Monday, October 15, 2018

ভালোবাসার গল্প - পরীর সাথে প্রেম পর্ব 1

3 comments

পরীর সাথে প্রেম পর্ব-১ লেখক:নির্ঝর কাব্য (রিহান) এলাকার সহজ সরল ছেলে হিসেবে পরিচিত আমি। সদা হাসিমুখ, দিকভ্রান্ত হয়ে চলাফেরা, নিজের প্রতি বেখেয়াল, সব মিলিয়ে জীবনে কি করলে কি হবে তা আমার মাথায় ছিলনা। এজন্য আমার মা আমাকে কতো বকা দিতো। আমি বড় হচ্ছি নাকি ছোট হচ্ছি, মাঝেমাঝে মা আমার আচরণে বুঝতে পারেননা। এজন্য মা আমাকে কত বকা দেয়। কলেজে যখন যায়, একদম পেছনের বেঞ্চটা আমার জন্য বরাদ্দ থাকে। কারণ সামনে বসলে একজন এখান থেকে চিমটি দিলে, আরেকজন ওখান থেকে চিমটি দেয়। আমি পেছনে ফিরে তাকালে সবাই সাধু হয়ে যায়, বুঝতে পারিনা আসলে কে চিমটি দিয়েছে। ফ্যালফ্যাল করে সবার দিকে তাকায়। তখন মেয়েগুলো আমার অবস্থা দেখে হেসে উঠে। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি পেছনে বসব সবসময়। ক্লাসের ছেলেগুলো তখন পেছনে বসতে শুরু করে, আমার জন্য সামনের বেঞ্চ খালি রাখে যাতে আমাকে নিয়ে তারা কমেডি করতে পারে। এরপর আমি প্রতিদিন সবার আগে যেতাম কলেজে শুধুমাত্র পেছনের সিটে বসার জন্য। ছেলেগুলো তখন কি করত? আগেরদিন তারা বেঞ্চে চুইংগাম লাগিয়ে রাখত। আর আমি এসে খেয়াল না করেই ওখানে বসে পড়তাম। স্যারেরা যখন পড়ার ধরার জন্য আমাকে দাঁড়াতে বলত, তখন চুইংগামের কীর্তিতে নিচ থেকে টান পড়ত। সবাই তখন একসাথে হেসে উঠত। আমি আর কি করব? আমিও ওদের সাথে হেসে উঠতাম। আমার এই বোকামির জন্য মা আমাকে সবসময় বকত। কেন আমি ওদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করিনা। এরকম বোকা থাকলে নাকি জীবনে আমার কোন উপকার হবেনা। তবে একটা উপকার আমার হয়েছে। আমার জীবনে প্রেম এসেছে এই বোকামির জন্য। আমার এই বোকামি দেখেই আমার প্রেমে পড়ে একটি পরী। বদলে যেতে থাকে আমার জীবন। আজ আমি সেই গল্পই বলব। "আমি ও একটি পরীর গল্প" কখনো আম্মুর বকা খেয়ে মন খারাপ হতোনা। বরং কেউ বকা দিলে ভাবতাম আমাকে বকা দিয়ে যদি কারো তৃপ্তি মিটে, তো বকা খেলে মন্দ কি? কিন্তু একদিন আম্মু আমাকে আমার বোকামির জন্য অনেক বকা দেয়। তাই মন খারাপ করে বাসা থেকে বের হয়ে গেছিলাম। সারাদিন বাসায় ফিরলামনা। রাতে আমি গ্রামের পুকুরঘাটেv  গালে হাত দিয়ে বসেছিলাম। আকাশে চাঁদ ছিল। চাঁদের আলোতে পুকুরের পানি দেখছিলাম। হঠাৎ একটা মেয়ের ক্ষীণ চিৎকার কানে এলো। মনে হলো কোন কারণে ব্যথা পেয়ে ককিয়ে উঠেছে সে। আমি উঠে দাঁড়ালাম। কিছুটা সামনে গিয়ে দেখলাম একটা মেয়ে। পেছনে তার দুইটা ডানা। সে মাথা নিচু করে ঝুকে পায়ে হাত দিয়ে কিছু বের করার চেষ্টা করতেছে। মনে হয় কাটা ঢুকেছে পায়ে। আমি গিয়ে জিজ্ঞেস করল: কি হয়েছে আপনার?" আমার কণ্ঠ শুনে মেয়েটা আমার দিকে তাকাল। অস্ফুটে একটা শব্দ করল: --কাটা....." চাঁদের আলো মেয়েটার মুখে পড়েছে। আমার মনে হলো এতো অপরূপ মেয়ে পৃথিবীতে আর একটাও নেই। কিছুক্ষণ ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আমি বললাম: --কই? হাত সরান তো, আমি বের করতে পারি কিনা দেখি।" --আচ্ছা, একটু বের করে দেন না?" নরম কণ্ঠে বলল মেয়েটা। আমি হাটুগেড়ে বসে মেয়েটার ফর্সা পা খানা আমার হাটুর উপর রাখলাম। তারপর ওর পায়ে