গল্প: মাস্তানি (৪র্থ পর্ব)
।
নিলয়, বলো না তুমি কে? আর তুমি এমন প্রশ্নের
উত্তর কোথা থেকে পাও?
ক্যামপাসে বসে পূরোনো কিছু কথা ভাবছি। তখনি
নেহা এসে উপরের কথাটি বললো।
- কি হল চুপ কেনো? কে তুমি, কোথা থেকে
এসেছো?
- কেনো?? (আমি)
- জানতে ইচ্ছে করছে।
- আমি তো ক্ষ্যাত,,আর জানার বা কি দরকার?
- বলোতো প্লীজ..
কিছু না বলে সেখান থেকে উঠে চলে আসলাম।
এই মেয়েদের আমার একটুও সহ্য হয় না।
মেয়েদের দেখলে সৎ মায়ের কথা মনে পড়ে
যায়। তখনি মনে হয় খুন করি। মনে মনে বললাম, আমি
তো মাস্তানি করতে চাইনি। এই সমাজ, এই সমাজের
মধ্যে
বাসকৃত ভালো মানুষের মুখোশ পরা কিছু লোক ও
সৎ
মায়ের জন্য আজ আসি মাস্তান। আমারো তো
ইচ্ছে ছিলো সবার মত করে বাঁচতে।
.
এখানে এসেছি আজ তিন সপ্তাহ হল, কিন্তু সবাইকে
কেমন আপন লাগছে। ক্লাসে বসে এসব ভাবছি।
তখনি
দেখি নেহা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ঠিক তখনি
স্যার রুমে আসলো... আজ তিনি পড়ানো বাদেই
প্রশ্ন শুরু করলো..
- বলো তো, ভালোবাসা
কি??
- স্যার ভালোবাসা হল একটা অনুভুতি, যা মনের মাঝে
বিস্তার করে। (রফি)
- হুমমম.. আর কেউ বলবে?
(স্যার)
- স্যার, ভালোবাসা হল এক প্রকার ফিলিংকস, মানে,
ভালোবাসা বোঝা যায় কারো প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার
পর। (নেহা)
- আর কেউ বলবে কি? (স্যার)
সবাই যে যার মত উত্তর দিতে লাগলো। ঠিক সে
সময়
স্যার আমার কাছে এসে বললো,
- কি ব্যাপার নিলয়, তুমি কিছু বলছো না কেনে?
উঠে দাড়ালাম। মাথাটা নিচু করে বললাম..
- স্যার, আপনি কেন এই প্রশ্ন
জানতে চাচ্ছেন?
- পরে বলছি, আগে বলো..
- স্যার, আসল কথা হল ভালোবাসা বলে কিছুই নেই।
আমরা যে এতকিছু করি ভালোবাসার জন্য, এত মারামারি
করি কারো জন্য বা ভালোবাসা পাবার
জন্য, আবার সুইসাইড ও করি ভালোবাসার জন্য, মূলত
এসব কিছুই ভালোবাসা না। আসল কথা হল, ভালোবাসা
বলে কিছুই হয় না, এটা একটি মোহ,
স্বার্থের টান। স্বার্থ ছাড়া আমরা যেমন কোনো
কাজ করি না। তেমন স্বার্থ ছাড়া ভালোবাসাটাও হয় না।
একটা ছেলে বা মেয়ে একে অপরকে
ভালোবাসে, সেটা একটা মোহ ও স্বার্থপরতা।
আপনি কোনো
মেয়েকে ভালোবাসুন, কয়েক বছর রিলেশনে
থাকুন,
এর পর ছেড়ে আসবেন। দেখবেন কয়েক মাস
পরেই সব ঠিক। আবার ভালোবাসার জন্য সুইসাইড
করছে, তাকে সেখান থেকে ফিরিয়ে আনুন,
দেখবেন কদিন পরে সেই বলছে, ধুরর
কেনো যে সুইসাইড করতে গেছিলাম।
আসলে স্যার, ভালোবাসা বলতে পরিবারের মা বাবার
ভালোবাসা বোঝায়। তারাই একমাত্র স্বার্থ ছাড়া
ভালোবাসতে জানে। তাছাড়া বাইরের কেউই কখনও
স্বার্থছাড়া ভালোবাসবেই না।.কথাগুলো বলে,
স্যারের
দিকে তাকালাম। দেখলাম উনি কাদছে।
- আরে স্যার, আপনি কাঁদছেন
কেনো? (আমি)
- কি বলবো বাবা, আজ আমার ছেলে আমাকে
অপমান করে তার বউকে নিয়ে সে চলে গেছে
আলাদা। কিন্তু আমি সেটার জন্য কাঁদছি না। কাঁদছি এটা
ভেবে, আমার ছেলেটা ভালো থাকবে তো?
