জুনিয়র বর

জুনিয়র বর
-সাকিব আহমেদ
.
আমি মৌ।বাংলাতে অনার্স কমপ্লিট করেছি।মা বাবার একমাত্র সন্তান।বাবা মায়ের সাথে ঢাকাতে থাকি।বাবা আমার বিয়ে ঠিক করেছেন আমার জন্মের আগে।আমার বাবার বন্ধু রহমান আঙ্কেল এর ছেলের সাথে।রহমান আঙ্কেল এর ছেলেকে কখনো দেখিনি।আমার জন্মের কিছুদিন পর রহমান আঙ্কেল তার পরিবার সহ চিটাগাং শিফ্ট হয়ে যান।এরপর ব্যাবসার কাজে আন্কেল মাঝে মাঝে ঢাকা আসতেন।তাদের পরিবারের আর কেউ আসেনি।আমিও কারো সাথে সম্পর্ক করিনি কারো সাথে।কারন,যেহেতু আমার বিয়ে ঠিক করা।ভেবেছি,বিয়ে যেহেতু ঠিক করা প্রেম বর এর সাথেই করব।
রহমান আন্কেল তার পরিবার সহ আবার ঢাকাতে শিফ্ট করেছে।বাবা মা ও বিয়েটা ফাইনাল করেছে,মেয়ে বড় হয়েছে।আগামী সপ্তাহে আমার বিয়ে।আমার বিয়ে যার সাথে ঠিক করা,আমি তাকে কখনো দেখিনি।শুধু নামটুকু জানি,ইশতিয়াক আহমেদ বাবু।
আজকে আমাদের প্রথম দেখা হবে,পৌর পার্কে।বিকালে খুব সেজে পার্কে গেলাম।অন্যররকম একটা ফিলিংস কাজ করতে ছিল।লাইফে প্রথমবার কোন ছেলের সাথে দেখা করতে এসেছি।তাও আবার যাকে নিয়ে সপ্ন দেখেছি।যে আমার সপ্নের রাজকুমার।সত্যিই আলাদা ফিলিংস কাজ করতে ছিল।পার্কে এককোনায় বসে আছি।আমি নীল শাড়ি পড়ে এসেছি।তাকে হলুদ পান্জাবি পড়ে আসতে বলেছি।হলুদ আমার প্রিয় রং।হলুদ পান্জাবি পড়া কেউ আমার দিকে এগিয়ে আসতেছে।
- হাই,আমি ইশতিয়াক আহমেদ বাবু।
-ঐ তোর বয়স কত রে??(আমার প্রশ্ন শুনে ছেলেটা হকচকিয়ে গেল।এই ছেলে আমার থেকে কম করে হলেও ৩ বছরের ছোট হবে।তাই এই প্রশ্ন করলাম)
-জ্বী!!আমাকে বলছেন??
-এইখানে তুই ছাড়া আর কেউ আছে?
-না,নাই।কিন্তু আপনি আমার সাথে এইরকম ব্যাবহার কেন করতাছেন??দুইদিন পর আপনি আমার বৌ হবেন।
-ঐ বৌ হব মানে,তোর মত পিচ্চিকে বিয়া করবে কে?
-এই যে মিস.বৌ না মৌ।আমি পিচ্চি না।আমি অনার্স প্রথম ইয়ারে পরি।
-হি হি হি।আমি কিসে পড়ি জানো???আমি অনার্স কমপ্লিট করেছি।তোর বয়স কত রে???
-জ্বী।১৯ বছর।
-এই বয়সেই বিয়ে করতে চাস?
-বিয়েতো তোমাকেই করতে হবে।আমার যখন ২২ বছর হবে তখন তোমার ২৫ হবে।তখন আমি বুড়িকে বিয়ে করব নাকি??ব্যাপারটা বাবা মা বুঝতে পারছে।জন্মের আগে বিয়েটা ঠিক হয়ে ভালই হইছে।এই বয়সে বৌ।উফ,ভাবতেই কেমন জানি লাগতাছে।
-তোর সাহসতো কম না।তুই আমাকে তুমি করে বলতেছ??
-তুমি তো আমার হবু বৌ।বৌকে কি কেউ আপনি করে বলে নাকি??
-তোরে আমি তুমি করে বলা ছুটাইতেছি।
-আমি তোমার জুনিয়র বর।বরের সাথে এইরকম ব্যবহার করে??
-বর মানে??তোকে কে বিয়া করবে??
-কেন তুমি??
-আমি তোকে বিয়ে করছিনা।
-বিয়েতো আমাকেই করতে হবে।
-কোনদিনও না।আমি তোকে কোনদিনও বিয়ে করব না।
-দেখা যাবে।সন্ধা হয়ে আসছে বাসায় যাও।আবার দেখা হবে।
-আর কোনদিন দেখা হবে না।বাই
রাগ করেই ওখান থেকে চলে আসলাম।আমার থেকে ৩ বছরের ছোট একটা ছেলের সাথে আমার বিয়ে ঠিক করছে বাবা মা।বাসয় এসে তোলপাড় করে দিলাম
-তোমরা এইটা কি করছ?আমার থেকে ছোট একটা ছেলের সাথে আমার বিয়ে ঠিক করছ??
-রাগ করিস না মা।আসলে তোর বিয়েটা তোদের জন্মের আগেই ঠিক করেছিলাম।কিন্তু রহমানের প্রথম মেয়ে হল।কি আর করার।বাবু ছোট হলেও ছেলে হিসেবে খুব ভালো।
-ভালো ছেলে!!!বেয়াদব একটা।আমাকে তুমি করে কথা বলে।সাহস কত।আবার বলে সে নাকি আমার জুনিয়র বর।আমি কিছুতেই আমি এই ছেলেকে বিয়ে করতে পারব না।
-আমি রহমান কে কথা দিয়েছি।এখন তুই যদি বিয়ে না করতে চাস তাহলে আমি রহমানের কাছে ছোট হব।অপমানিত হতে হবে আমকে।তাছাড়া,দুই পরিবারের সবাই জানে দুইদিন পড়ে তোদের বিয়ে।সবাইকে দাওয়াত দেয়া হয়ে গেছে।এখন তুই যদি না কর।আমি কাউকে মুখ দেখাতে পারব না।
বাবার কথা চিন্তা করে বিয়েতে রাজি হয়ে গেলাম।তাছাড়া,আমিও ওকে মনে মনে ভালবাসতাম।ওকে নিয়ে কল্পনা করতাম।আর ও যে ফাযিল ছেলে,ওকেও শিক্ষা দিতে হবে।বিয়ের আগেই জামাই জামাই ভাব দেখায়।
আজ আমাদের বিয়েটটা হয়ে গেল।মহা ধুমধামে বিয়েটা হল।বাসর ঘরে বসে আছি।আমার জুনিয়র বরের অপেক্ষায়।
[দ্বিতীয় পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন]