😍বড় লোকের অহংকারী মেয়ে😍
৪র্থ পর্ব
লেখক--- RK Rasel
তিশা আমাকে আর নিলাকে একসাথে দেখে খুব রেগে গেলো।
চোখ লাল হয়ে গেছে।
নিলাঃকিরে সেদিন তো আমাকে খুব কথা শুনিয়েছিলি মামুন নাকি আমাকে ভালোবাসে নাহ।এই দেখ আমি আর মামুন আজ একসাথে হাত ধরে হাটছি।কেনো জানিস আমি মামুনকে আর মামুন আমাকে খুব ভালোবাসে বুঝলি।ফাজিল মেয়ে এতোদিন তোর অনকে অপমান মুখ বুজে সহ্য করেছি,,,কিন্ত আর সহ্য করবো না।কিসের এতো দেমাগ শুনি তোর বাবা বড়লোক তাই???
তিশাঃহ্যা আমার বাবা বড়লোক তাই আমার এতো দেমাগ।
নিলাঃআরে থাম থাম,,শুধু কি তোর একার বাবাই বড়লোক নাকি??অন্যকারো বাবা বড়লোক হতে পারে না।শুন তুই এতোদিন মামুনকে অকারনে অনেক অপমান করেছিস,,কিন্তু এর পর থেকে ভুলেও আর মামুনকে তুই অপমান তো দুরের কথা মামুনের ধারের কাছেও আসবি না,এই বলে দিলাম
তিশাঃতুই বলার কে,আমি মামুনের কাছে যাবো, নাকি যাবো না সেটা আমার ব্যাপার...
নিলাঃনাহ তোর ব্যাপার না,মামুন এখন আমার বয়ফ্রেন্ড সো মামুনের ব্যাপার আমি ভালো বুঝবো তুই দয়া করে মামুনের থেকে একটু দূরে দূরে থাকিস।
আমি অবাক হয়ে নিলার কথা শুনছিলাম এই মেয়ে এই সব বলছে কি?
আমি তার বয়ফে্রন্ড হলাম কবে??
যাক বলছে ভালোই করছে আমি যা না পাড়তাম সেটা নিলা করে দিচ্ছে,,
আমার অপমানের বদলা নিলা নিচ্ছে আমি তো এঞ্জয় করছি।
তিশাঃআরে আমি কি তোর মত বোকা নাকি?আমি মামুনের মত ক্ষ্যাত মার্কা ছেলের সাথে যাবো,,আর কোনো দিন তুই আমাকে মামুনের ধারের কাছেও দেখবি না।
নিলাঃসেটা হলেই অনেক ভালো হয়.....
তিশা হনহন করে চলে গেলো।
আমিঃআচ্ছা তুমি তিশাকে এতো কিছু বললে কেনো???
নিলাঃআমার ইচ্ছা হলো তাই বললাম,,এতোদিন চুপচাপ ছিলাম কিছু বলিনাই।আর বলিনাই বলে মেয়েটা এতো বেড়ে গেছে,,,
আর তুমি অই মেয়ের হয়ে কথা বলছো কেনো??
আমিঃকই আমি কখন বললাম??
নিলাঃনা বলাই ভালো চলো পার্টি এঞ্জয় করি।
পার্টি আমার এঞ্জয় করা শেষ.. মানে হলো তিশার অপমান আহা কত ভালো যে লাগছে বলে বোঝানো যাবে না।
নিলাকে বললাম আমি বাসায় যাবো...
নিলাঃকেনো এতো আগে বাসায় কেনো যাবে??
আমিঃআমার ভালো লাগছে না।
নিলাঃএই কি বলো কি হয়েছে তোমার??
আমিঃতেমন কিছু না,,মাথা ব্যাথা করছে
নিলা আর কিছু বললো না
গাড়িতে গিয়ে বসলো সাথে আমিও
আমাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে নিলা চলে গেলো
এরপর দিন গুলো খুব ভালো কাটতে লাগলো
আর সেদিনের পর থেকে তিশা আর আমাকে কোনো অপমান করেনাই।
আমার সামনেও আসে নাই।
আমি আর নিলা খুব ভালো বন্ধু,,,
হ্যা আমাদের ব্যাচের প্রায় সবাই প্রেম করে,,শুধু আমি আর নিলা ছাড়া,,,
কিন্তু অনেকেই এটা ভাবে আমার আর নিলার মাঝে রিলেশন আছে যদিও এইকথা সত্যি নাহ।কিন্তু লোকে ভাবলে আমাদের আর কি করার আছে,,তার থেকে ভালো যে যেমন ভেবে খুশি তাকে তেমন ভাবতে দেওয়া উচিত।
দেখতে দেখতে ইন্টার ২য় বর্ষে পা রাখলাম।
নিলা আর আমার মাঝে আগের থেকে বেশি ঘনিষ্টটা হয়েছে বলতে গেলে একে অপরের জন্য পাগল কেও কাওকে ছাড়া থাকতে পারি না।নিলা যেখানেই যাক না কেনো আমাকে সাথে নিয়ে যাবে। আর সবার সামনে পরিচয় দিবে আমি নাকি তার বয়ফ্রেন্ড/হবু স্বামী,, আমি এই জন্য নিলাকে আগে অনেক কিছু বলতাম কিন্তু এখন কেনো জানিনা ভালো লাগে তাই কিছু বলি না।
কোনো এক কারনে আমার আর নিলার মাঝে একটু ঝগড়া হয় যদিও এই আগে অনেক বার ঝগড়া হয়েছে।আবার সব ঠিক হয়ে গেছে।
কিন্তু এইবার যখন ঝগড়া লাগলো তারপর দিন আমি জানতে পারি আমাদের নানা বাসায় যেতে হবে দুদিন পর নাকি আমার মামাতো ভাইয়ের বিয়ে।
মামাতো ভাই বিয়ের জন্য পাগল হয়ে গেছে যদি বিয়ে দেওয়া না হয় তবে নাকি বউ বাসায় নিয়ে আসবে
মামা মামি মান সম্মানের ভয়ে বিয়ে দিতেই রাজি হয়ে গেলো।
হঠাৎ করেই সব ঠিক হয়ে গেছে আজকের রাত্রের ট্রেনেই আমাদের যেতে হবে।আমি নিলাকে অনেক
বার ফোন দিয়েছি,,কিন্ত্ ফোন অফফ।নিলাকে সাথে নেওয়ার ইচ্ছা ছিলো গ্রাম দেখতে চেয়েছিলো কিন্ত সেটা আর হলো নাহ।মন খারাপ নিলাকে জানাতেও পারলাম না,,আমরা ঢাকা ছাড়ছি।
মামা বাসায় গিয়ে আমি মন মরা হয়েই ছিলাম।
যেদিন গায়ে হলুদ সেদিন
কয়েকটা মেয়ের সাথে কিছু পিক তুলে ফেসবুকে আপলোড করি।
আমার গায়ে হলুদ ছিলো
আর জামাই জামাই লাগছিলো😞☺☺☺
পোস্টে লেখাছিলো কালকেই বিয়ে তারপর সব ঝামেলা শেষ
উফফফ খুব অনন্দ লাগছে,
ছবি আপলোড করার কিছুক্ষণ পর দেখি নিলার ফোন।।
আমি তো মহা খুশি নিলা ফোন দিয়েছে
মনের খুশিতে হাসতে হাসতে ফোন ধরলাম
আমিঃহ্যা নিলা বলো,জানো আমি খুব খুশি..
নিলা আমার সেই কথার দিকে মন না দিয়ে বললো আচ্ছা মামুন তুমি এখন কোথায়?তোমাদের বাসায় কেও নেই,,তোমাকেও দেখছি না
আমি তো গ্রামে আছি,,
নিলাঃঠিকানা দাও তাও
ঠিকানা দিয়ে দিলাম সাথে সাথে ফোন কাট
ধুর কি হলো একটু যে মন খুলে কথা বলবো সেটাও হলো না,
রাতে সবাই আনন্দ করছে হঠাৎ বাসার বাহিরে ২টা গাড়ি এসে থামলো এতো রাতে গাড়িতে কে এলো সবাই চিন্তায় আছে।
গাড়ি থেকে লোক গুলো নেমে বাসায় দিকে আসছিলো।।
আমি শুনেছি এই গ্রামে নাকি মাঝে মধ্যে ডাকাতি হয়।
আমি ভাবলাম হয়তো ডাকাত এসেছে তাই কাওকে কিছু না বলে লুকিয়ে পড়লাম।
লুকিয়েছি অনেকক্ষণ হয়েছে,,একসময় আমি লক্ষ্য করলাম আমার নাম ধরে অনেকে ডাকাডাকি করছে।আমি তো আরো ভয় পেয়ে গেলাম।
কিন্তু একটু সাহস বুকে নিয়ে বেড়িয়ে এলাম সবার সামনে দেখি নিলা ও তার পরিবার সাথে উকিল আছে আর একজন হুজুর।
আমি নিলাকে দেখে অবাক,
আমিঃএতো রাতে তুমি এখানে কি করো
কোনো কথা বলছে না।
আব্বু এসে বললো আজকে তোদের বিয়ে
আমিঃআব্বু কি বলো তুমি কি ঘুমে আছো নাকি??
