দ্বিধা
তাবাস্সুম রিয়ানা
৪
-ভেবেছিলাম চাকরীটা ছেড়ে দেব।কিন্তু পারিনি।স্যারের মেয়ের সাথে কথা বলা দূরে থাক তাকয়নি ১মাস যাবৎ।কেন জানি ওর জন্য একটা গভীর মায়া কাজ করতো।কিন্তু সেটা প্রকাশ করতাম না।ডেস্কে বসে কাজ করছিলাম।
-ম্যাম স্যার ডাকছেন(নীলিমা)
-ওকে।স্যার আসতে পারি?
-প্লিজ কাম ইন।তোমাকে এসআই কোম্পানির MD র সাথে দেখা করতে হবে।আমিই যেতাম কিন্তু একটা কাজ আছে আমার তাই অন্য জায়গায় যেতে হবে আমাকে। I think you can handle this meeting.
-I will try(মাহিরা)
-গুড।তো এখনি বের হয়ে যাও।কোন ভুল যেন না হয় ওকে?(আরহান)
-ওকে স্যার(মাহিরা)।বের হয়ে গেলাম।
-নীলিমা.........(আরহান)
-জি স্যার(নীলিমা)
-ইনায়া কে রাখো আমার একটা মিটিং আছে।দেরি হলে বাসায় দিয়ে এসো(আরহান)।
-ওকে স্যার(হুহ তার চাকর আমি মেয়েকে দেখা শুনা করবো)
-গুড।বের হয়ে গেলাম।(আরহান)
-উফ রাত অনেক হয়ে গেছে। বাসায় যেতে হবে।আজ বাবা একবার ও কল দিলো না।কিছু হলো নাতো?ব্যাগ থেকে ফোন বের করতে গিয়ে দেখি ফোন নেই।মনে পড়লো।স্যার যখন ডেকেছিলো তখন টেবিলের ওপর ফোন রেখে বের হয়ে গিয়েছিলাম।ইসসস ফোনটা নিয়ে আসতে হবে।অফিস তো মনে হয়ে বন্ধ হয়ে গিয়েছে।তাও একবার যাই।অফিসের দিকে ছুটলাম।তালা মারা হয়নি এখনও অফিসে।ঢুকে পড়লাম অফিসে।ভিতরে ঢুকে দেখি স্যারের মেয়ে নিচে বসে কাঁদছে।চোখ মুখ ফুলিয়ে ফেলেছে বাচ্চাটা।খেয়াল করলাম কেউ নেই।(মাহিরা)
-উফ দেরি হয়ে গেল।নীলিমা ইনায়াকে বাসায় দিয়ে গেছে মনে হয়।নীলিমাকে কল করলাম।ফোন বন্ধ কেন এই মেয়ের?বাসায় যাই আগে।(আরহান)
-বাবুটার কাছে গেলাম।ওর সামনে বসলাম কাঁদছো কেন?বাবা কই তোমার?(মাহিরা)এরপর ও যা বলল ভীষন রাগ লাগলো।ওকে কোলে নিয়ে বের হয়ে এলাম।
-খিদে পেয়েছে(ইনায়া)
-কি খাবে বলো?
-চকোলেট চিপস।
-কেক ও কিছু চিপস চকোলেট খাইয়ে বাসায় ফিরার জন্য রওনা হলাম।ও কোলেই ঘুমিয়ে পড়েছে।হুবহু স্যারের মতো দেখতে।আবছা আলোয় পরীর মতো লাগছে বাচ্চাটিকে।স্যারের বাসায় গিয়ে দেখি ওনি এখনও ফিরেন নি।ওকে কোলে নিয়ে খাটে শুইয়ে দিয়ে সরে যেতে নিলাম কিন্তু ওড়না ধরে রেখেছে।সরতে পারলাম না। নড়লে যদি উঠে যায়।তাই ওকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে গেলাম।(মাহিরা)
-উফ এতো জ্যাম রাস্তায়। ইনায়া কিছু খেয়েছে কিনা কে জানে।ফোনটা বের করে কন্টাকে গিয়ে আনিকার নম্বরটি পেলাম।চোখে পানি চলে এলো।কেন চলে গেলে ছেড়ে।আমি তোমাকে আজ ও ভালবাসি।অনেক বেশি ভালোবাসি।প্লিজ ফিরে এসো।তোমাকে ইনায়ার আর আমার দরকার আছে।ফোনটা পকেটে রেখে দিলাম।ঘরে ফিরে ইনায়ার খাবার তৈরি করে ওপরে গেলাম।লাইট অন করতেই দেখি মাহিরা ইনায়াকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে আছে।ইনায়া আরামে ওর বুকে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছে। কিন্তু মাহিরা এখানে কেন?(আরহান)।ডাকবো??ওর কাছে গেলাম।আস্তে ডাকতে লাগলাম মাহিরা!!!!! মাহিরা!!!!!
-বাবা প্লিজ ডেকোনা।ঘুমোতে দাও।(মাহিরা)
-হেসে দিলাম।মাহিরা!!!
-উফ কি হলো?উপস উঠে বসলাম স্যরি স্যার।
-এখানে কেন তুমি?(আরহান)
-নীলিমার কাছে রেখে এসেছিলেন ওকে।নীলিমা ওকে রোখে ঘুরতে গেছে বলেছিলো এসে আপনার মেয়েকে বাসায় দিয়ে যাবে।মোবাইল ফোন নিতে অফিসে গিয়ে দেখি ও কাঁদছে।তই ওকে বাসায় নিয়ে আসি আমি।নিজের মেয়ের খেয়াল রাখতে পারেন না।আরেকজন কি খেয়াল রাখবে?(মাহিরা)
-দেখো আমার মেয়ের খেয়াল কিভাবে রাখতে হবে সেটা আমাকে শিখাতে এসোনা।(আরহান)
-আমি গেলাম(মাহিরা)
-কই যাবা এতো রাতে?(আরহান)
-বাসায় যাবো।আর আমাকে নিয়ে আপনার চিন্তা করতে হবেনা।দরজার দিকে যেতেই হাত টেনে ধরলেন।বুক ধুকপুক করতে লাগলো।কেন জানি ওনি কাছে আসলে হার্টবিট বেড়ে যেতো।(মাহিরা)
-না করেছিনা।এতো রাতে যেওনা।আজে বাজে লোক থাকবে রাস্তায়।থেকে যাও।(আরহান)
-আমাকে যেতে দিন প্লিজ(মাহিরা)
-যা বলছি শুনো।কাল চলে যেও(আরহান)
-ওকে স্যার অসহায় ভাবে বললাম।
-আমার সাথে আসো(আরহান)
-ওনার পিছু নিলাম।
-কিছু খাবার গরম করে ওকে খেতে দিলাম।খাবার শেষ করে গেস্ট রুমে শুয়ে পড়ো(আরহান)
-ওকে স্যার।
-হুম।রুমে চলে গেলাম।
-খাবার সেড়ে গেস্ট রুমে গিয়ে বাবাকে কল করে নিশ্চিন্ত করে শুয়ে পড়লাম।
চলবে
Friday, October 26, 2018
দ্বিধা পর্ব ৪
Subscribe to:
Post Comments
(
Atom
)
No comments :
Post a Comment