Monday, October 15, 2018

ভালোবাসার গল্প - ভাবনার গহীনে পার্ট 20

1 comment

#ভাবনার_গহীনে
writer Afroja
Part 20 :
শাখাওয়াত চলে গেলো আজ ৭ দিন হলো । আর এই সাত দিন শাখাওয়াতের অবর্তমানে সব সামলে নিচ্ছে রুপাঞ্জনা , এক দন্ড বিশ্রাম নেয়ার সময় টা তার নেই । আর আফরাজ ও রুপাঞ্জনাকে না জানিয়ে ওর খোঁজ খবর রেখে যাচ্ছে । রুপাঞ্জনার যাতে কষ্ট না হয় সেই জন্য ওর বাসায় শাখাওয়াতের নাম করে একজন বুয়া ও রেখে দেয় । ওই বুয়ার কাছ থেকেই সে রুপাঞ্জনার সব খবরাখবর নেই ৷ আর অফিসের দিক টা মনির মাধ্যমে সব জেনে নেয় আফরাজ ।

_হ্যালো ,
কে ? (রুপাঞ্জনা)
_উহুম উহুম (আফরাজ)
_উহুম উহুম মানে কি
কে ? (রুপাঞ্জনা)
_আফরাজ বলছি (আফরাজ)
_কে আফরাজ কোন আফরাজ (রুপাঞ্জনা)
_রুপাঞ্জনা প্লিজ , এমন করো না , আমার কথা টা তো শুনবে প্লিজ (আফরাজ)
_মাফ করবেন , আপনি মনে হয় wrong number এ ডায়েল করেছেন , নেক্সট টাইম কল করার সময় নাম্বার ভালো মত দেখে কল দিবেন , কেমন , (রুপাঞ্জনা)
_হ্যালো , হ্যালো (আফরাজ)
_টুট,,,,,,টুট,,,,,,ট­ুট,,,,,
_কেটে দিলো কল টা (আফরাজ)

এইভাবে চলতে থাকলে তো আমি রুপাঞ্জনাকে আরো আগে হারিয়ে ফেলবো , এইবার আর কোন কথা না , ডিরেক্ট সামনা সামনি হবো ওর । দেখি ওর কত রাগ , এতো ইগনোর আমি আর মানতে পারছি না । অসহ্য লাগছে সব কিছু আমার কাছে , আর না , (আফরাজ)

আফরাজ তার সমস্ত সিডিউল অফ রাখলো , কাল রুপাঞ্জনার সাথে ডিরেক্ট কথা বলবে সে ,

পরদিন ,

_ম্যাম , আকাশের অবস্থা তো ততটা ভালো না , মনে হচ্ছে অনেক ঝড় আসবে (মনি)
_হুম তাই তো দেখছি , তাহলে এক কাজ করো , সব স্টাফদের বলো যে আজ একটু তারাতারি চলে যেতে আর তুমিও চলে যাও (রুপাঞ্জনা)
_আপনি ? (মনি)
_কি আমি , আমি কি এইখানে থাকবো নাকি , আমিও চলে যাবো , (রুপাঞ্জনা)
_জ্বি ম্যাম , (মনি)

রুপাঞ্জনার কথা মত ৮ টার দিকেই সব স্টাফ রা চলে গেলেন , প্রচন্ড ঝড় শুরু হয়ে গেছে , মনে হচ্ছে সব ভাসিয়ে নিয়ে যাবে , রুপাঞ্জনা একটা কোনায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে কোন ট্যাক্সি কিংবা কোন রিকশা পায় কিনা , একটা সি.এন.জি পেয়েছিল কিন্তু ড্রাইভার কে সুবিধার মনে হয় নি তাই আর সে যায় নি । অপেক্ষা করতে থাকে , ঘড়ির কাটা ৯ টা ছুই ছুই ওমন টাইমে একটা গাড়ি এসে রুপাঞ্জনার সাইডে দাঁড়ায় । গাড়ির গ্লাস টা নামাতেই রুপাঞ্জনা আফরাজ কে দেখতে পায় । আর তাই সে সামনে হাটা শুরু করে

