবাসে।চলে এলাম সেখান থেকে।
-স্যার এখানে কি করছিলো?সব দেখে ফেলেছেন মনে হয়।অফিসে গেলাম।সাথে সাথে ইনায়া এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।কেমন আছো সোনা?
-ভালো।তুমি কেমন আছো?
-ভালো।
-ওর গালে চুমো এঁকে দিলাম।যাও খেলো।
-ডেস্কে যেয়ে বসলাম।
-মাহিরা!!(আরহান)
-জি স্যার?
-এদিকে এসো।তোমাকে যদি রাতে ফোন দিয়ে বলি ইনায়ার সাথে ওর মা হয়ে কথা বলতে পারবে?
-জি স্যার। কেন পারবো না?
-তোমার সমস্যা হলে বইলো(আরহান)।
-সমস্যার কি আছে এখানে?কোন সমস্যা নেই যখন কল দিবেন কথা বলতে পারবো।
-থ্যাংকস।যাও কাজে।
-ওকে স্যার।ডেস্কে যেয়ে বসলাম।ইনায়া আমার সামনে এসে দাড়িয়ে আছে।কিছু বলবে?
-জানো কাল আম্মু বলেছে খুব জলদি চলে আসবে।
-বাহ খুব ভালো কথা।কাজ শেষ করে আমি আর তুমি ঘুরতে যাবো ওকে?
-ওকে থ্যাংক ইউ আন্টি।।
-ওয়েলকাম বেবি।
চলবে
দ্বিধা
তাবাস্সুম রিয়ানা
৮
-ঐদিন পুরো সময় ইনায়া কে ঘুরিয়েছি।ভালোই লাগে মেয়েটার সাথে সময় কাঁটাতে।আসার সময় আমার কোলেই ঘুমিয়ে পড়েছে।ওকে দেখলে ছোট বেলার কথা মনে পড়ে যায়।স্যারের বাসার সামনে চলে এসেছি।কলিংবেল দিতেই একজন সার্ভেন্ট এসে ওকে কোলে করে নিয়ে চলে গেল।বাসায় ফিরে এলাম।
-আজ এতো দেরি(বাবা)?
-বাবা স্যারের মেয়েকে ঘুরাতে নিয়ে গেছি।
-কয়েকদিন নীল কেও একটু সময় দে।ছেলেটা আজ ও এসে অনেক্ষন অপেক্ষা করেছে তোর জন্য।শেষমেষ ওকে অনেক বুঝিয়ে পার করেছি।
-বাবা আমি চেষ্টা করবো(মাহিরা)
-ঠিক আছে মা।যা ফ্রেশ হয়ে আয়।একসাথে ডিনার করবো।
-ওকে বাবা(মাহিরা)।ডিনার সেরে রুমে আসতেই স্যার কল করলেন।হ্যালো স্যার।
-ডিস্টার্ব করলাম?(আরহান)
-না স্যার।
-ইনায়া ওর মার সাথে কথা বলতে চায়।
-ওকে।দিন। এরপর ওর সাথে অনেক সময় পর্যন্ত কথা বলেছি।পরদিন সকালে ঘুম থেকে একটু দেরি করেই উঠলাম কারন আজ অফ ডে।ফ্রেশ হয়ে রুম থেকে বের হতেই দেখি নীল ড্রইং রুমে বসে আছে।আমার দিকে চোখ পড়তেই কাছে এসে দাড়ালো।
-কই ছিলে সারারাত(নীল)?
-ইনায়াকে নিয়ে বেড়াতে গিয়েছি।
-ইনায়া!!!তোমার স্যারের মেয়ে না?(নীল)
-জি।
-দেখো এখন থেকে ইনায়া আউট তোমার জীবন থেকে তোমার মনে প্রানে শুধু থাকবো আমি বুঝেছো?
-দেখুন আমার মনে আপনার জন্য তেমন কোন ফিলিংস নেই।
-সেটা তো আমার জানার বিষয় না।এখন থেকে আমি তোমার সব।আর কাল আমাদের এ্যান্গেজমেন্ট আর সামনের সপ্তাহে বিয়ে।
-আমি তো এর কিছুই জানিনা(মাহিরা)
-এতো জানা জানির কি আছে সুইট হার্ট?এখন তো জেনেছো।Get ready for being my beloved wife.
