Friday, October 26, 2018

Devil Queen পর্ব ৩

No comments

#Devil_Queen
writer - তানিশা
part - 3

--- তানিশা ভার্সিটিতে গিয়ে তার বন্ধুবীদের পাশে বসে পরলো,,,

রিতু : কিরে তোর ফুফাতো বোনের জন্মদিন কেমন কাটলো?
তানিশা : আর বলিস না, এক বজ্জাত devil এর পাল্লায় পরেছি। 
নীলা : মানে!! কিভাবে?
তানিশা : জন্মদিনের সবার সাথে একটু দুষ্টামি করতে গিয়ে ঐ devil টার গালে কেক লাগিয়ে দিয়েছিলাম। আর ঐ devil টা রেগে পুরো লাল বাদর হয়ে গেছে, আমার উপর যা পরিমান রাগ দেখিয়েছে। ইচ্ছে করেছে কেক কাটার ছুরি দিয়ে ঐ এনাকন্ডাটাকে কেটে টুকরো টুকরো সবাইকে খাইয়ে দেই।
রিতু : ঐ এনাকন্ডা মানে devil টা কে?
তানিশা : আমার ফুফাতো ভাইয়ার বন্ধু। 
নীলা : আচ্ছা তুই devil এর পাল্লায় পরেছিস নাকি devil তোর পাল্লায় পরেছে?
তানিশা : কেউ কারো পাল্লায় পরার আগে আমি আজকেই আমার বাসায় চলে আসবো।

--- তানিশা ভার্সিটির ক্লাস শেষ করে ফুফুর বাসায় চলে গেলো। দুপুরে খাওয়ার পর,,,

তানিশা : ফুপ্পি আমি একা চলে যাই,,
ফুফু : না, আবির তোকে দিয়ে আসবে। তুই একা যাবি কেন?
তানিশা : তাহলে ভাইয়াকে তাড়াতাড়ি আসতে বলো। আমি বিকেলের আগে বাসায় চলে যাবো।
ফুফু : আমাদের বাসায় বুঝি আর থাকতে ইচ্ছে করেনা?
তানিশা : কিছুদিন পরে নাহয় আবার আসবো। ( এক গাল হেসে )
ফুফু : আচ্ছা তাহলে যা,,

--- তানিশার ফুফু আবিরকে কল করে তাড়াতাড়ি আসার জন্য বলল। অফিসের লাঞ্চ টাইমের পরে আবির কাব্যর কাছে আসলো,,,

আবির : দোস্ত আমার আজকে একটু তাড়াতাড়ি বাসায় যেতে হবে।
কাব্য : কেন কি হয়েছে? বাসায় সব ঠিক আছে তো? ( ল্যাপটপে কাজ করতে করতে ) 
আবির : সব ঠিকি আছে। মা বলছিল একটু তাড়াতাড়ি যাওয়ার জন্য একটা কাজ আছে।
কাব্য : আচ্ছা চল আমিও যাবো। ( ল্যাপটপ বন্ধ করে ) 
আবির : তুই যেয়ে কি করবি?
কাব্য : তুইতো বললি তোর কাজ আছে। তাই ভাবছি তোর help করবো।
আবির : তোর help লাগবেনা। 
কাব্য : তুই কি আমাকে নিয়ে যেতে চাইছিস না?
আবির : তোর হাবভাব আজকাল আমার কাছে ঠিক মনে হচ্ছে না। 
কাব্য : মানে? ( ভ্রু কুচকে ) 
আবির : মানে এটাই,, যেই ছেলেকে হাজার বার বলেও আমাদের বাসায় নিয়ে যেতে পারতাম না। আজকাল সে আমার পেছনে ঘুরঘুর করে যাওয়ার জন্য।
কাব্য : মনে হয় তোর অভিশাপ কবুল হয়েছে। 
আবির : আচ্ছা তুই কালকে যা,, আজকে তানিশাকে তার বাসায় পৌঁছে দিতে হবে।
কাব্য : আমি তোর সাথে গেলে সমস্যা কোথায়?
আবির : আচ্ছা চল,,

--- কাব্যকে নিয়ে আবির বাসায় চলে আসলো। ঘরে ঢোকার আাগে কাব্য ফোনে কল আসলে কাব্য ঘরে না ঢোকে বাহিরে দাড়িয়ে কথা বলতে লাগলো। আবিরের আওয়াজ পেয়ে ব্যাগ নিয়ে ড্রইংরুমে এসে তানিশা বলতে লাগলো,,,

তানিশা : ভাইয়া আজকে ঐ বজ্জাত devil, নাইজেরিয়ান এনাকন্ডাটা আসার আগে তুমি আমাকে বাসায় দিয়ে আসো।
আবির : তানিশা চুপ। ( ইশারায় ) 
তানিশা : কিসের চুপ? হতে পারে তোমার বন্ধু তাতে আমার কি? এমন গন্ডার গুলাকে গন্ডারই বলতে হয়।
কাব্য : আমাকে দেখতে কোন দিক থেকে গন্ডার মনে হচ্ছে?

