Friday, October 26, 2018

গরীবের ছেলে ধনীর মেয়ে

1 comment

গল্পঃ গরিবের ছেলে ধনীর মেয়ে
লেখক:দুষ্টু
:::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
গল্পটি সবাই পড়ুন
নিশিঃ এখন তুমি ছবি দিবা না?
রাসেলঃ না।এটা সম্ভব না।
নিশিঃ আমি বলছি তো তুমি যদি আমাকে তোমার
একটা ছবি দাও
তাহলে আমিও তোমাকে আমার ছবি দিব।
রাসেলঃ না লাগবে না।আমি কতবার বলছি আমি
দেখতে একটুও
সুন্দর না।তবুও তুমি বারবার ছবি চাও কেন?
নিশিঃ এমনি আরো চাইবো।একশবার চাইবো।
রাসেলঃ তুমি আমারে আর মেসেজ দিবা না।আর
আমি আজকের
পর থেকে আর ফেসবুকেও আসব না।bye
এটা বলেই রাসেল অফলাইন হয়ে গেল।নিশি
অনেক মেসেজ
করল কিন্তু কোনো রিপ্লাই আসলো না।নিশির
অনেক মন খারাপ
হলো।
নিশি আর রাসেলের পরিচয় ফেসবুকে।একে
অপরকে অনেক
ভালোবাসে।কিন্তু কাউকে দেখেনি।না দেখেই
একে
অপরকে ভালোবাসে।প্রতিদিনই দেখার জন্য
নিশির সাথে
রাসেলের কথা কাটাকাটি হয়।কিন্তু রাসেল ছবি দিতে
রাজি হয় না।কারণ
রাসেল দেখতে এতটা সুন্দর না।আর পারিবারিক
অবস্থাও বেশি
ভালো না।তাই রাসেল নিশির সাথে এরকম করছে।
প্রায় তিনদিন পর রাসেল ফেসবুকে ডুকল।ডুকে
দেখে নিশির
প্রায় 40টার উপরে মেসেজ।মেসেজগুলো
পড়ে খুব অবাক
হলো রাসেল।
"আমার সাথে কথা না বললে আমি মরে যাবো।
আমি কলেজে
যাবো না।আমি সারাদিন না খেয়ে থাকব।আমি কিচ্ছু
খাব না। আবার নিশি
তার ফোন নাম্বারটাও দিয়েছে"
এই ধরনের মেসেজ।রাসেল খুব চিন্তিত হয়ে
গেল।নিশিও প্রায়
1দিন আগে অফলাইন।না জানি কি পাগলামি করে
বসেছে।
অবশেষে রাসেল নিশির খবর জন্য তার নাম্বারে
ফোন দেয়।
রাসেলঃ হ্যালো কে?
নিশিঃ মানুষ।আপনি কে?
রাসেলঃ আমি রাসেল।
নিশিঃ ও তুমি ।আমি নিশি।কেমন আছ তুমি?
রাসেলঃ ভালো।তুমি আমার সাথে দেখা করতে
পারবা?
নিশিঃ পারব না কেন?অবশ্যই পারব।
আর কিছুক্ষন কথা বলে ফোন রেখে দিল।
দেখা করার আসল
উদ্দেশ্য হলো নিশির সাথে সব সম্পর্ক শেষ
করা।রাসেল
জানত নিশি রাসলকে দেখলে কোনোদিন পছন্দ
করবে না।
আর তাই আগে থেকেই সবকিছু সমাধান করতে
কাল দেখা
করতে যাবে।
দেখা করার দিন....
রাসেল পার্কের টেবিলে বসে আছে।ও বার
বার একটি
মেয়ের দিকে তাকাচ্ছে।কারণ মেয়েটা এতটাই
সুন্দর ছিল যে
রাসেল চোখ ফিরাতে পারছে না।বার বার আড়
চোখে ঐ
মেয়েটাকে দেখছে।অনেক সুন্দর করে
হিজাব করে
এসেছে।কিছুক্ষন পর মেয়েটা ব্যাগ থেকে
ফোন বের
করে কাকে যেন ফোন দিল।
রাসেল চমকে উঠল।তার মোবাইলটা বাজতেছে।
মেয়েটা ঘুরে
তাকাল রাসেলের দিকে।দুজন দুজনের দিকে
তাকিয়ে আছে।
মানে মেয়েটা আর কেউ না।ও নিশি।নিশি আস্তে
আস্তে
এগিয়ে এল রাসেলের দিকে।
নিশিঃ তুমি রাসেল?
রাসেলঃ ভয়ে ভয়ে বলল হ্যা আমি।
নিশিঃ (অনেক রেগে) তো তোমার এই অবস্থা
কেন?
রাসেলঃ আমি তো আগেই বলেছি আমি অনেক
গরীব।আমি
দেখতেও ভালো না।
নিশিঃ তাই বলে এই অবস্থা?পায়ে কি এটা?সেন্ডেল
জুতা কেন?
রাসেলঃ আমার এই এক জোড়া জুতা ছাড়া আর
কোনো জুতা
নেই।
নিশিঃ আর এটা কি শার্ট পড়ছো?এটা কি খাটের তলা
থেকে বের
করছো?এত কুচকানো কেন?
রাসেলঃ এটা আমার কলেজ ড্রেস।আর এটাই আমার
ভালো কাপড়।
নিশিঃ মানে??কলেজ ড্রেস।এই তুমি আর একটা
কথাও বলবে না।
এখুনি এখান থেকে যাও।যাও এখানে থেকে।
রাসেল কথাগুলো শুনে আর থাকতে পারল না।
চোখ দিয়ে
অঝুরে পানি পড়ছে।যে মানুষটা তাকে সবচেয়ে
বেশি
ভালোবাসতো সেই মানুষটি তাকে এত অপমান
করল।কথাগুলো
ভাবছে আর কাদছে।রাস্তার একটা কিনারা ধরে
হেটে চলছে
রাসেল।সুন্দর হয়ে জন্ম নিতে পারিনি এটা কি আমার
দোষ?আর
পৃথিবীতে সবাইতো আর ধনী হতে পারেনা।
কথাগুলোক
ে ভাবছে আর দুহাত দিয়ে চোখের পানি
মুছছে।
কিছুক্ষন পর....পিছন থেকে শার্টের কলার ধরে।
গাড়িতে উঠো।
রাসেলঃ তুমি?
নিশিঃ হ্যা আমি।আগে রিক্সায় উঠো।
রাসেল রিক্সায় উঠে নিশির পাশে বসল।
নিশিঃ কাদতেছ কেন?
রাসেলঃ এমনি।
নিশিঃ এমনি আবার কেউ কাদে নাকি?
রাসেলঃ কিছু না।
নিশিঃ আমি একটু রাগ করে বলেছি বলে তুমি ওখান
থেকে চলে
আসবে?
রাসেলঃ হুম।আর আমাকে নামিয়ে দাও আমি বাড়ি
যাবো?
নিশিঃ বাড়ি গেলে দেখা করতে বলেছিলে
কেন?
রাসেলঃ তুমি আমাকে দেখতে চায়ছিলে তাই
দেখা করছি।আমি
আগে থেকেই জানতাম তুমি আমাকে একটুও
পছন্দ করবে না।
আর এখন সেটাই হয়েছে।
নিশিঃ একটু আগে তো অপমান করেছি।এখন কিন্তু
ধাক্কা দিয়ে
রিক্সা থেকে রাস্তায় ফেলে দিব।যাতে গাড়ির
নিচে পড়ে মরে
যাও।
রাসেলঃ ফেলে দাও।আমাদের মতো
গরীবদের মরে যাওয়াই
উচিত।
নিশিঃ জীবনেও না।আমি তোমাকে মরতে দিব না।
তুমি মরলে আমি
কি বাচব নাকি?আমিও তো মরে যাবো।
রাসেলঃ মানে?
নিশিঃ মানে আমি তোমাকে ভালোবাসি আর বাকি
জীবন
তোমাকেই ভালোবাসব।
রাসেলঃ তুমি পাগল নাকি?কই আমি আর কই তুমি?
নিশিঃ আমি তোমার চেহারাকে ভালোবাসি না।
তোমার টাকাকে
ভালোবাসি না।তোমার জামা কাপড়কেও না।এমনি
তোমাকেও না।
আমি শুধু তোমার সুন্দর মনটাকে ভালোবাসি।
রাসেলঃ না না।এটা অসম্ভব।
নিশি আস্তে আস্তে অনেক রাগছে।দেখতে
আগুনের
মতো লাল হয়ে যাচ্ছে।যেন গিলে খাবে।
নিশিঃ এখন কিন্তু সত্যি সত্যি ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিব

রাসেলঃ ফেলে দাও।
হঠাৎ করে রাসেলকে জড়িয়ে ধরে গালে একটা
কিস করে
বসল নিশি।রাসেল পুরাই অবাক।রাসেল তাকিয়ে
আছে।নিশি দু হাত
দিয়ে মুখটাকে আড়াল করে নিল।
রাসেলঃ সত্যিই আমাকে ভালোবাসো?
নিশিঃ হুম।
রাসেলঃ ছেড়ে যাবে নাতো?
নিশিঃ যাবো।
রাসেলঃ তাহলে ভালোবাসো কেন?
নিশিঃ মৃত্যুর সময় কি তুমি আমার সাথে যেতে
পারবে?তখন তো
ছেড়ে যেতেই হবে।
রাসেল এবার কিছুই বলতে পারল না।নিশিকে জড়িয়ে
ধরে কাদতে
লাগল।
নিশিঃ হয়েছে।এবার চলো কিছু খেয়ে আসি।
রাসেলঃ কেন?বাড়ি থেকে কিছু খেয়ে আসনি?
নিশিঃ তুমি আমার মেসেজ পড়নি?
রাসেলঃ হ্যা পড়ছি তো।ওমা তুমি এখনো কিছু
খাওনি।
নিশিঃ না।তোমার সাথে খাব।তার আগে তোমার
জন্য কিছু কেনাকাটা
করতে হবে।
রাসেলঃ কিন্তু আমার কাছে যে টাকা নাই।
নিশিঃ এই সত্য কথা বলার জন্যই তো আমি
তোমাকে এত
ভালোবাসি বোকা ছেলে।আর টাকা নেই মানে?
আমার টাকা তো
সব তোমারি টাকা।
রাসেলের চোখ দিয়ে আবার পানি পড়লে
লাগলে।আবার
নিশিকে জড়িয়ে ধরল।
আসলেই জীবনে গরীব হয়ে কিছু করতে না
পারলেও
আমাদের চারপাশের মানুষগুলোকে চেনা যায়
খুব সহজে।
রাসেল যেমন একজন ভালো মনের মানুষ
খুজে পেয়েছে।
ঠিক এভাবেই।
*********সমাপ্ত*************
ভালোবাসা দুই ধরনের।একটা চেহারার সাথে
আরেকটা মনের
সাথে।চেহারার ভালোবাসাটা চেহারার সাথেই
বিলীন হয় যায়।আর
মনের ভালোবাসাটা মৃত্যু পর্যন্ত। সঙ্গেই
থাকুন

1 comment :

  1. আরো নতুন নতুন গল্প, কবিতা,জোকস পড়তে চাইলে আমার সাইটে ভিজিট করুন
    www.valobasargolpo2.xyz

    ReplyDelete