-নীল আমার সামনে থেকে চলে গেল।ইনায়া কে নিয়ে কেন এতো সমস্যা এর?বাবা কেন করছে এমনটা?বিয়ের কথাটা আমাকে একবার জানানোর প্রয়োজন ও মনে করলোনা?খুব খারাপ লাগছিলো।তাই আজ আর বের হলামনা কোথাও।বাবার সাথে ও এসব বিষয়ে আর কথা বলিনি।পরদিন সকালে অফিসে যাওয়ার জন্য বের হতেই বাবা ডাক দিলেন।
- আজ অফিসে যেতে হবেনা।কিছুক্ষণ পর পার্লারের মেয়েরা এসে পড়বে।তোর বস থেকে ছুটি নিয়েছি আজ সকালে।
-বাবা তুমি এত কিছু করো কিন্তু একবার ও আমাকে জানানোর প্রয়োজন ও মনে করো না(মাহিরা)।জানানো ছাড়া আমার বিয়ে ও ঠিক করে ফেলেছো।খুব ভালো বাবা খুবই ভালো(অশ্রু সিক্ত চোখে মাহিরা বিদায় নিলো।বিকেল থেকে সব গেস্টরা চলে এলো।মাহিরার সাজ ও প্রায় কমপ্লিট।আরহান ও এসেছে মাহিরার অনুষ্ঠানে।
-কেমন জানি অস্বস্তি লাগছে আরহানের।সকালে ঘুম ঠিকঠাক মতো না হওয়ায় শরীর টা ভালো নেই ওর।এখানে আসার পর থেকে ইনায়া কই জানি দৌড়ে চলে গেল।যাকে সামনে পাচ্ছি তাকেই প্রশ্ন করছি কেউ কোন বাচ্চা মেয়েকে দেখেছে কিনা।হঠাৎ একটা রুমের সামনে এসে থামলাম।দরজা ভিতর থেকে চাপানো।
-কানের দুল পরছি।এমন সময় কে যেন রুমের দরজা খুলে দিল।পিছনে ফিরে দেখি আমার বস।স্যার আপনি?
-মাহিরা কে অপরুপ লাগছে।সব ক্লান্তি যেন নিমিষেই দূর হয়ে গেল ওকে দেখে।হঠাৎ ওর কথায় ঘোর কাঁটলো।না মানে ইনায়া কে কোথাও পাচ্ছিনা।ভাবলাম এখানে এসেছে কিনা?
-ওহ।চলুন আমি ও খুঁজি ইনায়াকে।
-চলো।এরপর আমি আর মাহিরা ইনায়াকে খুঁজতে লাগলাম।
-ইনায়া!!!!!কই তুমি??হঠাৎ বারান্দায় ইনায়া কে দেখগে পেয়ে সেদিকে আগালাম।এই দুষ্ট মেয়ে এখানে কি করছো?(মাহিরা)
-ইনায়া মাহিরার দিকে তাকাল জ্বলজ্বল চোখে।দুহাত দিয়ে চোখ মুছে মাহিরার কোমড় জড়িয়ে কাঁদতে লাগলো।
-ইনায়া কাঁদছো কেন সোনা?ওকে কোলে তুলে রুমে নিয়ে এলাম।খাটে বসিয়ে বললাম কাঁদছো কেন কি হয়েছে?
-আন্টি প্লিজ আমার মা হয়ে যাও।প্লিজ।আমি জানি আমার মা আসবে বলেছে কিন্তু কখনো আসবেনা।প্লিজ আমার মা হও।
-কি বলছো এসব ইনায়া?এতো পাকনা কথা শিখলে কোথা থেকে?
