দ্বিধা পর্ব ৫

#দ্বিধা
তাবাস্সুম রিয়ানা
৫
-সকাল ঘুম থেকে উঠে দ্রুত বাসায় যাওয়ার জন্য বের হয়ে গেলাম(মাহিরা)।
-কিরে মা এসে গেছিস?(বাবা)
-হুম এসেছি।রুমে ঢুকে পড়লাম।ফ্রেশ হয়ে নাস্তা সেরে অফিসের জন্য বের হয়ে গেলাম।অফিসে পৌছে দেখি স্যার নীলিমাকে বকছেন।
-স্যার আমি তো এসে দেখি ইনায়া নেই(নীলিমা)
-তুমি কয়টায় এসেছিলা?(আরহান)
-......
-কি হলো বলো কয়টায় এসেছিলা?তোমার ফোন ও বন্ধ ছিলো।এখানে আর আসবেনা। You are suspended.( অারহান)
-প্লিজ স্যার এমন করবেননা।আর হবেনা(নীলিমা)
-শুনো তোমার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ পেয়েছি।অনেক ইম্পরট্যান্ট ফাইল এসআই কোম্পানী কে দিয়েছো তুমি আমার পরামর্শ ছাড়া।জানতে ঐগুলো কতো গুরুত্বপূর্ণ ছিলো।বের হয়ে যাও।আর যেন তোমাকে এখানে না দেখি।গেট আউট।
-বের হয়ে গেলো নীলিমা।ডেস্কে যেয়ে বসলাম।(মাহিরা)
-মিস মাহিরা আসো আমার সাথে(আরহান)
-ওকে স্যার আসছি।
-কাল সন্ধ্যায় একটা পার্টি আছে আমার বাসায়।সময়মতো চলে আসবে(আরহান)।
-ওকে স্যার।সোফার দিকে চোখ পড়লো।ইনায়া আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে।নিজের ডেস্কে চলে এলাম।কিছুক্ষন পর ইনায়া আমার সামনে এসে বসলো।ওর চেহারা দেখে বুঝতে পারলাম কথা বলতে চায় আমার সাথে।তোমার বাবা বলেছে তোমার থেকে ২০হাত দূরে থাকতে(মাহিরা)।খেয়াল করলাম ও মন খারাপ করে চলে গেল সামনের থেকে।ঐদিন স্যার আর ডাকলো না।ইনায়া অনেক বার সামনে এসে ঘোরাঘুরি করেছে।তেমন পাত্তা না পেয়ে চলে গেছে।
বিকেলে আরহান ইনায়াকে কোলে নিয়ে দোলনায় বসে আছে।
-পাপা ইনায়া কি অনেক পঁচা?
-কে বলেছে আমার ইনায়া অনেক লক্ষী(আরহান)
-তাহলে মাহিরা আন্টি কথা বলে না কেন আমার সাথে?(ইনায়া)
-তুমি না বলে ছিলে মাহিরা তোমাকে মারে?
-না পাপা মারেনা।ওনি অনেক ভালো। প্লিজ আন্টিকে বলো না আমার সাথে কথা বলতে।(ইনায়া)
-আচ্ছা মামনি বলবো।(আরহান)
-বাসায় ফিরে দেখি বাবা একজন লোকের সাথে কথা বলছে।(মাহিরা)
-ঐতো আমার মাহিরা(বাবা)
-লোকটি পিছনে ফিরে তাকালো।(মাহিরা)
-এদিকে আয় মা।ও নীল। জার্মান থেকে এসেছে।সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার।
-হায় মাহিরা(হাত বাড়িয়ে দিলো)
-হায় হাত বাড়িয়ে দিয়ে।
-নাইস টু মিট ইউ মাহিরা।
-মি টু।বাবা আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।(মাহিরা)
-ওকে মামনি জলদি আসিস।(বাবা)
-ওকে।
-.নীল আজ তো ডিনার করে যেতেই হবে।
-ওকে আঙ্কেল(নীল)।
-বাবা কি রান্না করবো?(মাহিরা)
-কিছু রান্না করতে হবেনা মামনি।বাহির থেকে অর্ডার করেছি।তোরা গল্প কর।(বাবা)
