ভালোবাসার গল্প - পিচ্চি বর

অনেকদিন পর আজ নিজের গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছি।।আসলে আমি ঢাকায় একটি সরকারি কলেজে পড়ালেখা করি।।পড়ালেখার চাপের কারনে প্রায় এক বছর গ্রামের বাড়িতে যাওয়া হয় না।।গতকাল আম্মু ফোন দিয়ে অনেক কান্নাকাটি করে বল্ল আসার জন্যে। আম্মুকে আমি খুব ভালোবাসি তো তাই আম্মুর কথা ফেলতে পারলাম না। ...................।।। :- গতকালকে আমার সেমিস্টার পরীক্ষা শেষ হয়েছে।।অনেক মুটামুটি ফ্রি আছি। প্রায় মাস খানেক কলেজ বন্ধ আছে তাই আম্মুর কথা রাখার জন্যে গ্রামের বাড়িতে রওনা দিলাম।। :- আমি বর্তমানে বাস কাউন্টারে বসে আছি বাসের আশায়।।। :- ওওও আপনাদেরকে তো আমার পরিচয়টাই দেওয়া হলো না।।আমার নাম আমির হোসেন হামীম।।এবার অনার্স ৩য় বর্ষে পড়ালেখা করি।।আমার পরিবার বলতে আব্বু আম্মু আমি আর আমার একটা ছোট বোন।।আমার ছোট বোনটি এবার ইন্টার ১ম বর্ষে পড়ে।।আমরা সবাই একসাথেই থাকতাম। কিন্তু পড়ালেখার সুবাধে আমাকে ঢাকায় থাকতে হয়।। ...........।। :- আপনাদের সাথে কথা বলতে বলতে বাস চলে এসেছে।।আমি এখন যাই।। :- বাসে উঠে এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখি পুরো সিট বুকিং শুধুমাএ দুইটা সিট বাদে।। আমি জানালার সাথে বসে ব্যাগ থেকে ইয়ারফোনটা বের করে কানে লাগিয়ে নিলাম।। :- চোখ বন্ধ করে মিনার খানের গান শুনছিলাম হঠাৎ মেইলি কন্ঠে ধ্যান ভাঙ্গে।। :- সামনের দিকে তাকিয়ে দেখি একটা মেয়ে দাড়িয়ে আছে।।গায়ে নীল কালারের একটা জামা। মুখে হালকা মেকাপ করা।ঠোটে গাড়ো করে লিপস্টিক দেওয়া।।চুলগুলো ছাড়িয়ে দেওয়া।।টানা টানা চোখ।মনে হচ্ছে স্বর্গের পরী ভূলে ধরনীতে নেমে এসেছে।আমি মেয়েটার দিকে অপলক দৃষ্টিতে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছি।।আসলে মেয়েটা আহামরী এতো সুন্দর না।।কিন্তু তার চোখ জোড়া অনেক মায়া রয়েছে।।যেকোনো মানুষ এই মায়ার সাগরে তলিয়ে যেতে পারে।। ...............।।। :- মেয়েটার ডাকে ধ্যান ভাঙ্গে।। :- মেয়ে: এই যে মিস্টার আপনি আমার দিকে এমন করে তাকিয়ে আছেন কেন। :- আমি: কই না তো আপনার দিকে আমি তাকিয়ে থাকব কেন।।(ভেবাচেকা খেয়ে) :- মেয়ে: মিথ্যা কথা বলেন কেন আপনি দেখলাম আমার দিকে তাকিয়ে ছিলেন।।আচ্ছা যাই হউক এখন আপনি একটু এইদিকে আসুন আমি জানালার সাইডে বসব।। :- আমি: কেন আমি এখান থেকে সরবো কেন।। :- মেয়ে: আরে এতক্ষন ধরে আপনাকে আমি কি বল্লাম।। :- আমি: আপনি আবার আমাকে কি বলেছেন।। :- মেয়ে: আরে এতক্ষন ধরে আপনার সাথে বক বক করলাম আপনি কিছুই শুনতে পান নাই।। :- আমি: না তো।।আপনি কি বলেছেন আমি কিছুই শুনতে পাইনি(আসলে মেয়েটার দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে থাকার কারনে মেয়েটার কি বলেছে না বলেছে কোনো কথা শুনতে পাইনি।। :- মেয়ে: কি আপনি আজব লোক তো আপনার সাথে এতক্ষণ ধরে বক বক করলাম আর আপনি কিছুই শুনতে পান নি।। :- আমি: শুনতে পাইনি।(আজব না গজব একটু পড়েই টের পাবেন) :- মেয়ে: আপনি বিরবির করে কি বলছেন।।। :- আমি: না কিছু না।।আর আপনি কি জানি বলতে চেয়েছিলেন সেটা বলেন।। :- মেয়ে: আসলে আমার না জানালার পাশের সিটের ছাড়া বসতে অসুবিধা হয়।।। :- আমি: এখন আমি কি করব। আমি কিন্তু জানালার পাশের সিট ছাড়ছি না।। :- মেয়ে: প্লিজ বুঝার চেষ্টা করুন।বাসে আমার ভমি ভমি ভাব হয়।।(করুন কন্ঠে) :- আমি: কি আপনি বাসে ভমি করেন।