--- তানিশা ঘার ফিরিয়ে দেখে কাব্য পকেটে হাত দিয়ে তার দিকে তীক্ষ্ণদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। কাব্যকে দেখে তানিশা একটু হাসার চেষ্টা করছে, কিন্তু হাসি উধাও হয়ে গেছে,,,

তানিশা : ভাইয়া আ,,আপনাকে কেন কিছু বলতে যাবো? আপনি কতো উদার মনের মানুষ। 
কাব্য : really...?? আমি উদারও হয়ে গেলাম?
তানিশা : হুম, ভাইয়া আপনার মতো মানুষ কয়জন হয়? সবসময় লাল বাদরের এর মতো না মানে,, ( কি বলবে খোঁজে পাচ্ছে না ) 
কাব্য : আমি লাল বাদর?

--- আচমকা কাব্য এগিয়ে এসে তানিশার গালে আস্তে করে একটা চড় বসিয়ে দিলো। উপস্থিত সবাই হা করে তাকিয়ে আছে, হয়তো ভাবেনি কাব্য এমন কিছু করবে। তানিশা গালে হাত দিয়ে কাঁদোকাঁদো গলায় বলল,,,

তানিশা : আপনি আমাকে থাপ্পড় মারলেন কেন?
কাব্য : বড় ভাইয়ার সাথে কিভাবে ব্যাবহার করতে হয় এটা জানোনা? আর বড় ভাই হিসেবে একটা থাপ্পড়,,তো মারতেই পারি। তাইনা?
তানিশা : আপনি আমার কোন জন্মের ভাই?
কাব্য : কেন একটু আগেই তো ভাইয়া ডাকলে।
তানিশা : তাই বলে থাপ্পড় মারবেন?
কাব্য : ভাই হিসেবে অবশ্য সেই অধিকার টুকু আমার আছে। তাইনা?
তানিশা : কোনো অধিকার নাই। কারন আপনি আমার ভাই না, আর আমিও আপনার বোন না। জীবনে কোনোদিনও আর আপনাকে ভাই বলে ডাকবো না।
কাব্য : good girI ( মুচকি হেসে ) by the way.. কোথায় যাচ্ছো?
তানিশা : আপনাকে কেন বলবো?
কাব্য : কি কেন বলবে মানে? 
আবির : ও বাসায় যাবে। তুই থাক, আমি ওকে পৌঁছে দিয়ে আসি।
কাব্য : wait... আমিও যাচ্ছি।
আবির : তুই কেন যাবি ( বিরক্তি নিয়ে )
কাব্য : আরে আমার গাড়িতে তোদের পৌঁছে দিয়ে আসবো।
আবির : আচ্ছা তাহলে চল।
তানিশা : না ভাইয়া,, আমি এই devil এর সাথে যাবো না।

--- কাব্য পেছনে ফিরে তানিশার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে আছে। এই মেয়ের মুখ থেকে আরো কত কি শুনতে হবে আল্লাহ জানে?

কাব্য : কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ চলো।

--- তানিশা আর কিছু না বলে গাড়িতে উঠে গেলো। কাব্য খুব আস্তে গাড়িটা ড্রাইভ করছে আর গাড়ির সামনের ছোট্ট আয়না দিয়ে বারবার তানিশাকে দেখছে। জানালার মৃদু বাতাসে বারবার চুল গুলো মুখে এসে পরছে, আর তানিশা হাত দিয়ে বারবার কানের নিচে গুজে দিচ্ছে। অপূর্ব লাগছে এই সময়টায়। মেয়েটা কি সত্যি এতো সুন্দর? নাকি কাব্যর কাছে এমনটা মনে হচ্ছে? আবির অনেক্ষণ ধরে কাব্যকে লক্ষ করছে, আগে কখনো কাব্যকে এমন দেখেনি। বারবার তাদের বাসায় যাওয়া, তানিশার সাথে দেখা করা, এতকিছুর পরেও মেয়েটাকে কিছু না বলা। কাব্য মোটেও এমন না। নাকি তানিশার প্রেমে পরে গেলো? এটা হতে পারেনা। এই বিষয়ে কাব্যর সাথে তার কথা বলতে হবে। তানিশা বাসায় পৌঁছে গাড়ি থেকে নেমে এক দৌড়ে নিজের রুমে চলে গেলো। আবির কাব্যকে বললো,,,