-ওকে বাবা।নীলের সাথে বসে গল্প করলাম কিছুক্ষন।ভালোই লেগেছে।ডিনার করে চলে গেলেন।বাবা কাল অফিসের একটা পার্টি আছে আরহান স্যারের বাসায়।(মাহিরা)
-ওহ তাহলে তো ভালোই। নীল কে ও নিয়ে যাস পরিচিত হবে।
-না বাবা কোন প্রয়োজন নেই।(মাহিরা)
-সেটা আমি বুঝবো।(বাবা)ঘুমো তে যা।
-ওকে।পরদিন সকালে অফিসের মেইন গেট দিয়ে ঢুকতেই আরহান স্যার ইনায়াকে নিয়ে দাড়িয়ে আছে।ওদের পাশ কেঁটে ভিতরে ঢুকতে চাইলাম কিন্তু স্যার আমার হাত ধরে ফেললেন।
-শুনো।(আরহান)
-বলুন(মাহিরা)
-ইনায়ার থেকে আর ২০ হাত দূরে থাকতে হবেনা(আরহান)
-কেন আমি তো ওকে বকা দেই মারি।(মাহিরা)
-মাহিরা প্লিজ যা হয়েছে ভুলে যাও।ছোট মানুষ মজার ছলে বলেছে।রাগ করোনা।
-ইনায়ার দিকে তাকালাম।ওর চোখে পানি।ইনায়া এদিকে এসো।আমার কাছে আসতেই ওর সামনে বসে বসে পড়লাম No more dushtumi ok????
-ok(বলে জড়িয়ে ধরলো মাহিরাকে)।
-তাহলে কাজে ফিরা যাক??? (আরহান)
-ওকে স্যার।চলো ইনায়া।
-জলদি চলে এসো।ওকে???(আরহান)
-ওকে স্যার।(মাহিরা)কাজে মন দিলাম।এরপর থেকে আর দুষ্টুমি করতো না ইনায়া।অফিস থেকে বের হয়ে মার্কেটে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হলাম।পাশে একটি গাড়ি এসে থামলো।
-কই যাও মাহিরা?(আরহান)
-শপিং করতে।(মাহিরা)
-এসো আমি পৌছে দেই(আরহান)।অামি ও ঐদিকেই যাচ্ছি।
-না স্যার লাগবেনা যেতে পারবো।(মাহিরা)
-কথা না বাড়িয়ে উঠে পড়ো।(আরহান)
-ওকে স্যার।পিছনে উঠে বসলাম।মার্কেটে পৌছে ওনি কিছু শপিং করলেন।একটি ব্লাক শাড়ি কিনে ঘরে ফিরলাম।বিকেলে রেডি হয়ে নিলাম।
-মাহিরা!!!!!জলদি কর মা।বের হতে হবে তো।
-জি বাবা হয়ে গেছে আমার।নের হতেই দেখি নীল গাড়িতে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আছে।কালো একটি ব্লেজার পড়েছে।বেশ মানিয়েছে।আপনি?
-আঙ্কেল আসতে বলেছে।তো আমরা কি যেতে পারি?(নীল)
-উফ বাবা ও না।চলুন।
-আরহান উপর থেকে মাহিরা কে দেখছে।সুন্দর লাগছে ওকে।কিন্তু পাশের ছেলেটি কে?
-মাহিরা তোমার বস কই(নীল)?
-আমি এখানে(আরহান)
-হায় মিঃ আরহান।
-হায়(হ্যান্ডসেক করে)
-নীল।(নীল)
-ওহ নীল।কেমন আছেন মিঃ নীল?
-গুড।আপনি?
-মাচ বেটার।মাহিরা তোমার কাজিন(আরহান)
-না আমার ফিয়্যান্সে(নীল)
-অবাক চোখে নীলের দিকে তাকালাম কি বলে এই ছেলে?(মাহিরা)
-আরহানের চেহারা টি কেমন চুপসে গেল।ওহ কংগ্র্যাটস।
-থ্যাংকস।নীল।
-মাহিরা কে একবার দেখে নীল আমার সাথে নিয়ে এলাম(আরহান)।
-স্যার নীলকে কই নিয়ে গেল?হঠাৎ পিছন থেকে কেউ কোমড় জড়িয়ে ধরলো।
-আন্টি(ইনায়া)
-হায় ইনায়া।কেমন আছো।
-ভালো।তোমাকে আজ খুব সুন্দর লাগছে।
-তোমাকে ও পরীর মতো লাগছে।ওর গাল দুটো টিপে দিলাম।
চলবে