Friday, October 26, 2018

শয়তান শিক্ষক পার্ট ১১

1 comment

#Devil_Teacher
part - 11
--- একটা ভুল নাহয় হয়েছে তাই বলে এভাবে রাগ দেখাবে আস্ত একটা devil শুধু শুধু রাগ দেখায়, কথায় কথায় ধমক দেয়। থাকবো না আর এই রুমে, আমি আজকে থেকে নীলার রুমে থাকবো ( কথাগুলো বলে তানিশা নীলার রুমে চলে গেলো )
নীলা : ঝগড়া শেষ হয়েছে?
তানিশা : আগে বলতে পারিসনি সিন্থিয়া ম্যাডাম তোর ভাবি হয়? ফাজিল মেয়ে তোর কারনে আজকে আমাকে অনেক গুলো ধমক শুনতে হয়েছে ( কাঁদোকাঁদো গলায় )
নীলা : আমিতো বলতে চেয়েছি তুইতো শুনলি না।
তানিশা : বিয়ের আগেতো বলতে পারতি কিন্তু বলিসনি, devil টা তোর ভাই তাও বলিসনি। আর আমি এটা বুঝতে পারছিনা তোর নিজের বাড়ি থাকতে হোস্টেলে কেন থাকতি? আমাকে বোকা বানানোর জন্য?
নীলা : আরে ভাইয়া এই ফ্লাটটা নতুন নিয়েছে, আর আমি তোকে বোকা বানাতে যাবো কেন? আমিতো ভাবছি তুই ম্যাডামকে চিনিস। তোর সাথে ম্যাডামের যা ভাব ছিলো
তানিশা : আমি ম্যাডামকে কিভাবে চিনবো?
নীলা : তোর মিলি আপুর বড় ঝা,,, তুই জানিস না? ( অবাক হয়ে )
তানিশা : কোন মিলি আপু?
নীলা : গাধী তোর মিলি আপু কয়টা? যার বিয়েতে ভাইয়া তোকে প্রথম দেখেছে ( রেগে গিয়ে )
তানিশা : রাগিস কেন? ঐ এনাকন্ডা টার জন্য আর কখনো রাজশাহী যাওয়া হয়নি তাই জানিনা। আর মিলি আপুর কথাতো ভুলেই গেছি। ( মন খারাপ করে )
নীলা : কিছু দিন পরে তো মনে হয় আমাকেও ভুলে যাবি! ( ভ্রু কুচকে )
তানিশা : এই শুননা ম্যাডাম কিভাবে তোদের ভাবি হয়?
নীলা : ভাইয়া কার বিয়েতে গিয়েছিল?
তানিশা : ওনার বন্ধুর
নীলা : তাহলে মিলি আপু যদি ভাইয়ার বন্ধুর বড় ভাইয়ের বৌ হয়, ম্যাডাম কি হবে?
তানিশা : ভাবি।
নীলা : এখন বুঝতে পারছিস, নাকি আরো বুঝাতে হবে?
তানিশা : বুঝতে পারছি। কিন্তু একটা কথা মাথায় আসছেনা, ৩ বছর আগের একটা ভুলের প্রতিশোধ নেয়ার জন্য আমাকে বিয়ে করার কি দরকার ছিলো? ( চিন্তিত হয়ে )
নীলা : গাধী তুই বের হো আমার রুম থেকে ( রেগে গিয়ে )
তানিশা : আমি আবার কি করলাম? ( অবাক হয়ে )
নীলা : ভাইয়া তোকে ভালবেসে বিয়ে করছে, আর তুই বলছিস প্রতিশোধ? গত ৩ বছর ভাইয়া তোকে কত খুজেছে তুই জানিস?
তানিশা : মাত্র ৩ দিনের পরিচয়। তুই কোথায় দেখলি ভালবাসা, আমি তো দেখলাম আমাকে চড় মারছে। ( নিজের গালে হাত দিয়ে )
নীলা : তোর কারনেই হয়তো মারছে
তানিশা : হুম, ভুলটা আমার ছিলো,,,
নীলা : তো ম্যাডাম এখন যদি নিজের ভুল বুঝতে পারেন, তাহলে আমার রুম থেকে যান, আমি ঘুমাবো।
তানিশা : আমি আজ থেকে তোর সাথে ঘুমাবো।
নীলা : পাগল নাকি! তুই যা আমার রুম থেকে
তানিশা : আমার স্বামীর বাড়ি আর আমাকে বের করে দিচ্ছিস!
নীলা : তো! স্বামীর রুমে যা আমার রুমে কেন এসেছিস?
তানিশা : তুই দেখি আস্ত একটা সাপনী, যেমন devil তেমন তার বজ্জাত বোন। তোর মতো ডাইনির সাথে তো জীবনেও থাকবো না
নীলা : তোর কাছে এতো নাম আসে কোথায় থেকে!