আবির : ভিতরে চল,,
কাব্য : আজকে না, অন্য একদিন। 
আবির : অন্য একদিন তোকে নিয়ে আসলেই তো?
কাব্য : তোকে নিয়ে আসতে কে বললো? বাসা তো চিনে ফেলেছি যেকোনো সময় চলে আসতে পারবো।
আবির : মানে? 
কাব্য : মানে,, কিছুনা। আচ্ছা চল তোকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে আসি।

--- আবির গাড়িতে বসে ভাবছে কাব্যর সাথে তার এখনি কথাটা বলা জরুরি। যদি দেরি হয়ে যায় তাহলে আরো সমস্যা,,,

আবির : দোস্ত তোকে কিছু কথা বলার ছিলো,,
কাব্য : কি বলবি বল?
আবির : তানিশা একটু সাইকো টাইপের। হুটহাট করে এমন কিছু বলে যা আমরা কল্পনাও করতে পারিনা। ওর চলাচল আচরণ অনেকটা অস্বাভাবিক। অবশ্য আমাদের জন্য এটা এখন স্বাভাবিক। কিন্তু তুই বা বাহিরের মানুষের জন্য তো আর স্বাভাবিক না।
কাব্য : তো?
আবির : তুই অনেক ভালো কিছু deserve... করিস। আসা করি আমি কি বলতে চাইছি তুই বুঝতে পেরেছিস।
কাব্য : তানিশা সাইকো না, ও অসাধারণ সবার থেকে আলাদা। 
আবির : তুই ব্যাপারটা বুঝতে পারছিস না।
কাব্য : এই topic বাদ,,দে। তোর বাসায় পৌঁছে গেছি।
আবির : thanks... কিন্তু আমার কথাটা ভেবে দেখিস।
কাব্য : ok... দেখবো।

--- কাব্য চলে গেলো। পরেরদিন সন্ধায় তানিশা নিজের রুমে বসে গেইমস খেলছিল, তখন অপরিচিত নাম্বার থেকে একটা কল আসলো,,,

তানিশা : হ্যালো কে বলছেন?
কাব্য : একটু বেলকুনিতে আসতো,, তোমাকে দেখি।
তানিশা : ঐ কোন বজ্জাত লুচুর হাড্ডি? আমাকে দেখার কার এতো ইচ্ছা? চোখদুটি তুলে মারবেল খেলবো।
কাব্য : miss #Devil_Queen আস্তে বলো। এতো রাগার কি আছে, আমি তোমার Devil...

--- কথাটা শুনার সাথে সাথে তানিশার আর বুঝতে বাকি রইলো না এটা কাব্য। কল কেটে দিয়ে রুম থেকে উকি দিয়ে দেখে কাব্য রাস্তায় গাড়িতে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আছে। এই devil টা তার পেছনে কেন লাগলো? তানিশা রুমের লাইট অফ করে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পরলো। কাব্য আবারো কল করলে তানিশা কেটে দেয়। কাব্য এবার কল না করে মেসেজ করলো,,,

কাব্য : তুমি বেলকুনিতে আসবে? নাকি আমি বাসার ভিতরে আসবো?

--- তানিশা এমন মহা জ্বালায় পরবে ভাবতে পারেনি। আবিরকে কি কল করে বলবে? না থাক আবির যদি অন্যকিছু ভাবে? devil এর সাথেও কোনো বিশ্বাস নেই যদি সত্যি বাসায় চলে আসে? তানিশা কোনো উপায় না পেয়ে বেলকুনিতে গেলো। কাব্য তানিশার দিকে অপলক তাকিয়ে আছে, তার ঠোঁটের কোনে নিজের অজান্তে হাসি চলে আসলো। তানিশার দিকে তাকিয়ে থেকে কাব্য আবারো কল করলো,,,

কাব্য : কালকে তৈরি থেকো। ভার্সিটিতে দেখা হচ্ছে।
তানিশা : মানেটা কি আপনার? আমি আবির ভাইয়ার কাছে আপনার নামে নালিশ করবো।
কাব্য : whatever... কালকে দেখা হচ্ছে। এটাই final...

চলবে,,,
( ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন )

No comments :

Post a Comment