মুখ লাগিয়ে অনেক্ষণ চেষ্টা করে কাটাটা বের করলাম। অদ্ভুত ব্যাপার হলো ওর পা থেকে একটা মিষ্টি গন্ধ বের হলো। সাধারণত মানুষের পা থেকে গরমের ভ্যাপসা গন্ধ বের হয়, কিন্তু এই মেয়েটার ক্ষেত্রে হলো তার উল্টো। --কে তুমি" জিজ্ঞেস করলাম আমি। --ডানা দেখেও বুঝতেছনা?" --ওহহ, সিনেমায় অভিনয় কর বুঝি। আমারও খুব ইচ্ছে সিনেমায় অভিনয় করার। প্লিজ আমাকেও একটু নেবে সিনেমায়?" --আরে আমি সিনেমায় অভিনয় করিনা। এ ডানা দুটো সত্যিকারের। আমি পরী। মানুষ না।" মেয়েটার কথা শুনে আমি খুশি হয়ে বললাম: ও তুমি পরী? আমাকে নিয়ে যাবে তোমাদের দেশে?" --হ্যা নিয়ে যাব, তুমি আমার উপকার করেছ। আজ থেকে তুমি আমার বন্ধ। কিন্তু এতরাতে তুমি এখানে কি করছ?" --মা আমাকে বকা দিয়েছে। আমি নাকি খুব বোকা এজন্য। --কেন? তুমি কি বোকামি করলে।" তারপর আমি পরীকে সব বললাম। পরী হাসতে হাসতে বলল: এই কথা, শুন আমি যেহেতু তোমার বন্ধু হয়েছি, এখন থেকে তোমার দেখাশুনার সব দায়িত্ব আমার। কেউ তোমাকে নিয়ে আর কিচ্ছু করতে পারবেনা, আজ থেকে আমি যা বলব তাই করবে। ঠিক আছে?" --হ্যা, ঠিক আছে।" আমি পরীর মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম। হাসিটা তার ঠোটে তখনও লেগেছিল। হাসি থেকে যেন তার মুক্তা ঝরছে। পরী আমাকে বলল: এখন তুমি বাসায় চলে যাও।" --আচ্ছা...." মাথা নেড়ে সায় দিলাম। তারপর আমি কিছুদূর হেটে আবার পরীর কাছে আসলাম। --আবার কি হলো?" পরী জিজ্ঞেস করল। --তোমার নাম তো জানা হলোনা....." মন্ব্য করলাম আমি। --আমার নাম জেরিন, ফারিয়া জেরিন। তুমি আমাকে জেরিন বলেই ডাকবে। কেমন? তোমার নাম কি?" --আমার নাম রানা। জেরিন, তোমার সাথে আবার কবে দেখা হবে?" --বলবনা.... --কেন? --কারণ তোমাকে সারপ্রাইজ দেব...." বলেই জেরিন একটা দুষ্টুমি মার্কা হাসি দিল। --ওহ, কি সারপ্রাইজ? আমার খুব জানতে ইচ্ছে হচ্ছে। বলনা বলনা প্লিজ.... --বলবনা, বলবনা...." জেরিন হেসে উঠল। এ কোন হাসি? তার বাঁকা ঠোঁটের হাসি দেখলে চাঁদটাও লজ্জা পেত তখন। --কেন বলবেনা?" --বলছি তো সারপ্রাইজ দেব। --আচ্ছা ঠিক আছে।" --এখন বাসায় যাও তুমি। খুব শীঘ্রই দেখা হবে আমাদের। আমি প্রচন্ড উত্তেজনা নিয়ে চলে এলাম বাসায়। আবারও মায়ের বকা খেলাম এতক্ষণ বাইরে থাকার জন্য। তারপর মা আমাকে খেতে দিল। খেয়েদেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। পরদিন কলেজে গেলাম। নিয়ম অনুযায়ী পেছনের সিটে গিয়ে বসলাম। ক্লাসের ছেলেমেয়েরা কিছুক্ষণ আমাকে নিয়ে হাসহাসি করল। একটু পর স্যার ঢুকল ক্লাসে। ক্লাস শুরু করলেন তিনি, ঠিক তখন ক্লাসের বাইরে একটা মেয়ের কণ্ঠ শুনা গেলো: ম্যায় আই কামিং স্যার?? --ইয়েস কামিং..... অপরূপ একটা চেনা মেয়ে ক্লাসে ঢুকল। ছেলেরা সবাই "ওয়াও ওয়াও" করতে লাগল। পেছনের বেঞ্চ থেকে চমকে উঠলাম আমি। স্যার সবার সাথে মেয়েটার পরিচয় করিয়ে দিলেন: এ হচ্ছে ফারিয়া জেরিন, তোমাদের নতুন বন্ধু।" ফারিয়া বলল: হাই বন্ধুরা.... সবাই একসাথে বলে উঠল: হাই...." স্যার জেরিনকে সিটে গিয়ে বসতে বললেন। জেরিন এসে আমার পাশে বসল। ছেলেরা সব পেছনে তাকিয়ে রইল জেরিনের দিকে। জেরিন আমাকে একটা চিমটি কেটে বলল: কেমন সারপ্রাইজ দিলাম?? ...
..

3 comments :