তানিশা : আরো আছে শুনবি
নীলা : না থাক, তাহলে এগুলো আমার উপর প্রয়োগ হবে আমি জানি।
তানিশা : না শুনলে নাই, হুহ,,,
--- তানিশা বসার রুমের সোফায় শুয়ে আছে, কাব্য রুমে গিয়ে দেখে তানিশা নেই। বসার রুমে এসে দেখে তানিশা সোফায় ঘুমিয়ে আছে,,,
কাব্য : তানিশা উঠো
তানিশা :......
কাব্য : তানিশা উঠো বলছি ( রেগে গিয়ে )
তানিশা : জ্বি,,জ্বি স্যার ( ঘুমের মধ্যে ভয় পেয়ে )
কাব্য : এখানে কি করছো তুমি?
তানিশা : ঘুমিয়ে ছিলাম ( ভয়ে ভয়ে )
কাব্য : রুম ছেড়ে এখানে কেন? এটা ঘুমানোর জায়গা?
তানিশা : স্যার এখানে ঘুমানো যায়তো, চাইলে আপনিও ঘুমাতে পারেন। আসেন ( বলেই নিজের জ্বিব্বায় কামড় দিলো )
কাব্য : তুমি এখানে কেন ঘুমিয়েছো? ( আগুনের দৃষ্টিতে তাকিয়ে )
তানিশা : আমার খুব ঘুম আসছিলো, তাই,,,
কাব্য : এক চিমটার মানুষ' এতো বড় রুমে জায়গা হয়নি তোমার!
তানিশা : আমি আর আপনার সাথে ঘুমাবো না। আপনি শুধু শুধু রাগ দেখান
কাব্য : আজকের পর যদি আমাদের বিছানা ছেড়ে অন্য কোথাও ঘুমানোর চেষ্টা করো, পা দুটো কেটে হাতে ধরিয়ে দেবো। ( কথাটা বলেই তানিশাকে কোলে তুলে নিলো )
তানিশা : আমি হেটে যেতে পারবো
--- কাব্য তানিশার দিকে রাগি চোখে তাকাতেই, তানিশা ভয়ে চুপ হয়ে গেলো। তানিশাকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে নিজে শুয়ে পরলো, তানিশা নিজের বুকে জড়িয়ে ধরে বলল,,,
কাব্য : জানো তোমাকে যেদিন প্রথম দেখেছি মনে হয়েছিল,, একটা হলুদ জামদানি শাড়ি পরা ছোট্ট পরি আমার সামনে দাড়িয়ে ছিলো, আর আমি অপলক তাকিয়ে ছিলাম তার দিকে। সেদিন প্রথম তোমার প্রেমে পরে যাই, বিয়ের দিন বায়না ধরে তোমার সাথে সারাদিন কাটানোর পর আমি কখন যে তোমাকে এতোটা ভালবেসেছি বুঝতে পারিনি। তোমাকে না দেখলে কখনো জানতে পারতাম না যে মেয়েরা এতো কথা বলতে পারে। আর বৌভাত অনুষ্ঠানে তুমি যা করলে,,, ( হতাশ হয়ে )
তানিশা : স্যার আমি বুঝতে পারিনি, আর আমিতো ভেবেছিলাম,,, ( করুণ দৃষ্টিতে )
কাব্য : জানি বলতে হবেনা। তারপর তোমাকে চড় মারার পর তুমি যে পালিয়েছো তোমাকে আর খুজে পাইনি। কয়েক মাস আগে সিন্থিয়া ভাবি ভার্সিটি থেকে কিছু দিন ছুটি নিয়ে যাওয়ার সময় তোমাদের সবার সাথে একটা pic তুলেছিলো। সেটা আমাকে send করে তখন তোমাকে খুজে পেয়েছি, বিশ্বাস করো মনে হয়েছে দেহের মধ্যে প্রাণ ফিরে পেয়েছি। তানিশা জীবনটা অনেক বৈচিত্র্যময়, পৃথিবীতে সবাই এক হয় না, কেউ শান্ত প্রকৃতির হয়। কারো মাঝে রাগ জেদ একটু বেশি থাকে। তাই বলে সে মানুষটা যে খারাপ তাতো নয়।
তানিশা : স্যার আমাকে একটু ছাড়বেন?
কাব্য : কি হয়েছে?
তানিশা : আমাকে কেউ এভাবে জড়িয়ে ধরলে আমার ঘুম আসেনা।
কাব্য : আমি যে তোমাকে এতক্ষণ কথাগুলো বলছি তোমার কি সেদিকে কোন লক্ষ নেই? তুমি ঘুম নিয়ে ব্যস্ত ( ভ্রু কুচকে )
তানিশা : কথাগুলো শুনছি কিন্তু আমার খুব ঘুম আসছে ( করুণ গলায় )
