রহস্য - (পর্ব -১১)
লেখক- স্বপ্নীল শুভ্র
_______আমার খুব
চিন্তা হচ্ছে মিমের কি হলো,
কারন এই এক বছরের রিলেশনে
মিম একদিনও স্কুল এ অনুপুস্থিত থাকে নি।
আর মনটাও খুব খারাপ।
দেখতে দেখতে তিনটা দিন কেটে গেলো,
কিন্তু মিমের সাথে আমার কোন যোগাযোগ নেই।
বাসায় শুয়ে শুয়ে ভাবছি,
এমন সময় বাসার কলিং বেলটা বেজে উঠলো!
আম্মু বললো,অাঅ
আশিক দেখতো কে এসেছে!
আমি উঠে গিয়ে দরজাটা খুলে দেখি,
একটা বোরকা পড়া মেয়ে,
মুখটা কালো একটা স্কাপ দিয়ে ডাকা,
শুধু চোখ দুটো দেখা যাচ্ছে।
কিন্তু চোখদুটো খুব চিনা চিনা লাগছে!
মনে হয় মিমের সাথে খুব মিল!
আমি বললাম কাকে চান?
তার পর যা হলো তা আমি কল্পনাও করতে পারি নাই!
মেয়েটি আমাকে খুব জোড়ে জড়িয়ে ধরলো!!!
আমি বললাম কি হলো,
ছাড়ুন আমায় কি করছেন।
এটা বলাতে আরো জোর করে জড়িয়ে ধরলো আমাকে।
এই তুমি আমাকে চিনো নাই,
আমি মিম তোমার মিম!!
কথাটা শুনে আমিও জড়িয়ে ধরলাম মিমকে।
একটু পর মিম আমাকে বললো,
কি বাহিরেই দাড়িয়ে কথা বলবা?
নাকি ভিতরে নিয়ে যাবা।
আমি মিমকে আমার রুমে নিয়ে আসলাম।
আমার রমে এসে মিম প্রথমে বোরকা টা খুললো,
আমি তাকিয়ে দেখি,
মিমের চোখটা ফুলে আছে!
চোখের নিচ দিয়ে কালো দাগ পড়ে গেছে!!!
আমি বললাম কি হয়েছে তোমার?
তিন দিন কই ছিলা তুমি?
আমারে কি তুমি মিস করো নাই?
তোমার ফোন বন্ধ ছিলো কেন?
স্কুলে আসো নাই কেন?
আরে কথা বলো না কেন?
আমার কথা গুলো শুনে
মিম কান্না করছিলো,,,,
মিমের কান্না করা দেখে আমি একদম
চুপ হয়ে গেছি!!
মিমের কান্না দেখে আমার বুকের বাঁ পাশটা
মনে হয় ভেঙ্গে যাচ্ছিলো________
আমি শুধু চুপ করে দেখছিলাম,
কি বলবো ভাষা খুজে পাচ্ছিলাম না।
একটু পর মিম কান্না থামিয়ে,
আমায় জিঙ্গাসা করলো,
কেমন আছো তুমি আশিক???
আমি কিছুটা মাথা ঠান্ডা করে
বললাম,
আমি কেমন আছি, সেটা আমার থেকে
তুমিই ভালো জানো!!
আচ্ছা শোনো,
আসলে আমাকে এই তিনদিন
বাসায় আটকে রাখছিলো!!
বাসায় কে জানি বলে দিছে,
যে আমি তোমার সাথে রিলেশন
করি।
এটা জেনে আব্বু আমার বিয়ে
ঠিক করেছে।
আগামী ১০ তারিখ আমার আমার বিয়ে!
আজকে আমি বাসা থেকে একেবারে
বের হয়ে এসেছি।
আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না,
আশিক কোন কিছু একটা করো!!
আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না।
কথাটা বলে মিম কান্না করছিলো__________
আমি মনে হয় কথা বলার ভাষাটা
হারিয়ে ফেললাম।
আমি কি করবো বুঝতে পারছিলাম না।
আমি মাথায় হাত দিয়ে পড়ে গেলাম নিচে,
তারপর আমার আর কোন কিছু মনে নাই,
আমি নিজেকে আবিষ্কার করলাম কোন একটা
বেডে।
তাকিয়ে দেখি আমি একটা হসপিটালে বেডে
শুয়ে আছি!