_রুপাঞ্জনা দাড়াও (আফরাজ)
_no thanks আমি একা যেতে পারবো , আমার কারো সাহায্যের প্রয়োজন নেই । (রুপাঞ্জনা)
_এইবার কিন্তু বেশী বেশী হচ্ছে , (আফরাজ)
_..............
_দাড়াতে বলেছি আমি , ঝড় বেড়ে যাচ্ছে , গাড়ি তে এসে বসো (আফরাজ)
_বললাম না আমি পারবো , আপনি চলে যান এইখান থেকে (রুপাঞ্জনা)

এইবার প্রচন্ডরকম রাগ হলো আফরাজের । রুপাঞ্জনা তাকে চরম ভাবে ইগনোর করছে , তার কথা উপেক্ষা করে সামনের দিকে চলে যাচ্ছে , যা আফরাজের একদম সহ্য হয় নি , তাই সেও গাড়ি থেকে নেমে গিয়ে দৌড়ে গিয়ে রুপাঞ্জনা কে ধরে ফেলে , এমন শক্ত করে ধরে রুপাঞ্জনা ব্যাথায় কঁকিয়ে উঠে ।

_আহহহহহ লাগছে আমার ছাড়ুন (রুপাঞ্জনা)
_লাগুক , চুপচাপ গাড়িতে এসে বসো (আফরাজ)
_আমি যাবো না (রুপাঞ্জনা)
_তুমি যাবে (আফরাজ)
_নাহ (রুপাঞ্জনা)
_হ্যা (আফরাজ)
_মগের মুল্লুক নাকি (রুপাঞ্জনা)
_আফরাজ মুল্লুক তো বটেই (আফরাজ)
_দেখুন আমাকে ছাড়ুন (রুপাঞ্জনা)
_বলছিনা না , ছাড়বো না , চলো প্লিজ (আফরাজ)
_এই কি চান আপনি , হ্যা কি চান {চেচিয়ে চেচিয়ে} (রুপাঞ্জনা)
_রুপাঞ্জনা চেচাচ্ছো কেন (আফরাজ)
_তো কি করবো , আর কত , হ্যা আর কত , আর কত কষ্ট দিবেন , আর কত অতিষ্ঠ করে দিবেন আমার এই জীবন টা । আরে আমার দোষ টা কই ছিল , সেইদিন আমি কি করেছিলাম , না জেনেই আমাকে কত গুলো খারাপ কথা বলে দিলেন , আর নিজে কি করেছিলেন হ্যা নিজে কি করেছিলেন , নিজের এক্স এর সাথে দুইমাস আলাদা ফ্ল্যাটে থেকেছেন , আর আমাকে বোকা বানিয়ে গেছেন , আর আমার কষ্ট হয় নি বুঝি , আমার খারাপ লাগে নি বুঝি , দুইটা মাস আমি ওই বাড়িটার মধ্যে একা একা ছিলাম কই তখন তো একবারের জন্য ভাবেন নি কেউ থাকে ওই বাড়িতে , বেশ তো ছিলেন নিজের এক্স কে নিয়ে , এইটা জেনেই আমাকে এতো গুলো বিশ্রী কথা শুনিয়ে দিয়েছিলেন যে আমি কোথায় যাই , সকালে যাই আর সন্ধ্যায় ফিরি । আরে আমি একটা চাকরি করেছিলাম তখন শুধু নিজে চলার মতন কিছু টাকার জন্য , হাহ , এতো বড় উকিলের বউ আমি যার বরের কারি কারি টাকা আছে গাড়ি দুই তিন টা ডুপ্লেক্স বাড়ি , সব আছে কিন্তু তার বউকে দেয়ার মতো টাকা তার ছিল না , আরে আমার প্রথম চড় খাওয়ার পরেই বুঝে যাওয়া উচিত ছিল যে আপনি কখনোই আমাকে ভালোবাসতে পারবেন না , তখনই আমি চলে গেলে ভালো হতো ।
_রুপাঞ্জনা এইবার থামো , তোমার যা বলার গাড়িতে বলো , একদম ভিজে গেছো , (আফরাজ)
_আরে রাখেন আপনার ভিজা , কি বলেছিলেন সেইদিন আমি কার সাথে থাকি , আপনার আমাকে এতো টাই নিচ মনে হয় , আমি সেইদিন অসুস্থ হয়ে গেছিলাম আপনাকে আমি বনশ্রীর ফ্ল্যাটে দেখেছিলাম নাজিফার সাথে সেইটা দেখে আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারি নি আমি আর আপনি বললেন কি আমার পেটে নাকি কআর পাপের ফসল , ছিঃ , আপনার আমাকে এমন হয়েছিল , আরে আমার তো কপাল টাই খারাপ ছিল , নিজের বাপ মাই নিজের মেয়েকে ভুল বুঝেছে যাকে ভালোবেসেছিলাম সেও ভুল বুঝে চলে গেছে , পরিস্থিতির চাপে পরে যে আমাকে বিয়ে করলো তাকে আস্তে আস্তে ভালোওবেসেছিলাম কিন্তু সে কি ভাবলো আমি নাকি আরেকজনের সাথে বাহিরে থাকি , বাহ কি সুন্দর । এই আমার দিকে তাকান , তাকান আমার দিকে , কি মনে হয়েছিল আমাকে হ্যা কি মনে হয়েছিল , আমার এতোই তেজ , আমার শরীরের এতোই ঝাঝ যে বাহিরে মেটাতে যাবো (রুপাঞ্জনা)
_রুপাঞ্জনা shut up , just keep your mouth shut (আফরাজ)
_হুহ,,,,,,,তাই তো বলেছিলেন সেইদিন আমাকে , আপনার কি মনে হয়েছিল আমাকে , আপনি আমায় স্পর্শ করেন নি বলে আরেকজনের দরকার পরবে আমার , কখনোই না আফরাজ সাহেব কখনোই না । ৮ টা মাস ছিলাম আপনার সাথে , এক রাতের জন্যও আসেন নি আমার কাছে , বরং আমাকে আরেক রুমে রেখেছেন । খুব করে চাইতাম আমার কাছে আসুন কিন্তু না আমি যা চাই তা তো হবে না , কারন আমার পতিদেব তো বাহিরেই কাজ সেরে আসে , তার আমার শরীরের কি দরকার , সে তো নাজিফার শরীরেরই মেতে থাকে (রুপাঞ্জনা)

এইবার আর আফরাজ নিজেকে ঠিক রাখতে পারে নি। সজোরে আবারো কষিয়ে একটা চড় বসিয়ে দিল রুপাঞ্জনার গালে

_how dare you , তোমার সাহস হয় কি করে আমাকে এই কথা বলার হ্যা , কিছু না জেনে না বুঝে কি যা তা বলছো তুমি , (আফরাজ)
_পুরুষ মানুষ তো তাই খালি হাত টা নড়ে তাই না , সেইদিন আপনিও তো না জেনে না বুঝে আমাকে অনেক কথা বলেছিলেন তাহলে তো ওই হিসাবে আপনিও একটা চড় deserve করেন (রুপাঞ্জনা)
_শুধু চড় না তোমার পায়ের ওই জুতা খুলে মারো আমায় ,, যাও নিজে গিয়ে গাড়ি ড্রাইভ করো আমি এইখানে শুয়ে পরি আমার উপর দিয়ে চালিয়ে দাও যা খুশি তাই করো , তবুও কথা বলো , রাগ করে থেকো না প্লিজ (আফরাজ)

আফরাজ রুপাঞ্জনার দুই বাহু ধাক্কাতে ধাক্কাতে বলছিলো , এক সময় রুপাঞ্জনার সমস্ত শক্তিই শেষ হয়ে যাচ্ছিল , চোখ গুলো বন্ধ হিয়ে আসছিল , পুরো শরীর অসার হয়ে যাচ্ছিল , বহু কষ্ট হচ্ছিলো দাড়াতে , তারপরও আফরাজে একটু কাছে এগিয়ে গিয়ে বললো ,

_আমি মরি না কেন , বলতে পারেন আমি কেন মরি না আমি মরলে সব ঠিক হবে , আপনার বার বার আমাকে খুজতে হবে না , আমাকে বার বার আপনার কাছে অপমানিত হতে হবে না , আমাকে প্লিজ ছেড়ে দিন , প্লিজ আমি আর পারছি না এতো কষ্ট সইতে , এখন একটু শান্তি চাই আমি , একটু শান্তি দিবেন আমায় , আমি আর পারতেছি না জানেন , এইবার একটু শান্তি চাই , দিবেন একটু শান্তি আমায় {কেদে কেদে} (রুপাঞ্জনা)

রুপাঞ্জনাকে দেখে ওর এমন কথা শুনে আফরাজ আর নিজেকে ধরে রাখতে পারে নাই , রুপাঞ্জনাকে জড়িয়ে ধরে নিজের চোখের পানি ছেড়ে দেয় আফরাজ । আফরাজ রুপাঞ্জনাকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরে রাখে নিজের বুকে , আফরাজ এর বুকে রুপাঞ্জনা তার মুখ গুজে কান্না শুরু করে দেয় , কান্নার আওয়াজ টা একটু জোড়ে বেড়ে যায় , আর আফরাজ আরো শক্ত করে নিবিড় ভাবে চেপে ধরে তার বউকে তার বুকে । সে জানে যে রুপাঞ্জনা এখন যা করছে সব টা ঘোরের মধ্যে করছে , এক সময় আফরাজের বুকেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলে রুপাঞ্জনা

_রূপ , এই রূপ , শুনতে পাচ্ছো , রূপ (আফরাজ)

এই প্রথম আফরাজ রুপাঞ্জনাকে রূপ বলে ডাকে , যদি রুপাঞ্জনার জ্ঞান থাকতো কত খুশিই না হতো মেয়েটা , সে তো বরাবরই চেয়ে এসেছে যে আফরাজ তাকে রূপ বলে ডাকুক ।

আফরাজ রুপাঞ্জনার অচেতন দেহ টা কে কোলে তুলে গাড়িতে নিয়ে বসিয়ে দেয় , একদম ভিজে চুপসে গেছে দুইজনেই , রুপাঞ্জনাকে নিয়ে আফরাজ রওনা দিল রুপাঞ্জনার কোয়াটারে । প্রায় আধা ঘন্টা পরে আফরাজ রুপাঞ্জনাকে নিয়ে বাসায় পৌছায় । বাসায় কেউ নেই , ঝড় ও থামছে না , এই ঝড়ের রাতে কিভাবে রুপাঞ্জনাকে একা রেখে চলে যাবে আফরাজ , রুপাঞ্জনাকে কোলে তুলে শোয়ার রুমে যায় আফরাজ , কারেন্ট ও নাই । রুপাঞ্জনার খাটের পাশে একটা চার্জার লাইট ছিল , আপাতত এইটা কেই কাজে লাগালো আফরাজ লাইট টা জ্বালিয়ে দিলো , নজর পরে রুপাঞ্জনার দিকে , অপূর্ব লাগছে তাকে , আর ভিজে একাকার , মুখের মধ্যে বিন্দু বিন্দু পানি গুলো মনে এই সৌন্দর্য আরো দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে রুপাঞ্জনার । শাড়ি টাও চুপচুপ হয়ে আছে , ভিজে যাইয়ার কারনে পেটের দিক টা গাঢ় ভাবে বোঝা যাচ্ছে । মাথার চুলের আগা গুলো দিয়ে চুলের পানি গুলো চুইয়ে চুইয়ে পরছে , সব কিছু মিলিয়ে তার বউকে দারুন লাগছে । চোখ সরাতেই মন চাইছে না আফরাজের । নিজের অজান্তেই তার হাত টা চলে গেলো রুপাঞ্জনার মুখের দিকটায় , শরীর টা চলে যায় রুপাঞ্জনার শরীর টার কাছে , পরম আদরে চুলের মধ্যে বিলি কেটে দিচ্ছে আর আস্তে করে ডাকছে

_রূপ , এই রূপ , শুনতে পাচ্ছো , রূপ (আফরাজ)

অনেক্ষন ডাকার পরে রুপাঞ্জনার অল্প অল্প হুশ আসে

_রূপ , এই রূপ (আফরাজ)
_হুম (রুপাঞ্জনা)
_শুনতে পাচ্ছো আমার কথা (আফরাজ)
_হুম (রুপাঞ্জনা)
_এইদিকে তাকাও , দেখো আমি , এই মেয়ে এইদিকে দেখো (আফরাজ)