-শিখিনি আন্টি।প্লিজ আমার মা হও।প্লিজ।
-হঠাৎ দরজা খোলার শব্দ পেয়ে সামনে তাকিয়ে দেখি আরহান স্যার।
-ইনায়া তুমি কই ছিলে?পাপা তোমাকে কত্ত খুঁজেছি।
-পাপা প্লিজ আন্টি কে বলোনা আমার মা হতে।
-কি বলছো এসব মামনি?(আরহান)আসো আমার সাথে।
-না আমি যাবোনা।মাহিরা মার কাছে থাকবো।
-ওকে জোর করে কোলে তুলে নিয়ে এলাম(আরহান)
-দরজা বন্ধ করে খাটে বসে আছি।দুচোখ বেয়ে অঝোরে পানি ঝড়ছে মাহিরার।এই ছোট বাচ্চাটির মার প্রয়োজন।কি করবো এখন বুঝতে পারছিনা।সামনে আগাতে ও পারছিনা।
-মাহিরা আয় মা আংটি পরানো হবে এখন(বাবা)
-চোখ মুছে বললাম চলো বাবা।
দ্বিধা
তাবাস্সুম রিয়ানা
৯
.
.
.
-বাবার সাথে ড্রয়িরুমে চলে এলাম।সামনেই সব মেহমানদের বসার ব্যাবস্থা করা হয়েছে।এক কোনায় আরহান স্যার ও ইনায়ার দিকে চোখ পড়লো।ইনায়ার কান্না থামাতে পারছেন না স্যার।খুব খারাপ লাগছিলো ইনায়ার জন্য।কিন্তু কি করবো বুঝতে পারছিনা।নীলের সামনে বসানো হলো আমাকে।
-বাবা আংটি পরাও মাহিরাকে(নীলের বাবা)।
-জি বাবা পরাচ্ছি।মাহিরা হাত দাও।মাহিরা!!!!!(নীল)
খেয়াল করলাম ও আরহানের দিকে তাকিয়ে আছে।
খুব রাগ লাগলো।
-আহ!!!!!নীল জোর করে আমার আঙ্গুলে আংটি পরিয়ে দিয়েছে।মুখটি পুরো লাল হয়ে গেছে যেন খুব রেগে আছে।নীল এবার নিজের হাতটি মাহিরার দিকে বাড়িয়ে দিলো।
-মাহিরা মা আংটি পরা নীলকে(মাহিরার বাবা)
-আংটি যখনই পরাতে যাচ্ছি তখনই ইনায়ার দিকে চোখ যাচ্ছে।শুধু ওর ঐ কথাটি মনে আসছে "আমার মা হয়ে যাও"
-মাহিরা আংটি পরাচ্ছোনা কেন?(নীল)
-দুচোখ পানিতে ভরে যাচ্ছে।পারছিনা আংটি পরিয়ে দিতে।আরহান স্যার কেমন অবাক দৃষ্টিতে আমাকে দেখছে।আশপাশ থেকে সবাই বলছে আংটি পরাতে কিন্তু আমার কানে আসছে ইনায়ার কান্না পারলাম না থাকতে উঠে দৌড় দিয়ে ইনায়ার সামনে বসে পড়লাম।কাঁদতে কাঁদতে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে।চোখ দুটো মুছে দিয়ে বললাম মা বলো আমাকে ইনায়া।
-মা!!!!মা!!!!!
-বুকে জড়িয়ে কাঁদতে লাগলাম।তুমিই আমার বাচ্চা ইনায়া(মাহিরা)
-কি হচ্ছে এসব কিছুই বুঝতে পারছিনা(নীলের বাবা)
-ইনায়াকে ছেড়ে উঠে দাড়ালাম আঙ্কেল প্লিজ রাগ করবেন না।আমি এ বিয়ে করতে পারবোনা।স্যরি।
-মাহিরা কি বলছিস এসব???তুই কি আরহান কে ভালোবাসিস?(মাহিরার বাবা)
-ভালোবাসি কিন্তু ইনায়াকে।আঙ্কেল আন্টি নীল প্লিজ আমাকে মাফ করে দিবেন।
-মাহিরা কি করছো এসব????তুমি জানো যে আমি তোমাকে কতো ভালোবাসি(নীল)
-জানি।কিন্তু তোমাকে বিয়ে করতে পারবোনা(মাহিরা)
-পস্তাবে তোমরা সবাই অনেক পস্তাবে(নীল)।বাবা মা চলো।
-ওরা চলে গেল।দাড়িয়ে আছি বাবার সামনে।ইনায়াকে জড়িয়ে ধরে আছে আমাকে।বাবা মাফ করে দাও আমাকে।
-মাফ চাইতে হবেনা।আমি জানি আমার মেয়েকে।কখনো ভুল কিছু করতে পারেনা।তোর যা ঠিক মনে হয়েছে তাই করেছিস।(প্রস্থান)
-মাহিরা কেন করলে এমন(আরহান)?