আমি তাকিয়ে দেখি আম্মু আমার পাশে
বসে আছে!!
এমন সময় আম্মুকে আমি কিছু বলতে চাইলাম।
আম্মু আমাকে বললো,
আশিক তোমার কেমন লাগছে?
আমি বললাম আম্মু,মিম!!
মিম!!!! বলার সাথে সাথে
ঠাসসসসসস!ঠাসসসসসস!
আমি তো পুরা কারেন্টের শক খেলাম!!
আম্মু কোনদিন আমার শরীরে হাত
তুলে নি,আর আজ আম্মু আমাকে কোন
কারন ছাড়াই মারলো আমার কেন জানি
আজকে পৃথীবিটীকে খুব অচেনা মনে হচ্ছিলো!
একি আম্মুর চোখ দিয়ে কেন জ্বল পড়ছে?
আমি আম্মুকে কোন কিছু বলতে যাবো,
তার আগেই আম্মু আমাকে একটা চিঠি দিয়ে
চলে গেল?
আমি আমি চিঠিটা হাতে নিয়ে,
দেখলাম চিঠিটা মিমের!
আমি পড়া শুরু করলাম_____________
♥আশিক♥
আজকে আমি আর বললাম না,
আমার ভালো বাসা নিও!আর যদি
পারো আমার ভালোবাসাটা ফিরিয়ে দিও!!!
আসলে আমি কথা গুলো তোমার
সামনে দাড়িয়ে বলার সাহস ছিলো না!
তাই আমিকাগজ কলমের আশ্রয় নিয়েছি!
আসলে আমার আর তোমারভালোবাসা
আমার পরিবার মেনে নিবে না।
আমি আব্বুকে অনেক বুঝিয়েছি কিন্তু
কিছুতেই কোন কাজ হলো না।
আব্বু উল্টো আমাকে রুমের মধ্যে
আটকে রেখেছিলো।আর ওনি আমার
বিয়েটা একেবারে ফাইনাল করেছে।
ছেলেটা নাকি ইঞ্জিনিয়ার।অনেক টাকা
বেতন পায়।আর তোমার জন্য আমি
ওয়েট করতে পারবো না।আমি জানি
তুমি হয়তো আমায় অনেক ভালোবাসো!
আমি ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে দেখলাম,
আমি তোমার জন্য আমি আমার বাবা
মাকে কষ্ট দিতে পারবো না!আর আমি
তোমার চেয়ে আমার বাব মাকে অনেক
বেশি ভালো বাসি!আর তোমার জন্য আমি
আমার বাবা মায়ের মনে কষ্ট দিতে পারবো না।
পারলে আমায় ক্ষমা করে দিও,আর আমায় ক্ষমা
না করলেও আমার কিছু যায় আসে না! আর
তুমি তো বলে ছিলে আমার সুখের জন্য তুমি
সব কিছু করতে পারবে, আজকে আমি তোমাকে
আমি বলছি,তুমি এখন থেকে আর কোন দিন আমার কোন খোঁজ খবর বা আমার সাথে দেখা সাক্ষাত করার চেষ্টা করবানা। তুমি দেখে নিও তোমার জীবনে আরেকটা মিম
আসবে। ভালো থেকো!
ক্ষমা করে দিও.........
মিম।
চিঠিটা পড়ার পর নিজেকে আর ধরে রাখতে
পারলাম না।খুব কষ্ট হচ্ছিলো।দু চোখ বেয়ে
আপনা আপনি জ্বল আসছিলো।
এমন সময় আম্মু আসলো আম্মু আমার হাত থেকে
চিঠিটা নিয়ে পড়লো,পড়ে আম্মুও কান্না করে দিলো।
আমায় মাথায় হাত দিয়ে শান্তনা দিয়ে দিলো।
আমি আম্মুকে বললাম,
আমাকে হাসপাতালে কেন আনা হয়েছিলো?
আম্মু বললো,মিমের চিৎকার শুনে আমি তোর রুমে
যাই!
গিয়ে দেখি তুই অঙ্গান হয়ে পড়ে আছিস,
তারপর তোকে নিয়ে হাসপাতালে চলে আসি।
তারপর আজ তিনদিন পর তোর সেন্স ফিরলো!!