রুপাঞ্জনা আধো আধো চোখে তাকায় আফরাজের দিকে

আফরাজ তখন রুপাঞ্জনার অনেক কাছে , যতটা কাছে আসলে নিঃশ্বাসের শব্দ টা শুনতে পাওয়া যায় , রুপাঞ্জনা এইবার বুঝতে পারে যে সে আফরাজের সাথে , কিন্তু ঘোর টা কাটে নি

_আপনি , আপনি কেন এসেছেন , চলে যান (রুপাঞ্জনা)
_হুসসসসসসসস চুপ , চুপ করে থাকো (আফরাজ)
_চলে যান , চলে যান (রুপাঞ্জনা)
_যদি না যাই (আফরাজ)
_চলে যান , (রুপাঞ্জনা)
_ভালোবাসি তো (আফরাজ)
_আমি ভালোবাসি না (রুপাঞ্জনা)
_কাকে ? (আফরাজ)
_রাহাত কে (রুপাঞ্জনা)
_ 😊😊😊 পাগলি একটা , তাহলে কাকে ভালোবাসো (আফরাজ)
_আফরাজ কে (রুপাঞ্জনা)
_তাই (আফরাজ)
_হুম (রুপাঞ্জনা)
_কতটা ভালোবাসো আফরাজ কে (আফরাজ)
_অনেক টা , নিজের চাইতেও বেশি (রুপাঞ্জনা)
_তাহলে চলে গিয়েছিলে কেন (আফরাজ)
_সে আমায় ভালোবাসে না যে (রুপাঞ্জনা)
_কে বলেছে ? আফরাজ ও যে তোমায় অনেক ভালোবাসে , (আফরাজ)
_মিথ্যা , মিথ্যা কথা (রুপাঞ্জনা)
_সত্যি কথা , চোখ মেলো , দেখো আমার দিকে , আফরাজ তোমার সামনে , দেখো একবার (আফরাজ)

আফরাজের কথায় আবারো চোখ মেলে তাকায় রুপাঞ্জনা । রুপাঞ্জনা তার মাথার পাশ থেকে আফরাজের হাত টা নিজের হাতে মুষ্ঠি করে নেয় , বাহিরে অনেক ঝড় বয়ে যাচ্ছে , আর ভেতরে দুইটা শরীর , আজ একটু সুখের পরশ পেতে ক্ষতি কোথায় ? আজ একটু কাছাকাছি আসতে বাধা কোথায় ?

_রূপ , এই রূপ (আফরাজ)
_হুম (রুপাঞ্জনা)
_১০ টা বেজে গেছে , ঝড় তো থামছে না, তোমাকে একা রেখে যেতেও পারছি না , রূপ শুনছো তুমি (আফরাজ)
_হুম (রুপাঞ্জনা)
_আচ্ছা উঠো , চেঞ্জ করে নাও , আমি কাপড় এনে দিচ্ছি (আফরাজ)

এই বলে আফরাজ রুপাঞ্জনাকে ছেড়ে দিয়ে উঠতে যাবে ওমনি রুপাঞ্জনা আফরাজকে টান দিয়ে নিজের উপরে ফেলে দেয় , আর আফরাজ টাল সামলাতে না পেরে রুপাঞ্জনার উপরে পরে যায় আর হাত টা আচমকাই রুপাঞ্জনার ভেজা পেটের উপরে পরে ।

_প্লিজ উঠবেন না (রুপাঞ্জনা)
_চেঞ্জ করবা না (আফরাজ)
_নাহ (রুপাঞ্জনা)
_ঠান্ডা লেগে যাবে যে (আফরাজ)
_লাগুক (রুপাঞ্জনা)
_বাচ্চামো করো না , কাপড় এনে দিচ্ছি , চেঞ্জ করে নাও (আফরাজ)
_ওঠার মতন শক্তি পাচ্ছি না তো (রুপাঞ্জনা)
_তাহলে আমি চেঞ্জ করে দেই (আফরাজ)
_হুসসসসসসস চুপ (রুপাঞ্জনা)
_কি হলো (আফরাজ)
_বাহিরে অনেক ঝড় হচ্ছে না ? (রুপাঞ্জনা)
_হুম অনেক (আফরাজ)
_এইখানেও যে ঝড় হচ্ছে (রুপাঞ্জনা)
_কোথায় ? (আফরাজ)