-জানিনা কিন্তু ইনায়াকে ছাড়া থাকতে।পারবোনা(মাহিরা)।
-ইনায়া চলো মা(আরহান)
-না আমি মাম্মার কাছে থাকবো(ইনায়া)
-এখন না।আরেকদিন এসে থেকো(আরহান)।
-না পাপা।তুমি ও থাকো মাম্মার কাছে।
-মেয়ের এমন কথায় আরহান কিছুটা লজ্জা পেল।না আমি থাকবোনা।তুমি চলে এসো।পাপার একা ভয় লাগবে তো(আরহান)
-আরে বাবা ইনায়া এতো করে বলছে থাকুক না ও।তুমি ও থেকে যাও।(বাবা)
-না আঙ্কেল ও থাকুক তাহলে।আমি যাই।বায় ইনায়া।
-বায় পাপা।মাম্মা কে বায় বলবেনা?
-বলবো তো বায় ইনায়া।
-বায় স্যার।
-ইনায়ার খেয়াল রেখো।
-চিন্তা করবেন না।ও এখানে ভালো থাকবে।
-হুম(প্রস্থান)
চলবে
#দ্বিধা
তাবাস্সুম রিয়ানা
১০,১১
-ইনায়া চলো তোমাকে ঘুম পাড়িয়ে দেই(মাহিরা)।
-না আগে গল্প শুনাতে হবে তারপর ঘুম(ইনায়া)
-ওকে।চলো।
পরদিন সকাল
অফিসের রেডি হয়ে নিলো আরহান।ইনায়াকে ডেকে তুলতে হবে।ইনায়ার রুমে যেতেই মনে পড়লো ও তো মাহিরার কাছে।পুরো বাড়ি খালি হয়ে গেছে মেয়েটাকে ছাড়া।অফিসের জন্য বেরিয়ে পড়লাম।
-মাহিরা ইনায়াকে নিয়ে অফিসে ঢুকতেই সবাই একটু অবাকই হলো।কারন ইনায়া আরহানের সাথে না এসে মাহিরার সাথে কি করছে?একটি চেয়ার টেনে দিয়ে বললাম এখানে বসো ইনায়া আমি কাজ করি ওকে?
-ওকে মাম্মা(ইনায়া)।
ইনায়া মাহিরাকে মাম্মা ডাকছে শুনে সবার মাথায় পুরো আকাশটাই যেন ভেঙ্গে পড়লো।নিদ দৌড়ে এলো মাহিরার কাছে।
-মাহিরা ও তোমাকে মাম্মা ডাকছে কেন(নিদ)?
-মাম্মাকে কি ডাকবো নিদ আঙ্কেল(ইনায়া)
-মাম্মা!!!!!এসব কি মাহিরা?(নিদ)
-এটাই সত্যি।এখন থেকে আমি ওর মাম্মা(মাহিরা)।
-স্যার জানে(নিদ)
-হুম।আর কিছু শুনতে চাইনা নিদ।কাজ করতে দাও।
-ওকে।(নিদ)
-কেবিন থেকে বের হয়ে দেখি ইনায়া মাহিরার সাথে বসে আছে।ভালোই লাগছে ওদের দেখে।মনের অজান্তে হাসলো আরহান।মাহিরা!!!!!আমার কেবিনে এসো।
-ওকে স্যার।চলো ইনায়া(মাহিরা)।জি স্যার বলুন।
-ইনায়ার হাতে ফোন দিয়ে বললাম তুমি গেমস খেলো।মাহিরা আমার সাথে আসো(আরহান)।ওকে নিয়ে একটি খালি কেবিনে এসে দরজা লাগিয়ে দিলাম।কি চাও তুমি?