আব্বুঃনাহ আমি জেগেই আছি,,আজ তোদের বিয়ে,মেয়েটা এতোক্ষন অনেক কান্নাকাটি করছে,আমরা চেয়েছিলাম তোদের বিয়ে পরিক্ষার পর দিবো
কিন্ত না,তোদের বিয়ে আজকেই হবে,
আমিঃকিন্তু আব্বু????
আব্বুঃচুপ হারামজাদা যখন প্রেম করছিলি তখন মনে ছিলো না,,এখন বিয়ে করতে সমস্যা কিসে শুনি??
আমি না কিছু বলতে পারছি না শুধু এটা ভাবছি এইসব আমার সাথে কি হচ্ছে।
ভাবতে ভাবতে মনে হয় বিয়ে হয়ে গেছিলো আমাদের দুজনকে একরুমে পাঠানো হলো
কি হয়েছে সেটা আমি তখনো বিশ্বাস করতে পারছি না।
রুমের মধ্যে আমি আর নিলা,,
আমিঃএই শুনো কি হলো এই সব?
নিলাঃবিয়ে হলো,,এখন বাসর হবে(দুষ্টুমি করে)
আমিঃতুমি আমাকে বিয়ে করলে কেনো??
নিলাঃভালোবাসি তাই,,
আমিঃভালোবাসো কই আগে তো কোনো দিন বলো নাই।
নিলাঃমেয়েরা আগে কখনো বলে গাধা,,
আমি তো অনেক আগে থেকেই তোমাকে ভালোবাসি...
আমিঃভালোবাসতে ভালো কথা,,এই বয়সে বিয়ে??
নিলাঃকি করবো বলো,আমি যখন দেখলাম তুমি ফেসবুকে ছবি আপলোড করেছো আমি তো ভেবেছিলাম তোমার বিয়ে,,তাই তো অনেক কান্নাকাটি করলাম আব্বু আম্মুকে বললাম তোমার সাথে বিয়ে না দিলে আমি নিজেকে শেষ করে ফেলবো তাই তাড়া ভয়ে😁😁😁😁😁😁
আমিঃআমি তো এখনো পিচ্চু,,
নিলাঃসমস্যা নাই আজকে বড় করে দিবো আমার পিচ্চি বরকে,,
আমিঃমানে কিভাবে??
নিলাঃএতো কিছু জানিনা চলো বাসর করবো,এতোদিন পর তোমাকে কাছে পেলাম
এবার আসো বাসর করবো
এই এই আপনারা এখন একটু যান তো সকালে দেখা হবে
বাসর করবো😁😁😁
আমিও আগে থেকে নিলাকে ভালোবাসতাম কিন্ত বলি নাই😁😁😁
বাসর রাতে বিড়াল ভালোই মারলাম
যদিও ইতিহাস বলবো না।
আসুন আবার গল্পে ফিরে আসি
মামাতো ভাইয়ের বিয়ে খেতে এসে নিজেই বিয়ে করে ফেললাম খুব দারুন ব্যাপার,
বিয়ে শেষ
এবার আমাদের ঢাকায় ফেরার পালা
আমি নিলা এক গাড়িতে চড়ে বসলাম।
রাস্তায় অনেক ধরনের কথা বলতে বলতে বাসায় চলে আসলাম নিলা সোজা আমাদের বাসায় চলে আসলো হাজার হোক শশুড় বাড়ি বলে কথা
বিয়ের প্রথম ১মাস বেশ ভালোই কাটলো
কিন্তু হঠাৎ
করেই নিলা আমার সাথে কেমন জানি ব্যাবহার করতে শুরু করে।আমার উপর সব সময় রেগে থাকতো আমার সাথে তেমন কথা বলতে চাইতো না।কিন্তু কেনো এমন করছিলো সেটা বুঝিতে পারছিলাম না।
এর কিছুদিন পর নিলা আমার কাছে এসে বললো তার নাকি ৫হাজার টাকা লাগবে।
আমিঃএই তুমি কি পাগল আমি এতো টাকা কোথায় পাবো??
নিলা;সেটা আমি জানিনা,,আমার টাকা দরকার তুমি দিবে,,,আব্বু আম্মুর কাছ থেকে আর কত নিবো আমারো তো সম্মান আছে তাই না,তুমি আমাকে বিয়ে করেছো তাই আমার সকল দায়িত্ব তোমার,আমার এখন টাকা লাগবে তুমি দাও।
আমিঃআমি কোনো টাকা দিতে পারবো না।
আর আমি এখনো বেকার আমাকেই চলতে হয় আব্বুর কাছ থেকে টাকা নিয়ে।আর দু একহাজার হলে তাও অন্য কথা ৫হাজার টাকা।আমি দিতে পারবো না।
নিলাঃতারমানে তুমি আমাকে টাকা দিবে না তাই তো??
আমি তখন নিলার হাতে দুই হাজার টাকা দিয়ে বললাম এর বেশি আমার কাছে নেই
নিলা রেগে টাকা গুলো ছুরে ফেলে দিলো আর বললো আমারি ভুল তোর মতন ছেলেকে বিয়ে করেছিলাম বলে।আমার বোঝা উচিত ছিলো তুই একটা ছোটলোক আমার ভরণ পোষণ তুই করতে পারবি না।
তুই আমার জীবিনে আসার পর আমি দিনে দিনে সব স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলছি,,এখন তো নিজের শখ আল্লাদো পূরণ করতে পারবো না তোর জন্য।
আমিঃএইএই তুমি আমার সাথে এমনন ভাবে কথা বলছো কেনো??
নিলাঃতো তোর সাথে আর কেমন ভাবে কথা বলবো,, আজকে আমার এক বান্ধবীর বিয়ে বিয়ে বাড়িতে যাবো আমার কাছে এক টাকাও নেই।
তোর কাছে চাইলাম তুই দিবি না।
হ্যা আব্বুর কাছে টাকা চাইলে আমি অনেক পাবো...কিন্তু তাদের কাছে তো আমি এখন অন্য কার বউ।
আমিঃতুমি মাথা ঠান্ডা করো প্লিজ।
নিলাঃচুপ একদম চুপ,,একদম কথা বলবি না।৫হাজার টাকা দেওয়ার ক্ষমতা নেই,আমাকে বিয়ে করেছে।
আমারো রাগ উঠে গেছে এমন কথা শুনে
আমিঃদেখো নিলা আমি কিন্তু তোমাকে বিয়ে করতে চাইনি,, তুমি আমাকে বিয়ে করেছো.
হ্যা সেটাই তো আমার জীবনের বড় ভুল।তোকে করুণা করে বিয়ে করেছি...
আমিঃমানে কি বলতে চাচ্ছো তুমি কিসের করুণা??
নিলা;আরে তিশা যখন তোকে অপমান করতো তোর জন্য আমার করুণা হতো আর সেই কারনে তোর সাথে মিশেছি,,কে যে সেদিন পাগলের মত তোকে বিয়ে করতে গেছিলাম।
আমিঃদেখো বার বার বিয়ে করতে গেছিলাম বিয়ে করতে গেছিলাম বলে চিল্লাইয়ো না।
নিলা;কি আমি চিল্লাছি,,ছোটলোক তোর সাথে কথা না বলাই ভালো।দু পয়সা রোজগার করার ক্ষমতা নেই,আবার বড় বড় কথা।
আমি আর কিছু বলছি না,,কি হলো নিলার?নিলা তো এমন ছিলো না,আমার সাথে এই প্রথম এতো খারাপ ব্যাবহার করলো,,শুধু কি টাকার জন্য নাকি অন্য কোনো ব্যাপার আছে।
খুব কষ্ট হচ্ছে এই সব কথা ভাবার সময়
আমাকে চুপ থাকতে দেখে নিলা রাগে গজগজ করতে করতে চলে গেলো।আগে থেকেই রেডি হয়েছিলো।আগে কোথাও গেলে আমাকে নিয়ে যেতো,,কিন্তু ইদানীং আমাকে বলার প্রয়োজন মনে করে না
নিলা চলে যাবার পর আমি ভাবছি কি থেকে কি হয়ে গেলো কিছুই বুঝতে পারছি না।
এইসব কথা ভাবতে ভাবতে কখন যে চোখে জল চলেছে সেটা আমি নিজেও জানিনা
নিলা তো ঠিকি বলেছে আমি কোনো কাজ কর্ম করি না।নিলাকে বিয়ে করে ওর জীবন তো সত্যি নষ্ট করে দিয়েছি।
আসলে বড়লোকদের মনে কি চলে তা কেও জানেও না বুঝতেও পারে না।
নিলা ক্ষেত্রেও তাই হলো
কিন্তু বিয়ে যখন হয়েই গেছে একটু মানিয়ে নিলেই তো হতো
বিঃদ্রঃঅধরা থেকে নিলা নাম করা হয়েছে
To Be Continue
No comments :
Post a Comment