Monday, October 15, 2018

ভালোবাসার গল্প - ভাবনার গহীনে পার্ট 16

1 comment

#ভাবনার_গহীনে
writer :Afroja
Part 16
এভাবেই চলছে দিন কাটছে রাত । আফরাজ কাজের ফাকে রুপাঞ্জনা কে খুজে ফেরে । কোথায় যেতে পারে রুপাঞ্জনা ? এর মাঝেই একদিন রুপাঞ্জনার বড় বোন আর তার সেই ছোট মেয়েটি আসে । এসে জানতে পারে যে রুপাঞ্জনা বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে । জীবনের নির্মম পরিহাসের কাছে আবারো রুপাঞ্জনা ঠকে গেছে । তবে এইবারের কষ্ট টা একটু বেশিই ছিল ।
আদৃতা তার মাম্মামের কথা জানতে চায় তার আন্তেল এর কাছে

আন্তেল আন্তেল (আদৃতা)
_জ্বি মামুনি (আফরাজ)
_আমাল মাম্মাম কোটায় (আদৃতা)
_জানি না মামুনি , আমায় একা ফেলে চলে গেছে তোমার মাম্মাম (আফরাজ)
_তুমি আতকাও নাই তেন (আদৃতা)
_তোমার মাম্মাম আমার সাথে অভিমান করেছে মামুনি (আফরাজ)
_আন্তেল আমাল লক্ষী মাম্মাম তা তেন চলে গেলো (আদৃতা)
_আমি তোমার লক্ষী মাম্মাম কে তাড়িয়ে দিয়েছি মামুনি (আফরাজ)
_তুমি তেন তালিয়ে দিয়েতো আমাল মাম্মাম কে , তুমি খুব পতা (আদৃতা)
_হুম মামুনি আসলেই আমি খুব পচা (আফরাজ)
_তোমাল সাতে কাট্টি আর কতা বলবো না আমি তোমাল সাতে , আর আসবো না তোমাল কাতে , তা তা বাই বাই (আদৃতা)

বাচ্চা মেয়েটা ও বুঝে যে আফরাজ তার মাম্মাম কে তাড়িয়ে দিয়েছে । আফরাজের আস্তে আস্তে অসহ্য লাগতে থাকে । ও হাপিয়ে গেছে । খুব মিস করছে রুপাঞ্জনাকে । রুপাঞ্জনার কথা , রুপাঞ্জনার হাসি । সব সব , রুপাঞ্জনা চলে যাওয়ার পর প্রায়ই সে রুপাঞ্জনা যে রুম টায় থাকতো সেইখানে গিয়ে সময় কাটাতে থাকে [কথায় আছে না দাত থাকতে দাতের মর্যাদা দিতে শেখ , তা না হলে পরে আফসোস করবে ] ঠিক এই একই জিনিস টা আফরাজ এখন বুঝতে পারছে । হাই কোর্ট , জর্জ কোর্ট , সুপ্রিম কোর্ট এ হয়তো আফরাজ একজন বিখ্যাত উকিল , কিন্তু জীবনের কোর্টে সে একজন অপরাধী । যার বিচারক ছিল রুপাঞ্জনা , যে তার বিচার কার্য সম্পাদন করে নিজেই প্রস্থান করে গেছেন ।

চেম্বারে বসে বসে রুপাঞ্জনার কিছু ছবি দেখছিল আফরাজ । ছবি অবশ্য তাদের রিসিপশনে তুলেছিল । হঠাৎ তার খেয়াল হলো রুপাঞ্জনার বান্ধবী মিরার কথা । তাকে একবার মিরার সাথে দেখা করতেই হবে , হয়তো মিরাই তাকে রুপাঞ্জনার খোজ দিতে পারবে । আফরাজ কলেজে গিয়ে মিরার নম্বর যোগার করে মিরার সাথে দেখা করে ।

_হাই (আফরাজ)
_হ্যালো (মিরা)
_প্লিজ বসুন (আফরাজ)
_ধন্যবাদ , জ্বি বলুন কেন ডেকেছেন (মিরা)
_আপনি ও কি রেগে আছেন নাকি আমার সাথে (আফরাজ)
_রাগের কি আছে , কিছু বলবেন কি (মিরা)
_মিরা , প্লিজ রুপাঞ্জনার ঠিকানা টা দিন আমায় , আমার খুব দরকার (আফরাজ)
_উহু , আমার কাছে কোন ঠিকানা নেই আর যদিও থাকতো তাহলে ও তো আমি আপনাকে দিতাম না (মিরা)
_মিরা প্লিজ (আফরাজ)
_কেন , হঠাৎ এতো দিন পার হওয়ার পরে ঠিকানার দরকার পরলো কেন , এর আগে তো পরে নি । (মিরা)
_এখন পরেছে তাই চাইলাম (আফরাজ)
_ওর নাম্বার বা ওর ঠিকানা কোনো টাই নেই আমার কাছে , ও সেইদিন রাতে আমার কাছে ছিল , আমি সাক্ষী ছিলাম সেইরাতের , মেয়েটা পাগলের মতো করেছে , একভাবে তাকিয়ে ছিল আপনার ছবির দিকে , পাগলের মতো প্রলাপ করে কেদেছে মেয়েটা , আর আপনি তখন গভীর ঘুমে আছন্ন আর আপনি ওর ভাবনার গহীনে বিচরণ করেছিলেন । তারপর ভোর হতেই কোথায় যে চলে গেলো , আর যোগাযোগ করে নি এই চার মাসে । (মিরা)

