Friday, October 26, 2018

পিচ্চি জামাই পর্ব ৩ (শেষ পর্ব)

1 comment

#পিচ্চি_জামাই
-সাকিব আহমেদ
৩য় এবং শেষ পর্ব
ছুটি শেষ।মামা বাড়ি থেকে ঢাকায় চলে আসলাম।শিশিরের জন্য খুব খারাপ লাগতেছে।পিচ্চিটাকে খুব জ্বালাতন করছি এই কয়দিন।খুব মিস করব পিচ্চিটাকে।
আবার ব্যস্ততম শহরে ব্যস্ত জীবন শুরু হলো।অফিসের বস সেই শুরু থেকে লাইন মারার ট্টাই করতাছে।আমি পাত্তা দিচ্ছি না।জোকার জোকার লাগে। অফিসে যেতেই বসের ডাক।
-আরে ইরা,কেমন আছো??
-জ্বী ভালো।আপনি??
-আমি ভালো ছিলাম না।এখন তোমাকে দেখে ভালো লাগতেছে।
-আমাকে দেখে ভালো লাগতেছে কেনো??
-বাদ দাও,এতদিন তোমায় কতটা মিস করছি জানো??
-নাহ,জানিনা। এখন জানলাম।
-তোমার আব্বু,আম্মু কেমন আছে??
-ভালো।স্যার,আমার কিছু কাজ আছে।এখন আসি??
-ঠিক আছে, যাও।
এই বস টা একটা বাচাল।কথা বলতে শুরু করলে আর থামেইনা।আমিও কোন না কোন বাহানা বানাইয়া তার সামনে থেকে কেটে পড়ি।
বেশ কিছুদিন পর সকালবেলা রিক্সা করে অফিস যাচ্ছি।হঠাৎ করে একটা বাসে চোখ আটকে গেল।বাসের পিছনের দিকে শিশিরের মত কেউ বসে আছে বলে মনে হলো।ভালো করে দেখার আগেই বাসটা সামনে থেকে চলে গেল।ধুর,আমার দেখায় হয়তো ভুল ছিল।ঢাকাতে শিশির আসবে কোথা থেকে।নাহ,আজকাল শিশির কে নিয়ে একটু বেশিই চিন্তা ভাবনা করতেছি।পিচ্চিটাকে যে খুব ভালবেসে ফেলেছি।
অফিস শেষ হলো ৫ টায়।বাসায় ফিরতে ফিরতে সন্ধা হয়ে গেল।বস বেটা জোর করেই বাসায় ড্রপ করে দিল।
বাসায় এসে রুমে ড্রেস চেন্জ করব এমন সময় মনে হলো আমার বিছানায় শুয়ে আছে।পিছন ফিরে তাকাতেই দেখি শিশির শুয়ে আছে।আর মুচকি মুচকি হাসতেছে।বোঝার চেস্টা করলাম এটা আমার কল্পনা কিনা।নাহ,কল্পনা না। বাস্তবেই শিশির আমার বিছানায় শুয়ে আছে।
-তুই এখানে??(আমি)
-আমার হবু বউয়ের রুমে আমি থাকবো না তো কে থাকবে শুনি??
-হবু বউ??
-হুমমম
-কে তোর হবু বউ??
-আমার সামনে যে দাড়িয়ে আছে।
-থাপ্পর চিনোস??ঢাকায় কখন এসেছিস??
-সকালে।তোমারে দেখলাম রিক্সা করে যাচ্ছ।
-হুমমম,তো আমার রুমে শুয়ে আছিস ক্যান??
-শাশুড়ি আম্মা বললো,তোর বউয়ের রুমে গিয়ে শুয়ে থাক।
-কিরে তোর মতলব কি বলতো??এতো রোমান্টিক কথা বলছিস যে??
-মতলব আবার কোথায় দেখলে।তুমি চলে আসার পর বুঝতে পারলাম।
-কি বুঝতে পারলি??
-আমিও তোমায় ভালবেসে ফেলেছি।
-কি বলিস এইসব??
-সত্যি আমি তোমায় ভালবেসে ফেলেছি।তুমি আমায় ভালবাসো না??
-উহু,আমিতো অন্য কাউকে ভালবাসি।তোর সাথে তো এতদিন ফাইজলামি করছি।
-মজা করতাছো??
-আমি কি জোকার নাকি??যা ভাগ এখান থেকে, আমি ফ্রেশ হবো।
পিচ্চি মাথা নিচু করে রুম থেকে বেড়িয়ে গেল।হি হি হি হি হি।আমার ভালবাসা রিজেক্ট করা।এইবার মজা দেখাবো।
পরেরদিনও বস জোর করে বাসায় ড্রপ করে দিল।বাসায় এসে কোথাও শিশির কে দেখলাম না।গেস্টরুম,আমার রুম কোন রুমেই নাই।আম্মু বলল শিশির নাকি ছাদে।ছাদের এক কোনায় শিশির দাড়িয়ে আছে।