-কোন ব্যাপারে(মাহিরা)?
-ইনায়ার ব্যাপারে(আরহান)
-কেন জানিনা কিম্তু ইনায়াকে আমি নিজের থেকে আলাদা করতে পারবোনা স্যার।
-আমি ও মেয়েকে মুহূর্তের জন্য ছাড়া বাঁচতে পারবোনা।আর কাল কে যা করেছো জানি ইনায়ার জন্যই করেছো।তোমাকে ইনায়ার দরকার আর ইনায়াকে ছাড়া আমি বাঁচতে পারবোনা।
-কি করতে হবে আমাকে(মাহিরা)?
-বিয়ে করো আমাকে মাহিরা।
-😱😱😱😱এসব কি বলছেন স্যার?
-দেখো এর থেকে ভালো কোন উপায় নেই আমার কাছে।বিয়েটা হবে শুধু নামে মাত্র।তুমি থাকবে ইনায়ার মা হিসেবে।
-ইনায়ার জন্য যা করতে বলা হবে আমি করবো।বিয়েটা হচ্ছে শুধু ইনায়ার জন্য তাইনা?
-হুম(আরহান)
-আমি রাজি(অজান্তেই দুচোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়তে লাগলো।)
-কাল রেডি থেকো(আরহান)।চলে এলাম ওর সামনে থেকে।
-দরজা বন্ধ করে উড়না দিয়ে মুখ চেপে খুব কাঁদলো মাহিরা।অছনেক্ষন কাঁদলো।চোখ মুছে ডেস্কে যেয়ে বসলাম।
-ম্যাম সব ঠিক আছে তো(ঐশি)?
-হুম সব ঠিক আছে।কাজে যাও।
-ওকে ম্যাম।
-মাহিরা কেবিনে এসো(আরহান)
-জি স্যার বলুন(নিচে তাকিয়ে বলছি)
-গাল চোখ নাক লাল হয়ে আছে।নিশ্চয়ই খুব কেঁদেছে।কাঁদলে ও একটা মানুষকে এতো সুন্দর লাগতে পারে সেটা মাহিরাকে না দেখলে জানতে পারতাম না।ফাইল গুলো কালকর মধ্যে চেক করে আনতে হবে।
-ওকে স্যার। ফাইল গুলো হাতে নিয়ে বের হয়ে এলাম।
-অফিস শেষে ঘরে ফিরতেই দেখি দরজা বাহির থেকে বন্ধ।বাবা তো ঘরে আছে।দরজা বন্ধ করলো কে?ছিটকিনি খুলে ঘরে ঢুকলাম।সাথে সাথে আহ(পিছলিয়ে পড়ে গেলাম)হাতে উঠিয়ে দেখি রক্ত।পুরো ঘর রক্তাক্ত।একি দেখছি??উঠে হাঁটা শুরু করলাম।বাবা!!!!বাবা কই তুমি?বাবার রুমের সামনে আসতেই নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারলাম না।বাবা!!!!!!(চিৎকার করে)।দৌড়ে বাবার রক্তাক্ত শরীরের পাশে বসে পড়লাম।বাবা উঠো প্লিজ কথা বলোনা।কাঁদতে লাগলাম।হঠাৎ ফোন বেজে উঠলো কানে দিলাম হ্যালো(ভাঙ্গা গলায়)
-কেমন লাগলো দৃশ্যটা(নীল)?