রুপাঞ্জনা আফরাজের হাত টা তার পেটের উপর থেকে এনে তার বুকের বা পাস টায় রেখে চোখের ইশারায় বুঝিয়ে দিলো

_এইখানে (রুপাঞ্জনা)

আফরাজ গভীর নয়নে তার বউকে দেখছে , আর রুপাঞ্জনাও একই কাজ টা করছে , এতো রাগ এতো অভিমান এতো কষ্ট কোথায় গেলো রুপাঞ্জনার , এক নিমিষেই সব উধাও হয়ে গেলো , হয়তো একেই বলে আগুনের কাছে মোম গেলে যেমন গলে যায় তেমন একজন পুরুষের এর কাছে আরেকজন নারী গেলেও তেমন গলে যায় ,

আফরাজের চোখে ঘোর লেগে আছে , তেমনি রুপাঞ্জনার চোখেও নেশা , উফফফফ কি যে পাগল করা এক মুহুর্ত ,

আফরাজ আর পারছে না নিজেকে আটকে রাখতে তেমনি রুপাঞ্জনাও , রুপাঞ্জনা আস্তে করে মাথাটা একটু উচু করে নিবিড় ভাবে আফরাজের ঠোঁট জোড়ায় নিজে ঠোঁট দিয়ে একটা চুমু বসিয়ে দেয় । আর আফরাজও একটু নড়ে চড়ে উঠে । তারপর রুপাঞ্জনা আবার মাথাটা নামিয়ে দেয় বিছানার বালিশের উপরে ,

_কি হলো (আফরাজ)
_কিছু না (রুপাঞ্জনা)
_কিছু তো হলো (আফরাজ)
_জানি না (রুপাঞ্জনা)
_আমি দেখাই কি হলো , (আফরাজ)

ফ্যাল ফ্যাল করে আফরাজের দিকে তাকিয়ে চোখের পানি ছেড়ে দেয় রুপাঞ্জনা , রীতিমত ভিমড়ি খেয়ে উঠে আফরাজ রুপাঞ্জনার চোখের পানি দেখে । আস্তে করে শান্ত গলায় বলল

_কি হলো , কাদছো কেন (আফরাজ)
_কেন এলেন আবার , আবার কষ্ট দিতে (রুপাঞ্জনা)
_আর কষ্ট দিবো না (আফরাজ)
_ফেলে চলে যাবেন তার কাছে (রুপাঞ্জনা)
_কোথাও যাবো না , সে ছিল অতীত , তুমি আমার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ , কোথায় ছেড়ে যাবো তোমায় আমি (আফরাজ)
_যদি চলে যান (রুপাঞ্জনা)
_মৃত্যু ছাড়া কোথাও যাবো না (আফরাজ)

সাথে সাথে ঝাপটে ধরলো রুপাঞ্জনা আফরাজকে , কেদেই দিলো এইবার ।

_তখন কি যেন একটা হলো (আফরাজ)
_কই (রুপাঞ্জনা)
_আমি দেখাই (আফরাজ)
_নাহ লাগবে না (রুপাঞ্জনা)
_দেখাই না , (আফরাজ)
_..................

