Friday, October 26, 2018

Devil Queen পর্ব ২

1 comment

#Devil_Queen
writer - তানিশা
part - 2
--- কাব্য বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পরলো। চোখদুটি বন্ধ করতেই তানিশার ফ্যাকাসে মুখটা ভেসে উঠলো। কাব্য শুয়ে থেকে ভাবছে, মেয়েটার উপর এভাবে রাগ দেখানো ঠিক হয়নি তার। কি করবে সে নিজের রাগকে কন্ট্রোল করতে পারেনা। মেয়েটা অনেক ভয় পেয়েছে। কালকে একবার আবিরের বাসায় গিয়ে তাকে সরি বলা দরকার। তানিশার কথা ভাবতে ভাবতে কাব্য ঘুমিয়ে পরলো। পরেরদিন কাব্য অফিসে বসে কাজ করছিল, অফিসের কাজে আবির কাব্যর কেবিনে আসলো। কাব্যর অফিসে আবির জব করে। আবির এসে বলল,,,
আবির : আমার project টা complete... হয়ে গেছে। একবার দেখে নে,, ( ফাইলটা এগিয়ে দিয়ে )
কাব্য : complete হয়ে গেলে আবার দেখার কি আছে? ( ভ্রু কুচকে )
আবির : তুই অফিসের boss... তাই formality জন্য আরকি।
কাব্য : তোর এই formality আমার কাছে অনেক বিরক্তিকর। ( ফাইলটা দেখতে দেখতে )
আবির : আচ্ছা ভাই আমার ভুল হয়েছে। ফাইলটা ফেরত দে,,
কাব্য : আচ্ছা বাদ,,দে চল আজকে তোদের বাসায় যাবো। ( চেয়ার থেকে উঠে )
আবির : কি ব্যাপার হঠাৎ আমাদের বাসায়?
কাব্য : কথা না বাড়িয়ে চল,,তো
আবির : কিন্তু এখনো তো অফিসের সময় শেষ হয়নি।
কাব্য : তুই কি আমাকে নিয়ে যেতে চাইছিস না?
আবির : না মানে তোকে,,তো হাজার বার বলেও নিয়ে যেতে পারিনা। তাই একটু অবাক হলাম আরকি।
কাব্য : এখানে অবাক হওয়ার কিছু নেই। চল,,
আবির : ওকে চল।
--- কাব্য আবিরের সাথে তার বাসায় চলে গেলো। কাব্য বাসার ড্রয়িংরুমে বসে আছে। সবাইকে দেখা যাচ্ছে কিন্তু তানিশাকে দেখতে পাচ্ছে না। মেয়েটা কি চলে গেলো নাকি? কাব্য বসা থেকে উঠে এদিক ওদিক তাকাতে লাগলো। আবির এসে দেখে কাব্য কাউকে খোঁজছে হয়তো। পেছন থেকে কাব্যর কাঁধে হাত দিয়ে বলল,,,
আবির : কিরে কাউকে খোঁজছিস নাকি?
কাব্য : তোদের বাসার আর কেউ নাই?
আবির : সবাই,,তো বাসাই আছে,
কাব্য : আনহাকে তো দেখা যাচ্ছে না।
আবির : আনহা বাহিরে খেলতে গেছে। এই নে কফি,,
কাব্য : thanks... আর তানিশা কি চলে গেছে? ( কফিটা হাতে নিয়ে )
আবির : না আনহার সাথে বাহিরে গেছে।
--- কফিটা হাতে নিয়ে কাব্য কফিতে একটা চুমক দিলো। তার চোখদুটি তানিশাকে খোঁজে চলেছে। তানিশার জন্য এই বাসায় আসা। মেয়েটা একটু বেশি কিউট, কখন দেখবে তাকে? ভাবতে ভাবতে কফিতে আরেকটা চুমক দেয়। তানিশা অনেকটা বাচ্চা স্বভাবের মেয়ে আনহার সাথে বাহিরে ক্রিকেট খেলছে। আনহা বল নিয়ে দৌড়ে বাসার ভিতরে আসতেই, তানিশাও তার পিছুপিছু ব্যাট নিয়ে দৌড়ে আসতে লাগলো। তানিশার গলার কণ্ঠ শুনে কাব্য কফিটা হাতে নিয়ে বসা থেকে উঠে বাসার মেইন ডোরে যেতে লাগলো। আচমকা তানিশা দৌড়ে ভিতরে আসতেই কাব্যর সাথে ধাক্কা খেয়ে কফিটা কাব্যর ব্লেজারে। কাব্য পুরো "হা" হয়ে দাড়িয়ে আছে, এতবড় মেয়ে বাসার মধ্যে এভাবে দৌড়াচ্ছে? মেয়েটা এমন কেন? ওর কি কোনো কান্ডজ্ঞান নাই নাকি?
তানিশা মাথা তুলে দেখে কাব্য তার দিকে তাকিয়ে আছে। কালকের কথা মনে পরতেই তানিশার গলা শুকিয়ে গেছে। সামান্য কেক লাগানোর জন্য কাল যা অবস্থা করছে। আজকে তো পুরো ব্লেজারটাই নষ্ট করে দিছে। না জানি আজকে devil তার কি অবস্থা করে? ভাবতেই কলিজাও শুকিয়ে গেছে। টেবিলে রাখা এক গ্লাস পানি খেয়ে তানিশা কাব্যর সামনে থেকে এক দৌড়ে নাই। কাব্য এখনো আগের জায়গায় দাড়িয়ে আছে, এক পা ও নড়ছে না। আবির খুব ভালো করে বুঝতে পারছে, কাব্য প্রচন্ড রেগে আছে। কাব্যকে গিয়ে বলল,,,
আবির : ব্লেজারটা খুলে দে,, আমি এক্ষণি,,
কাব্য : তোর বোনকে ডাক,, ( আবিরকে বলার সুযোগ না দিয়ে )
আবির : দোস্ত তুই কিছু মনে করিস না। তানিশা যতদিন আমাদের বাসায় থাকবে তোকে আর আমি নিয়ে আসবো না।
কাব্য : আমি কোনো excuse শুনতে চাই না। তোর বোনকে ডেকে বল আমাকে এসে sorry বলার জন্য।
--- কাব্যর রাগী চেহারা দেখে আবির সোজা তানিশার কাছে চলে গেলো,,,
আবির : তুই এইভাবে দৌড়ে চলে আসলি কেন?
তানিশা : ভাইয়া এমন নাইজেরিয়ান এনাকন্ডা, আফ্রিকান গন্ডার, লাল বাদর, কালো কুমিরের সাথে বন্ধুত্ব করলে কেন?
আবির : আরে আস্তে বল, ও শুনবে
তানিশা : শুনলে আমার কি? আমি আজকেই তোমাদের বাসা থেকে চলে যাবো।
আবির : যেখানেই যাস,, যাওয়ার আগে ওকে sorry বলে যা।
তানিশা : আমি কেন ঐ বজ্জাত devil টাকে sorry বলবো?
আবির : please try to understand...
তানিশা : দেখো ভাইয়া আমি ঐ ডাইনোসর, মুখ পুড়া হনুমানটার সামনে যাবো না।
আবির : যতক্ষণ তুই sorry না বলবি ততক্ষণ ও এই বাসা থেকে এক পা ও নড়বে না।
তানিশা : আমার কোনো দোষ নাই। অযথা আমাকে sorry বলতে হবে? এটা কেমন কথা? তুমি দেখো আমি ঐ জলহস্তীটার কি অবস্থা করি। ( রেগে )
আবির : তুই ঠিক আছিস তো?
তানিশা : আমি একদম ঠিক আছি।
--- তানিশা রাগে ফোঁপাতে ফোঁপাতে কাব্যর সামনে গিয়ে দাড়ালো,,,
কাব্য : sorry...
তানিশা : it's ok... ( কিছুটা ভাব দেখিয়ে )
কাব্য : আমি তোমাকে sorry বলিনি। আমি বলছি আমাকে sorry বলো।
তানিশা : আপনাকে আমি sorry বলবো কেন? আমার,,তো কোনো দোষ নেই।
কাব্য : তুমি আমার ব্লেজারে কফি ফেলেছো।
তানিশা : আপনাকে কে বলেছে বাসার মেইন ডোরের সামনে গিয়ে কফি খেতে? সব আপনার দোষ।
কাব্য : তুমি আমাকে manners... শিখাচ্ছো? ( তানিশার দিকে এগিয়ে গিয়ে )
তানিশা : না মানে,, sorry... ভাইয়া তুমি কই?
