ম্যাডাম বউ পর্ব ২

#ম্যাডাম_বউ
-সাকিব আহমেদ
#২য়_পর্ব
প্রিন্সিপাল স্যার মিরা ম্যাডাম কে পরিচয় করাইয়া দিয়ে চলে গেলেন।শিশির থ মেরে বসে আছে।ভাবতেছে,সে শেষ পর্যন্ত ম্যাডাম এর প্রেমে পড়ল।মিরা ম্যাডাম কে মোটেও ম্যাডাম এর মত লাগে না।দেখলে মন হয় কলেজে পড়ে।চেহারায় মায়াবী ভাব আছে।দেখলে যে কেউ প্রেমে পড়ে যাবে।শিশির ও পড়ছে।ম্যাডাম হোক আর যাই হোক প্রেম শিশির এর সাথেই করবে।
ম্যাডাম একে একে সবার পরিচয় নিচ্ছেন।সবার শেষে শিশিরের পরিচয় দেওয়ার পালা।কিন্তু শিশির বসেই আছে।
-এই ছেলে তুমি পরিচয় দিচ্ছ না কেনো??
-আমিতো তখন পরিচয় দিলাম।
-আচ্ছা বেয়াদব ছেলে তে তুমি।তখনও বেয়াদবি করছো,এখনও করতেছো।
-জ্বী
-আবার স্বীকার করতেছো???
-যা সত্য তা স্বীকার করতে শিশিরের লজ্জাবোধ করে না।আর লজ্জা মেয়েদের ভুষন,ছেলেরা,কেন লজ্জা পাবে???
-বসো।নেক্সট টাইম বেয়াদবি করলে প্রিন্সিপাল এর কাছে নালিশ করব।
শিশিরের বেয়াদবি দেখে মিরার রাগ হলো।প্রথম ক্লাস তাই কিছু বলল না।শিশির পুরাটা ক্লাস ম্যাডামের দিকে তাকাইয়া ছিল।একটা মানুষ ক্যামনে এত সুন্দর হয়।
ক্লাশ শেষে শিশির কাম্পাসে একা একা বসে আছে।এমন সময় সাব্বির আসল।
-মাম্মা,শেষ পর্যন্ত ম্যাডাম এর প্রেমে পড়লি।হি হি হি হি
-শালা,হাসিস না।দাত ভাইংঙা দিমু।ম্যাডাম হোক আর যাই হোক,প্রেম আমি করমুই।
-মাম্মা,যদি বিবাহিত হয়??
-শালা,এইদিকে আয়
-নাহ,গেলেই তুমি থাপ্রাইবা।
-ওই ম্যাডাম রে দেখলে কি বিবাহিত মনে হয়??
-না,তা মনে হইবো ক্যান??বুঝোস না ম্যাডাম বয়স ওতো বেশি।
-তোরে কইছে বয়স বেশি??
-আচ্ছা,মানলাম,ম্যাডাম অবিবাহিত।কিন্তু কারো সাথে যদি রিলেশন এ থাকে??
-ওর পা ভাইংগা হাতে ধরাইয়া দিমু??
-কার??ম্যাডামের??
-ম্যাডামের হইবো ক্যান??যার সাথে রিলেশন করবো তার।
-হুমমম,বুঝলাম।
-বাসায় যাব,যাবি তুই??
-নাহ,জুনাইদ আসুক,ওর সাথে যাব।
-আচ্ছা আমি গেলাম।
বাসায় এসে শিশিরের কিছু ভাললাগতে ছিলো না।সারারত ঘুমাইতে পারল না।ভোরে ঘুমাইয়া পড়ল।উঠতে উঠতে সকাল ৯ টা বেজে গেল।এই রে ১০ টা থেকে বাংলা ক্লাস শুরু।শিশির তারাতারি রেডি হয়ে কলেজের দিকে রওনা হল।ক্লাসে আসতে আসতে ১০ টা ০৫ বেজে গেল।
ক্লাসে ঢুকতেই শিশির অবাক।ম্যাডাম আজকে শাড়ি পড়ে এসেছে।খুব মানিয়েছে শাড়িটাতে।সিটে বসে শিশির একদৃষ্টিতে ম্যাডামের দিকে তাকাইয়া আছে।
-এই ছেলে,এই
ম্যাডাম কতক্ষণ ধরে শিশির কে ডাকতে ছিল শিশির খেয়াল ই করে নি।শেষে শিশিরের কাছে এসে যখন ডাক দিল তখন টের পেল।
-জ্বী
-কি সমস্যা??