ডাক্তার বললো,উচ্চ রক্ত চাপে তোর ব্রেন স্টোক হয়।
কথাটা শুনে একটু আপছোস হলো,
কেন মরে গেলাম না!!!
আমি আম্মুকে বললাম,আমাকে বাসায় নিয়ে চলো।
হসপিটাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাসায় চলে আসলাম।
কয়েকদিন মাথাটা খুব ঘুড়াতো।
এখন অবশ্য আর প্রবলেম হয় না।
৪-৫ টা দিন কেটে গেলো।
এখন আর মিমের কথা ওরোকম ভাবে ভাবি না।
সারাদিন রুমেই থাকি।
রাতে ঘুমাতে পারি না,
ঘুমের মধ্যে চলে আসে মিম।
কারন মিম আমায় বলতো যে,আমি যেন কখনো
১২ টার পর জেগে না থাকি বা পড়াশোনা না করি।
কোনো মেয়ের সাথে কথা বললে
মিম খুব রাগ করতো তাই আমি কখনো
কলেজের কোন মেয়ের সাথে কথা বলতাম না।
সকালে ঘুম থেকে উঠতাম সবসময় মিমের ফোনে.
আর এখন সকালে ঘুম থেকে উঠলেই মিমের
কথাগুলো মনে পড়ে।
তার কারনে আমি সবসময় দিনে ঘুমাতাম,
যাতে মিমের কথা না মনে পড়ে!!
আর একটা কথা ওইদিনের পর থেকে আমি
আর কখনো মিমের সাথে যোগাযোগ করিনি।
আর মিমের আব্বু একদিন এসেছিলো আমাদের
বাসায়,ওনি বলেছিলেন,
মিম নাকি ওর হাসব্যান্ড কে
নিয়ে আমিরিকাতে আছে।
আর আমি তার পরে আর
কোনদিন স্কুলে যেতে পারিনি,
কারন স্কুলে গেলেই মিমের কথা
খুব মনে পড়তো!!!
শুধু পরিক্ষাটা দিয়েই চলে
আসি ওখান থেকে।
আর এখানে এসে এই কলেজে
ভর্তি হই।
আর এসব কারনের জন্যই খুব সাধারন
ভাবে থাকতাম আমি কলেজে,
যাতে আমার অতীত আমাকে কষ্ট না দেয়।
কথাগুলো বলা শেষ হলে আমি তাকিয়ে
দেখি কলেজের সবাই কান্না করছিলো।
সারদের চোখে পানি ধরে রাখতে পারলোনা।
আমি মিমের দিকে তাকিয়ে দেখি,
মিম খুব কান্না করছিলো!!
আমি তাকাতেই আমার দিকে তাকিয়ে,
একটা হাঁসি দিলো,আমি হাঁসিটার মানে
খুজে পেলাম না।
হঠাৎ করেই দেখলাম মিম স্টেজের দিকে
দোড়ে আসতেছে____________
আজকের মতো শেষ______
সামনে আসছে, গল্পের অন্তীম(পর্ব____১২)
এতে যা যা রহস্য উন্মুক্ত হবে---
১.মিমের হাঁসিটার মানে কি?
২.মিম কেন দোড়ে আসছিলো?
৩.আমার জীবনে আসা প্রথম মিম
কেন আমার সাথে এরোকম বিশ্বাসঘাতকতা
করলো?
৪.আমার জীবনে আসা ২য় মিম ও কি হারিয়ে যাবে
আমার জীবন থেকে,ক্যান্সার নামক নিষ্ঠুর নিয়তী কি কেড়ে
নেবে তাকে আমার থেকে?নাকি আমার জান্নাত এর আম্মু হবে????
জানতে চাইলে চোখ রাখুন আমার টাইম লাইনে
অথবা গ্রুপে।
সে পর্যন্ত ভালো থাকেন।
আল্লাহ হাফেজ।
Friday, October 19, 2018
ভালোবাসার গল্প - রহস্য পর্ব 11
Subscribe to:
Post Comments
(
Atom
)
আরো নতুন নতুন Golpo, কবিতা, জোকস পড়তে ভিজিট করুন
ReplyDeletewww.valobasargolpo2.xyz