-সত্যি বলছেন তো মিরা ? (আফরাজ)
_মিথ্যে বলারও তো কোন কারন দেখছি না আপনাকে (মিরা)
_কোথায় পাবো তাকে আমি (আফরাজ)
_খুজেও লাভ নেই , সে ধরা দিবে না (মিরা)
_আগের বার চলে গিয়েছিল , বাস স্টেন্ড থেকে ধরে এনেছিলাম (আফরাজ)
_তখন আটকে ছিলেন কেন , যদি এইরকমই করবেন তাহলে আটকে ছিলেন কেন (মিরা)
_আসলে সেইদিন রাতে মাথা টা ঠিক ছিল না । কি হতে গিয়ে কি হিয়ে গেছে (আফরাজ)
_তাই বলে মিথ্যা অপবাদ দেবেন । তাই বলে থাপ্পড় মারবেন (মিরা)
_ওইযে বললাম মাথা টা ঠিক ছিল না । (আফরাজ)
_আপনারা উকিল রা কি এই রকমই বুঝি । একজনকে বিনা অপরাধের শাস্তি দিয়ে দেন । আপনি কত টুকু জানতেন ওর সম্পর্কে । আমি বলছি আপনাকে । রূপ কে আমাদের কলেজের প্রায় অনেক ছেলেই লাইক করতো কিন্তু রূপ ভালোবাসতো রাহাত কে । কিন্তু রাহাত ওকে বিশ্বাস করলো না । তার থেকে বড় কথা ওর নিজের বাবা মা ই বিশ্বাস করলো না । সব টা মেনে নিয়ে আপনার সাথে থাকতে চেয়েছিল , কিন্তু আপনি কি করলেন , জানেন আপনি , রূপ আপনাকে ভালোবেসে ফেলেছিল (মিরা)
_কিহহহহহহহহহ ভালোবেসে ফেলেছিল মানে (আফরাজ)
_অবাক হচ্ছেন তাই না , কিন্তু এটাই সত্যি , রূপ আপনাকে ভালোবেসে ফেলেছিল , কিন্তু বলার সাহস পায় নি । কিন্তু যখনই ও আপনাকে নাজিফার সাথে দেখে তখনই ও অসুস্থ হয়ে যায় । আর আপনি সেই অসুস্থ কেও বিশ্রী ভাবে উপস্থাপন করেছেন , রূপ কে আমিই একদিন বলেছিলাম আপনি অনেক ভালো মানুষ , আপনার মতো মানুষ হয় না , এখন তো দেখছি সত্যি আপনার মতো মানুষ হয় না (মিরা)
_মিরা আমার রুপাঞ্জনাকে খুব দরকার জানেন (আফরাজ)
_আচ্ছা , আপনি ভাবলেন কি করে ও আপনাকে ছাড়া অন্য কারো সাথে,,,, ছিঃ ছিঃ । (মিরা)
_তখন এতো টাই বাজে ভাবে কথা বলেছিলাম যে ওর কষ্ট টাও বুঝি নি আমি (আফরাজ)
_এখন হাত কামড়িয়ে কি করবেন , আচ্ছা নাজিফা মেয়েটা আবার জেন এসেছিল (মিরা)
_সে অনেক কথা , অন্য একদিন না হয় বলবো , এখন সবার আগে আমার রুপাঞ্জনাকে দরকার । (আফরাজ)
_খুজে লাভ নাই , যে নিজ থেকে ধরা দিতে চায় না তাকে শত খুজলেও পাওয়া যাবে না , বুঝলেন , আসছি তাহলে , ভালো থাকবেন , বাই (মিরা)

মিরা চলে যাওয়ার পর আফরাজ অনেক টাই হতাশ হয়ে পরে । যেই আশা টা ছিল সেইটাও শেষ । মিরা হয়তো আসলে ঠিকই বলেছে । নিজ থেকে কেউ যদি ধরা না দেয় তাকে খুজে পাওয়া আসলেই খুব কঠিন ।

আচ্ছা , কি মনে হয় , রুপাঞ্জনা কোথায় ? ভালো আছে তো ? কি করছে সে ? কোথায় আছে ? এই চার মাসে কি একবার ও আফরাজ কে তার মনে পরে নাই ?
উত্তর টা কারোই জানা নেই । সবই তো প্রশ্নবোধক চিহ্ন দ্বারা আবৃত । উত্তর জানা থাকলে খুব ভালো হতো । সব ঠিক হতো । হয়তো নিয়তি এইটাই চেয়েছিল । যার জন্য আফরাজ আর রুপাঞ্জনার রাস্তা টা আলাদা হয়ে গেছে ।

মিল হবে কি তাদের দুইজনের । নাকি ঝরে যাবে ? আফরাজ কি খুজে পাবে রুপাঞ্জনা কে ? আচ্ছা রুপাঞ্জনা কি আসবে আফরাজের কাছে ?
দেখাই যাক না কি হয় ।

সেই অবদি সাথেই থাকুন । ভালো থাকুন । সবাইকে ভালো রাখুন ।



To be continued 😔😔😔

1 comment :

  1. আরো নতুন নতুন Golpo পড়তে ভিজিট করুন
    www.valobasargolpo2.xyz

    ReplyDelete