কোন সমস্যা নাই তো।
-তাহলে এভাবে তাকাইয়া আছো কেনো??
-না মানে,আপনাকে সুন্দর লাগতেছে তাই।
-এই যে,কি বলতেছো এইসব??বইয়ের দিকে মনযোগ দাও।
-একটা কথা
-হুমম,বলো
-আমি আপনাকে ভালবাসি।
শিশির এর কথা শুনে পুরা ক্লাস শিশির আর ম্যাডামের দিকে তাকাইয়া আছে।শিশির ভুলেই গিয়েছিল সে ক্লাসে আছে।
-খুব বাড় বেড়েছো দেখছি।কালকের বিহেভ কিছু বলিনি দেখে আজ এতো সাহস পেয়েছো।দাড়াও,তোমাকে কলেজ থেকে বের করার ব্যাবস্হা করতেছি।
ম্যাডাম কথা গুলো বলে ক্লাস থেকে বেড়িয়ে গেলেন।এইসব বেয়াদব ছেলেদের কলেজে রাখার মানেই হয় না।প্রিন্সিপাল স্যার কে বলে কলেজ থেকে বের করে দিতে হবে।প্রিন্সিপাল স্যারকে সব কথা বলল মিরা।স্যার সব শুনে বললেন।
- তুমি চাচ্ছো আমি এখন শিশির কে কলেজ থেকে বের করে দেই???
-জ্বী স্যার,এইসব ছেলেকে কলেজে রাখলে কলেজের মান সন্মান নষ্ট হবে।আপনি আজই বের করে দিন।
-কিন্তু তাতো সম্ভব না।
-কেনো স্যার??
-শিশিরের বাবা এই কলেজের ম্যানেজিং কমিটির প্রেসিডেন্ট।
-এর জন্যই ছেলেটা এত্ত বেয়াদব।তাই বলে স্যার আমি ওর বেয়াদবি সয়ে যাব??
-আচ্ছা,তুমি এখন যাও।আমি ওর বাবার সাথে কথা বলব।
প্রিন্সিপাল স্যারের রুম থেকে বের হতেই শিশিরের সাথে ম্যাডামের দেখা।ম্যাডাম কে দেখে শিশিরে মুচকি হাসি দিল।তা দেখে ম্যাডামের খুব রাগ হলো।
প্রতিদিন শিশির ম্যাডামকে জ্বালায়।নানান ভাবে তাকে বিরক্ত করতে থাকে।এভাবেই কেটে গেল বেশ কিছুদিন।ইদানিং শিশির মিরা কে বেশিই বিরক্ত করতেছে।কলেজের বাইরেও মিরা কে ফলো করে।কলেজের ছাত্রছাত্রীরা বাইরে দেখা হলে ভাবি ডাকে।মিরা সহ্য করতে পারে না।ছোটবেলা থেকে তার শিক্ষকতা করার সপ্ন ছিলো মিরার।সপ্ন টা পুরন ও হইছে।কিন্তু শিশির এর কারনে সেই স্বপ্ন টা ভেংগে যাবে।মিরা কলেজ ছেড়ে দেয়ার প্লান করল।
একদিন কলেজ ছুটির সময় মিরাকে একটা লেটার দিল শিশির।
-এটা কি??
-লেটার।
-কিসের লেটার??
-লাভ লেটার।
-কেনো??
-কারন,আমি আপনাকে ভালবাসি।
মিরা এবার আর রাগ কন্ট্রোল করতে পারল না।কষিয়ে একটা থাপ্পর মারল শিশির কে।
-আর কত জ্বালাবে আমাকে??তোমার কারনে আমার সপ্ন ভেংগে যাচ্ছে।ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়েছি।মা অনেক কষ্ট পড়াশোনা করিয়েছে।মা কে আর কষ্ট দিতে চাই না তাই চাকরী টা নিয়েছিলাম।কিন্তু তোমার কারনে চাকরী টা ছেড়ে দিতে হচ্ছে। আমি কলেজ ছেড়ে দিচ্ছি।
কথাগুলো বলে মিরা চলে গেল।শিশির সেখানেই মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছি।।তার চোখ দিয়ে পানি পরতেছে।নাহ,ম্যাম কে আর ডিস্টার্ব করবে না শিশির।ম্যাডাম যখন তাকে পছন্দ করে না তখন আর কখনো তার সামনে আসবে না।বাবাকে বল কলেজ টা ট্রান্সফার করে দুরে কোথাও চলে যাবে।
#৩য় ও শেষ পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন।
[বিঃদ্রঃঅনুমতি না নিয়া কেউ কপি করবেন নাহ।]