-বাবাকে কেন মেরেছো?কি করেছে বাবা তোমার? (চিৎকার করে)
-আমার সাথে অন্যায় হয়েছে।বলেছিলাম না পস্তাবে।পুলিশ কে খবর দিলে আরহান আর ইনায়ার লাশ পাবা(নীল)
-এমন কিছু করবেনা।তোমাকে ছাড়বোনা।
-ভয় পেয়ে গেছি।শুন পুলিশ কে খবর দিলে বুঝিস তো।ফোন কেঁটে গেল।
-হ্যালো.....কেন এমন হলো??????বাবা কেন চলে গেলে????বাবার বুকে মাথা রেখে কাঁদতে লাগলাম।
-কেবিন থেকে বের হতেই দেখি মাহিরার ডেস্কে ছোট্ট একটি পার্স।এই মেয়েটা নিজের জিনিস গুলো ঠিক করে রাখতে পারেনা।যেয়ে দিয়েই আসি।ইনায়াকে নিয়ে মাহিরার বাসায় এলাম।দরজা খোলা রেখেছে কেন এই মেয়ে।ভিতরে ঢুকে দেখি পুরো ঘরে রক্ত যেন খুব ধস্তাধস্তি হয়েছে।মাহিরা!!!!!!
-পাপা কি হয়েছে মাম্মার????
-তোমার মাম্মা ঠিক আছে।আঙ্কেলের রুমের দিকে চোখ পড়লো।আঙ্কেলের নিথর দেহ পড়ে আছে।ওনার বুকে মাথা রেখে মাহিরা কাঁদছে।ওর কাছে গিয়ে বসলাম।মাথায় হাত বুলিয়ে ডাকলাম মাহিরা!!!!!আচমকা আমাকে জড়িয়ে কাঁদতে লাগলো।ধরতে যেয়ে ও পারলাম না।মাথায় হাত বুলাতে লাগলাম।
-খেয়াল করলাম স্যার কে জড়িয়ে ধরেছি।সরে এলাম স্যরি।
-তুমি আমার সাথে চলো।কবরের ব্যাবস্থা করছি।উঠে দাড়িয়ে ওর দিকে হাত বাড়ালাম আসো।
-ওনার হাত ধরে উঠে দাড়ালাম।
চলবে
#দ্বিধা
তাবাস্সুম রিয়ানা
১১
-মাহিরাকে বাসায় নিয়ে এলাম।ইনায়া মামনি মাম্মার খেয়াল রেখো।পাপা আসতেছি(আরহান)
-ওকে পাপা।
-যাও মাম্মার কাছে যাও(আরহান)
-ওকে(ইনায়া)
-আঙ্কেলের জানাজা ও কবরের ব্যাবস্থা করে রাত দেড়টায় ঘরে ফিরে এলাম।ফিরতে বড্ড দেরি হয়ে গেছে।ওরা কিছু খেয়েছে কিনা কে জানে(আরহান)?ঘরে ঢুকে ডাইনিং রুমের সামনে আসতেই দেখি টেবিলে খাবার সাজানো।আজ ঘরে ফিরে খাবার পেয়ে যাবো ভাবতেই পারিনি।মাহিরার রুমে গিয়ে দেখি ইনায়া মাহিরা কে জড়িয়ে ধরে ঘুমোচ্ছে। রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে খাবার সেড়ে রুমে এসে বিছানায় শরীর এলিয়ে দিলাম।
আঙ্কেলের মৃত্যুটা স্বাভাবিক না।ওনাকে মেরে ফেলেছে।কিন্তু কে?কাল ও তো বেঁচে ছিলেন আর আজ ভাবতেই খারাপ লাগছে আরহানের।যেমন করেই হোক খুনিকে বের করতে হবে।সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে নামলাম।ইনায়াকে নাস্তা করাচ্ছে মাহিরা।চোখ মুখ একদম ফুলে আছে।ফ্যাকাশে দেখাচ্ছে মেয়েটাকে।আস্তে করে ডাকলাম মাহিরা!!!!!!
-জি স্যার(ভাঙ্গা কন্ঠে)
-নাশতা করেছো?