নিরবতা সম্মতির লক্ষণ , তাই আস্তে করে আফরাজ রুপাঞ্জনার ঠোঁটের মাঝে নিজের ঠোঁট জোড়া মিলিয়ে দিলো , পরম আদরে দুইজন দুইজনকে আঁকড়ে ধরলো , ঠোট ছেড়ে আফরাজের মুখ রুপাঞ্জনার গলায় নেমে গেছে , আর রুপাঞ্জনা একহাত দিয়ে আফরাজের চুল ধরে আছে আর অন্য হাতে চাদর খামছে ধরেছে , আফরাজ এর হাত রুপাঞ্জনার পেটের উপরে , মুহুর্তেই শাড়ির আঁচল টা সরিয়ে দিল বুক থেক , লজ্জায় চোখ বন্ধ রুপাঞ্জনার , শ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তার , খামছে ধরছে আফরাজের পিঠকে , নিচে যেতে যেতে হাত টা রুপাঞ্জনার নাভির নিচে শাড়ির কুচির মধ্যে চলে যায় হালকা টানে শাড়ির সব গুলো কুচি খুলে নেয় আফরাজ , রুপাঞ্জনা বাধা দেবে না আজ , মন ভরে উপভোগ করবে তার স্বামীর ভালোবাসা । ব্লাউজের হুক গুলো একটা একটা করে খুলছে আফরাজ , তখনই খপ করে আফরাজের হাত টা ধরে ফেলে রুপাঞ্জনা

_কি হলো , (আফরাজ)
_...............
_ভালো লাগছে না (আফরাজ)
_................
_সরে যাবো ? (আফরাজ)
_নাহ 😙😙😙😙 (রুপাঞ্জনা)

ব্লাউজের হুক গুলো খুলে দিয়ে বুকের দিক টায় নেমে গেলো আফরাজ । আর রুপাঞ্জনার নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসছে , গাঢ় করে একটা নিঃশ্বাস ছাড়লো রুপাঞ্জনা । রুপাঞ্জনার সেই নিঃশ্বাস টা আফরাজকে আরো পাগল করে দিয়েছে । এক হাতে পেটিকোটের কোড় টা খুলতে লাগলো আফরাজ

তারপর , রাত বাড়ছে আর দুইটি শরীর আরেকটি শরীরের আলিংগনে একাকার হয়ে যাচ্ছে , দীর্ঘ ১ বছর পর তাদের বিয়ের এই পবিত্র বন্ধন হলো আজ । রাতের অন্ধকার যত বাড়ছে তাদের ভালোবাসা আরো বাড়ছে , পুরো ঘর জুড়ে শুধু দুইজন মানুষের নিঃশ্বাসের শব্দ , দুইজনেই আজ উন্মাদ , ভালোবাসার পরশে উন্মাদ । উন্মাদনার চরমে পৌছে যায় তারা দুইজনে । উফফফফফ কি শ্বাসরুদ্ধ কর একটা পরিবেশ ।

এই রাত তাদের ভালোবাসার রাত
এই রাত তাদের মনে মিলনের রাত
এই রাত তাদের দুইটা দেহের মিলনের রাত ,


সকালবেলা ,,,,,,,

রুপাঞ্জনা নিজেকে আফরাজের বুকে পায় , তাদের দুইজনের শরীরে শুধু একটা চাদর , চাদর ছাড়া আর কিছুই নেই , রুপাঞ্জনার বুঝতে বাকি রইলো না কাল রাতে কি কি ঘটেছে তার আর আফরাজের মাঝে , মাথা তুলে আফরাজের দিকে তাকায় সে , খালি গায়ে ফর্সা একজন সুদর্শন পুরুষ তাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে , খুব মায়া লাগছিলো আফরাজের জন্য , তারপর নজর গেলো মেঝের দিকে , কাল রাতে একটু একটু করে খোলা কাপড় গুলো ভেজা অবস্থাতেই মেঝেতে পরে আছে , শুধু রুপাঞ্জনার একার না আফরাজের কাপড় গুলো ও মেঝে পরে আছে । লজ্জা করছে খুব রুপাঞ্জনার । কিভাবে দাঁড়াবে সে আফরাজের সামনে , হঠাৎ করেই আফরাজ নড়ে উঠলো । চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে রুপাঞ্জনা তাকে দেখছে , দুইজনেই দুইজনের দিকে তাকিয়ে আছে , আজ দুইজনেই দুইজনের ভাবনার গহীনে দুইজনকে বেধে দিয়েছে ।


কি থেকে কি হয়ে গেলো 🙈🙈🙈🙈



To be continued.......☺☺☺

1 comment :

  1. আরো নতুন নতুন Golpo পড়তে ভিজিট করুন
    www.valobasargolpo2.xyz

    ReplyDelete