কাব্য : তুমি কি কোন কথা seriously নিতে পারোনা? ( রেগে গিয়ে )
তানিশা : বলেন শুনছি ( বিরক্তি নিয়ে )
কাব্য : তোমার শুনতে হবেনা, তুমি ঘুমাও
--- রেগে তানিশাকে ছেড়ে দিয়ে পাশ ফিরে ঘুমিয়ে পরলো। সকালে উঠে তানিশার সাথে কোন কথা বলেনি, নাস্তা না করে ভার্সিটিতে চলে গেছে। আজ তাদের কে না নিয়েই চলে গেছে, তানিশা নীলাও ভার্সিটিতে চলে এসেছে,,,
রাফি : আজকে আমাদের কথার রানি এতো চুপচাপ কেন?
রিতু : কিরে ওর চেহারার বারোটা বেজে আছে কেন? ( নীলাকে উদ্দেশ্য করে )
নীলা : ওকে জিঙ্গাসা কর।
রাতুল : আমাকে বল কি হয়েছে?
তানিশা : কিছুনা
রিতু : কিছুতো একটা হয়েছে,,,
তানিশা : কি আর হবে,, ঐ আফ্রিকান গন্ডারটা আমার সাথে রাগ করে কথা বলেনা। সকালে নাস্তাও করেনি, বজ্জাতের হাড্ডি রাগ আর ধমক ছাড়া মনে হয় কিছু শিক্ষে নাই। আর আমি কইতুরির মতো সব সয্য করছি ( কাঁদোকাঁদো গলায় )
রাফি : কইতুরি এটা আবার কি?
তানিশা : তোর মতো অমূর্খ কিভাবে জানবে ( রেগে গিয়ে )
রাতুল : অমূর্খ ( অবাক হয়ে )
রিতু : এই তোরা এগুলো বাদদে তো এটা নতুন কিছুনা,, তানিশা তুই তাহলে তোর #Devil_Teacher ভালবেসে ফেললি
তানিশা : আমি কেন ঐ ইংরেজটাকে ভালবাসতে যাবো!
নীলা : ভাইয়াকে আবার ইংরেজ বানিয়ে দিলি?
তানিশা : দেখিস না ইংরেজদের মতো ফর্সা
নীলা : ওহহ,,
রিতু : এই তোর আর স্যারের love story টা বলনা।
তানিশা : love story থাকলেই তো বলবো
রিতু : তোর সাথে স্যারের কিভাবে পরিচয়? তুই যে বললি স্যার তোকে থাপ্পড় দিছে, কেন দিছে এটাও বললি না।
তানিশা : শুন তাহলে,
--- ৩ বছর আগে আমার খালাতো বোন মিলি আপ্পির বিয়েতে রাজশাহী গিয়েছিলাম। তখন হলুদের মধ্যে ঐ devil টার সাথে দেখা হয়, আগে থেকেই অনেক handsome ছিলো। প্রথম দেখে ক্রাশ খাইছি, তাই মুক্তা ( মিলির ছোট বোন ) আপ্পিকে জিঙ্গাসা করলাম,,,
( ৩ বছর আগে )
তানিশা : আপ্পি ছেলেটা কে?
মুক্তা : কোনটা এখানে তো অনেক ছেলে আছে?
তানিশা : ঐযে ছেলেটা দাড়িয়ে আছে ( অবশ্য devil এর সাথে একটা ছেলে ছিলো )
মুক্তা : তোর হবু দুলাভাই ( মুচকি হেসে চলে গেলো )
--- আমি ভাবলাম ছেলেটা মুক্তা আপ্পির boyfriend তাই পরিচিত হয়ে নেই। আমি যাওয়ার আগে দেখি ওনি নিজেই আমার কাছে এসে বলল,,,
কাব্য : hi আমি কাব্য
তানিশা : আমি আপনার শালিকা ( এক গাল হেসে )
কাব্য : what! ( ভ্রু কুচকে )
তানিশা : আমার নাম তানিশা
কাব্য : nice name.... আপনার নামটা আপনার মতো কিউট
তানিশা : ধন্যবাদ,,,
--- এভাবে অনেক কথা হয় দুজনের মাঝে, বিয়ের দিনটা লাল বাদরটার সাথেই ছিলাম, সারাদিন অনেক দুষ্টামি করছি। বোনের জামাই হবে বলে কথা, কত গল্প জোড়ে দিছি ওনার সাথে। পরের দিন বৌভাত অনুষ্ঠানে যখন আমি মিলি আপ্পির শশুড় বাড়ি যাই,,,
চলবে,,,

1 comment :

  1. আরো নতুন নতুন Golpo পড়তে ভিজিট করুন
    www.valobasargolpo2.xyz

    ReplyDelete