-টেবিলে নাশতা দেয়া আছে করে নিন(মাহিরা)পাকঘরে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই মাথা ঘুরিয়ে পড়ে যাওয়ার আগেই দৌড়ে গিয়ে ধরে ফেললাম মাহিরা!!!!!!ঞ্জান হারিয়ে ফেলেছে।কোলে উঠিয়ে খাটে শুইয়ে দিলাম।বাহিরের বাতাসে ওর মুখের সামনে থেকে চুল গুলো উড়ে গেল।কি মায়াবী লাগছে দেখতে।মনের অজান্তেই মুচকি হাসলাম।মুখে পানি ছিটিয়ে ঞ্জান ফিরালাম।
-চোখ খুলার চেষ্টা করছি।মাথা ঘুরাচ্ছে ভীষন।খুব কষ্টে চোখ খুলে দেখি স্যার সামনে বসে আছেন।আপনি?
-হুম।কিছু খাওনি তাইনা(আরহান)?
-.......(মাথা নিচু করে আছে)
-অন্তত নিজের দিকে খেয়াল রাখতে হবে মাহিরা।বুঝতে পারছোনা?নাহলে অসুস্থ হয়ে পড়বে।
-এখন থেকে খেয়াল রাখবো(মাহিরা)।
-গুড।খাবার প্লেট টি ওর দিকে ধরলাম।খেয়ে নাও।
-না স্যার এখন খিদে নেই(মাহিরা)।
-চামচে একটু খাবার তুলে ওর দিকে ধরলাম।খেয়ে নাও।
-খেতে পারবো আমি(মাহিরা)
-চুপচাপ খেয়ে নাও।হা করো(আরহান)
-......(মাহিরা)
-মাহিরা কিছু বলছি আমি খেয়ে নাও।
-অনিচ্ছাকৃত ভাবেই খেয়ে নিলাম(মাহিরা)
-তোমার কি কাউকে সন্দেহ হচ্ছে কে আঙ্কেল কে মারতে পারে?(আরহান)
-(এখন যদি বলে দেই তাহলে নীল আরহান স্যার আর ইনায়ার ক্ষতি করবে।সেটা হতে দেয়া যাবেনা)না স্যার(মাহিরা)
-Are you sure????
-জি।
-ঠিক আছে শুয়ে রেস্ট করো।বের হয়ে এলাম।এভাবে হাতে হাত রেখে বসে থাকলে চলবেনা।কিছু একটা করতে হবে।ইনায়াকে মাহিরার কাছে পাঠিয়ে থানায় এলাম।
-কি সাহায্য করতে পারি(পুলিশ অফিসার)
-একটা খুন হয়েছে।সব খুলে বললাম।
-ওহ।বাসাটিকে একবার ইনভেস্টিগেট করতে চাই।
-ওকে। কবে আসতে চান?
-কাল সন্ধ্যায়(পুলিশ অফিসার)
-ওকে।বের হয়ে এলাম।হঠাৎ মনে হলো কেউ যেন আমাকে দেখে লুকিয়ে গেল।পাত্তা না দিয়ে ঘরে ফিরে এলাম।হ্যালো
-স্যার আসতে বলেছিলেন আজ(কাজী)
-জি বলেছিলাম। কিন্তু আজ না।আমি আপনাকে জানাবো।
-কিন্তু আমি একমাসের জন্য গ্রামে যাবো।
-গ্রাম থেকে আসেন।তারপর দেখা যাবে।
-ঠিক আছে।
-হুম।ফোন কেঁটে গেল।পিছনে তাকিয়ে দেখি মাহিরা দাড়িয়ে আছে।তুমি এখানে???
-কাজী এখন আসতে বলেন(মাহিরা)
-কি???(আরহান)
-জি বিয়েটা আজ হবে(মাহিরা)
-কিন্তু চাচ্ছিলাম বিয়ে টা আরো কয়েকদিন পরে হোক।
-এখানে এভাবে থাকতে পারবোনা।মানুষ নানানরকম কথা বলবে।আপনাকে ও লজ্জাজনক অবস্থায় পড়তে হবে(মাহিরা)।
-ঠিক বলেছো।বাট তুমি ভেবে চিন্তে বলছো তো?
-জি।ভেবেচিন্তেই বলছি।
-ওকে।আসতে বলছি।
-😟😟😟(মাহিরা)।
চলবে
No comments :
Post a Comment