আচ্ছা ঠিক আছে বসেন(জানালার পাশের সিট ছেড়ে দিলাম) ..............।।। :- মেয়ে: Thank You :- আমি: It's Okey..... :- কি মেয়েরে বাবা বাসের মধ্যে ভমি করে। কিজন্যে যে এইসব উঠকো ঝামেলা আমার ভাগ্যে জুটে।।(মনে মনে ভাবতে লাগলাম) :- মেয়ে: মনে মনে কি ভাবছেন।। আমাকে গালি দিচ্ছেন নিশ্চয়।। :- আমি: আরে না আপনাকে গালি দিতে যাবো কেন(মাইয়া জানলো কিভাবে যে আমি তাকে গালি দিচ্ছি) :- মেয়ে: এই যে আপনার সিটটা মিথ্যা কথা বলে নিলাম। :- আমি: মিথ্যা কথা বলে মানে। :- মেয়ে: না আসলে আমার বাসে ভমি হয় না।।জানলার পাশের সিটটা নেওয়ার জন্য আপনাকে মিথ্যা কথা বলিছি।।আপনি কিছু মনে করবেন না প্লিজ।। :- মনে মনে ভাবতে লাগলাম কেমন মাইয়া দেখছেন জানলার পাশের সিট নেওয়ার জন্যে আমাকে মিথ্যা কথা বলেছে।এখন আবার আধিক্ষেতা দেখাতে আসছে।।তোর প্লিজের নিকুচি করি।। :- আমি: না ঠিক আছে কিছু মনে করিনি।। :- মেয়ে: ওওও আপনার তো পরিচয়টাই জানা হলো না।। :- আপনার নাম কি। কোথায় থাকেন।। :- আমি: আমার নাম আমির হোসেন হামীম।ঢাকায় একটা সরকারি কলেজে অনার্স ৩য় বর্ষে পড়ি। :- মেয়ে: ওওও তাহলে তো আপনি আমার ছোট। আমি এবার অনার্স ৪র্থ বর্ষে পড়ি।।যাই হউক আমার নাম মাইশা আক্তার মিম।। :- আমি: ওওও আচ্ছা আপনি কোথায় যাচ্ছেন।।(মাইয়াকে প্রথম দেখাতেই ৮০০০ ভোল্টেজের শক গেলাম।কিন্তু মাইয়া দেখি আমার থেকে এক ইয়ার বড়।এই দুঃখ কই রাখি।।আল্লাহ তুমি আমারে উঠাইয়া লও) :- মিম: আমার গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছি।। :- আমি: আপনার গ্রামের বাড়ি কোথায়।। :- মিম: আমার গ্রামের বাড়ি যশোরে #### গ্রামে।আমি সেখানেই যাচ্ছি।। :- আমি: কি আমিও তো সেখানেই যাচ্ছি।। :- মিম: সত্যি তাহলে তো ভালোই হলো একজন সঙ্গিকে পাওয়া গেল। :- আমি: জ্বি আপু।।(অনেক কষ্টে কথাটা বল্লাম) :- মিম: এই তুমি আমাকে আপু বলে ডাকছো কেন।।উপস সরি আপনাকে তুমি বলে বলার জন্যে।। :- আমি: না আমি কিছু মনে করিনি। আপনি তো আমার বড় So.....আমাকে তুমি করে বলতে পারেন।। :- মিম: তুমি আমাকে আপনি করে ডাকবে না।আর আপু বলে ডাকবে না।।আমাকে মিম বলে ডাকবে।। :- আমি: না আপু আপনি আমার বড়।আপনাকে আমি তুমি করে ডাকতে পারবো না।।(মাইয়া আমাকে কি শুনাইলো মনের মধ্যে আমার লাড্ডু ফুটছে।।মনটা যাচ্ছে লুঙ্গি ডান্স দেই।কিন্তু দেওয়া যাবে না।।বুঝিনিই তো বাসের মধ্যে আছি) :- মিম: আমি বলছি তুমি আমাকে তুমি আমাকে তুমি করে ডাকবে।।(রাগী কন্ঠে) :- আমি: ওকে (ভয়ে ভয়ে) :- মিম: এই তো গুড বয়।। .............।। :- আমি: আচ্ছা তুমি থাকো কোথায়?? :- মিম: আমি তো ### থাকি। :- আমি: ওওও তা কোন কলেজে পড়ো।। :- মিম: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। :- আমি: ওও আমিও তো ওখানে পড়ি কই তোমাকে তো দেখলাম না। :- মিম: কিন্তু আমি তোমাকে প্রতিদিনই দেখি।।হি হি হি।। :- আহ কি সুন্দর হাসি।।হাসলে গালে টোলও পড়ে আবার।।এই হাসির দিকে তাকিয়ে আমি সারাটা জিবন পার করতে পারবো। :- মিম: কি হল তুমি আমার দিকে এমন করে তাকিয়ে আছো কেন??(লজ্জায় লাল হয়ে) :- আমি:তুমি না অনেক সুন্দর। :- মিম: এই কি বল্লে  :- আমি: না না কিছু না।(ভ্যাবাচেকা খেয়ে) ।। ।। আপনারা ভাবছেন পিচ্ছি বউ দেওয়া কথা ছিলো কিন্তু আমি পিচ্ছি বর কেনো দিলাম তাই তো।।আসলে আমার অনেক ফেন্ড ম্যাসেজ দিয়ে বলে পিচ্ছি বর দিলে ভালো হবে।তাই নাম চেন্স করে পিচ্ছি বউ না দিয়ে পিচ্ছি বর দিলে ভালো হয়।তাই পিচ্ছি বর দিয়েছি।আপনারা কেউ মন খারাপ করবেন না।। ।। ((((চলবে,,,,,,,,,,,)))) ????????????