রহস্য (পর্ব -১০)
লেখক - স্বপ্নীল শুভ্র।
হঠাৎ করেই একদিন আমার জীবনটা পাল্টে গেল,
আমি আশিক যে কিনা কোন দিন কোন
মেয়ের দিকে আড়চোখে
তাকাই নি।
আর সেখানে আমি এই মেয়েটির থেকে চোখ
সরাতে পারছি না!!!
বন্ধু বললো কিরে,
আশিক কি দেখিস?
আমি বললাম আমার স্বপ্বের পরী
টাকে দেখতেছি!!!
আরে দেখে কোন লাভ নেই!
ওর নাম আমাদের স্কুলে নতুন ভর্তি হয়েছে।
আমাদের স্কুলের হেড সারের মেয়ে!
নাম হচ্ছে মিম!
আমাদের ক্লাসেই পড়ে,
আমি আমার বন্ধ উজ্জল কে বললাম,
আরে চিন্তা করিস না!
ওকেই তোর ভাবি বানাবো!
এটা বলে আমি আর উজ্জল একটু দোকানে
গেলাম।
আস্তে আস্তে ই ক্লাস শুরু হয়ে যায়।
আমরা ক্লাসের সামনে এসে,
সার কে বললাম.
আসতে পারি সার???
হঠাৎ কেউ একজন বলে উঠলো,
না দেরী করেই যখন ফেলেছো তাহলে
আর একটু দেরী করে পরের ক্লাস অদ্বি দাড়িয়ে থাকো!
মেয়েটির দিকে তাকিয়ে দেখি,
আমার সেই স্বপ্ন পরী কে??
আমি তো হা করে তাকিয়ে আছি!
এমন সময় সার বললো,
মিম ঠিকই বলেছে।
আর একটু কষ্ট করে এই
ক্লাস পরে আসো!!
আমরা কিছু না বলে বাহিরে দাড়িয়ে আছি!
আর মিমের দিক থেকে
চোখটা সরাতে পারছি না!!!
এতো সুন্দর মেয়ে আমি
আজ পর্যন্ত কোন দিন দেখিনি!!
প্রায় ৩০ মিনিট দাড়িয়ে থাকার পর
ক্লাসে আসলাম।
বাকি ক্লাস গুলো মিমের দিকে
তাকিয়ে তাকিয়েই পার করে
দিলাম।
ক্লাস শেষ করে বাসায় চলে আসলাম।
বাসা এসে শুধু মিম এর কথাই
মবে পড়ছে!!
রাতে ঘুম ও হলো না ঠিকমতো!
শুধু মনে হলো কখন সকাল হবে,
আর কখন পরীটাকে দেখতে পারবো!!!
অনেক কষ্টে রাতটা পার করে,
ফ্রেস হয়ে খাওয়া দাওয়া করে
একটু আগেই চলে গেলাম স্কুলে!
মনে হলো,
অনেক আগেই এসেছি!
এখনো কেউ আসেনি কলেজে,
শুধু কিছু কিছু ছেলেমেয়েরা
প্রাইভেট পড়ার জন্য এসেছে!!
আমি স্কুলের বারান্দায় বসে আছি,
দেখতে দেখতে অনেকেই গেট দিয়ে
প্রবেশ করলো,
কিন্তু মিম এর কোন খবর নাই,
একটু পর দেখি আমার পরীটা
গেট দিয়ে প্রবেশ করে আমাদের ক্লাস
রুমের দিকে আসতেছে,,,,,,,,
আমি পলকহীন ভাবে মিমের দিকে
তাকিয়ে আছি!!
মিম এসে সরাসরি আমাকে বললো,
এই ছেলে তুমি স্কুলে কেন আসো?
আমি তো অবাক হয়ে তাকি আছি
ওর দিকে??
তুড়ি বাজিয়ে মিম বললো,
এই ছেলে হা করে কি দেখছো!
আমি বললাম,
তোমার চোখ গুলো দেখছি!!
কথাটা শুনে মিম কিছুটা লজ্জা পেয়ে
বললো!
স্কুলে না এসে পার্কে চলে যাও,
তাহলে আরো ভালো ভালো চোখ
পারবা!!
একটু রাগ নিয়ে বললো,
কালকে সারা ক্লাস তুমি আমার
দিকে তাকিয়ে ছিলে!
প্রথম দিন তাই আমি কিছু বলিনি!
কিন্তু এরপর থেকে যদি আর কোনদিন
আমার দিকে তাকিয়ে থাকো তাহলে,
তোমার চোখ আমি তুলে দিবো!!
আচ্ছা আমি একটা কথা বলি,
হুম বলো,
আচ্ছা আমি নাহয় তোমার দিকে তাকিয়ে ছিলাম,
কিন্তু তুমি আমার দিকে কেন তাকিয়ে ছিলা???
কথাটা শুনে মিম কিছুটা অবাক হলো!