--- কাব্যকে এগিয়ে আসতে দেখে, তানিশা ভয়ে পেছনে ফিরে দেখে আবির নেই। আবিরকে না দেখে এক দৌড়ে রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিলো। তানিশার কান্ড দেখে কাব্যর খুব হাসি পাচ্ছে। অনেকটা সাহস দেখিয়ে কাব্যর সাথে কথা বলতে এসেছে, এইটুকু তার সাহস? ভাবছে আর একা দাড়িয়ে হাসছে কাব্য। এলোমেলো চুল গুলোতে, তানিশাকে যতই দেখছে ততই যেন দেখতে ইচ্ছে করছে। মেয়েটা সবার থেকে আলাদা। কাব্য ব্লেজারটা গায়ের থেকে খুলে হাতে নিয়ে সোফায় বসে পরলো। আবির দূর থেকে কাব্যকে লক্ষ করছে। কাব্যর হাবভাব তেমন ভালো দেখাচ্ছে না। তবে আবির যেটা ভাবছে সেটা কি কাব্যর পক্ষে সম্ভব? আবির কাব্যর কাছে গিয়ে বলল,,,
আবির : চল পলাশ আর নিলয়ের সাথে দেখা করে আসি।
কাব্য : এখন?
আবির : হুম, আর কতক্ষণ বসে থাকবি?
কাব্য : ok... চল,,
--- কাব্যকে নিয়ে আবির চলে গেলো। তানিশা দরজাটা একটু খুলে মাথাটা বের করে দেখে কাব্য চলে গেছে। রুম থেকে বেরিয়ে ফুফুর রুমে গেলো,,,
তানিশা : ফুপ্পি আমি আজকে বাসায় চলে যাবো।
ফুফু : কেন কি হয়েছে? তুইতো এক সপ্তাহের জন্য এসেছিলি।
তানিশা : হ্যা, কিন্তু,,,
ফুফু : বুঝেছি কাব্যর জন্য, তাইতো?
তানিশা : না মানে,,
ফুফু : দেখ কাব্য ছেলেটা অনেক ভালো, আমার ছেলের বন্ধু বলে বলছি না। এমনি রাগটা একটু বেশি, মনের দিক থেকে অনেক নরম। অবশ্য আমাদের বাসায় তেমন আসেনা, আজকে কি মনে করে আসলো। কে জানে?
তানিশা : আমি ঐ গন্ডারটার প্রশংসা শুনতে আসিনি।
--- তানিশা রেগে নিজের রুমে চলে গেলো। সন্ধায় রুমে বসে গেইমস খেলছে, তখন তার ভার্সিটির ফ্রেন্ড নীলা কল করলো,,,
নীলা : কিরে তোর,,তো কোনো খোঁজখবর নেই, আমাদের ভুলে গেলি নাকি?
তানিশা : না,,রে তোদের কিভাবে ভুলবো? তোদের মতো বজ্জাতের হাড্ডিদের কি আবার ভুলা যায় নাকি?
নীলা : হুম তোর মতো কইতরিকে ছাড়া জীবনটা কেমন জেনো পানসে পানসে মনে হচ্ছে। কবে আসবি?
তানিশা : তোদের মতো শাঁকচুন্নিদের ছাড়া আমারো ভালো লাগেনা। আমি কালকেই চলে আসবো।
নীলা : তাহলে কালকে ভার্সিটিতে দেখা হচ্ছে?
তানিশা : হুম
--- নীলার সাথে আরো কিছুক্ষণ কথা বলে তানিশা কল কেটে দিলো। পরেরদিন সকালে ব্যাগে কাপড় চোপড় গুছিয়ে তানিশা বাসায় জন্য রওনা দিতে যাবে তখনি তার ফুফু বলল,,,
ফুফু : এখন না বিকালে যাস। আবিরকে বলবো তোকে বাসায় দিয়ে আসার জন্য।
তানিশা : ফুপ্পি আমার আর এখানে ভালো লাগেনা। এমনিতে ভার্সিটিতে অনেকদিন ক্লাস মিস হচ্ছে।
ফুফু : এখান থেকে ভার্সিটিতে চলে যা,,
তানিশা : আচ্ছা আমি বিকেলে বাসায় যাবো। তোমার কথাই রইলো, এখন আমি ভার্সিটিতে চলে যাচ্ছি। বাই,,
--- তানিশা ভার্সিটিতে চলে গেলো। কাব্য অফিসে বসে তানিশার কথা ভাবছে, মেয়েটাকে একটু বেশিই ভাললাগে। কিন্তু আবির,,তো বলে দিছে যতদিন তানিশা আছে ততদিন কাব্যকে তাদের বাসায় নিয়ে যাবেনা,,,
চলবে,,,
( ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন )

1 comment :

  1. আরো নতুন নতুন গল্প, কবিতা,জোকস পড়তে চাইলে আমার সাইটে ভিজিট করুন
    www.valobasargolpo2.xyz

    ReplyDelete