কথাগুলো শুনে নিরবে কেদে উঠলাম। মনটা
চাচ্ছে
স্যারের ছেলেকে যেয়ে খুন করি। কিন্তু
কতজনকে এমন করে মারা যায়? এমন ঘটনা তো
ঘটেই। তখনি আব্বুর কথা মনে পড়লো। আব্বুই
আমাকে ভালো বাসতো, কিন্তু সেটা আর হল না।
সৎ মা নামক এক মহিলার হাতে তিনি খুন হন। পুরোনো
কিছু কথা মনে পড়তেই ঢুকরে কেঁদে উঠলাম।
..
ক্লাস শেষ করে বাইরে এসে ক্যামপাসে বসলাম।
তখনি
নেহা আসলো আমার কাছে।
- নিলয়, তোমাকে আমি
ভালোবাসি। (নেহা)
- কিহহহ...(আমি)
- হুমমম...
- হাহাহাহাহাহা....
- হাসছো কেনো??
- এমনি, তা কেনো.ভালোবাসো?? আমি তো
বেয়াদপ ছেলে, ক্ষ্যাত।
- আগে ছিলা এখন নেই। আর কেনো ভালোবাসি
জানি
না, তবে মনে হয় তোমাকে আমার চাই।
- হিহিহিহি....
কিছু না বলেই আমি চলে আসলাম ওর কাছ থেকে।
মনে হচ্ছে কানে দুইটা থাপ্পড় দিয়ে আসি। কিন্তু
সেটা আর করলাম না,.বাইরে বের হলাম। হাটছি
আজো আমি। কিছু দুর আসতেই.দেখি কেউ
একজন কালো বড় কোট পরে আমাকে ফলো
করছে। ব্যাপারটা কেমন
যেন লাগছে। কিন্তু সে ব্যাপারে কিছু না ভেবেই
চলে আসলাম।
.
(পরেরদিন)
..
কলেজে আসতেই দেখি কালকের সেই
লোকটা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। মানে সে
আমার কলেজের সামনেই দাড়িয়ে আছে।
লোকটার দিকে তাকাতেই হন হন করে হেটে
চলে যাচ্ছে।
- নিলয়, বলো না তুমি কে?
(নেহা)
ক্লাসে বসে আছি। তখনি নেহা এসে কথাটি
বললো..
- কেনো?
- ভালোবাসি তো তাই।
- ভালোবাসাতে বিশ্বাস
করি না।
- তাই? কিন্তু আমি চ্যালেন্জ করে বলতে পারি, তুমি
ভালোবাসাতে বিশ্বাস করো। আর ভালোবাসা
পেতে চাও। আর আমিও তোমাকে ভালোবাসতে
বাধ্য করবে।
কথাগুলো এক নিশ্বাসে বলে নেহা চলে
গেলো। আর আমি বেন্চের উপর মাথা
রেখে,লোকটার কথা ভাবছি।
ব্যাগের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে দেখলাস পিস্তলটা
আছে
কিনা। সেটা ওভাবেই আছে, যেভাবে
রেখেছিলাম। কিন্তু লোকটা কে? লোকটার জন্য
কি আমার এই শহরটা ছাড়তে হবে? কিন্তু আমি তো
ভালো হতে চাচ্ছি। কিন্তু সেটা কি পারবো না?
খোজ নিতেই হবে আমার। ক্লাস থেকে সোজা
বাইরে আসলাম। ফোন দিলাম রিমনকে...
- রিমন, চলে আই ঢাকাতে, একটা লোককে মার্ডার
করতে হবে হয়ত। তোরা করে দিস। কিন্তু
শহরের একটা লোকও যেন না জানতে পারে..
- ঠিক আছে ভাই..(রিমন)
পিছনে ঘুরতেই দেখি নেহা দাড়িয়ে আছে। আমি
লাফ
দিয়ে উঠলাম। সে কি সব শুনে ফেললো..?
- তু তু তুমি..কেনো এখানে? কখন এসেছো?
- কে কি জানতে পারবে না
বলো??
- মানে?
- মানে আমি ঐ টুকুই শুনেছি।
- ওহহ..
আর কিছু না বলে ক্লাসের.দিকে আসলাম। তবে
নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে সেটা বুঝলাম।
কিন্তু আজ প্রথমবার ভয় পেয়েছি।
(waiting for next part)
Friday, October 26, 2018
মাস্তানি পর্ব ৪
Subscribe to:
Post Comments
(
Atom
)
আরো নতুন নতুন Golpo পড়তে ভিজিট করুন
ReplyDeletewww.valobasargolpo2.xyz