কে বলেছে, আমি তোমার দিকে তাকিয়ে
ছিলাম।
কেউ বলেনি,
তুমি যদি না তাকাতে তাহলে,
বুঝতে না আমি তোমার দিকে তাকিয়ে
ছিলাম।
তার মানে তুমিও??
কিছুটা রেগে বললো,
আমিও মানে কি??
মানে হলো,
তুমিও আমার মতো প্রেমে পড়ে গেছো,
প্রথম দেখাতে!
কথাটা শুনে মিমের কথা বলা কয়েক
সেকেন্ড এর জন্য অফ হয়ে গিয়েছিলো।
মিম আমায় কিছু না বলে,
চলে গেল আমার সামনে থেকে।
মনে হলো কিছুটা রাগ করেছে,
আমার কিছুটা ভয় হলো,
যদি মিম সার এর কাছে সবকিছু
বলে দেয়।
তাই আমি ক্লাস না করেই বাসায়
ফিরে আসলাম।
বাসায় ফিরতেই আম্মু বললো,
আজকে এখনি কেন?
আসলে আম্মু মাথাটা ঘুরাচ্ছিলো,
তাই চলে আসলাম।
আম্মু বললো,যা তাহলে শুয়ে থাক!
আমি রুমে এসে শুয়ে শুয়ে
ভাবছি।
পরের দিন স্কুলে গিয়ে দেখলাম মিম
আগে থেকেই বসে আছে বারান্দায়!!
আমি গিয়ে মিম কে ডাক দিলাম,
মিম!!
মিম আমাকে একটা থাপ্পর দিলো,
ঠাসসসসসসস
আমি গালে হাত দিয়া তাকিয়ে আছি,
মিমের দিকে!!
মিম বললো,
এই সাহস নিয়ে আইছো প্রেম করতে!
আরে বিচারের ভয়ে ক্লাস না
করেই চলো গেলা।
তাহলে যদি কোন বড় চাপ
আসে তাহলে,
তুমি আমাকে ফেলেই চলে যাবে।
মিমের কথাটা শুনে আমি
তো পুরাই অবাক
হয়ে তাকিয়ে রইলাম মিমের দিকে।
কি অবাক হচ্ছো,
আসলে আশিক তোমার জন্যই
এই স্কুলে ভর্তি হয়েছি।
তুমি হয়তো আমায় ঠিক ভাবে
চিনো না।
আমি তোমাকে ক্লাস সিক্স থেকেই
পছন্দ করি।
আমার বাসা আর তোমার বাসা
পাশাপাশি।
কিন্তু তুমি হয়তো কখনো আমায়
দেখো নি,
কারন আমি এর আগে ইংলিশ
মিডিয়াম স্কুলে থেকে পড়তাম।
তার কারনে তুমি আমায়
দেখো নাই।
আমি যখন ছুটিতে আসতাম
তখন আমি তোমাকে দেখতাম,
যে তুমি ছাঁদে এসে বসে থাকতে!!!
আর মাঝে মাঝে তুমি গান গাইতে,
তোমার গাননগুলো আমার
খুব ভালো লাগতো,
আমি যখন বন্ধে বাসায় থাকতাম
তখন প্রতিদিন তোমায় দেখার জন্য
বিকালে এসে ছাঁদে আসতাম।
আস্তে আস্তে আমি গভীর ভাবে
তোমায় ভালোবেসে ফেলি।
কিন্তু আমি তোমায় বলতে চেয়েছিলাম!!!
পরে ভাবলাম আমারা তো
এখন কেবল মাত্র সিক্সে পড়ি,
স্কুল লাইফ শেষ করেই তোমাকে জানবো!!
কিন্তু এবার জেএসসি পরীক্ষা
দিয়ে বাসায় এসে,
আমি যা দেখছি,তা দেখে আমি
আর ঠিক থাকতে পারি নাই।
কি দেখেছিলে তুমি?
আমি প্রথম দিন ছাঁদে এসে দেখি,
তুমি আর অন্যএকটা মেয়ে একসাথে
বসে আছো ছাঁদে!!
দেখে আমার খুব রাগ হয়,
আমি নিচে চলে আসি।
পরের দিন আবার আমি যখন ছাদে
যাই,
তখন আবার দেখি তুমি আর ওই মেয়েটা
বসে গল্প করছো!!
আমি ওই দিন ও রাগ করে নিচে চলে আসি।
আমি পরে আর ছাদে যাই নি,
তোমার সাথে কথা বলার অনেক
চেষ্টা করেছি,কিন্তু কোন ভাবেই তোমার
সাথে কথা বলতে পারি নাই।
অনেক কষ্ট করে তোমার বাসার
নাম্বার টা জুগিয়েছিলাম,
দুই দিন কল দিয়ে ছিলাম তোমার আম্মু রিসিভ করে
ছিলো তাই আর কল দেই নি!!!