-কিরে কি করছিস এখানে??
-কিছুনা।
-মন খারাপ??
-উহু।
-কিন্তু আমিতো তোর চোখের কোনায় পানি দেখতে পাচ্ছি।
-নাহ,মানে,আম্মুকে মনে পড়তেছে তো তাই।
-ওহ।
-উনিই কি তোমার বয়ফ্রেন্ড??
-কে??
-যে তোমাকে ড্রপ করে গেল।
এইবার বুঝলাম পিচ্চিটার কেনো মন খারাপ।বস যে আমাকে ড্রপ করে গেছে,ও এইটা ছাদে বসে দেখছে।
-হুমমম,ঐটাই আমার বয়ফ্রেন্ড।কত হ্যান্ডসাম দেখছিস??
-হুমমমম।আচ্ছা,থাকো তুমি।আমি যাই।
-কই যাস??
এটা বলেই ওর হাত ধরে টান দিয়ে বুকের কাছে নিয়া আসলাম।আর ফিসফিস করে বললাম
-ঐটা আমার অফিসের বস।আমিতে তোকে ভালবাসি রে পিচ্ছি।
-আমিও ভালবাসি।
এটা বলে শিশির আমারে জরাইয়া ধরল।আমিও ওরে জরাইয়া ধরলাম।
আজ শিশিরের ঢাবি তে ভর্তি পরীক্ষা।আমি অফিসে না গিয়ে শিশির কে ভর্তি পরীক্ষা দিতে নিয়ে গেলাম।ভার্সিটির কাছেই বাসা।তাই রিক্সা করে গেলাম।পরীক্ষা শেষে ওরে নিয়া ধানমন্ডি লেকে ঘুরতে গেলাম।দুপুরে বাইরেই খেলাম।সন্ধায় আম্মু ফোন করে তাড়াতাড়ি বাসায় যেতে বলল।
রিক্সা করে বাসায় যাচ্ছি।শিশির আমার হাত ধরে বসে আছে।আমি ওর চোখের দিকে তাকালাম।মনে হল পৃথিবীর সব সুখ ওর মাঝেই আছে।
বাসায় এসে মেজাজ পুরা দমে খারাপ হয়ে গেল।বস তার বাবা মা কে নিয়া আমাদের বাসায় আসছে আমার বিয়ার প্রস্তাব নিয়া।সালা জোকার আমারে বিয়া করবে।আমি সরাসরি না করে দিলাম।সবাই কারন জিগ্যস করল।আমিও বলে দিলাম যে আমি শিশিরকে ভালবাসি।সবাই থ হয়ে বসে রইল।বস তার বাবা মা কে নিয়ে চলে গেলেন।বুঝলাম চাকরি টা গেল।আব্বু আমাকে বলল
-কি বলতেছিস এইসব??শিশির আর তোর বয়সের পার্থক্য জানিস??কম করে হলেও ৪বছর।
-তো কি হইছে??সবসময় যে ছেলেদের বয়স বেশি হতে হবে এমন টা কোথাও লেখা আছে নাকি??
-শিশির মাত্র এইচএসসি পরীক্ষা দিছে।মানুষ শুনলে কি বলবে??
-মানুষ যা বলার বলুক।আমি বিয়া শিশিরকেই করব।
-হুমমম,আমি তোর মামার সাথে কথা বলে দেখি।
আমি জানি আব্বুরে আমি যেইটা বলমু সেইটাই করবে।কিল্লাইগা জানি আজকে বিয়া করতে মন চাইতাছে।
আব্বু মামার সাথে কথা বলে আমাদের বিয়া টা পাকা করে ফেল্লেন।শিশিরেরও ঢাবি তে চান্স হইছে।এই খুশিতে চেক ডান্স করতে ইচ্ছা করতাছে।নাহ,একা একা নাচমু না।পিচ্ছি টারে সাথে নিয়া নাচমু।পিচ্ছি টা কই আছে কে জানে।খুজে বের করতে হবে।
ফাইনাল্লি,বিয়ে টা করেই ফেল্লাম।এখন শিশির আমার জামাই।হি হি হি,পিচ্চি জামাই।এই আপনারা আবার বইলেন না বাল্যবিবাহ করছি।যেহেতু আমার সবকিছুই এখন শিশিরের।তাই আমার বয়স থেকে ৪ বছর ওরে দিলাম।ওর যেহেতু ১৮ বছর,আর আমার দেয়া ৪ বছর।মোট হলো ২২ বছর।এইবার তো বিয়ের বয়স হইছে।
#সমাপ্ত

1 comment :

  1. আরো নতুন নতুন গল্প, কবিতা,জোকস পড়তে চাইলে আমার সাইটে ভিজিট করুন
    www.valobasargolpo2.xyz

    ReplyDelete