আর অন্যদিকে আমার বন্ধও শেষ হয়ে যাচ্ছিলো,
তাই কোন ব্যাবস্থা না করতে পেরে,
আমি আব্বুকে বলে, এই স্কুলে ভর্তি
হবার ব্যাবস্থা করেছি।
মিমের কথা শুনে তো,
খুশিতে আমার নাঁচতে ইচ্ছা করছিলো!!
আমি মিমকে বললাম,
তুমি ছাঁদে যে মেয়েটাকে আমার সাথে
দেখেছিলো,ওবি আমার বড় আপু।
কথাটা শুনে মিম জিহ্বায় কামুড় দিলো।
মিম আমাকে বললো,
এখন আমাকে প্রফোজ করো,
যদি ভালোভাবে ন। করতে পারো তাহলে
কিন্তু আমি এক্সেপ করবো না,
আমি তো চিন্তায় পড়ে গেলাম,
মহা বিপদে পড়ে গেলাম কি করবো!!!
অনেক ভেবে চিন্তে বললাম,
আচ্ছা তুমি হবে কি আমার জীবন্ত এর্লাম ঘড়ি!
যে তার কাঁচের চুড়ির "টুংটাং"
শদ্বে আমার সকালের ঘুমটা
ভাঙ্গাবে! তুমি কি আমার অনুর আম্মু হবে!!!!!!
এটুকু বলেই আর কিছু বলতে পারলাম না,
থেমে গেলাম।
মিম আমার দিকে তাকিয়ে হেঁসে দিলো,
আর শুধু মাথা টা নাড়িয়ে বলে দিলো, হ্যা!!!!!!!
পরে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
শুরু হয়ে গেল আমাদের দুষ্ট মিষ্টি লাভ স্টোরি।
ভালোই চলছিলো আমাদের রিলেশন।
বয়স কম থাকার কারনে,
অনেক আবেগ কাজ করতো আমাদের মাঝে।
মিম রাগ করলে অনেক কষ্ট করে
আমার ওর রাগ ভাঙ্গাতে হতো!!
স্কুল বাদ দিয়ে ঘুরতে যাওয়া,
ফুসকা খাওয়া,ঝাল মুড়ি খাওয়া,
রেল স্টেশনের লাইনে রাত ধরে হাটা।
স্বপ্নের মতো কাটতে ছিলো আমাদের দিন
গুলো__________
দেখতে দেখতেই নাইনের বছর টা
শেষ হয়ে গেলে,
এখন আমরা দুজনেই ক্লাস
টেনে পড়ি!!
এখন আরো অনেক কিছু বুঝি!
আর এখন মিমের রাগ করার পরিমান টাও
অনেক বেড়ে গেছে।
একদিক দিয়ে মিম রাগ করলে আমার
ভালোই লাগতো।
কারন ও যখন রাগ করতো,
তখন আমায় খুব বকতো,
আর মিমের বকা খেতে আমার খুব
ভালোই লাগতো।
আর রাগ করার বেশি বিষয়
গুলোতে থাকতো,
নিয়মিত খাওয়া,রাত জাগা,
সকালে দেরিতে উঠা,
দেখা করার সময় সব সমসময়
দেরিতে যাওয়া।
এভাবে ভালোই কাটছিলো,
আমার স্বপ্নের দিন গুলি।
আগে মাঝে মাঝে ফোনে কথা হলেও,
এখন নিয়মিত কথা হয়।
হঠাৎ একদিন রাতে মিম আমায়
কোন কল দিলো না।
আমি দিলাম কিন্তু,ওপাস থেকে ভেসে আসলো,
আপনি যে নাম্বারে কল করছেন,
তা এই মুহূর্তে বন্ধ আছে,
অনুগ্রহ করে আবার চেষ্টা করুন।
পরেরদিন স্কুলে গেলাম,
গিয়ে দেখি মিম স্কুলে যায় নি,
আমার তখন খুব খারাপ লাগছিলো!!!
বাসায় এসে মিমকে, অনেকবার কল দিলাম।
কিন্তু বার বার শুধু ভেসে আসছিলো,
আপনি যে নাম্বারে কল করছেন,তা এই মুহূর্তে বন্ধ আছে,
অনুগ্রহ করে আবার চেষ্টা করুন।
আজকের মতো শেষ,,,,,,,,,,,
সামনে আসছে মিমের কি হয়েছিলো___________
জানেন আপনাদের মতো আমারো
চিন্তা হচ্ছে মিমের কি হলো,
কারন এই এক বছরের রিলেশনে
মিম একদিনও স্কুল এ অনুপুস্থিত থাকে নি!!!!!!!!!!
কি যে হলো মিমের!!!!!♦
Friday, October 19, 2018
ভালোবাসার গল্প - রহস্য পর্ব 10
Subscribe to:
Post Comments
(
Atom
)
আরো নতুন নতুন Golpo পড়তে ভিজিট করুন
ReplyDeletewww.valobasargolpo2.xyz